Wednesday, October 31, 2018

ফোন


গতকাল মনিকা ফোন করে বলল, সোমবার ও খুব ব্যস্ত ছিল, তাই কথা বলতে পারেনি।
শনিবার আমি যখন মিটিং শেষে বাসায় ফিরি, অনেক রাত। ও বাসায় ছিল না। শনি রবিবার ছুটি থাকলে ওরা বন্ধুবান্ধবীরা মিলে ক্যাফে বা বারে হই হুল্লোড় করে রাত কাটিয়ে দেয়। রবিবার সকালে এসেই ঘুমিয়ে পড়েছিল। দুপুরে আলু ভাজা খেতে চাইল। করে দিলাম। দুপুরেই বেরুনোর কথা ছিল, গল্পে গল্পে রাত। তাই ঘুরতে গেল বেশ দেরি করেই। আমার সকালে ক্লাস ছিল, তাই অপেক্ষা করিনি। সকালে উঠেও ওকে দেখলাম না। ক্রিস্টিনা, সেভা, আমি যে যার মত বেড়িয়ে গেলাম নিজের নিজের কাজে। ক্লাস শেষে ভাবলাম মনিকাকে ফোন করে জানি সব ঠিকঠাক আছে কি না। কেননা দেখা না করে দুবনা চলে গেলে নিজেরই দুশ্চিন্তা হবে।
- পাপ, তুমি একেবারে অসময়ে আমাকে ফোন করছ। আমি কাজে। দম ফেলার সময় নেই।
আমি কিছু বলার আগেই লাইনটা কেটে দিল। আমি অবশ্য এতেই খুশি। ফোন করাটা শুধু কিছু বলা নয়, গলাটা শোনা, জানা যে ওর কিছু হয়নি। সেই ছোট বেলায় ওরা যখন ঘুমুতো, যতক্ষন পর্যন্ত না দেখতাম বুকটা ওঠা নামা করছে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকতাম। অনেক সময় নাকের কাছে হাত রেখে বোঝার চেষ্টা করতাম শ্বাস প্রশ্বাস নিচ্ছে কি না। শুধুমাত্র সে সম্পর্কে নিশ্চিত হলেই নিজের বুকে আটকে থাকা দমটা ধীরে ধীরে বেরিয়ে আসতো। ফোনটাও তাই।
আমি তখনই বুঝেছিলাম মনিকা নিজেকে একটু অপরাধী মনে করবে এভাবে উত্তর দেওয়ার জন্য। আর সময় পেলেই ফোন করে সরি বলবে।

দুবনা, ৩১ অক্টোবর ২০১৮ 


হাতের পাঁচ

হাতের পাঁচ খুঁজতে গিয়ে পকেটে পাঁচটি আঙ্গুল পেলাম। কী ঝামেলাই না হত ওদের না পেলে?

দুবনা, ৩১ অক্টোবর ২০১৮  


Tuesday, October 30, 2018

মোষ ও মানুষ


গোলাম সিদ্দিকি ভাই মোষদের মাইগ্রেশনের একটা ছবি দিলেন। মানুষেরাও এভাবে জড়ো হয় দেশত্যাগের জন্য। সাথে থাকে অনেক বাক্স-প্যাঁটরা আর ফেলে যাওয়া স্মৃতি। আচ্ছা মোষরাও কি এ ভাবে স্মৃতি বয়ে বেড়ায়?

দুবনা, ৩০ অক্টোবর ২০১৮




https://www.facebook.com/photo.php?fbid=1112962485546182&set=gm.2152726664779158&type=3&theater

Gathering for the migration

Masai Mara, Kenya

© Golam Siddiqui

হাঁড়ি

সপ্তাহ দুই আগে ভাত রাঁধতে গিয়ে হাঁড়ি পুড়িয়েছিলাম। আজ ভাবলাম ওকে মানুষ করি। সোডা দিয়ে চুলায় বসালাম। আবার পুড়ল। হাঁড়ির পোড়া কপাল।

