রুশে একটি চুটকি আছে - অনাহুত আগন্তুক বর্গিদের চেয়েও খারাপ। বিনা আমন্ত্রণে এদেশ সেদেশ যাওয়ায় সেসব দেশের শাসকেরা বাংলাদেশীদের অনুপ্রবেশের ভয়ে ভিসা দেয়াই বন্ধ করে দিচ্ছে। আগে গ্রাম এলাকায় অনেক সন্তানের গরীব বাবাদের নেমন্তন্ন করত না খাবার কম পড়বে ভয়ে। ডঃ ইউনুসকে নিয়ে একই ভয় কাজ করছে কিনা দেশে দেশে কে জানে! ভিসা দেওয়া তো এমনি এমনি বন্ধ হয় না!
দুবনা, ১৬ অক্টোবর ২০২৫
Thursday, October 16, 2025
Wednesday, October 15, 2025
কাজ!
রাশিয়ায় অনেক কিছুই আমাকে সোভিয়েত ইউনিয়নের কথা মনে করিয়ে দেয়। বিশেষ করে এদের বোকামি। গত কয়েকদিন বেশ বৃষ্টি। রাস্তাঘাট ভেজা। অথচ এর মধ্যেও গাড়ি করে জল ছিটিয়ে রাস্তা পরিষ্কার করছে। সোভিয়েত আমলে এক চুটকি ছিল। এক লোক গর্ত খুঁড়ছে আরেক জন কিছুক্ষণ পরে সেই গর্ত মাটি দিয়ে ভরে দিচ্ছে। কেন তারা এটা করছে জানতে চাইলে একজন জানাল যার গাছ লাগানোর কথা ছিল সে অসুস্থ। তাই বলে তারা তো কাজ বাদ দিয়ে বসে থাকতে পারে না। যারা বৃষ্টির পরে গাড়িতে করে রাস্তায় জল দিচ্ছিল ওদের দেখে একথাই মনে হল।
দুবনা, ১৫ অক্টোবর ২০২৫
Monday, October 13, 2025
প্রশ্ন
ফেসবুকে নৌসচিবকে হাস্যোজ্জ্বল মুখে আগামী ডিসেম্বরে তিনটি টার্মিনালের দায়িত্ব বিদেশি অপারেটরদের হাতে তুলে দেবার সংবাদ পরিবেশন করতে দেখলাম। বাংলাদেশের শতকরা দুই শত জন মানুষ (ভুল শোনেননি ২০০%) যেখানে খুশিতে গদগদ হয়ে ছেলেমেয়েদের বিদেশে পাঠানোর (পড়ুন বিদেশিদের হাতে ছেলেমেয়েদের দায়িত্ব তুলে দেন) খবর প্রকাশ করে সেখানে নৌসচিব কি ভুলটা করল?
মস্কো, ১৩ অক্টোবর ২০২৫
Sunday, October 12, 2025
অশান্তি
শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেয়ে লোকজন যদি অশান্তি সৃষ্টি করে তাহলে অশান্তির জন্য নোবেল পুরস্কার দিলেই তো হয়!
সম্ভব নয়।
কেন?
প্রার্থীর সংখ্যা এত বেশি হবে আর প্রার্থীরা যোগ্যতা প্রমাণ করতে নিজেদের মধ্যে এমন মারামারি শুরু করবে যে সেটা সামাল দিতে বিশ্বযুদ্ধ লেগে যাবে।
দুবনা, ১২ অক্টোবর ২০২৫
Friday, October 10, 2025
কঠিন বাস্তবতা
নারী স্বাধীনতা, নারী অধিকার এসব নিয়ে সুন্দর সুন্দর গল্প শুনে স্বপ্ন দেখা অনেকের জন্য প্রেম পর্বেই শেষ হয়ে যায়। বিবাহ পর্বে নেমে আসে কঠিন বাস্তবতা। পর্দা, স্বামী সেবা এসব হয় বিবাহিত জীবনের একমাত্র বিনোদন, সবে ধন নীলমণি অধিকার। মৌলবাদের জমানায় পুরুষতন্ত্র শুধু ভয়ঙ্কর নয় মারাত্মক বিপদজনক।
জামায়াত শিবিরের প্রেম পর্বের মিষ্টি কথা বিশ্বাস করিয়া তুমি ভুল করিয়াছ সিপিবি, উদীচী। শরৎ উৎসব এখন শুধুই অতীত স্মৃতি।
বোকাদের জন্য করুণা করাও বোকামি।
দুবনা, ১১ অক্টোবর ২০২৫
গনভোট
সিপিবির অনেকেই গণভোটের বিপক্ষে তাদের মতামত প্রকাশ করছেন বিভিন্ন যুক্তিতে। শুধু সিপিবি কেন এর বাইরেও অনেকেই সেটা করছেন বর্তমান সংবিধানে গণ ভোটের অপশন নেই বলে। অনেক লেখার পাশাপাশি দেখলাম মুজাহিদুল ইসলাম সেলিমের একটি লেখা কে যেন শেয়ার করেছে - যেখানে তিনি গনভোট অপ্রয়োজনীয় বলে মত দিয়েছেন। বিষয়টি দেখে একটু খটকা লাগলো, কেননা এর আগে উনি নিজে ঐকমত্য কমিশনে রতনের বক্তব্য শেয়ার করেছেন যেখানে রতন পারতপক্ষে গণভোটের পক্ষে মত দিয়েছে। তবে ওনার ভেরিফাইড পেজে গিয়ে গণভোটের বিপক্ষে কিছু না দেখে উনি গনভোট প্রশ্নে কী মত প্রকাশ করেন সেটা জানার ইচ্ছে হল। আমার ধারণা সিপিবির উচিৎ এসব প্রশ্নে কেন্দ্রীয় ভাবে তাদের বক্তব্য স্পষ্ট করে জানানো। আমার মনে হয় ঐকমত্য কমিশন আসলে সংবিধান প্রশ্নে গনভোটের আওয়াজ তুলে সংবিধানের গণ ধর্ষণের আয়োজন করছে।
দুবনা, ১০ অক্টোবর ২০২৫
দুবনা, ১০ অক্টোবর ২০২৫
রাজা
প্রেসিডেন্ট, চ্যান্সেলর, প্রাইম মিনিস্টার এরা তো আসলে রাজাই। তবে মাক্রন (মাখো? কি মাখব?), মেরৎজ, স্টারমার এদের দেখলে মনে হয় এরা আসলে বিজ্ঞাপনের রাজা - মানে এক সময় বহু বিজ্ঞাপিত রাজা কনডম যাদের কাজ আসলে যাকিছু ভালো, যাকিছু শান্তিদায়ক - তাদের জন্ম রোধ করা।
দুবনা, ১০ অক্টোবর ২০২৫
দুবনা, ১০ অক্টোবর ২০২৫
Thursday, October 9, 2025
প্রশ্ন
ডাক্তারের যতই স্বদিচ্ছা থাকুক না কেন, রুগী যদি মারা যায় তার দায় ডাক্তারকেই নিতে হয়। হ্যাঁ, বাংলাদেশে একটি অপারেশন দরকার ছিল, কিন্তু তার ফলাফল কি হতে পারে সে সম্পর্কে আগে থেকে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পর্যালোচনা না করায় সে এখন কোমায়। এর দায় এড়ানো কি এতই সহজ? পারবে কি বামেরা এর দায় এড়াতে? নাকি বামেদের বিধি এখনও বাম?
দুবনা, ০৯ অক্টোবর ২০২৫
দুবনা, ০৯ অক্টোবর ২০২৫
Tuesday, October 7, 2025
বিপত্তি নিয়ে আপত্তি
অসুরের দাড়ি নিয়ে বিপত্তি। অনেক চেষ্টা করেও কেউ এই বিতর্কে দাঁড়ি টানতে পারছে না। তাই আগামী বছর থেকে অসুরের জন্য ড্রেসকোড তৈরি করা আবশ্যক। ক্লিন শেভ না করা কোন অসুরকে যেন বাংলাদেশের ভিসা দেয়া না হয় এ ব্যাপারে সমস্ত দূতাবাসকে সতর্ক করে দিতে হবে আর কাস্টমসে নির্দেশ দিতে হবে কোন দাড়িওয়ালা অসুর যেন সীমান্ত অতিক্রম করতে না পারে।
দুবনার পথে, ০৭ অক্টোবর ২০২৫
প্রশ্ন
সময়ের সাথে সাথে হাড্ডি চামড়া বুড়িয়ে যাচ্ছে, কমছে ওদের বাজার দর আর সেই সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ওদের সচল রাখার ওষুধের দাম। এটা কি বৈষম্য নাকি মূল্যের নিত্যতার সূত্র?
