Sunday, February 28, 2021

মৌলবাদ

যখনই কেউ নিজের মতটাকেই একমাত্র সত্য ও সঠিক বলে মনে করে তখনই জন্ম নেয় মৌলবাদ। মৌলবাদ কোন বিশেষ আদর্শ নয়, আদর্শের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি।

দুবনা, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১

স্বপ্ন


মাঘের সাদা মেঘে দাঁড়িয়ে আকাশের নীল বুক ছাড়িয়ে দেবদারু ওই দেখ দুলছে ফাগুন হাওয়ায় মৃদু ঢুলছে।

চৈতি রাতের ওই সমীরণ
কালবোশেখির কথা বলে যায়
মনে মনে হেথা হোথা বিচরণ
হৃদয়ে প্রেমের দোলা দিয়ে যায়।
দুবনা, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১




শীতের হাওয়া

আজ শীতের শেষ দিন। তবে এখনও তার বিদায় নেওয়ার কোন লক্ষণ দেখছি না। কে জানে আরও কতদিন জল কাদায় নাকানি চুবানি খাওয়াবে!

দুবনা, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১




















দৃষ্টিভঙ্গি

লাঠি নির্জীব, নির্বাক। লাঠির মাহাত্ম্য নির্ভর করে দৃষ্টিভঙ্গির উপরে, মানে লাঠি আপনার হাতে না পিঠে তার উপর। আপেক্ষিক তত্ত্ব বলে কথা।

দুবনা, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১

Friday, February 26, 2021

শব্দ

শাহবাগে মশাল মিছিলে নাকি পুলিশের নগ্ন হামলা। ভাগ্যিস নগ্ন পুলিশের হামলা নয়।

দুবনা, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১

পরিচয়

ফেসবুকের কল্যাণে আজকাল অনেক ভাল মানুষের সাথে পরিচয় হয়। অধিকাংশের সাথেই মরণোত্তর। দুবনা, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১

একনায়কতন্ত্র


রাজনৈতিক একনায়কতন্ত্র সামরিক একনায়কতন্ত্রের চেয়েও খারাপ। তার মানে এই নয় আমাদের সামরিক একনায়কতন্ত্রকে বরণ করতে হবে। পথ একটাই - যেকোনো ধরণের একনায়কতন্ত্রকে না বলতে হবে, বাংলার মাটি তার জন্য নিষিদ্ধ করতে হবে।

দুবনা, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১

মুস্তাক

মুস্তাক আহমেদের শাসনামলে কারাগারে চার নেতা খুন হয়েছিলেন, এবার মারা গেলেন মুস্তাক আহমেদ নামে এক লেখক। কি কাকতালীয় ব্যাপার স্যাপার রে বাবা। 

দুবনা, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১ 

লড়াই

এক সময় আমরা বলতাম পৃথিবীতে শুধু দুটো দল আছে - শোষকের আর শোষিতের। নাম যাই হোক না কেন ক্ষমতায় গেলে সব দলই শোষক হয়ে যায়। এই যে বাংলার মানুষ বুকের রক্ত দিয়ে বার বার গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনে, ভোট দিয়ে নিজেদের পছন্দের দলকে ক্ষমতায় আনে বিনিময়ে তারা কী পায়? ভোটের নামে প্রহসন, ৫৭ ধারা, ডিজিটাল আইন এসব। আর যতই দিন যায় এসব নিয়মের নাগপাশ বন্ধন ততই যেন তীব্র হয়। তাই গণতন্ত্রের লড়াই চালিয়ে যেতে হবে প্রতিদিন, প্রতি মুহূর্তে। না হলে মানুষের বিজয়ের ফসল বার বার বেহাত হয়ে যাবে, চুরি হয়ে যাবে। বার বার ক্রস ফায়ারে অথবা জেলে দেখতে হবে প্রিয়জনের লাশ।