দুবনা, ৩০ অক্টোবর ২০১৮  




সত্য নাকি দুঃস্বপ্ন

দীর্ঘ ভ্রমনের পর পথের ক্লান্তি সব ভর করেছে দুই চোখের উপর। ক্লান্ত শরীর ঘুমে ঢলে পড়তে চাইছে। কিন্তু ঘুমুতে চাইলেই কি ঘুম আসে? অনেক দিন পরে দেশে ফেরা। কত মানুষের মুখ মনে ভিড় করছে, কত স্মৃতি, কত আশা! কোথায় হারিয়ে গেছে সেই শান্ত দুপুরগুলো? চারিদিকে শুধু কথা আর কথা। মানুষের কথা, গাড়িঘোড়ার কথা, গ্রামেগঞ্জে ব্যাঙ্গের ছাতার মত গজিয়ে ওঠা কলকারখানার কথা। সবাই বলতে চায়। এ যেন নায়েগ্রার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা। সেই কোলাহল ভেদ করে শোনা যাচ্ছে শ্লোগান। কান চেষ্টা করছে এই কোলাহলের মধ্যে শ্লোগানের কথা শোনার, বোঝার। না, এটা কোন পরিচিত শ্লোগান নয়। কেউ বলছে না স্বৈরাচার নিপাত যাক গণতন্ত্র মুক্তি পাক, বা ভাত চাই কাপড় চাই বাঁচার মত বাঁচতে চাই। এ এক নতুন শ্লোগান। কেউ খুন করার অধিকার চাইছে, কেউ বা চুরি করার। শোষিতের অধিকারের কথা কেউ বলছে না, বলছে শোষকের অধিকারের কথা। এত প্রকাশ্যে জনগণের অধিকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন কেউ কোন দিন দেখেনি, আমাদের দীর্ঘ দিন পরে ঘরে ফেরা মানুষটি তো নয়ই। এক দীর্ঘ শ্বাস বেরিরে আসে ওর বুক থেকে। সেই উষ্ণ বাতাসে ঘুম ভেঙ্গে যায় ওর। ধীরে ধীরে উঠে বসে সে। দূর থেকে তখনো ভেসে আসছে কোলাহলের শব্দ আর বিভিন্ন শ্লোগান। বাস্তব আর স্বপ্ন সব যেন এক হয়ে যায়। সে বোঝার চেষ্টা করে "একি সত্য নাকি দুঃস্বপ্ন?"

দুবনা, ৩০ অক্টোবর ২০১৮ 
 
 

Monday, October 29, 2018

কালি কাহিনী

না না না না না
মুখে কালি দিও না
আমার মুখে কালি দিলে তোমার
হাত হবে কালা
গালি দিয়ে মানুষ তোমার
কান করবে ঝালাপালা
তার পরেও আছে ভোটের ব্যাপার
ভোট তো নয় ভুতের বেগার
ভূতের মাথা বিগড়ে গেলে
যাবে আম আর ছালা
না না না না না
মুখে কালি দিও না।


মস্কো, ২৯ অক্টোবর ২০১৮



কালি

কালো হাত কালো মুখ
মানুষের মুখে কালি
উন্নয়নের নেশায়বুঁদ
নিস্তেজ বাঙালী।

মস্কো, ২৯ অক্টোবর ২০১৮



Sunday, October 28, 2018

ভাবাভাবি

প্রবাদ আছে "ভাবিয়া করিও কাজ, করিয়া ভাবিও না।" কিন্তু কাজ করিবার সময় ভাবা যাইবে কি না সেই ব্যাপারে কবি নীরব।  ভাবিলাম শূন্য স্থান পূরণ করা অতি প্রয়োজন। কাজ করিবার সময় ভাবা ঠিক কিনা বলিতে পারিব না, তবে ইহা সত্য যে কাজ করিবার সময় ভাবনার বন্যায় ভাসিয়া গেলে খাবার পুড়িবার ঝুঁকি থাকিয়া যায়। ইহা কবির বাণী নহে, জীবনের নির্মম অভিজ্ঞতা।

মস্কো, ২৮ অক্টোবর ২০১৮ 



যার মনে যা

স্ট্যাটাসে লেখা ছিল "বল"

কেউ ভাবলো কথা হচ্ছে ফুটবল নিয়ে,  কেউ ভাবলো শক্তির কথা আবার কেউ বুঝলো তাকে কিছু বলার জন্য বলা হচ্ছে।

