Saturday, January 18, 2025

পর্যবেক্ষণ

একটু খেয়াল করলে দেখবেন বিচার চায় অসহায় মানুষেরা। তারা বিচার চায় অপেক্ষাকৃত ক্ষমতাশালী লোকের কাছে, আর না পেলে চায় ঈশ্বরের কাছে। আরও খেয়াল করলে দেখবেন বিচার করে যাদের শক্তি আছে তারা। সোভিয়েত ইউনিয়নে শুধু রাষ্ট্রের রোষানলে পড়তে পারে এই ভয় থেকেই যে মানুষ ধর্মের প্রতি তেমন আগ্রহী ছিল না তা কিন্তু নয়, আসলে তাদের ছোটখাটো ব্যাপারে ঈশ্বরকে বিরক্ত করার কোন প্রয়োজন ছিল না। তাদের ভাত কাপড় চিকিৎসা আর শিক্ষার দায় ছিল সরকারের। কেউ চাইলে কোন রকম ঝামেলা ছাড়াই জীবন কাটিয়ে দিতে পারত। তাই তাদের বিচার চাওয়ার বিশেষ করে ঈশ্বরের শরণাপন্ন হবার তেমন কোন প্রয়োজন ছিল না। মানুষের মৌলিক অধিকার যদি নিশ্চিত করতে পারেন দেখবেন তাকে আর ধর্মের বাণী বা স্বর্গের লোভ দেখিয়ে কেউ খুব একটা বিপথগামী করতে পারবে না।

দুবনা, ১৮ জানুয়ারি ২০২৫

Monday, January 13, 2025

স্বৈরাচার

রাষ্ট্রের আয়ের একমাত্র খাত রাজস্ব বা কর আদায়। ধনী দেশে কর আদায় করা হয় বিত্তবানদের কাছ থেকে। গরীব দেশে গরীবের কাছ থেকে। আর সরকার যদি ঠুঁটো জগন্নাথ হয় তাহলে ধনীদের কাছ থেকে কর আদায় তো দূরের কথা উল্টো তাদের কর মাফ করে দেয়। কোথায় যেন পড়েছিলাম ভূমি হল ধনীদের, জন্মভূমি গরীবের। জন্মভূমি যখন বিপদে তখন গরীবকেই তো এগিয়ে আসতে হবে। তার উপর কর বসানো হবে না তো কার উপর হবে? অনেকেই বলার চেষ্টা করে নতুন সরকার, এদের একটু সুযোগ দেয়া দরকার। কিসের সুযোগ? চুরি করার? সাধারণ মানুষের পকেট কাটার? এটা তারা আপনারা সুযোগ না দিলেও করবে। যাতে হাত পাকাতে না পারে তাই এখন থেকেই প্রতিবাদ করুন। সমস্ত অন্যায়ের প্রতিবাদ করুন। তা না করলে এরাও একদিন আরও বড় স্বৈরাচার হিসেবে মাথা তুলে দাঁড়াবে।

দুবনা, ১৩ জানুয়ারি ২০২৫

Sunday, January 12, 2025

আহ্বান

আজকাল অনেকেই জামাত শিবিরকে দ্বিচারিতার জন্য গালমন্দ করছে। কিন্তু এরাই স্বৈরাচার হঠানোর বিপ্লবে অংশগ্রহণ করে জামাত শিবিরের ক্ষমতায় আসার পথ কন্টকমুক্ত করেছে। সমাজতন্ত্র, সাম্যবাদ, গণতন্ত্র, মানবাধিকার, প্রগতি এসবের নামাবলী গায়ে দিয়ে মৌলবাদী শক্তির উত্থানে সহযোগিতা করা কি দ্বিচারিতা নয়? হলে আত্মসমালোচনা কোথায়? কোথায় অনুশোচনা? যারা এই অভিযোগ আনছে তাদের অনেকেই বাম ও প্রগতিশীল আন্দোলনের পরীক্ষিত নেতা। যদি তারা বুঝে এসব করে থাকে তাহলে সেটা আদর্শের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা আর না বুঝে করলে রাজনৈতিক অদূরদর্শিতা। তাহলে কি তাদের অধিকার আছে নেতার আসনে বসে থাকার? নিজের কাছে সৎ হোন, রাজনীতি জঞ্জাল মুক্ত করুন। একই কথা বলা যায় তথাকথিত প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক কর্মী ও বুদ্ধিজীবীদের প্রতি।

দুবনা, ১২ জানুয়ারি ২০২৫

Saturday, January 11, 2025

প্রশ্ন

যেভাবে শহীদরা বেহেস্ত থেকে ফিরে আসছে তাতে বেহেস্তে বাস কতটুকু নিরাপদ ও আরামদায়ক সেটা নিয়েই অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে। এমনও হতে পারে সেখানেও কোটা বিরোধী আন্দোলন করতে গিয়ে আদমের মত ওরা বেহেস্ত থেকে বিতাড়িত হয়েছে। আচ্ছা বেহেস্তকে অবমাননা করার জন্য এদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হবে না?