মস্কো, ০৭ অক্টোবর ২০২৫
Sunday, October 5, 2025
জুলাই সনদ
গত বছর ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে সরকার পরিবর্তনের পরে জুলাই সনদের ধারণা সামনে চলে আসে। নতুন বন্দোবস্তের মূল স্টেকহোল্ডারদের মতে চব্বিশ একাত্তরকে ছাড়িয়ে গেছে। এ নিয়ে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি বলে দাবিদার কোন কোন দল প্রতিবাদ করলেও সেটা কতটুকু গুরুত্ব পেয়েছে তা নির্ভর করবে ঐকমত্য কমিশন এই সনদের ফাইনাল ভার্সন কিভাবে লিপিবদ্ধ করেছে সেটার উপর। সেখানে যদি চব্বিশকে কে একাত্তরের উপরে স্থান দেয়া হয় আর নিজেদের স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি হিসেবে দাবি করা দলগুলো যদি এর পরেও সেই দলিলে স্বাক্ষর করে তবে তা হবে নিজেদের রাজনৈতিক আত্মহত্যার পূর্বে চিরকুট রেখে যাওয়ার সমতুল্য। আত্মহত্যার জন্য বদ্ধপরিকর মানুষ সেটা অনুধাবন করবে কি না এটাই এখন দেখার বিষয়।
মস্কো, ০৬ অক্টোবর ২০২৫
ইমিউন
আজকাল বিভিন্ন দেশের রাজনীতিবিদরা নিজেদের ব্যর্থতার জন্য অজুহাত খুঁজে বেরায়। ইউরোপ আমেরিকায় এই নন্দ ঘোষের ভূমিকায় অভিনয় করে রাশিয়া। এই তো শত কারচুপি করেও মালদোভায় ক্ষমতাসীন সান্দোর দল দেশের ভেতরে জিততে পারে না, ইউরোপে ভোট চুরি করে সেই ঘাটতি পূরণ করতে হয়। চেখ রিপাবলিকে ব্রাসেলসের বিরোধী দল ক্ষমতায় আসে। কে দায়ী? রাশিয়া। রাশিয়া এসব দেশে কতটুকু প্রোপাগান্ডা চালাতে পারে সেটা জানা নেই তবে একথা জানি যদি নিজের ইমিউন সিস্টেম ঠিক থাকে তাহলে ভাইরাস সহজে কাবু করতে পারে না। তাই পশ্চিমা বিশ্বের ব্যর্থতার জন্য রাশিয়ার দিকে আঙুল না তুলে নিজেদের পলিসির দুর্বলতা খোঁজা বুদ্ধিমানের কাজ। কিন্তু সেটা করে মুক্তমনের বুদ্ধিমান মানুষ, কোন কিছুতে অন্ধবিশ্বাসী কেউ সেটা পারে না।
মস্কোর পথে, ০৫ অক্টোবর ২০২৫
Friday, October 3, 2025
ডান বাম
দুই বন্ধু হাঁটতে হাঁটতে রাস্তার মোড়ে এসে উপস্থিত হয়েছে। এখানে দুই জনকে দুই পথে যেতে হবে।
- তুমি কোন দিকে যাবে?
- জানই তো আমি বামপন্থী। আমি বাঁ দিকে যাবো।
- ঠিক আছে। তবে মনে রেখো ফেরার পথে আমি আসব বাঁ দিক দিয়ে আর তুমি ডান দিক দিয়ে।
দুবনা, ০৩ অক্টোবর ২০২৫
- তুমি কোন দিকে যাবে?
- জানই তো আমি বামপন্থী। আমি বাঁ দিকে যাবো।
- ঠিক আছে। তবে মনে রেখো ফেরার পথে আমি আসব বাঁ দিক দিয়ে আর তুমি ডান দিক দিয়ে।
দুবনা, ০৩ অক্টোবর ২০২৫
ন্যাংটো রাজা
জেলেনস্কি কৌতুকাভিনেতা। তাই এমনকি প্রেসিডেন্ট হলেও তার কথাবার্তায় কৌতুকের ছোঁয়া থাকবে সেটাই স্বাভাবিক। পশ্চিমা বিশ্বের বদৌলতে সেটা এখন ব্ল্যাক হিউমারে রূপান্তরিত হয়েছে।
ডঃ ইউনুস বললেন আওয়ামী লীগকে তো নিষিদ্ধ করিনি। এমনকি তাদের রেজিস্ট্রেশনও স্থগিত করা হয়নি। শুধু তাদের কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। কৌতুক হিসেবে এটা নেওয়াই যায়। তবে ভদ্রলোক কৌতুকাভিনেতা নন, তিনি শিক্ষিত, উচ্চ ডিগ্রিধারী, অধ্যাপক (শান্তিতে নোবেল পেতে এসব আবশ্যক নয়)। তারপরেও এধরণের ইন্টারভিউ তাকে খেলো করে বলেই ধারণা। এটা শুধু ব্যক্তি ইউনুসকে নয় বাংলাদেশকেও বিশ্বের সামনে ছোট করে।
কেউ ছবি তোলা শেখার জন্য এলে অনেকেই বলে - যদি পাশের বাড়ির কুকুর তোমার ছবি দেখে লেজ নাড়তে শুরু করে তা দেখে ভাবার কারণ নেই যে তুমি খুব ভালো ছবি তুলেছ। যদি কেউ ৫, ১০ বা ৫০ বছর দেশ চালানোর জন্য ডঃ ইউনুসের কাছে বায়না ধরে তারপরেও ভাবার কারণ নেই যে দেশ ভালভাবে চলছে। তবে মাত্রা জ্ঞান ব্যাপারটা জন্মগত। কারো সেটা থাকে, কারো থাকে না।
দুবনা, ০৩ অক্টোবর ২০২৫
ডঃ ইউনুস বললেন আওয়ামী লীগকে তো নিষিদ্ধ করিনি। এমনকি তাদের রেজিস্ট্রেশনও স্থগিত করা হয়নি। শুধু তাদের কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। কৌতুক হিসেবে এটা নেওয়াই যায়। তবে ভদ্রলোক কৌতুকাভিনেতা নন, তিনি শিক্ষিত, উচ্চ ডিগ্রিধারী, অধ্যাপক (শান্তিতে নোবেল পেতে এসব আবশ্যক নয়)। তারপরেও এধরণের ইন্টারভিউ তাকে খেলো করে বলেই ধারণা। এটা শুধু ব্যক্তি ইউনুসকে নয় বাংলাদেশকেও বিশ্বের সামনে ছোট করে।
কেউ ছবি তোলা শেখার জন্য এলে অনেকেই বলে - যদি পাশের বাড়ির কুকুর তোমার ছবি দেখে লেজ নাড়তে শুরু করে তা দেখে ভাবার কারণ নেই যে তুমি খুব ভালো ছবি তুলেছ। যদি কেউ ৫, ১০ বা ৫০ বছর দেশ চালানোর জন্য ডঃ ইউনুসের কাছে বায়না ধরে তারপরেও ভাবার কারণ নেই যে দেশ ভালভাবে চলছে। তবে মাত্রা জ্ঞান ব্যাপারটা জন্মগত। কারো সেটা থাকে, কারো থাকে না।
দুবনা, ০৩ অক্টোবর ২০২৫
Sunday, September 28, 2025
ব্যর্থতা
কিছু দিন আগেও পাকিস্তানকে অনেকেই ব্যর্থ রাষ্ট্র হিসেবে বর্ণনা করত। আর তার মূল কারণ ছিল অর্থনৈতিকভাবে পরনির্ভরশীলতা আর আইন শৃঙ্খলার বিপর্যয়। কিন্তু যখন কেউ এসে লাইনের শেষে দাঁড়ায় আগের লোকটি আর শেষ ব্যক্তি থাকে না। গত একবছরের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশের অর্থনীতির হালচাল, আইন শৃঙ্খলার অবনতি ও এই মুহুর্তে খাগড়াছড়িতে শান্তিপ্রিয় পাহাড়ী মানুষের বাড়িঘরে অগ্নিকাণ্ড দেখে মনে হয় রাষ্ট্র হিসেবে ব্যর্থতায় আমরা পাকিস্তানকে হারিয়ে দিয়েছি। সাধারণ মানুষের জানমাল রক্ষা করার মৌলিক দায়িত্ব পালনে রাষ্ট্রের ব্যর্থতা রাষ্ট্রকেই ব্যর্থ করেছে। নিজের সাফল্য নয়, ছোট ভাইয়ের ব্যর্থতার কাঁধে চড়ে পাকিস্তান আবার সমাজে মুখ দেখাতে পারছে।
মস্কো, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
সাম্য
আইন ভালো না মন্দ তারচেয়েও বেশী জরুরী আইনের সুষম প্রয়োগ মানে এমন ভাবে প্রয়োগ যাতে আইনের চোখে সবাই সমান এই নীতির লঙ্ঘন না হয়। সম্পদের সুষম বন্টন (অবশ্যই কাজের ভিত্তিতে যাতে একই রকম কাজের জন্য দুই জন দুই রকমের ফল না পায়) যেমন সামাজিক শান্তি শৃঙ্খলার জন্য জরুরী ঠিক তেমনি জরুরী আইনের সুষম প্রয়োগ। সেটা হয় না বলেই সমাজে বিভিন্ন রকমের দুর্নীতির আবির্ভাব ঘটে।
মস্কোর পথে, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
Saturday, September 27, 2025
আক্ষেপ
গতকাল সিডনি থেকে ভ্রমর ফোন করল। অনেক দিন পরে কথা হল ওর সাথে। সামনে যেহেতু পূজা তাই জিজ্ঞেস করল মস্কোয় পূজা হয় কিনা, হলে কয়টা।
আমাদের সবে ধন নীলমণি একটা মাত্র পূজা। ঠাকুর দেবতায় ভক্তি না থাকলেও দুগ্গা মাকে একটা থ্যাঙ্কু বলতেই হয়। ওনার সৌজন্যেই অনেক পুরানো বন্ধুদের সাথে দেখা হয়। জিজ্ঞেস করলাম ওদের ওখানে পূজা কয়টা?
