Saturday, November 30, 2019

মেলা মেলা

রাস রথ কত মেলা
মেলা তাই ঝামেলা
ঝামেলা নয় মেলা
মেলা আনন্দ মেলা

দুবনা, ৩০ নভেম্বর ২০১৯

Friday, November 29, 2019

ছবি

অনেকের কয়েক বছর আগের আর বর্তমানের ছবি দেখে মনে হয় এরা কোরবানীর জন্যে নিজেদের তৈরি করছে।

দুবনা, ২৯ নভেম্বর ২০১৯

Thursday, November 28, 2019

লঙ্গর খানা


- দাদা, আপনি কোথায়?
- এই একটু পলিক্লিনিকে এসেছি।
- কেন? শরীর ঠিক আছে তো?
- শরীর ঠিক না থেকে যাবে কোথায়?
- তাহলে?
- জীবনে তো কারও জন্যও কিছু করতে পারলাম না, তাই ভাবলাম ছিঁচকে অসুখদের জন্য একটা রোগালয় খুলব নিজের শরীরে। মানে রোগদের বিশ্রামাগার। ওটাকে চালু রাখতে হলে মাঝে মধ্যে পলিক্লিনিকে আসতে হয় রেগুলার চেক আপের জন্য। তাই আসা।
- তা ডাক্তার দেখালেন? কি বলল?
- বলল রোগেরা নিশ্চিন্তে আরও অনেক দিন বসবাস করতে পারবে এই অনাথ আশ্রমে।

দুবনা, ২৯ নভেম্বর ২০১৯ 





বরফ

বরফকে বেসো না কো ভালো
বরফকে ভালবাসলে ওর মন গলে যাবে
শুরু হবে অফুরান কান্না
আর সে কান্নায় ভিজে যাবে তোমার পা
ভেসে যাবে তুমি দূর সাগরে
বরফ ঠাণ্ডা
ওকে ভালবাসতে নেই।
বরফকে বেসো না কো ভাল
ও বাইরেই সাদা, মনটা ওর বড়ই কালো
দুবনা, ২৮ নভেম্বর ২০১৯ 

নাম ও কাম

অনেক কিছুরই নামের সাথে কামের মিল নেই। ব্যতিক্রম মনে হয় হাসপাতাল। পাতাল পুরীর মত নিস্তব্ধ লম্বা লম্বা করিডোর দিয়ে সাদা আপ্রন পরে নার্স আর ডাক্তাররা হাঁসের মত ঘুরে বেড়ায়।

দুবনা, ২৭ নভেম্বর ২০১৯

Monday, November 25, 2019

জীবন বাজীর চলা

জাতি হঠাৎ আবিষ্কার করল যে তাদের উন্নয়নের গাড়িটার ব্রেক কারা যেন নষ্ট করে ফেলেছে। আমরা এগুচ্ছি ঠিকই তবে কোন লক্ষ্যে গিয়ে যে পৌঁছুব সেটা কেউ আর হলফ করে বলতে পারহে না। জার্নিটা তাই যত না আনন্দের তার চেয়ে শতগুণ আশঙ্কার। যাকে বলে এক্সট্রিমাল জার্নি

দুবনা, ২৬ নভেম্বর ২০১৯


ভাবনা কাহারে বলে

ভাবনা যখন ঘাড়ে চেপে পা দোলায় আর ভাব না করে শুধুই ভাবায় টাক মাথাই তখন একমাত্র সান্তনা। চুল না ছিঁড়ে মানুষ টাক মাথায় হাত বুলায়। মস্কো, ২৫ নভেম্বর ২০১৯

পেটেপিঠ

পেটে পিঠ ঠেকে গেলে মানুষ হয় ক্ষুধার্ত আর পিঠে পেট ঠেকলে মেদহীণ সুস্বাস্থ্যের অধিকারী। মস্কো, ২৫ নভেম্বর ২০১৯

Sunday, November 24, 2019

হারজিত

ইনিংস পরাজয় নিয়ে আপনার মতামত কি?
দেখুন, আমরা বাংলাদেশিরা সব সময় দয়ার সাগর, যাই করি আবেগ দিয়ে করি। জিতলেও জেতার মতই জিতি, হারলে হারার মতই হারি। জেতাটা যখন ফস্কে গেলো, হেরে দেখিয়ে দিলাম আমাদের মনের উদারতা।

মস্কো, ২৫ নভেম্বর ২০১৯


খেলা আর ধূলা

বাংলাদেশে আইস হকি খেলে না কেন?
আমরা খেলাকে বলি খেলাধূলা। আইস হকিতে ধূলা নাই কিনা তাই ওকে অপূর্ণ অপূর্ণ মনে হয়। তাই খেলি না।

মস্কোর পথে, ২৪ নভেম্বর ২০১৯

খেলাধূলা

বর্তমানের আওয়ামী লীগ অনেকটা ফুটবল বা ক্রিকেট লীগের মত। ফি দিয়ে এন্ট্রি করা যায়। খেলা যায়। আবার প্রয়োজনে ম্যাচ ফিক্স করা যায়।

মস্কোর পথে, ২৪ নভেম্বর ২০১৯

লোভ

ছানাবড়া চোখেরা চোখ মেলে দেখে
চাই চাই আরও চাই জপমন্ত্র শেখে

দুবনা, ২৪ নভেম্বর ২০১৯








Saturday, November 23, 2019

বাই প্রোডাক্ট

পরিবারে অর্থনৈতিক উন্নয়নের কিছু কিছু বাই প্রোডাক্টের একটা হল দু একটা বেয়াড়া সন্তান। দেশের লাগামহীন উন্নতির সাথে সাথে পেঁয়াজের ব্যাপারী, লবনের দোকানদার বা গাড়ি ঘোড়ার মালিকেরা একটু আধটু বেয়াড়া হলে অন্যায়ের কিছু নেই। দেশ তো শুধু দেশ নয়, মা জননীও বটে। সাধে তো আর দেশকে জননী জন্মভূমি বলা হয়না। তবে এটাও ঠিক, সময় মত বেয়াড়া সন্তানদের কন্ট্রোলে আনতে না পারলে শেষ জীবনটা বৃদ্ধাশ্রমে কাটাতে হতে পারে! দুবনা, ২৪ নভেম্বর ২০১৯ Focus Workshop photo

তাল গাছ

পাপ তাল গাছ দেখতে কেমন? পাইন গাছের চুলগুলো রোনাল্ডিনোর মত কেটে দিলে যেমনটা তাল গাছও ঠিক তেমন। দুবনা, ২৩ নভেম্বর ২০১৯