দুবনা, ১১ জানুয়ারি ২০২৫

Tuesday, January 7, 2025

ঋণ

জুলাই আগস্টের আন্দোলনে বিজয়ের পরে ডঃ ইউনুসকে প্রধান উপদেষ্টা পদে নিয়োগ করায় অনেকেই আশার আলো দেখেছিলেন। আমার মনে হয়েছিল এখানে ডঃ জাফরুল্লাহর মত একজন দরকার যার দেশপ্রেম প্রশ্নাতীত। তবে তিনি ইতিমধ্যেই বিগত হয়েছেন। তাই এ নিয়ে বন্ধুদের কাছে আফশোস করা ছাড়া করার কিছু ছিল না। এখন আমার মনে হয় যারা ডঃ ইউনুসকে স্বাগত জানিয়েছিলেন তাদের অনেকেই তার কাছ থেকে রাজনৈতিক ক্ষুদ্র ঋণ পাবেন বলে আশা করেছিলেন। কিন্তু ক্ষমতার মনোপলি তাকে আর ক্ষুদ্র ঋণ প্রকল্পে উৎসাহিত করে না, তিনি বৃহৎ ঋণ দিচ্ছেন একাত্তর বিরোধীদের। আমার বিশ্বাস ঋণ খেলাপি সম্পর্কে তিনি খুব ভালো ভাবেই অবগত। আর এ কারণেই তিনি এই পথেই অগ্রসর হচ্ছেন। আগে অর্থ ঋণ দিয়ে দেশকে দেউলিয়া করা হত, এখন ক্ষমতা ঋণ দিয়ে দেশকে দেউলিয়া করা হবে - পরের আজ্ঞাবহ করদ রাজ্যে পরিণত করা হবে। জনগণ বরাবরের মতই রিসিভিং এন্ডে বসে সব দুর্ভোগের শিকার হবে।

দুবনা, ০৭ জানুয়ারি ২০২৫

Monday, January 6, 2025

শ্লোগান

 প্রশ্ন, একমাত্র প্রশ্নই হতে পারে সব ধরনের মিথ্যা, ধোঁকা, হঠকারিতা, অন্ধবিশ্বাস আর অন্যায়ের বিরুদ্ধে যোগ্য উত্তর। তাই প্রশ্ন করুন। এতে আর কিছু না হলেও জ্ঞানার্জন হবে। প্রশ্ন হোক নতুন বছরের শ্লোগান। 

দুবনা, ০৬ জানুয়ারি ২০২৫

Sunday, January 5, 2025

লুজ কানেকশন

সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ড শুনলাম লুজ কানেকশন থেকে। কেন যেন মনে প্রশ্ন জাগল এই লুজ কানেকশনটা কোথায়? কারও মস্তিষ্কে নয় তো? 

দুবনার পথে, ০৫ জানুয়ারি ২০২৫

Friday, January 3, 2025

বৈষম্যবিরোধী বৈষম্য

আমাদের রাজনীতির সবচেয়ে বড় সমস্যা হল সে সমস্যার স্থায়ী সমাধান খুঁজে না, সে হয় অতি সহজ সমাধান বেছে নেয় অথবা ইচ্ছে করে সমস্যা টিকিয়ে রাখাকেই সমাধান মনে করে। সমস্যার অতি সহজ সমাধান ছিল দেশভাগ যা বাস্তবে সমস্যার সমাধান ছিল না, ছিল মাথা কেটে মাথা ব্যথা সারানোর মত। ফলে মাথা গেছে কিন্তু ব্যথা যায়নি। দ্বিতীয় পথ - ১৯৪৭ এর পরে তো বটেই ১৯৭১ এর পরেও সাম্প্রদায়িক সমস্যা জিইয়ে রাখা যা ভোটের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। রাষ্ট্রের এ ধরণের নীতি শুধু সংখ্যালঘুদের জীবনই বিপন্ন করে না, রাষ্ট্রের মৌলিক চরিত্রও প্রশ্নবিদ্ধ করে। কারণ রাষ্ট্র তার সকল নাগরিকের নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করতে বাধ্য আর সেই অধিকার সব নাগরিকের জন্য সমান। একদিকে দেশের প্রমাণিত জঙ্গীদের মুক্তি অন্যদিকে চিন্ময় দাশের জামিন নামঞ্জুর - এটা আবারও প্রমাণ করল বাংলাদেশ আর যাই হোক এখনও পর্যন্ত আধুনিক রাষ্ট্রে পরিণত হতে পারেনি, বৈষম্য তার রন্ধ্রে রন্ধ্রে। আগের মতই এখনও আইন এখানে নিরপেক্ষ নয়, সিলেক্টিভ।

দুবনা, ০৩ জানুয়ারি ২০২৫