এবার সিডনিতে ২৬ (!) টা পূজা।
বলিস কি?
হ্যাঁ, শুরু হয়েছিল একটা দিয়ে। এরপরে বিভিন্ন প্রশ্নে প্রায়ই মনোমালিন্য, দলাদলি। ফলে প্রতি বছর পূজার সংখ্যা বেড়েই চলছে।
ঠাকুর দেবতারাও আজকাল মনে হয় রাজনীতি শুরু করেছে। এযে একেবারে ডিভাইড এন্ড রুল। ইংরেজরা শুধু রাজনীতিবিদদের মধ্যেই নয়, ঠাকুর দেবতার মধ্যেও ডিভাইড এন্ড রুল ঢুকিয়ে দিয়েছে। যত দলাদলি তত পূজা মণ্ডপ, যত মণ্ডপ তত প্রসাদের ছড়াছড়ি। মানুষ তো মানুষ হোল না, আজকাল দেখছি ঠাকুর দেবতারাও মানুষ হতে পারছে না।
দুবনা, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
Wednesday, September 24, 2025
কথা
গতকাল থেকে ফেসবুকে ও দু একটা গ্রুপে শেয়ার করা একটি ভিডিও দৃষ্টি আকর্ষণ করল। সেখানে বাহাত্তরের সংবিধানকে আওয়ামী লীগের সংবিধান হিসেবে উল্লখে করা হয়েছে এই যুক্তিতে যে সংবিধান গ্রহণে জনগণের অংশগ্রহণ ছিল না। কথাটা উড়িয়ে দেয়া যায় না এ কারণে যে সংবিধান কোন গণ ভোটে গৃহীত হয়নি। তবে এই যুক্তিতেই বিভিন্ন ধর্ম গ্রন্থ, গণতন্ত্র, মার্ক্সবাদ এসব নিয়েও প্রশ্ন তোলা যায়, কারণ এর কোনটাই জনগণকে জিজ্ঞেস করে লেখা হয়নি। কোন বামপন্থী রাজনৈতিক কর্মী তাই যখন সংবিধান নিয়ে এই প্রশ্ন তোলে তার মার্ক্সবাদ লেনিনবাদ নিয়েও একই প্রশ্ন করা উচিৎ। বিশেষ করে কেউ যখন সিপিবির মত রাজনৈতিক দলের নেতৃস্থানীয় কেউ হয় তাকে সস্তা জনপ্রিয়তা থেকে দূরে সরে থাকতে হয়, কোন কথা বলার আগে তার রাজনৈতিক ব্যবহার বা অপব্যবহার নিয়ে ভাবতে হয়। আশা করি নতুন দায়িত্ব তাকে কথার গুরুত্ব নিয়ে ভাবতে শেখাবে।
দুবনা, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
দুবনা, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
Sunday, September 21, 2025
গণতন্ত্র
মালদোভায় নির্বাচন হচ্ছে। ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট মায়া সান্দো ক্ষমতা নিশ্চিত করার জন্য বিরোধী দল ও নেতাদের বিভিন্ন অভিযোগে গ্রেফতার করছে। তবে এই গ্রেফতারের শিকার হচ্ছে মূলত রুশ বা রুশপন্থী লোকজন। এ কারণে এসব কাজ পশ্চিমা বিশ্বের আশির্বাদপুষ্ট। এই নির্বাচনে সান্দোকে জিতিয়ে আনার জন্য একের পর এক গণতান্ত্রিক বিগ্রেড নামছে কিশিনেভে। কথায় বলে যে পয়সা দেয় নাচের বায়নাও সেই দেয়। বিশ্ব রাজনীতির ক্ষেত্রে যারা মিডিয়া ও বিশ্ব বাজার নিয়ন্ত্রণ করে তারাই গণতন্ত্রের সংজ্ঞা নির্ধারণ করে।
মস্কোর পথে, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
Saturday, September 20, 2025
না বোঝার বোঝা
ছাত্রজীবনে আমার এক বন্ধু মেট্রো থেকে নেমে বলল এক মেয়েকে চোখ মেরেছে। ওর চোখের কালো চশমা দেখিয়ে জিজ্ঞেস করলাম
- তুই যে কালো চশমার পেছনে বসে চোখ মারলি তাতে কী লাভ হল?