বরফ

বরফের চাদর গায়ে
বসে আছি পথ চেয়ে
আসবে তুমি আসবে বলে
টেনে নেবে নিজের কোলে

দুবনা, ২৩ নভেম্বর ২০১৯

সমস্যা

সমস্যার সমস্যা নিয়ে ভাবতে ভাবতে লোকে এমন সব সমস্যার সম্মুখীন হয় যে সেটা পুরনো সমস্যার চেয়ে বহুগণ বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। দুবনা, ২৩ নভেম্বর ২০১৯

দাসের দাসত্ব

মার্ক্সের "দাস ক্যাপিটাল" নাম শুনে অনেকেই এটা দাসদের ক্যাপিটাল ভেবে মনে মনে উৎফুল্ল হন। কারণ হয়তো সারপ্লাস ভ্যালু দাসেরাই তৈরি করে। সে অর্থে ক্যাপিটাল দাসদের হবে না তো কার হবে? তবে বাস্তবটা একেবারেই ভিন্ন। ক্যাপিটালতা দাসদের নয়, মানুষই ক্যাপিটালের দাস। আর জার্মান দেশের লোকজন ওদের দাসের সাথে বাংলার দাসের অভূতপূর্ব আত্মীয়তা দেখে হেসে গড়াগড়ি যায়। দুবনা, ২৩ নভেম্বর ২০১৯

ডিজিটাল পরলোক

আশা করি আমাদের জীবদ্দশাতেই স্বর্গ আর নরকের ডিজিটালিকরণ ঘটবে। নরকের পাচকেরা তেলেভাজি আর সেদ্ধর বাইরেও রোস্ট, গ্রীল এসব করা শিখবে। স্বর্গে বাইজী নাচের পাশাপাশি ডিস্কো ড্যান্স, রক, মেটাল এসবের আমদানী হবে, আর ডাইবেটিসের পুণ্যবান রুগীদের জন্য চিনিবিহীন মিষ্টিসহ বিভিন্ন স্বল্প ক্যালরির খাবার সরবরাহ করা হবে। দুবনা, ২৩ নভেম্বর ২০১৯

Friday, November 22, 2019

পপুলার উইসডম

রাশিয়ানে একটা কথা আছে যাকে বলা চলে "পপুলার উইসডম"। আমাদের দেশগুলোর সরকারেরা প্রায়ই নিজেদের তৈরি আইন নিজেরাই অমান্য করে। সেটা এড়াতে তারা অবশ্য এই পপুলার উইসডম ব্যবহার করতে পারে। সমস্ত আইন বাতিল করে এইসব পপুলার উইসডম একেবারে সংবিধানে লিখে ফেলতে পারে। তাতে জনগণের প্রতিও শ্রদ্ধা জানানো হবে আর বার বার সরকারকে আইন অমান্য করার অভিযোগে দায়ী হতে হবে না। এখন বলি কি কি পপুলার উইসডম সরকার প্রথম মন্ত্র হিসেবে নিতে পারে "শক্তের ভক্ত নরমের যম" "জোর যার মুল্লুক তার" আমাদের সব দেশে এ ধরণের জ্ঞানগর্ভ প্রবাদের অভাব নেই। চাইলে একটা কেন, কয়েকটা আইনী বই তৈরি করা যাবে। আমরা তো সরকারকে প্রায়ই সরকার বাহাদুর বলে ডাকি। যাই বলেন, বাহাদুর শাহ কিন্তু তাঁর শক্তিমত্তার জন্য কখনই পরিচিত ছিলেন না। সরকারকে বাহাদুর ডাকবেন, আবার তার কাছে বীরত্ব আশা করবেন সেটা তো হয় না! দুবনা, ২২ নভেম্বর ২০১৯

Thursday, November 21, 2019

ভালমন্দ

ভাল রকম খারাপ থাকা আর খারাপ রকম ভাল থাকা দুটোই খুব উত্তেজনাময়। যাকে বলে ভাল-মন্দের জবরদস্তি বা জবর দোস্তি! দুবনা, ২১ নভেম্বর ২০১৯

অন্তর্ঘাত

মাঝে মাঝে মনে হয় আমার খাবারগুলোর জন্ম বাংলাদেশে। তা না হলে এত ঘন ঘন অন্তর্ঘাতী কাজ করবে কেন? দিল তো দিনটা মাটি করে! দুবনা, ২১ নভেম্বর ২০১৯

Wednesday, November 20, 2019

ছেলে মেয়ে ছেলে

দাদা, ছেলে এবং মেয়ে - এরা কি কম্যুটেটিভ? না! কেন? বাজারে গিয়ে "লোকটি ছেলেমেয়েকে ভালবাসে" আর "লোকটি মেয়েছেলেকে ভালবাসে" দুটো বাক্য বলে লোকজনের রিয়াকশন দেখেই বুঝতে পারবে যে ছেলে আর মেয়ে শব্দ দুটো ইচ্ছে মত স্থান পরিবর্তন করতে পারে না। দুবনা, ২০ নভেম্বর ২০১৯

Tuesday, November 19, 2019

অসুখের সুখে পাগল

অসুখ বিসুখ হল আনস্কিল্ড লেবারের মত যারা প্রায়ই অনেকে মিলে ছোট্ট একটা ঘরে থাকে। তা না হলে আমার এই ছোট্ট শরীরে, যা অনেক আগেই হাউজ ফুল, হাজারো অসুখ বিসুখ ঠাঁসাঠাসি করে বাস করত কেমনে? ভাবছি আসলে ওরা অদক্ষ শ্রমিক নাকি সাম্যবাদী! দুবনা, ১৯ নভেম্বর ২০১৯

বীরত্ব

মেইন রোড দিয়ে সাইকেল চালিয়ে অফিস যাচ্ছিলাম। বাসটা এক মিটার দূরত্ব রেখে ওভারটেক করল। ভয় পেয়েছে নিশ্চয়ই। দুবনা, ১৯ নভেম্বর ২০১৯

Sunday, November 17, 2019

পররাষ্ট্রমন্ত্রী

কেউ কেউ ভাবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মানে হল পর রাষ্ট্রের মন্ত্রী, তাদের কাজ পর রাষ্ট্রের স্বার্থ রক্ষা করা মস্কো, ১৮ নভেম্বর ২০১৯