মস্কো, ২৮ অক্টোবর ২০১৮




Saturday, October 27, 2018

অন্ধ বনাম বোবা

কোন অন্ধ যদি তোমাকে চারপাশের দৃশ্যাবলীর বর্ণনা দিতে বলে তাহলে বোবা সাজাই উত্তম, কেননা তোমার শত বর্ণনাও তাকে কিছুই দেখাতে  পারবে না। বোবা সাজা বিশেষভাবে দরকার যদি তোমার প্রশ্নকারী দলান্ধ বা ধর্মান্ধ হয়। কেননা তোমার যুক্তি তার বিশ্বাসের বিরুদ্ধে গেলে তুমি অযথা আক্রমণের শিকার হতে পার।


মস্কো, ২৮ অক্টোবর ২০১৮


চিন্তাভাবনা

কারো কারো চিন্তায় শুধু ভাব আছে, ভাবনা নেই, আবার কারো কারো ভাবনায় চিন্তার লেশমাত্র নেই। তারপরেও চিন্তাভাবনা ঠিকই গলাগলি করে হাঁটছে।

দুবনা, ২৭ অক্টোবর ২০১৮  



Friday, October 26, 2018

মান অভিমান

মান নিয়ে খুব বেশি হলে অভিমানী
মানের সম্মানে জেনো পড়বে টানাটানি

দুবনা, ২৭ অক্টোবর ২০১৮  


গপ্পো


- পাপ, পাহাড়ের মাথায় বরফ থাকে কেন?
- মাথা গরম হলে পাহাড় আগ্নেয়গিরির রূপ নেয়, সব ধ্বংস করে ফেলে। বরফ দিয়ে ওর মাথা ঠাণ্ডা রাখা হয়। বুঝলি?
- হুম!
দুবনা, ২৬ অক্টোবর ২০১৮


রাগ অনুরাগ

রাগ ভাঙলে যদি অনুরাগ পাওয়া যেত তাহলে অনুরাগটা হত রাগের অনু। বাস্তবে কী তাই?

দুবনা, ২৬ অক্টোবর ২০১৮ 



শব্দ


সকালে “তারাদের গল্প” নামে আমার এক স্ট্যাটাসে কামাল ভাই মন্তব্য করেছেন “সেই জন্য দৃষ্টিভঙ্গি বলে একটা শব্দ আছে। কোন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখবো, সেটাও বিবেচনা করতে হবে।“ হ্যাঁ, বাইরে থাকার এই এক অসুবিধা। সঠিক শব্দগুলো ঠিক সময় মত খুঁজে পাওয়া যায় না। কামাল ভাইএর কমেন্ট পড়ে মনে পড়লো ২০১০ সালের ঘটনা। তখন কলকাতার সাহা ইন্সটিটিউট থেকে অঞ্জন দা এসেছিলেন দুবনায় কয়েক দিনের জন্য। কী নিয়ে যেন কথা হচ্ছিল। অঞ্জন দা বলে উঠলেন “চমৎকার!“ ১৯৯৬ থেকে বাংলার সাথে আমার যোগাযোগ খুব কম ছিল। তখন তো সামাজিক মাধ্যম এত জনপ্রিয় হয়নি। অল্প পয়সায় ফোনও করা যেত না। তাই বাংলা চর্চা বলতে কোন বই পড়া, মাঝে মাঝে বাংলা গান শোনা। “চমৎকার” শব্দটা যেন বিদ্যুতের ঝলকের মত আমার কান বেয়ে হৃদপিণ্ডে গিয়ে আঘাত করলো।            
 দুবনা, ২৬ অক্টোবর ২০১৮ 


Wednesday, October 24, 2018

ঐক্য অনৈক্য

লক্ষ মানুষের লক্ষ্য লক্ষ
তাই তো এতো পক্ষ বিপক্ষ 
 
দুবনা, ২৪ অক্টোবর ২০১৮  



Tuesday, October 23, 2018

চরিত্র

- "এই একটু আসবি এদিকে? জরুরী কিছু কথা ছিল" হঠাৎই কুকুরটা বেশ আবেগ ভরে বলল পাশের বাড়ির বিড়ালকে।

অবাক হলেও কুকুরের মধুর সম্ভাষণে গলে গেল বিড়ালের মন। নিজের বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসে বলল "কি কথা কুকুর ভায়া? বল, শুনছি।"

- ঘেউ ঘেউ!

- "ম্যাও!" চিৎকার করে কোন রকমে নিজের বাড়িতে পালিয়ে গেল বিড়াল। "স্বভাব, সবই স্বভাব। কুকুর প্রেমে পড়লেও কুকুরই থেকে যায়, বিড়াল হয়না কখনও!"