- তুই এসব বুঝবি না।
আজ আপাদমস্তক কাপড়ে ঢাকা এক মহিলা দেখলাম নারী স্বাধীনতার বিরুদ্ধে জ্বালাময়ী বক্তব্য রাখছে। তবে যে ব্যাপারটা আমার দৃষ্টি আকর্ষণ করল তা হল তার চোখের চশমা। তার বোরকার চোখের ওখানেও কোন ছিদ্র ছিল না। তাই আমার ধারণা চোখে চশমা থাকা না থাকা এখানে সমান। উল্টা চশমাটি মুখের স্বাভাবিক গঠনকে বিকৃত করছিল। তাই মনে প্রশ্ন জাগল চশমার কি আদৌ কোন দরকার ছিল? তবে আমার ধারণা এসব আমি বুঝব না।
দুবনা, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
রাজনীতি
এমনকি সবচেয়ে বড় কোম্পানির সিইও দিনের শেষে অন্যের অধীনস্থ। তবে সিইও যদি নিজের যোগ্যতায় সেই পদে অধিষ্ঠিত হয়ে থাকেন তবে অন্যের অধীনস্থ হওয়ার পরও তিনি অনেক বেশি স্বাধীন। কারণ এখানে না হলেও অন্য কোথাও তিনি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করবেনই। রাজনীতির ক্ষেত্রেও তাই। যদি জনসমর্থন না থাকে পেছনে যত বড় শক্তিই থাকুক না কেন আপনি স্বাধীন না, বড়জোর করদ রাজ্যের জমিদার। আর জনসমর্থন থাকলে, জনগণ আপনাকে বিশ্বাস করলে তারাই আপনাকে ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনবে। ইউরোপে এখন জনসমর্থনের অভাব খুব প্রকট। আমরাও খুব একটা পিছিয়ে নেই। জনসমর্থন রাজনীতি ক্ষেত্রে পায়ের নীচে মাটির মত। যে নেতার সেট নেই দেশবাসীর নয়, কোন গোষ্ঠী বা বিদেশী স্পন্সরের স্বার্থ রক্ষা করাই হয় তার অন্যতম প্রধান দায়িত্ব।
দুবনা, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
Thursday, September 18, 2025
ভ্রম
সারাহ অসুস্থ। মাইশা তাকে নিয়ে গেছে ডাক্তারের কাছে। সারাহকে ডাক্তারের কেবিনে পৌঁছে দিয়ে বাইরে অপেক্ষা করছে মাইশা। খুব টেনশন ফিল করছে। শেষ পর্যন্ত সারাহ বেরুবে ডাক্তারের কেবিন থেকে।
কি বলল ডাক্তার? কি হয়েছে?- উদগ্রীব হয়ে জিজ্ঞেস করে মাইশা।
আর বল না। এতকাল আমরা যেটাকে অর্গাজম ভাবতাম সেটা আসলে ছিল হাঁপানি!- টিপ্পনী কাটে সারাহ।
রুশ এই চুটকি মনে পড়ল বাংলাদেশের বামপন্থী নেতাদের অবস্থা দেখে। এতকাল আমরা যাদের আদর্শবান ও জনদরদী বামপন্থী নেতা ও সমাজতন্ত্রের একনিষ্ঠ সৈনিক বলে মনে করতাম এরা আসলে জর্জ সোরসের বেতনভূক রাজনৈতিক কর্মচারী। আর সোরস ও জনগণ এরা বিপরীত মেরুর বাসিন্দা। বাম রাজনীতিও নষ্টদের হাতে চলে গেছে।
দুবনা, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
Monday, September 15, 2025
অল ইনক্লুসিভ
রাশিয়ার ট্যুর এজেন্সিগুলো অল ইনক্লুসিভ প্যাকেজ বিক্রি করে। তাতে টিকেট, হোটেল, খাবার দাবার সব থাকে। ইনক্লুসিভ বাংলাদেশ শুনলে আমার দাবারের কথা মনে হয়। আমাদের এলাকায় দাবায মানে তাড়ানো। এখন তো সবাইকে দৌড়ের উপরে রাখা আর মব দিয়ে হেনস্থা করাই বাংলাদেশের আসল রূপ।
মস্কো, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
Friday, September 12, 2025
অঘটন
অনেকেই বলছে ডাকসু নির্বাচন সংসদ নির্বাচনের রিহারসেল। জাতীয় নির্বাচনে কেউই জামাতকে তেমন পাত্তা দিতে রাজি নয়। তবে ডাকসু নির্বাচন প্রমাণ করল - বিষয়টি এত সোজা নয়। বেশ কয়েক মাস আগে লিখেছিলাম যে বিএনপিকে ঠেকাতে আওয়ামী লীগ জামাতকে ভোট দিতে পারে। কারচুপির পরেও এবার শিবিরের প্রাপ্ত ভোট দেখে মনে হয় তারা ছাত্র লীগের সমর্থকদের অনেকের ভোটই পেয়েছে। এ জন্যে তাদের গালিগালাজ করাই যায়, তবে বিএনপি বা অন্যেরা কিন্তু আওয়ামী লীগ বা ছাত্র লীগের ভোট পাওয়ার জন্য কিছুই করেনি, বরং যত দূর সম্ভব তাদের দূরে সরিয়েছে। "বাবু যত বলে পারিষদ-দলে বলে তার শতগুন।" ঠিক একই ভাবে অন্তত প্রকাশ্যে জামাত শিবির আওয়ামী লীগকে যত না গালি দিয়েছে তারচেয়ে বেশি দিয়েছে বিএনপি আর বামেরা। এসব যদি চলে তাহলে জাতীয় নির্বাচনে এ ধরণের অঘটন ঘটা অসম্ভব কিছু নয়।
দুবনা, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
দুবনা, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
Thursday, September 11, 2025
ধিক!
রাশিয়ায় বলে "এর সাথে গুপ্তচরবৃত্তিতে যাওয়া যায়।" এর অর্থ দাঁড়াচ্ছে সেই লোককে নির্দ্বিধায় বিশ্বাস করা যায়। কারণ গুপ্তচরবৃত্তি খুবই রিস্কি ব্যাপার। এর মধ্য দিয়ে এরা কারো প্রতি নিজেদের মনোভাব প্রকাশ করে। ডাকসু নির্বাচনে এক ভিপি প্রার্থীর মাত্র ১১ ভোট পাওয়ার খবর শুনে আমার এটাই মনে হল "এদের সাথে গুপ্তচরবৃত্তিতে যাওয়া যায় না।" কারণ একটা প্যানেল থেকে নির্বাচন করা মানে প্যানেলের সবাই একে অন্যের পাশে দাঁড়াবে এই বিশ্বাস থাকা, না থাকলে লড়াই করবে কোন সাহসে, কোন আবেগে? আচ্ছা যিনি ১১ ভোট পেলেন তিনি কি তার প্যানেলের সবার ভোটও পাননি? এই ঐক্য নিয়ে কেউ লড়াই করতে নামে? কোথায় যাচ্ছে রাজনীতি? এরপরেও আমরা শিবিরের বিজয়ে মন খারাপ করব? ধিক! শত ধিক!
দুবনা, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
দুবনা, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
Wednesday, September 10, 2025
রক্ত
যে কারণই দেখানো হোক না কেন দিনের শেষে জিন্নাহ পাকিস্তান চেয়েছিলেন একান্তই নিজের ক্ষমতায়নের জন্য আর সেটা করেছিলেন গণতন্ত্রকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে। ভারতীয় মুসলমানদের জন্য একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের কথা বলে পাকিস্তানের জন্ম হলেও জিন্নাহ তাঁর নিজের মত করেই সেখানে শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছেন আর এই অঞ্চলের কারোও মাতৃভাষা না হওয়া সত্ত্বেও উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করেছেন। অধিকাংশ মানুষের মতামত উপেক্ষা করা আর যেকোনো কৌশলে ক্ষমতা অধিগ্রহণ করা এটা পাকিস্তানের জন্ম সূত্র। কী পাকিস্তানের কী বাংলাদেশের - দুই দেশের এলিট শ্রেণী এই মন্ত্রে দীক্ষিত। এসব দেশে তাই বারবার সামরিক শাসন বা বেসামরিক শাসকদের স্বৈরাচারী ব্যবহার অস্বাভাবিক কিছু নয়। সমস্যা শিক্ষিত, অশিক্ষিত, নোবেলজয়ী বা নোবেল প্রত্যাশী শাসকে নয়, স্বৈরাচার আসলে এই অঞ্চলের শাসকদের রক্তের মধ্যে নিহিত।
দুবনা, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
Monday, September 8, 2025
শান্তির জন্যে লড়াই
মহামায়া কংসকে উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন
তোমারে বধিবে যে গোকুলে বাড়িছে সেআসলে সবকিছুর মৃত্যু তার ভেতরেই অন্তর্নিহিত। জাভেদ আখতারের আমন্ত্রণ বাতিল করল তারাই যাদের উচিত ছিল তাঁর পাশে দাঁড়ানোর, দাঁড়িয়ে মৌলবাদকে প্রতিহত করার। সারা বিশ্বে মৌলবাদের উত্থান হচ্ছে উদারপন্থীদের হাত ধরেই। এভাবে চলতে থাকলে এমন সময় আসবে যখন উদারতার সুযোগ নিয়ে বেড়ে ওঠা মৌলবাদ এদের কচুকাটা করবে। এমন উদাহরণ পৃথিবীতে বিরল নয়। ন্যায় বিচার মানেই উদারতা নয়, ন্যায় বিচার মানে কর্ম অনুযায়ী সঠিক পুরস্কার দেয়া বা তিরস্কার করা। আবেগের বসে তিরস্কার করতে ভুলে গেলে একদিন এমন শাসনের মুখোমুখি হতে হবে যা নরককেও হার মানায়। শান্তি কারোও দয়ার দান নয়। শান্তির জন্যে লড়াই করতে হয়।
মস্কো, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
Saturday, September 6, 2025
যুদ্ধ মন্ত্রণালয়
আমাদের বাসা থেকে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় মিনিট কুড়ির হাঁটা পথ। আমি আর সেভা প্রায়ই ওদিকটায় হাঁটতে যাই। কখনো গভীর রাতে রাতের মস্কোর ছবি তুলতে। এখান থেকে পার্ক কুলতুরি, ক্রেমলিন, ক্রাইস্ট দ্য স্যাভোয়ার চার্চ বেশ ভালো দেখা যায়। আবার আসি গ্রীষ্মের ভোর ৪.৩০ এর দিকে সূর্যোদয়ের ছবি তুলতে। এর পাশে এলেই সেভা বলে আক্রমণ মন্ত্রণালয়।
খবরে দেখলাম ট্রাম্প আমেরিকার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের নাম বদলিয়ে যুদ্ধ মন্ত্রণালয় রাখছেন। তাই মনে পড়ল- আমারও তো এসব ছিল মনে, কেমনে ব্যাটা পারল সেটা জানতে?