ঢেঁকির বুদ্ধি

ভিন্ন চিন্তার মানুষের সব সময়ই শারীরিক বা মানসিক ভাবে নির্যাতিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই পররাষ্ট্র মন্ত্রী এদের বিদেশে পাঠিয়ে দিলেই পারেন। তাতে নির্যাতন করার বদনামও হবে না আর বোনাস হিসেবে রেমিট্যান্সের টাকাও পাবেন। মস্কো, ১৮ নভেম্বর ২০১৯

নড়বড়ে

পেঁয়াজ আমাদের যেভাবে নাকানি চুবানি খাওয়াল তাতে নতুন করে প্রমাণ করার দরকার নেই যে আমাদের মনোবল কতটা নড়বড়ে মস্কোর পথে, ১৭ নভেম্বর ২০১৯

রান্না

সারা জীবন তো পেঁয়াজ দিয়ে মাংস রান্না করলে এবার না হয় মাংস দিয়ে পেঁয়াজ রান্না কর। এমন সুযোগ কী জীবনে দুই বার আসে? মস্কোর পথে, ১৭ নভেম্বর ২০১৯

পেঁয়াজ ভাত

ছিলাম ভেতো হলাম পেঁয়াজী ভাত দিয়ে খাব পেঁয়াজ ভাজি মস্কোর পথে, ১৭ নভেম্বর ২০১৯

Saturday, November 16, 2019

বিবর্তন

কিছু মানুষ ভালো কিছু খুব তাড়াতাড়ি গ্রহণ করলেও অধিকাংশ মানুষ খারাপটা আরও দ্রুত গ্রহণ করে, নিজেদের খারাপ দিকটা যতদূর সম্ভব আঁকড়ে থাকে। রক্ষনশীলতা আসলে ক্ষেত্র বিশেষে ভালো হলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সেটা পশ্চাদ্মুখীতা। আসলে সব কিছুর পেছনেই কাজ করে স্বার্থ, সমাজের, জাতির মোড়লদের স্বার্থ। সোভিয়েত ইউনিয়নে বসবাসের সময় এর অনেক খারাপ দিকই চোখে পড়ত, বিশেষ করে বাক ও ব্যক্তি স্বাধীনতার ক্ষেত্রে। পশ্চিমা দুনিয়া সোভিয়েত ব্যবস্থার বিরোধিতা করতে এর খ্রাপ দিকগুলোই বেশি করে উল্লেখ করত, নিন্দা করত এক দল ও এক মতের। কিন্তু বর্তমানে একটু খেয়াল করলেই দেখা যাবে এখন তারা নিজেরাই সেসব জিনিস দিব্যি করে যাচ্ছে। ফর্মালি প্লুলারিজম থাকলেও নিও লিবারেল মতবাদ রাজনৈতিক দল ও মিডিয়াকে ব্যবহার করে বাকি সব মতবাদকে দাবিয়ে রাখতে সদা সচেষ্ট। তাই মানুষ স্বাধীন হলেও রাষ্ট্র, বিশেষ করে বড় বড় কোম্পানি, ব্যাংক ইত্যাদি তাদের দাসত্বের অদৃশ্য শিকলে বেঁধে রেখেছে। একই ঘটনা ঘটছে সমাজের অন্যান্য ক্ষেত্রেও। আমাদের মহিলা কর্মীদের সাথে সৌদি আরবে যা ঘটছে তাতে প্রমানিত হয় ইসলাম পূর্ব আরব সমাজের থেকে আচার আচরণে তারা খুব বেশি দূরে যেতে পারেনি। দেশে বিধবা বিবাহ চালু হলেও এখনো সমাজ সেটাকে যে মনেপ্রানে মেনে নিয়েছে, নিচ্ছে সেটা মনে হয় না। সহমরণ বা সতীদাহ প্রথা আইন করে বন্ধ করলেও বিধবা বা বিবাহ বিচ্ছেদের পরে নারীদের যে অবস্থার মধ্যে দিয়ে এখন যেতে হচ্ছে সেটাকে মানসিক দাহ বলাই যুক্তিযুক্ত। আর এটা শুধু হিন্দু সম্প্রদায়েই নয় মুসলিম সম্প্রদায়েও ব্যাপকভাবে দেখা যাচ্ছে। এত শিক্ষা দীক্ষা, গাড়ি ঘোড়া, আধুনিক বিজ্ঞানের অগ্রগতির পরেও অধিকাংশ মানুষ আসলে সেই মধ্য যুগেই রয়ে গেছে। দুবনা, ১৭ নভেম্বর ২০১৯

Friday, November 15, 2019

শক্তির বিড়ম্বনা

আমার বয়স যখন মাত্র ছয় মাস আমাদের বাড়িতে ডাকাতি হয়েছিল। মা বাবা ওদের প্রহারে অজ্ঞান হয়ে গেলে ডাকাতরা আমাকে ন্যাকড়ায় পেঁচিয়ে গায়ে কেরসিন ঢেলে দেয় পুড়িয়ে মারবে বলে। স্বপনদা ওদের কাছ থেকে আমার প্রাণ ভিক্ষা করে সে যাত্রায় আমাকে রক্ষা করে। এসব গল্পই আমার শোনা বড়দের কাছে। ফলে সেই ছোটবেলা থেকেই ডাকাতের ভয় আমাকে পেয়ে বসে। তখন ঘুমুতে গেলেই বিছানার উপরে হলুদ পাড় দেওয়া লাল রঙের যে চাঁদোয়া (শামিয়ানা) ছিল সেটা হঠাৎ তারাভরা আকাশ হয়ে যেত। দেখতাম অমানিশার সেই কালো রাতের গা ফুঁড়ে ঘোড়ায় চড়ে আসছে ডাকাতের দল। পরনে ওদের লাল পোশাক, মাথায় লালা পাগড়ী, কপালে সিঁদুরের ফোঁটা। শুনেছি ডাকাতরা রক্ষা কালীর পূজা করে বেরুত ডাকাতি করতে। পরে বঙ্কিমচন্দ্রের লেখায়ও সেরকম গল্প পড়েছি। আর ভেবেছি কেন ঈশ্বর ডাকাতদের রক্ষা করেন। বর্তমানে ঈশ্বরের নামে মানুষের উপর যত অত্যাচার করা হয়, যত মানুষকে হত্যা করা হয়, তা হয়তো আর কোন কিছুর নামেই করা হয় না। ঈশ্বর নিজেই আজ এইসব দুর্বৃত্তদের হাতে জিম্মি, তাই ইচ্ছে থাকলেও তিনি আর অসহায় সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারেন না। তিনি এখন সামরিক শাসকের আমলে নামেমাত্র রাষ্ট্রপতির মত, যিনি সাধারণত বিচারপতিও, যার নামে ও যার কাঁধে বন্দুক রেখে সামরিক শাসক হেন অন্যায় নেই যা করে না। পুতুল রাষ্ট্রপতি তবুও কালেভদ্রে পদত্যাগ করতে পারেন, কিন্তু সর্বশক্তিমান ঈশ্বর এতটাই অসহায় যে তিনি পদত্যাগও করতে পারেন না। দুবনা, ১৬ নভেম্বর ২০১৯