দুবনা, ২৪ অক্টোবর ২০১৮ 

কোয়ান্টাম ভূমি

ডিজিটাল দেশে সব কিছুই কোয়ান্টাম। সুবিচার থেকে শুরু করে যে কোন কিছুই তুমি পাবে কি পাবে না তা নির্ভর করে আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক বলয়ের কোন স্তরে তুমি অবস্থান করছ তার উপর।

দুবনা, ২৩ অক্টোবর ২০১৮ 
 
 
 

Monday, October 22, 2018

দাদা

ব্যক্তিগতভাবে আমি যত না কারো সাথে কোন ব্যাপারে  রাজি  হই গড়রাজি তার চেয়ে বেশি। তাই লোকজন যখন আমাকে দাদা (রাশানে  yesyes) বলে ডাকে আমি ভাবি নিয়েত নিয়েত (রাশানে nono) বলে ডাকাটাই অনেক বেশি যুক্তি সঙ্গত হত। তবে এই সুযোগে কেউ নানা বলে ডাকলে আমার যৌবনের অনুভূতিতে আঘাত যে লাগবে সেটা বলাই বাহুল্য।     

মস্কো, ২২ অক্টোবর ২০১৮   



টক

দিন দিন টিভির টক শোগুলো টক হয়ে যাচ্ছে। পচন ধরার লক্ষণ

মস্কো, ২ অক্টোবর ২০১৮

Sunday, October 21, 2018

ঘর

একদিন এক বন্ধু আমার অগোছালো ঘর দেখে বললো - তুই ঘর গোছাস না কেন? - ঘর গোছানো কি এতই সোজা? শুধু বইখাতা, জামা-কাপড়, হাড়ি-পাতিল জায়গা মতো রাখলেই ঘর গোছানো হয়ে যায়? - কেন? আর কি লাগে? - সংসার গোছাতে হয়। যাতে ছেলেমেয়েরা ঠিক মত পড়াশুনা করে, ঘরে স্বাচ্ছল্য থাকে, কাজের পর বাসায় ফিরলে বিড়াল-কুকুর দৌড়ে এসে পায়ে গা ঘষে। ঘরটা তো চার দেয়াল নয় বা কিছু আসবাবপত্র নয়, ঘর হলো ঘরের মানুষজন, পোষা বিড়াল-কুকুর। ঠিক যেমনটা দেশ দেশের সীমানা বা রাস্তাঘাট নয়, দেশের জনগণ। জনগণের অবস্থার উন্নতি না করে শুধু রাস্তাঘাটের উন্নয়ন করলে বা দালান-কোঠা বানালে যেমন দেশের উন্নয়ন সম্পূর্ণ হয় না, সংসারটাও ঠিক মতো না গোছালে ঘরটা ঠিক গোছানো হয় না। মস্কো, ২১ অক্টোবর ২০১৮



দম

কেউ খায় লুচি কেউ বা আলুর দম
খেতে নাকি সুস্বাদু শুনেছি একদম
ভেবে আমি পাইনি কোথায় থাকে আলুর দম
কে জানে এ দম হয়তো নয় কো সেই দম।

দুবনা, ২১ অক্টোবর ২০১৮ 
 
 
 