দুবনা, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
Friday, September 5, 2025
মোনাফেকি
আমাদের দেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা আমরা অন্যকে বদলাতে চাই কিন্তু নিজেকে বদলাই না। এমনকি বদলাতে চাইও না। আমরা চাই ভারতে ধর্মনিরপেক্ষতা বহাল থাকুক, সেদেশের সংখ্যালঘুদের অধিকার সুরক্ষিত থাকুক কিন্তু নিজের দেশে সেটা চাই না। আমরা পশ্চিমা বিশ্বের সব রকমের সুযোগ সুবিধা নিতে চাই, কিন্তু নিজের দেশকে পশ্চিমা বিশ্বের মত করে গড়ে তুলতে চাই না যেখানে সব নাগরিককে তার অধিকারের নিশ্চয়তা দেয়া হবে। আমরা চাই সরকার গণতান্ত্রিক নীতিতে চলুক কিন্তু একবার ক্ষমতায় গেলে নিজে আরও বেশি করে স্বৈরাচারী হই। ফলে আমাদের ঘোষিত লক্ষ্য আদর্শ কখনোই বাস্তবায়িত হয় না, কারণ আমাদের মন আর মুখের মধ্যে যোজন যোজন দূরত্ব। বছর খানেক আগেও দেশে জনপ্রিয় স্লোগান ছিল দেশটা কারোও বাপের না বা দেশটা কারোও স্বামীর না। মানুষ ভেবেছিল তাহলে নিশ্চয়ই দেশটা সবার। এখন দেখা যাচ্ছে দেশটা আসলে কয়েক জন লোকের। মোনাফেকি - এটাই বাংলাদেশের রাজনীতির অন্তর্নিহিত তাৎপর্য।
দুবনা, ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
দুবনা, ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
Thursday, September 4, 2025
বেলে কাক
অনেকেই বলেন সেনাবাহিনীর ক্ষমতা নেবার কথা। গত বছর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ক্ষমতা নেবার পরে দেশে যে সার্বিক অরাজকতা সৃষ্টি হয় তাতে মনে হয়েছিল সেনাশাসন একটা অপশন হতে পারে। কিন্তু গত এক বছরে তাদের নির্লিপ্ততা অথবা নীরব সমর্থনে দেশ থেকে যেভাবে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি মুছে দেয়া হল, যেভাবে রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে ধূলিসাৎ করা হল তাতে এই সেনাবাহিনী ক্ষমতা নিলেই কি আর না নিলেই কি? যারা মবের হাত থেকে দেশ রক্ষা করতে পারে না তারা জনগণকে রক্ষা করবে কীভাবে? বেল পাকলে কাকের কী? তবে আমার কিন্তু মনে হয় দেশে সেনাশাসনই চলছে। তারা পেছন থেকে দেশটাকে ফাঁকা করে ফেলছে শিখণ্ডী হিসেবে সমন্বয়কদের সামনে বসিয়ে। কিন্তু কেউ এদের বিরুদ্ধে বললে ঠিকই মানুষর মুখ বন্ধ করে দিচ্ছে, হত্যা করছে সাধারণ ছাত্র আর শ্রমিকদের। ধরি মাছ, না ছুঁই পানি। এক অভূতপূর্ব সেনাশাসন।
দুবনা, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
দুবনা, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
Monday, September 1, 2025
আস্তিক
আজ ১ সেপ্টেম্বর, রাশিয়ায় জ্ঞান দিবস। আজ থেকে শুরু হল নতুন শিক্ষা বছর। লাখ লাখ ছেলেমেয়ে জীবনে প্রথম বারের মত স্কুলে গেল। আমারও ক্লাস শুরু হল। তৃতীয় বর্ষের ছাত্রদের সাথে আজই প্রথম পরিচয়। ক্লাস শেষে জিজ্ঞেস করলাম
তোমরা সবাই আস্তিক মনে হচ্ছে?
কেন আপনি এমন ভাবছেন?
কোন প্রশ্ন করছ না, যা বলছি শুনছ আর লিখে যাচ্ছ?
এর সাথে আস্তিকতার সম্পর্ক ঠিক বুঝলাম না।
ওরা সব বিশ্বাস করে, প্রশ্ন করে না। প্রশ্ন বিজ্ঞানের জীবনীশক্তি। প্রশ্ন না করলে তো বিজ্ঞান হবে না।
খুব সুক্ষ আপনার রিমার্ক।
কী আর করা? দেখছ না আমি কেমন হালকা পাতলা?
ভালো লাগে যখন ছাত্র-ছাত্রীদের সেন্স অব হিউমার সাহারা না হয়।
মস্কো, ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
Sunday, August 31, 2025
শাসন শোষণ
দিন দিন শাসন শোষণে পরিনত হচ্ছে। বাইরে থেকে সেরকম মনে না হলেও শাসক দল সব দেশেই দিন দিন শোষক হয়ে যাচ্ছে। এর কারণ রাজনীতির বানিজ্যিকরণ। অর্থ আর ক্ষমতা মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ। অর্থ ক্ষমতায় আরোহণের পথ সহজ করে আর ক্ষমতা অর্থ উপার্জন মসৃণ করে। বিপুল পরিমাণ অর্থ শোষণ ছাড়া স্বচ্ছন্দে দম নিতে পারে না কারণ শোষণ অগাধ ও অবাধ উপার্জনের জন্য অক্সিজেন স্বরূপ। সেই বিবেচনায় সমাজতন্ত্র হল একদলীয় শোষণ আর গণতন্ত্র - বহুদলীয় শোষণ। সমাজতন্ত্রে দ্রব্যমূল্য ও দৈনন্দিন জীবনের মত শোষণেও এক ধরনের স্থিতিশীলতা আছে, বাজার অর্থনীতিতে সব কিছুর মত শোষণও অস্থির, ক্রমাগত ঊর্ধ্বমুখী।
মস্কোর পথে, ৩১ আগস্ট ২০২৫
Saturday, August 30, 2025
স্বৈরাচার
স্বৈরাচার বা রাজাকার না হয়েও যে বাংলাদেশী হওয়া যায় সেটা আমরা দিন দিন ভুলে যাচ্ছি আর সেই ভুলের সুযোগ নিয়ে একসময় মানুষ যেমন স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে ভয় পেয়েছে আজ তেমনি তারা রাজাকারদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে ভয় পাচ্ছে। তারা ভুলে যায় যে স্বৈরাচার শুধু স্বৈরাচারই, কিন্তু রাজাকার শুধু রাজাকারই নয় সে একই সাথে স্বৈরাচার আর সে স্বৈরাচার যাকে বলে বাই ডেফিনিশন।
দুবনা, ৩০ আগস্ট ২০২৫
Friday, August 29, 2025
সত্য মিথ্যা
শুধু সত্য বললেই সত্যবাদী হওয়া যায় না, সত্যবাদী হতেই হলে মিথ্যার প্রতিবাদ করতে হয়, মিথ্যা প্রতিরোধ করতে হয়। বাংলাদেশের অনেক বামপন্থী নেতা মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে সত্য কথা বলে কিন্তু আজ যখন মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে মিথ্যা বয়ান তৈরি হয় তখন সেটা পাশ কাটিয়ে যায়। মিথ্যাকে প্রশ্রয় দেয়া মিথ্যা বলার সমতুল্য।
দুবনা, ২৯ আগস্ট ২০২৫
দুবনা, ২৯ আগস্ট ২০২৫
মূল্যায়ন
রাজা মহান, শুধু উজির নাজির আর চাটুকারদের দেয়াল অতিক্রম করে প্রজাদের আহাজারি রাজার কানে পৌঁছে না। তাই ন্যায় পরায়ণ ও সততার প্রতিভূ রাজা সাধারণ মানুষের জন্য কিছু করতে পারেন না। এই ধারণা আমাদের দেশের জনগণের একটি অংশের মধ্যে বদ্ধমূল। বিগত সরকারের আমলে এমনটা বলতে শুনেছি অনেককেই। এখনও ব্যতিক্রম নয়। বরং বিদেশি পুরস্কার, ডিগ্রি ইত্যাদির ফলে জনমনে বর্তমান শাসকরা এক বিশেষ অবস্থান দখল করে আছে। যতদিন শাসকদের মূল্যায়ন হবে তাদের ধর্মীয় আইডেনটিটি, ডিগ্রি, আরব বা পশ্চিমা বিশ্বের নেতাদের কাছে গ্রহণযোগ্যতা দিয়ে, দেশ শাসনে তাদের যোগ্যতা ও দক্ষতা যতদিন না মূল্যায়নের প্রধান মাপকাঠি হবে ততদিন পর্যন্ত হায়েনার হাত থেকে লাল সবুজ পতাকা উদ্ধারের সম্ভাবনা ক্ষীণ।
দুবনা, ২৯ আগস্ট ২০২৫