গ্লাস

দেশে থাকতে প্রায়ই মুসলিম বন্ধুদের প্রায়ই বলতে শুনতাম "তোদের তো ইন্ডিয়া আছে। দেশে কিছু হলে ওখানে চলে যাবে। আমরা যাব কোথায়? " হঠাৎ করেই কথাটা মনে পড়ে গেল। আর মনে পড়লো "গ্লাস অর্ধেক ভর্তি না অর্ধেক খালি" সেই অমীমাংসিত প্রশ্ন। আচ্ছা একথা বলে মুসলিম প্রতিবেশীরা হিন্দুদের মনে নিশ্চিন্ত ভবিষ্যতের আশা জাগাতে নাকি তাদের দেশ ছাড়া করে ভারতে পাঠানো হবে বলে ভয় দেখাত? দুবনা, ১৫ নপভেম্বর ২০১৯

বিষয়বস্তু

সোভিয়েত আমলে এদেশের দুটো প্রধান সংবাদপত্র প্রাভদা (সত্য) ও ইজভেস্তিয়া (খবর) সম্পর্কে একটা জোক চালু ছিল - "সত্যে খবর নেই, খবরে সত্য নেই।" এখন সে অবস্থা দেখি সর্বত্র। বিষয়ে বস্তু নেই, বস্তুতে বিষয় নেই। সব যাকে বলে ভার্চুয়াল রিয়্যালিটি। কোন কিছুর কোন বিষয়বস্তু নেই। অর্থহীন বিষয়বস্তু, বিষয়বস্তুহীন অর্থ! অথবা সর্বত্রই শুধু বিষয় আর বিষয়। এত বিষয়ের ছড়াছড়ি যে মানুষ কোনটা রেখে কোনটা নেবে সেটা ঠিক করতে করতেই জীবন কেটে যায়। বিষয়কে বস্তু থেকে আর বস্তুকে বিষয় থেকে আলাদা করলে যা হয়। আসুন ওদের ভাঙ্গা সংসার আবার গড়ে তুলতে সাহায্য করি, আলাদা আলাদা বিষয় আর বস্তু না খুঁজে বিষয়বস্তু খুঁজি। দুবনা, ১৫ নভেম্বর ২০১৯

Thursday, November 14, 2019

না বোঝার বোঝা

অভিনন্দন! অভি নন্দন মানে? আমার বাবার নাম অভি বটে, তবে আমি অভি নন্দন নই। আরে ছোট চুল রাখলে আর ছেলেদের মত জামাকাপড় পরলেই নন্দন হয়ে যায় নাকি! আমি, আমি ঠিক তা বলতে চাইনি... আবার অজুহাত। ভুল করেছেন করেছেন, তা আবার এত কচলানোর কী আছে? সমাজটা উচ্ছন্নে গেল আপনাদের জন্য। মানে... আবার মানে। যান, মানে মানে কেটে পড়ুন। দুবনা, ১৪ নভেম্বর ২০১৯

Wednesday, November 13, 2019

জল্পনা কল্পনা এসব মোটেই অল্প না

উনি এটা কি করলেন? এটা ওনার অনেক আগেই করা উচিত ছিল। এতদিন মানুষ বসে থাকে? আরে ভাই উনি আগে এটা করলে লোকে ওটা বলত, অবশ্য করেননি বলে এটা বলছে। নিকুচি করি তোমার এটা ওটা বলার। ওনার ভালো উনিই ভালো বুঝবেন। করেছেন বেশ করেছেন, যখন খুশি তখন করেছেন। বেচারা। এত উকিল চারিদিকে কপালে কী যে আছে কে জানে! দুবনা, ১৪ নভেম্বর ২০১৯

ধার

ধার করা ধারণার ধার খুব বেশি কারও আত্মা খাঁচা ছাড়ে কারও ফুলে পেশী দুবনা, ১৪ নভেম্বর ২০১৯

দাস

গণতন্ত্রের কথা আমরা যখন বলি তাতে আমরা বুঝি কোন কাজে অধিকাংশ মানুষের অংশগ্রহণ। অর্থাৎ ভুল শুদ্ধ যাই হোক, যদি অধিকাংশ মানুষ সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে কোন কাজ করে তবে তা হবে গণতান্ত্রিক। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ মিথ্যাকে সত্য বললে তো সেটা সত্য হয়ে যাবে না, যেমন কিনা অধিকাংশ মানুষ সত্যকে মিথ্যা বললে সেটা মিথ্যা হয়না। তারপরেও সংখ্যার জোরে, মিডিয়া ব্যবহার করে মিথ্যা প্রচারের মাধ্যমে, জনগণের অনুভূতিকে ম্যানিপুলেট করে অনেক কিছুই হচ্ছে আজকের বিশ্বে আর সেসব হচ্ছে গণতন্ত্রের নামেই। তাহলে কি দিনের শেষে সেটাই দাঁড়াচ্ছে না যে মুষ্টিমেয় কিছু মানুষ যাদের রাজনৈতিক বা অর্থনৈতিক ক্ষমতা আছে তারাই মানুষের কাঁধে বন্দুক রেখে নিজেদের সুবিধা মত গুলি ছুড়ছে? দাস প্রথা অনেক আগে উঠে গেলেও আমরা সবাই স্বেচ্ছায় দাস হচ্ছি নতুন মালিকের। ইচ্ছা অনিচ্ছায় আমরা কাজ করছি, করতে বাধ্য হচ্ছি ব্যাংকের লোণ শোধ করতে, নতুন কোন গ্যাজেট কিনতে। আমরা দাস হচ্ছি আমাদের লোভের। হ্যাঁ, আমাদের স্বাধীনতা আছে লোণ না নেওয়ার, নতুন নতুন বিভিন্ন ডিভাইস না কেনার। তারপরের আমরা রংবেরঙের অ্যাড দেখে প্রলোভনের শিকার হয়ে এসবই করছি। আগে দাসেরা তারা যে দাস অন্তত এই সত্যটুকু জানতো। আজ আমরা সেটাও জানি না। আমরা অনেক আগেই প্রদীপের সেই জ্বীনে পরিণত হয়েছি যারা নিজেদের খুব শক্তিশালী মনে করলেও, পারত পক্ষে স্বাধীন হলেও আসলে তা নই। বিগ ব্রাদাররা আঙ্গুলির ইশারায় আমাদের দিয়ে প্রায় যা খুশি তাই করিয়ে নিতে পারে। গণতন্ত্র ব্যক্তি মানুষের কথা বললেও ক্ষমতাসীনরা আসলে আমাদের সমষ্টির একজন করে রাখছে, তাঁদের ইমারতের একেকটা ইটে পরিণত করে রাখছে যাদের গুরুত্ব থেকেও নেই, কেননা অতি সহজেই তাঁদের পরিবর্তে নতুন ইট বসান যায়। বিশাল এই জনসমুদ্রে এই মানুষ এমনকি এক বিন্দু জলের যে ক্ষমতা সেটাও রাখে না! দুবনা, ১৩ নভেম্বর ২০১৯