দুবনা, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১

দেশ

এই না হলে দেশ! প্রজাদের কষ্ট লাঘব করতে নিজেই সমস্ত দায়িত্ব নিয়ে টিকেট কেটে স্বর্গের গাড়িতে উঠিয়ে দেয়। ধন্য তুমি ধন্য হে, ডিজিটাল আইনের জন্য হে।

দুবনা, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১

Thursday, February 25, 2021

আশা

 

আশা আসে আশা যায়
পাছে যদি ডাক পায়
আশা থাকে সেই দুরাশায় 
 
দুবনা, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১ 

Wednesday, February 24, 2021

ভয়াভয়


আচ্ছা, আপনি যে ঠাকুর দেবতায় বিশ্বাস করেন না, ভয় পান না? আগে পেতাম না, এখন পাই?

কেন? বয়স হচ্ছে বলে?
আরে কি যে বল? বয়স তো সবারই হয়। এতে নতুনত্ব কী আছে?
মানে মরতে তো হবে। স্বর্গ না নরক কোথায় পাঠাবে সেটাও তো ব্যাপার।
স্বর্গ নরক নিয়ে মাথা ব্যথা নেই। তবে জান কি, আগে জানতাম ন্যায় কাজ করলে পুরস্কার দেওয়া হয়, অন্যায় করলে শাস্তি। তাই ভাবতাম পাপ যেহেতু করি না, ঠাকুর দেবতায় বিশ্বাস করা না করায় কিছুই যায় আসে না।
এখন কি সেটা বদলে গেছে?
চারিদিকে তাকিয়ে দেখো তো? অন্যায় করে জেলে যাওয়ার চেয়ে অন্যায় না করে জেলে যাওয়ার সম্ভাবনাই আজকাল বেশি। ক জন ঘুষখোর, দুরনীতিবাজ জেলে যায়? হেরাজ তো হয় ভাল মানুষ, যারা এসবে বিরুদ্ধে কথা বলে। ঈশ্বর তো বিগ ব্রাদার যিনি সব দেখেন, আর যারা সব দেখেন তারা প্রতিবাদী কণ্ঠ রোধ করতেই বেশি সিদ্ধহস্ত। যারা অন্যায় করে না, তাদের মিথ্যে ভয় বা লোভ দেখিয়ে বশ করা যায় না। সেদিক থেকে অপরাধীরা অনেক বেশি অনুগত। এ কারণেই হয়তো করোনার মাধ্যমে একে একে প্রতিবাদী কণ্ঠ রোধ করা হচ্ছে। যেকোনো দেশের যে কোন সরকার ঈশ্বরের কাছ থেকে এর চেয়ে বেশি কী আশা করতে পারে? তাই আজকাল পাপ করিনা বলেই ভয়ে ভয়ে থাকি।

দুবনা, ২৫ ফেব্রুয়াই ২০২১

জীবন মৃত্যু

সকাল নতুন দিনের প্রতীক, জীবনের প্রতীক। সময়ের ব্যবধানে আজকাল দিনের শুরু, জীবনের শুরু মৃত্যু দিয়ে, মৃত্যু সংবাদ দিয়ে। হায়রে পোড়ামুখী ফেসবুক!

দুবনা, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১

স্মৃতি

মানুষগুলো যখন স্মৃতি হয়ে যায়, স্মৃতিগুলো তখন জীবন্ত হয়ে ওঠে।

দুবনা, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১

Tuesday, February 23, 2021

সেকাল একাল

 

আগে মৃত্যু আসত ব্যাকডোর দিয়ে, এখন আসে সিংহদ্বার দিয়ে, আগে থেকেই জানান দিয়ে। মৃত্যুটা আর আশ্চর্য কিছু নয়, মামুলি ব্যাপার।