Thursday, August 28, 2025
রাঁধুনি
রুশরা বলে যদি তুমি রান্না করতে না পার তবে রান্নায় খুব করে লবন দিয়ে দাও। তাহলে রাঁধতে পার না বলে কেউ তোমার দুর্নাম করবে না, বলবে লবণটা ঠিক হলে খাবারটা বেশ সুস্বাদুই হত। আমাদের শান্তিপ্রিয় উপদেষ্টা মনে হয় ভালো ভাবেই জানেন দেশ চালানো তার পক্ষে সম্ভব নয়। কিন্তু সেটার দায় কেন তিনি নেবেন? তাই মব দিয়ে সবাইকে ঠ্যাঙান। লোকজন মবের দোষ দেয় কিন্তু দেশ চালাতে উপদেষ্টার ব্যর্থতার কথা ভুলেও মুখে আনে না। বর্গী বা মগদের দোষ দিলেও কেউ যেমন এদের রাজাদের কথা ঘুণাক্ষরেও বলে না, তেমনি একদিন এই সময়টা ইতিহাসে মবের মুল্লুক বলেই পরিচিতি পাবে, কেউ ঘুণাক্ষরেও শান্তির মুদি দোকানের মালিকের নাম বলবে না।
দুবনা, ২৮ আগস্ট ২০২৫
দুবনা, ২৮ আগস্ট ২০২৫
বানর
দেশে বলে বানরকে লাই দিলে মাথায় ওঠে। ইউরোপে বানর নেই তাই এদের মনে হয় এই প্রবাদটি জানা নেই। পোল্যান্ডের নতুন প্রেসিডেন্ট ইউক্রেনের শরণার্থীদের উপর খড়গহস্ত। এই শরণার্থীরা পোল্যান্ডের নাগরিকদের চেয়ে বেশি সুযোগ সুবিধা পায়। তিনি বলেছেন এখন থেকে সেটা শুধু পোল্যান্ডে কর্মরত ইউক্রেন শরণার্থীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। এছাড়া তিনি বান্দেরার প্রতীককে হিটলারের প্রতীকের সাথে এক করেছেন এবং পোল্যান্ডে বান্দেরার প্রতীক নিষিদ্ধ করেছেন। ইউক্রেন এতে যারপরনাই চটে গেছে এবং এর বিরদ্ধে ব্যবস্থা নেবার হুমকি দিয়েছে। বানর সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান থাকলে পোল্যান্ড অবশ্যই ইউক্রেনের ফ্যাসিবাদী সরকারকে নিঃশর্ত ভাবে সমর্থন দেবার মত ভুলগুলো করত না।
দুবনা, ২৮ আগস্ট ২০২৫
Wednesday, August 27, 2025
ইতিহাস
বিএনপির সামনে এক সুবর্ণ সুযোগ ছিল বিগত দিনের সমস্ত পাপ স্খলন করে নিজেকে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি হিসেবে প্রমাণ করার। মেজর জিয়াকে মুক্তিযুদ্ধের ঘোষক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার জন্য হাজারো চেষ্টা করলেও আজ অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমানের পাশে না দাঁড়িয়ে বিএনপি সেই সুযোগ হাতছাড়া করল। আওয়ামী লীগ যেমন শাহবাগে ছাত্র জনতার পরিবর্তে হেফাজতকে বেছে নিয়ে নিজের পায়ে কুড়ুল মেরেছিল বিএনপিও তেমনি মবের পক্ষ নিয়ে ঠিক একই কাজ করল। ইতিহাস কাউকে কিছু শেখায় না, ইতিহাস অশিক্ষিতদের আস্তাকুরে ছুঁড়ে ফেলে দেয়।
দুবনা, ২৭ আগস্ট ২০২৫
দুবনা, ২৭ আগস্ট ২০২৫
যুদ্ধবাজ
জর্জিয়ার সরকারি দলের মুখপাত্র জানিয়েছেন যে ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হবার সময় ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন তাদের বলেছিল রাশিয়ার বিরুদ্ধে দ্বিতীয় ফ্রন্ট খোলার জন্য। সেই যুদ্ধে তারা জর্জিয়াকে সমস্ত ধরণের সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছিল। এর আগে সাকাশভিলি সেই ফাঁদে পা দিয়ে আবখিজিয়া ও অসেতিয়া হারিয়েছিল। নতুন নেতৃত্ব বুঝেছিল যে ইউরোপ জর্জিয়ার জনগণের স্বার্থের কথা ভাবছে না, ভাবছে রাশিয়ার প্রাকৃতিক সম্পদ হস্তগত করার কথা আর জর্জিয়াকে ব্যবহার করছে টোপ হিসেবে। ইউক্রেনের নেতৃত্ব সেই টোপ গিলে আজ দেশ হারাচ্ছে আর ইউরোপ সময় মত বড়শি ছাড়তে না পেরে নিজেই নদীতে পড়ে হাবুডুবু খাচ্ছে। যেমন কর্ম তেমন ফল।
দুবনা, ২৭ আগস্ট ২০২৫
দুবনা, ২৭ আগস্ট ২০২৫
Monday, August 25, 2025
প্রশ্ন
বেশ কয়েক বছর আগে। লতিফ সিদ্দিকী নিউ ইয়র্কে কিছু সত্য কথা বলে ফেঁসে যান। আওয়ামী লীগ তখন তাঁর পাশে দাঁড়ায়নি। নিয়তির কি নির্মম পরিহাস, এখন তিনি আওয়ামী লীগের পাশে দাঁড়াচ্ছেন। গত বছর জুলাই বিপ্লবের পর থেকে যে মানুষটি একাত্তরের পক্ষে, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে প্রকাশ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন - তিনি অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান। নিজেদের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি হিসেবে ও মেজর জিয়াকে স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে দাবি করা বিএনপি তাঁর পাশে দাঁড়াবে কি নাকি শেখ হাসিনার মতই মৌলবাদী শক্তির কাছে মাথা নত করে নিজেদের দায় সারবে। মানুষ ফজলুর রহমানকে মনে রাখবে।
দুবনা, ২৫ আগস্ট ২০২৫
দুবনা, ২৫ আগস্ট ২০২৫
Sunday, August 24, 2025
জীবন মরণের সীমানায়
পারস্পরিক বোঝাপড়ার ভিত্তিতে যদি জীবনের সাথে শান্তিপূর্ণভাবে সংসার করা নাই যায় তবে তার সাথে বিবাহ বিচ্ছেদ করে মরণের সাথে সংসার করা শ্রেয় নয় কি? তবে জীবন মানেই অনেক অজানা তাই তার সমাধান খুবই জটিল, বিশেষ করে জীবনের পাট চুকিয়ে দিয়ে। কারণ এতে মরে বেঁচে গেলেও যারা বেঁচে থাকে তাদের বারবার মরতে হয়।
দুবনা, ২৪ আগস্ট ২০২৫
Friday, August 22, 2025
একজন বিভুরঞ্জন সরকার
সকাল থেকেই বিভুরঞ্জন সরকারের নিখোঁজ হওয়া নিয়ে একের পর এক খবর পড়ছিলাম। পরে ওনার খোলা চিঠি যাকে তিনি শেষ লেখা বলে উল্লেখ করেছেন পড়ে একজন সৎ মানুষের জন্য বাংলাদেশ নামক ভূখণ্ড যে কী বিশাল পরীক্ষা সেটা জানলাম। তখনও আশা ছিল হয়তো তিনি ফিরে আসবেন। তবে কিছুক্ষণ আগে জানা গেল তার মৃতদেহ উদ্ধারের কথা। সত্যিই অবাক করা এক সমাজ আমাদের। তিনি ছাত্র ইউনিয়নের সাথে জড়িত ছিলেন, একতায় লিখেছেন, যদি ভুল না করি সিপিবির সাথেও জড়িত ছিলেন। বিভিন্ন সময় দেশের রাজনীতির উপর তার বস্তুনিষ্ঠ লেখা পড়তাম। দেশে যখন সব ক্ষেত্রেই মেধার খরা তখন তার এভাবে চলে যাওয়া এক অপুরনীয় ক্ষতি। তার এভাবে চলে যাওয়া আমাদের বুদ্ধির দীনতা শুধু নয় সার্বিক দীনতার পারিচায়ক। একজন প্রথম সারির সাংবাদিক, অসাম্প্রদায়িক, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের অকুতভয় একজন সক্রিয় সাংবাদিক জীবনের কাছে পরাজিত হয়ে আত্মহত্যা (?) করবেন - সেটা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি তো বটেই, গোটা বুদ্ধিজীবে সমাজ তথা দেশের জন্য লজ্জাকর। আমরা কবে মাথা উঁচু করে কথা বলে এমন লোকদের সম্মান দিতে শিখব! কবে আমরা ধর্ম, বর্ণ, দলের ঊর্ধ্বে উঠে বাঙালি ও মানুষ হব! আপনাকে মনে থাকবে!