Tuesday, November 12, 2019

সাবধান!

ধারণা ছিল সামাজিক মাধ্যমের যুগে এর একজন সক্রিয় অংশগ্রহণকারী হিসেবে আমি এখন বেশ "আপ টু ডেট" মানুষ। সে ভুলটা আজ ভাঙল। মনে পড়ে সোভিয়েত আমলের কথা। ঘরে টিভি প্রায় সবসময় বাজত, রুশ বন্ধুরা আড্ডা দিতে আসত। তারপরেও চেরনোবিলের ঘটনা আমি জানতে পারি বেশ কয়েকদিন পরে। একই ঘটনা ঘটে লেনিনাকানের ভুমিকম্পের সময়। মানে এই নয় যে কেউ কোথাও এ নিয়ে কথা বলেনি। আমি সবকিছুর মধ্যে থেকেও কিছুই শুনতে পাইনি, নিজেকে নিয়েই ব্যস্ত ছিলাম। গত রাতে বলিভিয়া নিয়ে কি একটা পোস্ট দেখেছিলাম, গুরুত্ব দেইনি। আজ সকালে আবার আরেকটা পোস্ট দেখলাম। একটু খবর নিয়ে দেখলাম ইভো মোরালেস প্রায় কাপুত (মানে তাঁর দিন শেষ)। তাঁকে যে থাকতে দেওয়া হবে না সেটা কমবেশি জানাই ছিল। একটু খারাপ লাগছে। আরও খারাপ লাগছে নিজের দুরাবস্থার কথা ভেবে। এখনো সেই "আউট ডেটেড"ই রয়ে গেলাম। আবার বুঝলাম বিগ ব্রাদার ঝিমুতে পারে, ঘুমায় না। সর্বদা সজাগ। একটু রিল্যাক্স করেছ কি ঘাড় মটকিয়েছে। সাধু সাবধান! দুবনা, ১৩ নভেম্বর ২০১৯

ত্রিভূজ প্রেম

ত্রিভূজ প্রেমে কেন ঝামেলা বেশি জানেন? কোণগুলো সব সময় সুক্ষ হয়, তাই খোঁচার ঘা বেশ লাগে। চর্তুৰ্ভূজ, পঞ্চভূজ মানে ভূজ যতই বাড়বে কোণ ততই স্থুল হবে আর আঘাতটাও কম লাগবে। আর বৃত্ত হলে তো কথাই নেই! বুঝলেন কিছু? মস্কো, ১২ নভেম্বর ২০১৯

কৃত্রিমতা

রাজনীতিবিদ ছাড়া পৃথিবীতে আজ প্রায় সব কিছুই মেয়াদোত্তীর্ণ। এই মেয়াদহীনতাই প্রমাণ করে রাজনীতিবিদদের কৃত্রিমতা। মস্কো, ১২ নভেম্বর ২০১৯

Monday, November 11, 2019

গণতন্ত্র

গণতন্ত্র হচ্ছে গণতার যন্ত্র বা কিছু মানুষের তান্ত্রিকতায় গণমানুষের যন্ত্রণা মস্কো, ১২ নভেম্বর ২০১৯

আচার

কুল না পেয়ে আলিচা দিয়ে বরইএর আচার বানালাম। নাম দিয়েছি স্বৈরাচার

মস্কো, ১২ নভেম্বর ২০১৯

বুক

একটা বুক বুকিং দিয়ে
বুকে সে কী ব্যথা
বুককে বুকিং করা
ভাই নয় সোজা কথা

মস্কো, ১১ নভেম্বর ২০১৯

Sunday, November 10, 2019

ক্ষমতা

সবলের কাছে ক্ষমতা অক্ষম দু
র্বলের কাছে দানো
ক্ষমতার নেশা বড় সংক্রামক
মান আর নাই মান।

মস্কো, ১১ নভেম্বর ২০১৯

মৃত্যু

কাদায় পিছলে পড়ে
কেঁদেকেটে গেল প্রাণ
নিশ্চয়ই নাস্তিক ছিল
মোটাসোটা ঐ হাতিখান

মস্কো, ১১ নভেম্বর ২০১৯

রটনা

B এর সাথে A এর হল BA
খবরটা ছড়িয়ে দিল টিয়ে রঙের টিয়ে
B এর সাথে A এর যখন হল ছাড়াছাড়ি
Bভিন্ন কথা রটতে শুরু করল তাড়াতাড়ি