দুবনা, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১

বলদ বদল


আমরা কমবেশি সবাই বিভিন্ন বাদ নিয়ে বিবাদ করি, এমনকি মারামারি খুনোখুনি পর্যন্ত। এখন মরুভূমিতে ধবল সূর্য দেখে মনে হচ্ছে মানুষ যুগ যুগ ধরে চলে আসা রীতিনীতির বন্ধনে এতটাই আবিষ্ট যে এর বাইরে নিজেকে ভাবতে পারে না, নিজের ভালো মন্দ বুঝতে পারে না। তাই সমাজ বদলানোর আগে নিজেকে বদলানো প্রয়োজন, সমাজের মানুষগুলো বদলানো প্রয়োজন। সেটা না হলে বদলে যাওয়া সমাজে ঘাপটি মেরে থাকা প্রতিবিপ্লবীরা একদিন ঠিকই বদলা নেবে, সমাজের গতি বদলিয়ে তাকে নিয়ে যাবে পেছন পানে।
দুবনা, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১

Monday, February 22, 2021

বোঝার বোঝা

সব বুঝলেই যে বোঝা হয়ে যাবে তা তো নয়। অনেক সময় এই বোঝাটাই খুব ভারী বোঝা হয়ে যায়। করোনা আমাদের সেটাই শেখাচ্ছে।

মস্কো, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২১

বিশেষণ

আজকাল সভা সমিতিতে নিজেকে খুবই মূর্খ বলে মনে হয়। প্রশংসা আর তৈল মর্দণের মধ্যে প্রায়ই পার্থক্য ‌ধরতে পারি না। দুর্নাম আর বদনামের ক্ষেত্রেও প্রায় একই অবস্থা।

মস্কো, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২১

মুখোশ

আমরা কি সব সময়ই কোনো না কোনো মুখোশ পরে থাকি না? ছাত্রদের কাছে আমি এক রকম, বন্ধুদের কাছে অন্য রকম। মানে স্থান কাল পাত্র ভেদে আমি বিভিন্ন রূপ ধারণ করি। এটা সবাই করে। বলতেই পারি এ পরিস্থিতিতে এটাই আমার স্বাভাবিক রূপ। তার মানে পরিস্থিতির সাথে সাথে আমাদের মুড, কথার ভঙ্গি, অঙ্গভঙ্গি এসব বদলাচ্ছে। এই শত আমির মধ্যে আসল আমিটা কে সেটা কি আমি জানি? আমরা তো নিজের সাথে প্রায়ই কথা বলি না, নিজেকে এড়িয়ে চলি। কেন? নিজের কাছে তো মিথ্যে বলা যায় না। ভনিতাও করা যায় না। মুখোশটা তখন নিমেষেই ধরা পড়ে কিনা!
মস্কো, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২১

সম্বোধন

রুশ দেশে বিভিন্ন বক্তৃতায় তো বটেই এমনকি রেডিও টিভিতে পর্যন্ত দেশের প্রেসিডেন্টকে বলা হয় ভ্লাদিমির পুতিন, ভ্লাদিমির ভ্লাদিমিরোভিচ পুতিন বা প্রেসিডেন্ট পুতিন। উনি বাংলা জানলে নিশ্চয়ই রুশ ভাষায় বিশেষণের অভাব দেখে চুপসে যেতেন। আ মরি বাংলা ভাষা।

মস্কো, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২১

ভাষা

যদিও মাতৃভাষার আবেদন এক ফোঁটাও কমেনি তারপরও বলব, কেউ কোন ভাষায় বলল তার চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ সে কী বলল।