Friday, October 19, 2018

শুভেচ্ছা


আমার যতদূর মনে পড়ে ছোট বেলায় আমরা একে অন্যকে বিজয়ার শুভেচ্ছা জানাতাম বিসর্জনের পরের সকালে। গ্রামের সবাই একে অন্যের বাড়ি যেত শুভেচ্ছা জানাতে। সমবয়েসীরা পরস্পরের সাথে কোলাকুলি করত, ছোটরা বড়দের প্রনাম করত, আর বড়রা তাদের করতেন আশীর্বাদ। মিষ্টিমুখ করান হত সবাইকে। কোন বাড়িতে দিত দোকানের মিষ্টি, কোথাও বাড়ির তৈরি নারু আর মোয়া, কোথাও বা বাতাসা। তবে সময় পালটে গেছে। আবহাওয়ার মতই কখন যে কোত্থেকে কোন শুভেচ্ছা উড়ে এসে জুড়ে বসে তার ঠিক নেই। তাই রাতে ঘুমানোর আগে টুপিটা উল্টে রাখলাম যদি কেউ দয়া করে আগে থেকেই শুভেচ্ছার ডালি নিয়ে হাজির হয়। না, ভুল করিনি। সকালে ঘুম ভাঙতেই দেখলাম শুভেচ্ছা, ভালোবাসা, আদর এমনকি প্রনামে টুপি উপচে পড়ছে।
- দাদা, প্রনাম নিও।
- মাথা খারাপ! শোণ এমনিতেই আমার বদ হজম। প্রনাম তো একেবারেই হজম হবে না। তুই বরং এক কাজ কর, প্রনামের বদলে আমাকে কিছু আদর, ভালোবাসা আর কিছু শুভেচ্ছা পাঠিয়ে দে।
- কি যে বল, উপহার কি ফেরৎ দেয়া বা নেয়া যায়?
- অন্যদের কথা জানি না। তবে আমি এসব নিয়মের বাইরে। আমি ওগুলো খুব ভালো করে প্যাকেট করে দিচ্ছি। তুই চাইলে অন্য কাউকে দিয়ে দিস, না হলে শিকেয় তুলে রাখিস। নষ্ট হবে না।
হ্যাঁ বন্ধুরা, যারা সারাদিন বিজয়ার শুভেচ্ছা জানিয়েছেন, সবাইকে শরতের সোনালি শুভেচ্ছা। ভালো থাকবেন সবাই। রঙে রঙে রঙিন হয়ে উঠুক আপনাদের চলার পথ।
দুবনা, ১৯ অক্টোবর ২০১৮   


বিজয়ার শুভেচ্ছা, বিজয়ের শুভেচ্ছা

মানব সভ্যতার শুরু থেকেই নিত্যদিনের জীবন যুদ্ধে (battle) উগ্র শক্তি জিতেছে যুক্তি আর ন্যায়ের বিরুদ্ধে, মানবতার বিরুদ্ধে, যদিও মূল যুদ্ধে (war) জিতেছে ন্যায়, জিতেছে মানবতা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে সোভিয়েত ইউনিয়ন বা ১৯৭১ এ বাংলাদেশের বিজয় সেটাই প্রমাণ করে। বিজয়া অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায়ের, অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে শুভ শক্তির বিজয়ের কাহিনী যা মানুষ যুগ যুগ ধরে বিশ্বাস করে আসছে। এই বিশ্বাসের উপর ভরসা রেখেই সে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখে। আসুন আমরাও স্বপ্ন দেখি, আশায় বুক বাঁধি। শুভ বিজয়া!

দুবনা, ১৯ অক্টোবর ২০১৮ 

Thursday, October 18, 2018

শরৎ শুভেচ্ছা

দেব দানবেরা আসুক বা নাই আসুক আলো ঝরিয়ে সোনা ছড়িয়ে শরৎ ঠিকই আসবে তার রুপের ডালি নিয়ে। ঝরা পাতার মতই শারদীয়া শুভেচ্ছা আর ভালোবাসা সবার মনকে আনন্দে ভিজিয়ে দিয়ে যাক। রঙে রঙে ভরে উঠুক সবার মন।

দুবনা, ১৮ অক্টোবর ২০১৮ 
 
 
 


Wednesday, October 17, 2018

মোষ

মোষটা না হয় নাই বা দিলে বলি
থাক বেচারা আর কিছু দিন বেঁচে
মিছে কেন ওর পেছনে সবাই
লাগছরে ভাই ধুতি লুঙ্গী কেচে
মোষটা না হয় বেদম পাজি
হাড্ডি অসভ্যের
ওর মরণে ভাগ্যে তোমার
হবে কী হেরফের?
বলি যদি নেহাৎ দিতেই হবে
তবে আগে মন পশুকে মার
মোষের কাঁধে দোষ চাপানোর
অভ্যেসটা এবার ছাড়
মোষ বেচারা সর্বহারা
ভুখা নাঙ্গার দলে
মোষের জন্য লড়াই এবার
হোক নতুন আদলে।