দুবনা, ১০ নভেম্বর ২০১৯ 

Friday, November 8, 2019

নাখোশ মুখোশ

মুখোশটা আজ বড়ই নাখোশ
দিয়েছে কে যেন খুলে
মুখোশ পরে আসল রূপ সে
কবেই গিয়েছে ভুলে

দুবনা, ০৯ নভেম্বর ২০১৯ 

মুখোশ

চারিদিকে নীতির নামে
ঘুস দূর্নীতির জয়গান
চেতনার মুখোশ পরে
কলকাঠি নাড়ে শয়তান

দুবনা, ০৯ নভেম্বর ২০১৯

পেঁয়াজ

আমি নিজে যে মাছ মাংসের খুব ভক্ত তা নয়। অনায়াসে সবজি খেতে পারি দিনের পর দিন। তবে ২০১৪ সালে পুনা গিয়ে যখন দেখলাম IUCAA ক্যান্টিনে সপ্তাহে মাত্র একবার (বা দুইবার) মাংস দেয়, তাও শুধু আগে থেকে অর্ডার দিলে আমি সত্যি সত্যি প্রমাদ গুনলাম। আর একবার অর্ডার দিয়ে মাংস না পেয়ে আমার তো দিশেহারা অবস্থা। যতটা না মাংসের অভাবে, তার চেয়েও বেশি চাইলেই যে মাংস পাচ্ছি না সেই বাস্তবতার মুখমুখি হয়ে, যদিও বাইরের যেকোন রেস্টুরেন্টে গিয়ে মাংস খাওয়া যেত। বর্তমানে দেশে পেঁয়াজ সংকট চলছে। ১৯৭৪ সালে দেশে যখন লবনের অভাব ঘটে অনেকেই লবন ছাড়া রান্না করতেন। আমার ধারণা পেঁয়াজের ব্যাপারটাও অনেকটাই সাইকোলজিক্যাল। নাকি আমরা পেঁয়াজের নেশায় এত বেশি আসক্ত যে কিছুতেই ওর বেষ্টনী থেকে বেরিয়ে আসতে পারছি না?

দুবনা, ০৮ নভেম্বর ২০১৯ 
 
 
 

মানুষ

কিছু কিছু মানুষ অন্যদের সাফল্যকে নিজেদের ব্যর্থতা হিসেবে দেখে। এদের উপস্থিতি যেকোনো কালেক্টিভের জন্য ভীষণ ক্ষতিকর

দুবনা, ০৮ নভেম্বর ২০১৯

Wednesday, November 6, 2019

নিয়ম

প্রায় দুই বছর পর গত সোমবার সুইমিং পুলে গেলাম সাঁতার কাটতে। শিক্ষকতা শুরু করার পর সময় করে উঠতে পারি না, তাই এই দীর্ঘ বিরতি। সাঁতার কাঁটা বা যে কোন গ্যাদারিংএ যাওয়া আসলে যতটা না সেটা করা তার চেয়ে বেশি বন্ধুদের সাথে দেখা করা, গল্প করা। তাই সোমবারের বদলে অন্য যে কোন দিনও যেতে পারতাম, হয়ে ওঠেনি। এই সোমবার ছুটি ছিল, তাই যাওয়া। অনেক দিন পরে অনেক পরিচিত মুখ দেখে খুব ভালো লাগল। সবার একই প্রশ্ন এতদিন আসিনি কেন।
- কি দেশের কথা একেবারে ভুলে গেছ মনে হয়?
আসলে আমাদের আড্ডা জমে সাওনায় স্টিম বাথ করতে গিয়ে। ওখানে ১০০ থেকে ১১০ ডিগ্রী তাপমাত্রা, তাই ওখানে ঢুকেই আমি সাধারণত বলি ঠিক দেশের মত উষ্ণ। আর সে কারণেই এই প্রশ্ন। সাওনায় বসে রাজনীতি, জীবন, দেশ বিদেশ কত গল্পই না হয়, বলা হয় নানা রকমের আনেকডোট। আর সব গল্পই হয় অত্যন্ত রিল্যাক্স মুডে। কোন রকম সেন্সর ছাড়া। তাই শহরের অনেক কথাই জানা যায়।
সাঁতার কাটতে কাটতে মনে পড়ল কয়েক বছর আগের এক ঘটনার কথা। জলে মাথা ডুবিয়ে সাঁতার কাটছি, হঠাৎ প্রচণ্ড ধাক্কায় থেমে গেলাম। সামনে বেশ বয়স্ক এক ভদ্রলোক। আমাদের হেড টু হেড কলিশন হয়েছে।
- কি, তুমি কী রাস্তায় চলাচলের নিয়ম কানুন জান না? এখানেও ডান দিকে ধরেই সাঁতার কাটতে হয়।
- জানব না কেন, জানি। দেখছই তো আমি ভিনদেশী। আমাদের দেশে বাঁ দিক ধরে সবাই চলে, সাঁতারও কাটে।
সাথে সাথে চারপাশের লোকজন হো হো করে হেসে উঠল। ভদ্রলোক সুবিধা করতে না পেরে সাঁতার কাটতে শুরু করলেন।

দুবনা, ০৬ নভেম্বর ২০১৯ 
 
 
 

তাল বেতাল

তিল নাচে তালে তালে
নেচে সে মাতাল
তিল যদি তাল হয়
তাল হয় বেতাল

দুবনা, ০৬ নভেম্বর ২০১৯

তিল ও তাল

কেউ তিলকে তাল করে
কেউ তালকে তিল
দু' দলের এই বিবাদে বর্ষে
চড়, ঘুসি আর কিল 
 
দুবনা, ০৬ নভেম্বর ২০১৯ 

Tuesday, November 5, 2019

বাতিহীন ল্যাম্প পোস্ট

আপদ, বিপদ, শ্বাপদ
সব পদকে হারিয়ে দিল
ইউনিভার্সিটির ভিসি পদ 
 
দুবনা, ০৫ নভেম্বর ২০১৯ 

Sunday, November 3, 2019

বিজ্ঞাপন

দাদা, বিজ্ঞাপন কি?
বিজ্ঞ লোকের পণ। আরও বিশদ ভাবে বললে বিজ্ঞ লোকের পণ ভঙ্গ করার অগ্রিম বার্তা। 
 
দুবনা, ০৪ নভেম্বর ২০১৯ 

ধর্ম অধর্ম

স্বামী আর স্ত্রী যদি ভিন্ন ভিন্ন ধর্মের লোক হয় তবে কি স্ত্রীকে স্বামীর সহধর্মীনী বলা যায়?