মস্কোর পথে, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২১

Friday, February 19, 2021

টিকা ও ছবি

টিকা নাও, ছবি দাও। দেওয়া নেওয়ার এক অভূতপূর্ব উদাহরণ সৃষ্টি করল করোনা ভ্যাকসিন।

দুবনা, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২১

মঙ্গলের পথে আরেক ধাপ


নাসা মঙ্গলে মহাশূন্যযান পাঠাল। এ নিয়ে ফেসবুকে অনেকেই লিখছেন, আনন্দ প্রকাশ করছেন। সেটা স্বাভাবিক। কেননা মানব জাতির জন্য এটা স্টেপ ফরোয়ার্ড। কিন্তু অনেকের পোস্টে নাসার বিশাল বিজ্ঞানী স্টাব পেছনে ফেলে সামনে চলে এসেছেন চার ভারতীয়। আমার মনে হয় এটা আমেরিকা বা নাসার প্রতি তাদের কমিটমেন্টের প্রতি আমাদের অবহেলা। যারা বাইরে থাকেন, কাজ কর্ম করেন, দেশের কথা সব সময় মনে করলেও, মনে প্রাণে দেশপ্রেমিক হলেও প্রফেশনাল লাইফে তারা যেখানে কাজ করছেন সেই কোম্পানি, দেশ বা ইনস্টিটিউটের প্রতি দায়বদ্ধ। এটাই প্রফেশনালিজম। তাই দেশের সন্তানদের অর্জন নিয়ে গর্ব বা আনন্দ উল্লাস করার সময় আমরা যেন তাদের এই অর্জনের পেছনে বিদেশী সংস্থার অবদানের কথা ভুলে না যাই আর এটাও মনে রাখি, সুযোগ পেলে এসব প্রতিভাবান মানুষ নিজেদের দেশের জন্য এরকম সম্মান নিয়ে আসতে পারতেন।