দুবনা, ১৭ অক্টোবর ২০১৮


Tuesday, October 16, 2018

ভাবনা


ভাবলাম আমি বহুকাল
ভাবলাম বহুদূর
বেদীতে যদিও দাঁড়িয়ে দেবতা
পূজারীরা সব অসুর
ভক্তি শুধুই নামে মাত্র
বহু গুণ ভক্তি প্রদর্শনী
সেই লোক হল বড় ভক্ত
যে দেয় মোটা দর্শনী
ঘুষের যুগে দেব ও দানোতে
ঘুষ নিয়ে লাগে ঘুষাঘুষি
তোমাদের পূজা তোমারই কর
এবার না হয় আমি আসি



মস্কো, ১৬ অক্টোবর ২০১৮



ভক্তি

ছোট বেলায় শুনেছি অতি ভক্তি চোরের লক্ষণ।  ব্যাপারটা মনে হয় আসলেই তাই, বিশেষ করে যারা ভক্তি নিয়ে বেশি রকম বাড়াবাড়ি করে। আমার তো অনেক সময় তাদের বিশ্বাস নিয়েই প্রশ্ন জাগে। ঈশ্বর যদি সর্ব শক্তিমান হন তাহলে ওনার যেকোন রূপ নিতে বাধা কোথায়? উনি তো চাইলেই  সব বিশ্বাসীর কাছেই তাদের মনোমত রূপে আসতে পারেন। এটাকে বিশ্বাস না করা মানে তার শক্তিতে অবিশ্বাস করা। যারা মন্দির, মসজিদ বা প্রতিমা ভেঙে ঈশ্বরকে গৃহহীন করতে চায় তারা তো আসলে ঈশ্বর যে সর্বভূতে বিদ্যমান সেটাকেই চ্যালেঞ্জ করে।  এরাই তো সবচেয়ে বড় অবিশ্বাসী, বড় নাস্তিক। অথচ সাধারণ মানুষ, ভোট লোভী রাজনীতিবিদ সবাই এদেরকে সবচেয়ে বড় ধার্মিক বলে মনে করে। আর এই সব অসামাজিক  দুর্বৃত্তরা দলের পাউন্ডের মত ঈশ্বরকে ভাঙিয়ে ভাঙিয়ে দিব্যি জীবন যাপন করে।

মস্কো, ১৬  অক্টোবর  ২০১৮



Monday, October 15, 2018

ঐক্য লইয়া অনৈক্য

একদা কিছু ঐরাবত ঐক্য করিবে বলিয়া মনস্থির করিল। পন্ডিতগণ পঞ্জিকা দেখিয়া দিন তারিখ ধার্য করিলেন। শুভ লগ্নে ঐরাবতগণ নির্ধারিত স্থানে  উপস্থিত হইল ঐক্যের ঘোষণা দিতে। সমস্যা হইল ঘোষক লইয়া। সব ঐরাবতই তাহাদের বিশাল বিশাল শুঁড় উচ্চে তুলিয়া নিনাদ করিতে  লাগিল। সেই শব্দে উপস্থিত জনতা ভীত সন্ত্রস্ত হইয়া ছুটাছুটি শুরু করিলে যে অরাজকতার সৃষ্টি হইল তাহাতে ঐক্য বাবাজীও আর স্থির থাকিতে পারিল না। সুযোগ বুঝিয়া সেও অতিকায় ঐরাবতদের পশ্চাৎদেশ প্রদর্শন করিয়া হাওয়া হইয়া গেল। ঐক্যের এই অকাল মৃত্যুতে কেউ হায় হায়  করিল, কেউ বা বগল বাজাইয়া মোরগ নাচ নাচিতে লাগিল।       

ঐক্য করিতে চাইলে এক হও আগে
যোগে  ঐক্য হয়, ঐক্য হয় না ভাগে


মস্কো, ১৫  অক্টোবর  ২০১৮



পচন


বিভিন্ন রাজনীতিবিদদের গোল্লাছুট দেখে অপেক্ষাকৃত সত্য যে সিদ্ধান্ত টানা যায় সেটা হলো -

প্রতিক্রিয়াশীল রাজনীতি থেকে যারা প্রগতির দলে অনুপ্রবেশ করে তারা নতুন দলকে পচায়, আর যারা প্রগতির ঝাণ্ডা ছুঁড়ে ফেলে প্রতিক্রিয়ার শিবিরে নাম লেখায়, তারা নিজেরাই পচে যায়। এখন থেকেই বোঝা যায় সমাজের পচন ঠিক কোন শিবির থেকে শুরু হয়।

মস্কো, ১৫  অক্টোবর  ২০১৮