দুবনা, ০৩ নভেম্বর ২০১৯

বিজ্ঞপ্তি

আজ থেকে দুই যুগ আগে এই দিনে রুশ সরকারের মধ্যস্থতায় আমরা এক শান্তি চুক্তিতে স্বাক্ষর করি। এরপর বিভিন্ন সময়ে সীমান্ত এলাকায় হালকা গুলিবর্ষণ হলেও বিশাল রকমের যুদ্ধ এড়ানো সম্ভব হয়েছে। ভবিষ্যতেও এই শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান প্রক্রিয়া অটুট থাকবে বলে দু পক্ষই আশা প্রকাশ করছে।

দুবনা, ০৪ নভেম্বর ২০১৯ 
 
 

রাগারাগি

অনেক ভেবে দেখলাম পৃথিবীতে সবচেয়ে রাগী মানুষেরা হলেন ভারতীয় উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত শিল্পীরা। রাতদিন চব্বিশ ঘণ্টা রাগের মধ্যেই কাটান। 

দুবনা, ০৩ নভেম্বর ২০১৯ 

পেশা নেশা

কারো কাছে পেশাটাই নেশা
আবার কারো কাছে নেশাটাই পেশা
এটা কি পেশার নেশা নাকি নেশার পেশা
নাকি না পেশা না নেশা 
 
দুবনা, ০৩ নভেম্বর ২০১৯ 

৩ রা নভেম্বর

আজ জেল হত্যা দিবস। বাংলাদেশের ৫০ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটেছিল এদিনই যখন রাস্ত্র নিজে ঘাতকের ভুমিকায় অবতীর্ণ হয়। এ ঘটনা শুধু দেশকে পেছনেই ঠেলে দেয় না, স্বাধীনতার চেতনাকেই প্রশ্নবিদ্ধ করে তোলে। দেশ উল্টো পথে হাঁটা শুরু করে। বর্তমানে আমরা জেলহত্যা দিবস পালন করি, প্রয়াত নেতাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করি। কিন্তু সেই সাথে আমরা কী বিচারবিহীন হত্যারও নিন্দা করি, বিচারহীনতার বিরুদ্ধে লড়াই করি? রাস্ত্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় বিচারহীনতার জন্ম কিন্তু এই দিনই। আমরা যদি সত্যি সত্যিই এই নেতাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে চাই সেটা করতে পারব সমাজের বিভিন্ন স্তরে যে বিচারহীনতা বিরাজ করছে সেটাকে উচ্ছেদ করে যাতে ভবিষ্যতে কাউকে রাজনৈতিক হত্যার শিকার হতে না হয়।

দুবনা, ০৩ নভেম্বর ২০১৯

Friday, November 1, 2019

চোখ

দাদা, ঐ লোকটাকে আপনি কোন চোখে দেখেন?

উত্তরে যাই বলি সেটাই মিথ্যে হবে। উত্তর না দিলে হয় না?

এ যে দেখছি উস্কানিমুলক কথা। তাহলে তো শুনতেই হয়।

দেখো, ইদানীং চোখে আর আগের মত ভালো দেখি না, মানে চোখটা একটু খারাপ। তাই যদি বলি ওকে ভালো চোখে দেখি কথাটা ভুল বলা হবে। খারাপ চোখে তো ভালো দেখা যায় না। আর যদি খারাপ চোখে দেখি, সেটাও ভুল, কারণ ওকে আমার ভালো বলেই মনে হয়। তাই বলি কি, তুমি বরং অন্য প্রশ্ন কর যাতে আমার চোখ নিয়ে টানাহ্যাঁচড়া করতে না হয়।

দুবনা, ০২ নভেম্বর ২০১৯ 
 
 
 

পোশাক

এখন অনেক কিছুই ইউনিভার্সাল সাইজের করা হয়, অথচ আমাদের পূর্বপুরুষেরা সেটা সেই কবেই করে গেছেন। শাড়ি, লুঙ্গি, ধূতি - সাইজের বালাই নেই, সবাই সবারটা পরতে পারে। লাগেজ টানার ঝামেলা নেই। কত না বুদ্ধিমান ছিলেন তারা! 

দুবনা, ০১ নভেম্বর ২০১৯  


রাগরসে রতন


মায়ের উদ্যোগে আমাদের বাড়িতে বরাবরই গান বাজনার রেওয়াজ ছিল। দিদি, রতন গান শিখত, আমিও "ওগো নদী আপন বেগে" দিয়ে গানের হাতে খড়ি নিই আকালী মাস্টারমশাইএর কাছে থেকে। "বউ কথা কও" ছাড়া আরও দুয়েকটা গান জানতাম, তবে গলা সাধার নোটগুলো এখন বেশ মনে আছে। এ ছাড়া বিভিন্ন সময় আসতেন অবিনাশ চক্রবর্তী, কালিপদ ভৌমিক। রমেশ দা তবলা শিখাতেন রঞ্জিত দা আর কল্যাণ দাকে। আমিও শেষ মেশ তবলা পেটাতে শুরু করি। তবে সিরিয়াসলি কিছু শেখা হয় সুশীল বালো দার কাছে, মস্কো আসার আগে দিয়ে। রতন বুলবুল ললিতকলা অ্যাকাডেমি থেকে রবীন্দ্র সঙ্গীতের উপর শিক্ষা নেয়। দেশে থাকা কালীন প্রতিদিন সকালে বিকালে ও গাইত, আমি তবলা বাজাতাম। গত ৩০ অক্টোবর ও গাইল মানিকগঞ্জের রাগরস টেলিভিশনে। বাংলাদেশ বেতারে অনেক দিনই গাইছে, তবে যত দূর জানি টিভি তে এই প্রথম। শেয়ার করছি, যদি সময় সুযোগ হয় বন্ধুদের, শুনবেন।
দুবনা, ০১ নভেম্বর ২০১৯
ছবিটা সজা করা গেল না, কষ্ট করে ঘাড় বেঁকিয়ে দেখবেন, সেই সাথে ব্যায়ামটাও হয়ে যাবে

https://www.facebook.com/saifur.selim/videos/2776423519049159/

বাংলার গরু ছাগল

- বঙ্গ দেশে শুনলাম গরু ছাগলের সংখ্যা মিলছে না।
ভারিক্কি গলায় সম্রাট আকবর মোল্লাজী দোপেয়াজাকে প্রশ্ন করলেন। মোল্লাজী যেন প্রশ্নটার অপেক্ষাতেই ছিলেন। আরও ভারিক্কি গলায় উত্তর দিলেন
- হে মহান সম্রাট, সুবে বাংলায় যদি গরু ছাগলের সংখ্যা বেশি হয়, তাহলে বুঝতে হবে আপনার কিছু প্রজা কর ফাঁকি দেওয়ার জন্য গরু ছাগলের রূপ ধরেছে, আর যদি গরু ছাগলের সংখ্যা কম হয়, তবে বুঝতে হবে কিছু গরু ছাগল ক্যাসিনো খেলার জন্য মনুষ্য রূপ ধারণ করেছে। কিছুদিন অপেক্ষা করুন। দেখবেন সংখ্যাটা আপনা আপনিই নিজের জায়গায় ফিরে এসেছে। আজকাল কেউ আগের মত অতিথি পরায়ণ নয়, বেশি দিন কাউকে আটকে রাখে না। অবশ্য আরবদেশের শেখেদের কথা আলাদা, বিশেষ করে মহিলা আগন্তুকদের তারা সহজে যেতে দিতে চায় না। তবে জাহাপনা সেটা আমাদের এখতিয়ারের বাইরে।