দুবনা, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২১

আজ দুপুরে ভোলগায়


আন্তন এল গত রাতে। কয়েকদিন থেকেই আসবে আসবে বলছিল। কুকুরের খাবার ওর ওখানে। মায়ের অনেক বকাঝকার পর গতকাল ওর আগমন। রাস্তায় মনে হয় বন্ধুর ওখানে নেমেছিল। কথায় সেটা খুব ভাল ভাবেই টের পাচ্ছিলাম। বললাম খেতে, খাই খাই করেও বলল ঘুমুবে। কী আর করা। অনেকক্ষণ পরে হঠাৎ ওর মনে হল কসমোলজি সম্পর্কে কথা বলার এটাই সময়। নিজে নিজে বেশ কিছুক্ষণ বকবক করার পর আমার মতামত জিজ্ঞেস করল। বললাম, "এক কাজ কর, আমি তোকে কয়েকটা বই দিই। পড়। তাতে তোর প্রশ্ন করতে সুবিধা হবে। আমার ও উত্তর দেওয়া সোজা হবে।" "আসলে তুমি আমাকে এসব বলে সময় নষ্ট করতে চাও না। ভাব আমি বুঝব না।" "দেখ এসব ব্যাখ্যা করাই আমার কাজ। তবে সঠিক উত্তর পেতে হলে সঠিক প্রশ্ন করতে হয় আর সঠিক প্রশ্ন করার জন্য অনেক পড়াশুনা করতে হয়।" এরপর এল ধর্মের কথা। বলল ঈশ্বর নেই। আমি বললাম, এই এটাও যেমন এক ধরণের বিশ্বাস, এর উল্টো ধারণাও ঠিক একই রকম বিশ্বাস। তবে মহাবিশ্বের ফাংশন করার জন্য ঈশ্বরের উপস্থিতি অনিবার্য নয়। তারপর ও কারদাশভ স্কেল নিয়ে জানতে চাইলো। কবে যেন ইউটিউবে এ নিয়ে মুভি দেখেছে। আমার এটা জানা ছিল না। ভিকিপেডিয়ায় গিয়ে দেখলাম। এই সোভিয়েত রেডিও অ্যাস্ট্রোনোমার শক্তির ব্যবহার অনুযায়ী বিভিন্ন সভ্যতাকে তিন ভাগে ভাগ করেছেন। যারা শুধু নিজেদের গ্রহের এনার্জি সোর্স ব্যবহার করে তারা আছে প্রথম স্কেলে। যারা তাদের নক্ষত্রের (আমাদের ক্ষেত্রে সৌর জগত) শক্তি ব্যবহার করে তারা দ্বিতীয় স্তরে আর যারা তাদের গ্যালাক্সির শক্তি ব্যবহার করে তারা তৃতীয় স্তরে। যদিও এক অর্থে প্রাগইতিহাসিক সময় থেকে আমরা সূর্যের শক্তি ব্যবহার করে আসছি তার পরেও মাত্র কিছুদিন আগেও আমরা প্রথম স্তরেই ছিলাম। ইদানিং আমরা ইচ্ছেমত সৌর শক্তি ব্যবহার করছি বা বলা যায় সৌর শক্তিকে সংরক্ষণ করার উপায় আবিষ্কার করেছি। তাই বলা যায় এখন আমরা দ্বিতীয় স্তরের প্রথম ধাপে। তবে ইউরোপ আর টেক্সাসে বরফপাত সেখানে নতুন প্রশ্ন জন্ম দিতেই পারে। যাহোক, এক সময়ে বললাম, "এখন ঘুমা। কাল কথা বলব। আমার সাথে ভোলগায় যাবি বেড়াতে।" একটু দূরে কোথাও যেতে হলে আমি একা যাই না। দুপুরে খেয়ে দুজন বেরুলাম। নদীর পাড় দিয়ে হাঁটতে কষ্ট তাই গেলাম শহর হয়ে। রেল লাইন ক্রস করে নদীর দিকে এগুতে গিয়ে দেখি কয়েকটা কুকুর আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে। কুকুরদের ভয় করি না, তবে সর্বহারা কুকুরদের তেমন বিশ্বাস করি না। বিশেষ করে ক্ষুধার্ত কুকুর হাড্ডিও বেমালুম খেয়ে ফেলতে পারে। সাথে ছিল কুকুর তাড়ানোর চাইনিজ টর্চ। কিছু করার আগেই ওরা ওদের রাস্তায় গেল, আমরা ওদের এড়িয়ে চলে গেলাম নদীর দিকে। নীচে নেমে দেখি বরফ তেমন শক্ত নয়। আমরা একসাথে না গিয়ে একটু দূরত্ব রেখে এগুলাম। আমি হালকা বিধায় আগে, আন্তন একটু পেছনে। যদি কেউ ডুবতে শুরু করে যেন ইমারজেন্সি পুলিশদের ফোন করতে পারে। কিছুটা গিয়ে দেখি পায়ের নীচে বরফ ক্রমাগত নরম হচ্ছে। ফিরতে হল অগত্যা। এরপর ভাবলাম নদীর তীর ধরে যাই। বরফ মনে হয় মিটার খানি। যতদূর বুঝলাম গত সাত দিনে এদিকে কেউ আসেনি। পা ফেল্লেই কম করে হলেও হাঁটু পর্যন্ত পা ডুবে যায়। ছবিও খুব একটা তোলা হয়নি, আসলে তোলার কিছুই ছিল না। আসতে হয় ভোরে। তবুও কয়েকটা ছবি তুললাম। ভাগ্যিস গুলিয়াকে নিয়ে আসিনি। তাহলে পায়ের সাথে সাথে কান ঝালাপালা হয়ে যেত। অনেক তেল পুড়িয়ে (চর্বি) যখন বাসায় ফিরলাম দেখি জুতার ভেতরে বরফ ঢুকে গেছে আর পেটের ভেতর ক্ষুধা। ও হ্যাঁ, আন্তন আজ আর কসমোলজি নিয়ে তেমন উৎসাহ দেখায়নি। জিজ্ঞেস করল গত রাতে খুব উল্টাপাল্টা বলেছে কিনা। বললাম, "ও ধরণের উল্টাপাল্টা প্রশ্ন করা বরং অনেক ভাল। তোর কসমোলজি নিয়ে আগ্রহ জাগলে জিজ্ঞেস করিস। চেষ্টা করব যেটুকু জানি বলতে।" সেভা আর ক্রিস্টিনার পর আন্তন আগ্রহী হচ্ছে এ ব্যাপারে। আশা করি এক সময় মনিকাও জানতে চাইবে।