দুবনা, ২২ আগস্ট ২০২৫
দুবনা, ২২ আগস্ট ২০২৫
মাছ
রান্নার আগে লোকজন যে কেন খুব করে মাছ ধুয়ে নেয় সেটা কিছুতেই মাথায় ঢোকে না। এই যে মাছ জন্মের পর থেকেই আজীবন স্নান করে নিজেকে পরিষ্কার রাখল - মানুষের মাছ ধোয়া আসলে মাছের পরিচ্ছন্নতার প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শন।
দুবনা, ২২ আগস্ট ২০২৫
দুবনা, ২২ আগস্ট ২০২৫
Monday, August 18, 2025
পাগল
ট্রাম্প আর পুতিনের আলাস্কা সামিটের পর আলোচনা যেন শেষই হচ্ছে না। পশ্চিমা বিশ্ব উঠেপড়ে লেগেছে এটা বানচাল করার জন্য। জেলেনস্কি গোঁ ধরেছে সংবিধান রক্ষা করবেই। এ যেন সেই নন্দলালের অবস্থা। কেন? আচ্ছা সংবিধান যদি রক্ষা করতেই হয় তাহলে শুরুটা অনেক আগে থেকেই করা দরকার। এমনকি যদি ইউক্রেনের নিরপেক্ষতা এসব বাদও দেই তাহলে অন্তত জেলেনস্কি যে অনেক আগেই প্রেসিডেন্ট হিসেবে বেআইনি হয়ে গেছে সেটা তো নতুন কথা নয়। নাকি এটা সেই বাচ্ছাদের খেলার মত সুবিধামত সংবিধান মানা বা না মানা। আর ইউরোপের জনসমর্থনহীন এলিটরাও জেলেনস্কির সাথে সুর মিলিয়ে হুক্কা হুয়া করছে। কিন্তু এরা কি ভুলে গেছে জেলেনস্কির আর যাই থাক তার রাজনৈতিক প্রজ্ঞা বলতে কিছুই নেই, রাজনৈতিক দূরদৃষ্টি বলতে তার অভিধানে কোন শব্দ নেই। আছে শুধু ক্ষমতা আঁকড়ে থাকার অদম্য ইচ্ছে আর যুদ্ধকে ব্যবসায় পরিণত করে অনেক অনেক অর্থ উপার্জন করা যদিও কোন দিন সেটা ভোগ করতে পারবে কিনা সে নিজেও জানে না। আসলে পশ্চিমা বিশ্ব এখন কালেকটিভ ম্যাডনেসের শিকার। সবাই যেখানে পাগল সেখানে কে কার পাগলামি তাড়াবে।
দুবনা, ১৮ আগস্ট ২০২৫
দুবনা, ১৮ আগস্ট ২০২৫
Sunday, August 17, 2025
ইচ্ছা
মা বলতেন "আসা নিজের ইচ্ছায় আর যাওয়া পরের ইচ্ছায়।"
যখন কেউ বলে নিজের ইচ্ছায় ক্ষমতায় আসিনি জনগণের ইচ্ছায় এসেছি তখন মনে প্রশ্ন জাগে
ক্ষমতার ক্ষেত্রে মনে হয় উল্টোটা ঘটে অথবা যেসব ক্ষমতাসীন মানুষ এসব বলে তারা মায়ের পেটে জন্ম নেয়নি।
আচ্ছা এরা জনগণের ইচ্ছায় যাবে কি?
মস্কো, ১৭ আগস্ট ২০২৫
Friday, August 15, 2025
ঋণ
শোক শক্তি হয়ে বাংলার বুক থেকে মুছে দিক একাত্তর বিরোধী সব জঞ্জাল। এভাবেই জাতি শোধ করুক বঙ্গবন্ধুর রক্তের ঋণ।
মস্কোর পথে, ১৫ আগস্ট ২০২৫
Thursday, August 14, 2025
সাপসান
আজকের খবরে জানা গেল এফএসবে (রুশ কেজিবি) ও রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের যৌথ আক্রমণে ইউক্রেনের দূরপাল্লার মিসাইল তৈরির কারখানা ধ্বংস হয়েছে। পাভলোগ্রাদে অবস্থিত এই কারখানায় সাপসান নামক এক দূরপাল্লার মিসাইলের সিরিয়াল প্রডাকশন শুরু হবার পথে ছিল। সোভিয়েত নকশায় এই মিসাইল তৈরিতে আর্থিক ও প্রযুক্তিগত সাহায্য করে জার্মানি। ন্যাটোর বিভিন্ন দেশের বিশেষজ্ঞরা এর সাথে জড়িত ছিল। ৫০০-৭০০ কিলোমিটার দূরপাল্লার এই মিসাইল মস্কো সহ ইউরোপিয়ান রাশিয়ার এক বিরাট অংশে হামলা করতে সক্ষম। ধারণা করা হয় প্রযুক্তিগত দিকে সাপসান রুশ ইসকান্দারকে ছাড়িয়ে যেত। এই আক্রমণ ছিল গত জুনে ইউক্রেন কর্তৃক রাশিয়ার বিভিন্ন শহরে আক্রমণের প্রতিশোধ স্বরূপ। কন্সট্রাকশন ব্যুরো থেকে শুরু করে কারখানা, গোডাউন, রাসায়নিক ও জ্বালানি তরির কারখানা এসব আক্রমণ করা হয়। জুলাইয়ের শেষ দিক দিকে চালিত এই আক্রমণে বিভিন্ন বাহিনী একযোগে অংশগ্রহণ করে। এই আক্রমণের ফলে ইউক্রেনের রকেট প্রযুক্তি অনেক দিনের জন্য পিছিয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ট্রাম্পের সাথে সামিটের আগ এ ধরণের আঘাত রাশিয়ার জন্য বিরাট জয়। অনেক আগে পুতিন একবার বলেছিলেন - কুকুর ঘেউ ঘেউ করে কিন্তু কাফেলা এগিয়ে যায়। হ্যাঁ, ইউরোপিয়ানরা বিভিন্ন ভাবে এই যুদ্ধ বন্ধে বাধা দেবে কিন্তু রাশিয়া নিঃশব্দে ইউক্রেনকে অস্ত্রমুক্ত ও নাৎসি মুক্ত করবে বলেই মনে হয়।
দুবনা, ১৪ আগস্ট ২০২৫
দুবনা, ১৪ আগস্ট ২০২৫
বেগুনি নকশা
আমেরিকা ও বাংলাদেশ সম্পর্কের বড় সমস্যা দুই পক্ষের উদারতার অভাব।
দুই একটা পোর্ট, কিছু করিডোর, সামরিক ঘাঁটি ইত্যাদি ফকিন্নি মার্কা উপহার না চেয়ে বা না দিয়ে পুরো দেশটাকে আমেরিকার হাতে তুলে নিলেই বা দিলেই তো ল্যাঠা চুকে যায়। তাতে আমেরিকা বিনা বুলেটে ৫১ তম স্টেট পায় আর বাংলাদেশ অনেকগুলো সামাজিক স্তর বাইপাস করে এক লাফে উন্নত গণতন্ত্র ও পুঁজিবাদী রাষ্ট্রের মর্যাদা পায়। আমেরিকা পায় ১৮ কোটি শ্রমিক আর বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষ পায় বহুল প্রত্যাশিত আমেরিকার নাগরিকত্ব। ইউনুস সরকার এ ব্যাপারে গণভোট আয়োজন করতে পারে। এই নির্বাচনে তারা যে বিপুল ভোটে জয়ী হবে সে ব্যাপারে সন্দেহের অবকাশ নেই। তাতে এই সরকার নির্বাচন দিতে চায় না সেই বদনাম থেকেও মুক্তি পাবে আর আমেরিকা যে শুধু ভূরাজনৈতিক স্বার্থেই কোন দেশ রাজনীতিতে নাক গলায় না সে দেশের মানুষের ভরণপোষণের দায়িত্ব নেয় সেটাও প্রমাণিত হবে। সব মিলিয়ে যাকে বলে উইন উইন সিচুয়েশন।