দুবনা, ০১ নভেম্বর ২০১৯ 
 
 

পরীক্ষা

রাশিয়ায় পরীক্ষার কথা নিয়ে বেশ লেখালেখি চলছে ফেসবুকে। আমরা যারা সোভিয়েত আমলে পড়াশুনা করেছি ৫, ৪ আর ৩ ছিল পাশ মার্ক, ২ ফেল। ইউনিভার্সিটিতে ১ দেওয়া হত না, যদিও স্কুলে ১ বা কোল এর প্রচলন ছিল। নিজেদের শিক্ষাকে ইউরোপিয়ান রূপ দিতে অনেক কিছুই করা হয়েছে, তাতে শিক্ষার মান বাড়েনি, বেড়েছে ব্যুরোক্র্যাসি। ফেল ফেলই সেটা ০ পাও আর ২ পাও। ২ এর বিভিন্ন ব্যাখ্যা দেওয়া যায়, তাতে কেউ আর যাই হোক পাশ করে না। নীচে নিজের পড়ানোর বা পরীক্ষা নেওয়ার অভিজ্ঞতার কথা বলছি।
এখন অনেকটাই বদলে গেছে। পরীক্ষা মত ১০০ নম্বরে, ঠিক পরীক্ষা নয় - ক্লাস থেকে শুরু করে সবকিছু। একেক জন টিচার একেভাবে সেটা করেন। আমি তিন বছর আগে যখন শুরু করি, এক ছাত্র পরীক্ষায় এসে বলল টাকে পাশ করিয়ে দিতে, মানে ৩ বসাতে। জিজ্ঞেস করলাম কেন? সে বলল, ক্লাসের কাজে সে ৫১ নম্বর পেয়েছে। সে এর বেশি আশা করছে না। কী আর করা? পরের সেমিস্টারে আমি ছাত্রেদের বললাম,
ক্লাসে উপস্থিত থাকার জন্য ম্যাক্সিমাম ৫ নম্বর। কারণ A গ্রেড পেতে ৯৫ মার্ক লাগে। তোমরা যদি আমার ক্লাসে আসতে না চাও বা না আস, সেটা যেন A গ্রেড পেতে বাধা হয়ে না দাঁড়ায়।
সেমিস্টারে দুটো কন্ট্রোল প্রব্লেম সল্ভিং এর উপর - ১০ করে মোট ২০।
দুটো কলকিউম থিওরির উপরে - ১০ করে মোট ১০ আর ক্লাসে আক্টিভিটির জন্য ৫। অর্থাৎ ক্লাসের সারা সেমিস্টারের কাজে পাচ্ছ ৫০। যদি পরীক্ষায় পাশ করতে চাও, মানে মিনিমান একান্ন নম্বর পেতে চাও, পরীক্ষায় বসতেই হবে, কিছু না কিছু মার্ক পেতেই হবে। আবার পরীক্ষায় যত ভালই কর না কেন, ক্লাসের কাজে কিছু না কিছু মার্ক না তুলতে পারলে পাশ করবে না।
বর্তমান নম্বর পদ্ধতি এরকম
আক্সিলেন্ট (৫) - ৯৫ - ১০০ (A)
আক্সিলেন্ট (৫) - ৮৬ - ৯৪ (B)
গুড (৪) - ৬৯ - ৮৫ (C)
স্যাটিস্ফেক্টরী (৩) - ৬১ - ৬৮ (D)
স্যাটিস্ফেক্টরী (৩) - ৫১ - ৬০ (E)
ফেল (২) - ৩১ - ৫০ (FX)
ফেল (২) - ০ - ৩০ (F)
তবে এবার থেকে মডিউল সিস্টেম করেছে, পরীক্ষা প্রতি দু মাসে। এখানেও টিচার নিজেই ডিসিশন নেন কীভাবে নেবেন। আমি এখন সোভিয়েত সিস্টেমেই পরীক্ষা নিই। অর্থাৎ খাতায় কি লিখলে সেটা কোন ব্যাপার নয়, মুখে কি বললে, কিভাবে ব্যাখ্যা করলে সেটাই আসল কথা। ৫ পেতে চাও, যেকোনো প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে।
যারা সত্যিকারেই পড়াশুনা করে, মানে ভাল ছাত্ররা কিভাবে পরীখা নেওয়া বা মার্কিং করা হচ্ছে এ নিয়ে মাথা ঘামায় না। মাথা ঘামায় না তারা যারা একেবারেই পড়াশুনা করে না। তবে যারা ২ -৩ বা ৩ - ৪ এর দোরগোড়ায় তারাই এ নিয়ে বেশি চিন্তিত। এটা আমার ছাত্র জীবনের অভিজ্ঞতা, শিক্ষক হিসেবেও সেটাই দেখছি।

বাংলাদেশে (যেকোনো দেশে) এটা চালু করার কতগুলো পূর্ব শর্ত দরকার।

শিক্ষক নিরপেক্ষ থাকবেন

তার উপর কোন দলীয় বা সাংগঠনিক চাপ থাকবে না।

শিক্ষক যদি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগেন আর নিরপেক্ষ না হন, তাহলে এখানেও দুর্নীতি বা পক্ষপাতিত্বের সুযোগ থেকে যায়।

আমার কাছে যখন ছাত্ররা উত্তর দিতে আসে, আমি ওদের লিখিত উত্তরটা পাশে রাখতে বলি। আমি দেখতে চাই এত দিন ক্লাস করে ওরা কি বুঝল। ফিজিক্স মুখস্তের বিষয় নয়, বোঝার, আনালাইসিস করার। তাছাড়া চাইলে ওরা নিজেরাই প্রশ্ন বেছে নিতে পার। গোটা পঞ্চাশ প্রশ্ন থেকে দুটো বাছতে হয়। আসল কথা তো ওরা বুঝল কিনা সেটা। কাজে (বিশেষ করে গবেষণার কাজে) বোঝাটাই আসল, আর না বোঝাটা সত্যিকারের বোঝা।


দুবনা, ০১ নভেম্বর ২০১৯