দুবনা, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২১
















Thursday, February 18, 2021

বন ভ্রমণ


আজ আবার গেলাম বনে ঘুরতে। করোনার পর এই প্রথম গুলিয়াকে নিয়ে। এর আগে যেদিন গুলিয়া আমার সাথে শেষ বনে গেছিল সেদিনই করোনা ভর করেছিল ওর ঘাড়ে। আজও আবার বলল ঠাণ্ডায় জমে গেছে। আসলে আমি বেড়াতে যাই কয়েক ঘণ্টার জন্য। আজ তাপামত্রা ছিল মাইনাস ১৫ র মত। এটা আমার ছবি তোলার জন্য সবচেয়ে আরামদায়ক আবহাওয়া, যদিও কয়েকটা ছবি নেবার পর হাত জমে যায়, কিছু সময় লাগে ওকে মানুষ করতে। মাকেও দেখেছি কছু হলেও বাবার কাঁধে দোষ চাপাতে। গুলিয়াও তাই। বলে আমি নিজেই নাকি নিজেই কঠিন ইনফেকশন। না, ওর ছবি তুলিনি। বউ তো ঘরের মানুষ। বন তো ঘরে থাকে না। তাই শুধু বনের ছবি। কোথায় আছে মক্কার মানুষ হ্বজ পায় না।

দুবনা, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১















যুগের হাওয়া

শুধু নিউটন, আইনস্টাইনরাই মানে সত্যিকারের বিজ্ঞানীরাই বলতে পারেন যে তাঁরা দৈত্যদের কাঁধে দাঁড়িয়ে আছেন বলেই বহুদূর পর্যন্ত দেখতে পান, অর্থাৎ তাঁরা নির্দ্বিধায় তাদের পূর্বসূরিদের অবদান স্বীকার করতে পারেন। রাজনীতিতে সেটা খুব কম জনেই পারে। আর তাই তো বার বার আমাদের ইতিহাস শুরু হয় নতুন কোন মেসিয়ার আবির্ভাবের মধ্য দিয়ে। ধর্মও এ নিয়মেই চলে। বলশেভিকরা তাদের পূর্বপুরুষদের সব অবদান অস্বীকার করেই নতুন সমাজ গড়তে চেয়েছিল। নতুন রাশিয়ার স্থপতিরাও একই ভাবে সোভিয়েত ইউনিয়নের যা কিছু ভাল, সব কিছু ধ্বংস করে সেখানে পুঁজিবাদ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেছে। আজ ইউরোপ আমেরিকায় নিওলিবারেলরা একইভাবে তাদের অতীতকে অস্বীকার করে ভবিষ্যতে যেতে চাইছে। রাজনীতি, ধর্ম, ক্ষমতার লোভ সব এককাট্টা হয়ে বৈজ্ঞানিক চিন্তার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেমেছে। অনেক বিজ্ঞানীও অর্থ দেবীর বেদিতে নিজেদের বলি দিচ্ছে।


দুবনা, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১

Wednesday, February 17, 2021

আলো ছায়া


ফটোগ্রাফি কী? আলো আর ছায়ার খেলা। আজ ডাক্তারের কাছে গেলাম। সাথে নিলাম ক্যামেরা। কিছু গ্রাফিক মানে বরফের উপর রোদের ছায়ার ছবি তুলব বলে। ক্যামেরা হাতে থাকলে যেটা হয়, একটু দেরী হয়ে গেল ডাক্তারের ওখানে যেতে। মনে পড়ল অসীমের কথা। ১৯৯০ সালে তুরস্ক গেছিলাম বন্ধুদের অনুরোধের ঢেঁকি গিলে। কথা ছিল ওখানে জ্যাকেট কিনে মস্কোয় বিক্রি করে যে ধার দেনা হয়েছিল সেটা শোধ করব। সারাদিন ছবি তুলে শেষ মুহূর্তে যা কিনলাম তাতে ৯০০ ডলার ক্ষতি। অসীম তখন বলেছিল নেক্সট টাইম বিজন দা কোথাও গেলে তার ক্যামেরা জোর করে হলেও ছিনিয়ে নিতে হবে। ভাগ্যিস সেবার লস হয়েছিল। লাভ হলে লোভ হত। তাহলে হয়তো আর পড়াশুনা তেমন এগুতো না।

দুবনা, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১