দুবনা, ১৪ আগস্ট ২০২৫
Wednesday, August 13, 2025
যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা
আর মাত্র দুই দিন বাদে ট্রাম্প ও পুতিন আলাস্কায় সামিটে মিলিত হচ্ছেন। যদিও ঠান্ডা যুদ্ধের সময় সোভিয়েত মার্কিন আলোচনায় ইউরোপের স্থান ছিল না কিন্তু সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পরে রাশিয়া বিশ্ব রাজনীতিতে তার গুরুত্ব হারিয়ে ফেললে ইউরোপ সেই স্থান দখল করে এবং ইউনিপোলার বিশ্বে আমেরিকার সাথে বিশ্ব রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করতে শুরু করে। ২০০৭ এর পুতিনের মিউনিখ ভাষন, ২০১৪ সালে ক্রিমিয়া অধিগ্রহণ ও সিরিয়ায় সৈন্য প্রেরণের মাধ্যমে রাশিয়া পুনরায় বিশ্ব রাজনীতিতে ফিরে আসতে শুরু করে। ২০১৪ সালের পর থেকে বিভিন্ন সময় ইউক্রেন ও দনবাসের মধ্যে শান্তি চুক্তি হয় ইউরোপ ও রাশিয়ার মধ্যস্থতায়। সেসব চুক্তি ছিল ইউক্রেনের ভূখণ্ড অবিচ্ছেদ্য রাখার জন্য। কি চেয়েছিল দনবাস? ভাষার অধিকার, স্বায়ত্ব শাসন। কিন্তু ইউরোপের প্ররোচনায় সেটা হয়নি। ইউরোপ আর আমেরিকা ইউক্রেনকে অস্ত্র সজ্জিত করেছে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে। এমনকি ২০২২ সালে রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করার পর দুই দেশের মধ্যে শান্তি চুক্তির সব ব্যবস্থা হয়। কিন্তু ইউরোপ বিশেষ করে ইংল্যান্ডের কূট চালে সেটা নষ্ট হয়। এরপর ইউক্রেন হারায় প্রায় ১০ লাখ সেনা, ধ্বংস হয় হাজার হাজার শিল্প প্রতিষ্ঠান, হারায় ভূমি। এখন যখন ক্রমাগত ছোট হয়ে আসছে ইউক্রেনের পরিসর আর ট্রাম্প সেই যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দেবার জন্য পুতিনের সাথে আলোচনায় বসছেন - ইউরোপ শেষ চেষ্টা করছে আলোচনার গুঁড়ে বালি দিতে। খবরে প্রকাশ ইউরোপের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় ইউক্রেন খারকভের কোন এলাকায় রাসায়নিক অস্ত্র দিয়ে হামলা চালিয়ে সেই দোষ রাশিয়ার ঘাড়ে চাপাতে চায় যাতে ট্রাম্প আলোচনা থেকে বেরিয়ে আসেন। একেই বলে নিজের নাক কেটে নিজের যাত্রা ভঙ্গ করা। কেন? কারণ যুদ্ধ মানেই বিশাল অংকের টাকার খেলা। শোনা যায় জেলেনস্কি ও তার ঘনিষ্ঠ সহচররা প্রতি মাসে ৫০ মিলিয়ন ডলার বিদেশে পাচার করে। এটা নতুন কিছু নয়। ইউরোপ আমেরিকার বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় অনেক আগেই এ বিষয়ে খবর বেড়িয়েছে। সেই টাকার ভাগ ইউরোপের অনেক নেতাই পায়। আর এ কারণেই তারা যুদ্ধ জিইয়ে রাখতে এত মরিয়া। কে জানে এর শেষ কোথায়?
দুবনা, ১৩ আগস্ট ২০২৫
দুবনা, ১৩ আগস্ট ২০২৫
Monday, August 11, 2025
সমস্যা ও সমাধান
ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে সমস্যা শুধু রাজনৈতিক নয়, মানবিকও। ইউরোপ তথা পশ্চিমা বিশ্বের জন্য রাজনৈতিক সমাধান মানবিক সমাধানের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ইউরোপ চাইছে বর্তমান লাইন অফ কন্ট্রোলকে ঘিরে চুক্তি হোক। রাশিয়া চাইছে দানিয়েৎস্ক, লুগানস্ক, জাপারোঝিয়া আর হেরসনের উপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ যদিও এদের কিছু কিছু অংশ এখনও ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণে। এটা শুধু টেরিটোরির বিষয় নয়, এটা দনবাসে জল সমস্যার সাথে জড়িত। দানিয়েৎস্কের উত্তরাঞ্চলে, যা এখনও ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণে, রয়েছে জলের উৎস। ইউক্রেন সেটা বন্ধ করায় দনবাস জলের সংকটে ভুগছে দীর্ঘদিন। তাছাড়া কাশ্মীরের উদাহরণ বলে লাইন অফ কন্ট্রোল আন্তর্জাতিক সীমানা হয় না, বরং বিভিন্ন সময় নতুন যুদ্ধের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ১৯৯১ থেকে শুরু করে এমনকি ইউক্রেনের অধীনে বিভিন্ন নির্বাচনের ফলাফল দ্ব্যর্থহীন ভাষায় ঘোষণা করে যে এই অঞ্চলের মানুষ নিজেদের যতটা না ইউরোপ তার চেয়ে বেশি রাশিয়ার সাথে দেখতে চায়। ইউক্রেনের সংবিধানে নিরপেক্ষতা শুধুমাত্র রাশিয়া ও আমেরিকা তথা পশ্চিমা বিশ্বের রাজনৈতিক খায়েশ নয়, এটা ছিল ইউক্রেনের পরস্পরবিরোধী দুই বিশাল জনগোষ্ঠীকে একটি পতাকার নীচে ধরে রাখার একমাত্র উপায়। যখনই ভিকি ন্যুল্যান্ড এই ব্যালান্স নষ্ট করেছেন দেশ গৃহযুদ্ধের দিকে ধাবিত হয়েছে। খারকভ ও ওদেসায় সেটা শক্ত হাতে দমন করা গেলেও দনবাসে সেটা সম্ভব হয়নি। এই সমস্যার চিরস্থায়ী সমাধানের জন্য তাই রাজনৈতিক ও মানবিক দুটো দিককেই অগ্রাধিকার দেয়া প্রয়োজন। রাজনীতিবিদরা আসে আর যায়। জনতা থেকে যায়।
দুবনা, ১২ আগস্ট ২০২৫
Subscribe to:
Comments (Atom)