Thursday, October 26, 2017

প্রশ্নপত্র

ছোট বেলার একটা খেলা (প্রশ্ন) ছিল এ রকমঃ
If যদি is হয় but কিন্তু what অর্থ কি? আর উত্তরটা ছিল
"গাধার মত প্রশ্ন করলে উত্তর দেবো কি?"
যে এই প্রশ্নে কোন ধর্মগ্রন্থ সবচেয়ে পবিত্র এ প্রশ্ন করে সে সত্যিকারের ASS (দুই অর্থেই)

দুবনা, ২৬ অক্টোবর ২০১৭ 

 

Saturday, October 21, 2017

তুষারকণা






বাইরে তুষারকণা বাতাসে ভাসে                
তাই দেখে শরৎ কন্যা মুচকি মুচকি হাসে                                                                                               
“এতো তাড়াতাড়ি তোরা এলি কেন বাপ?                                                                                       
নাকানি চুবানি খেয়ে চাইতে হবে মাফ।“                                                                                                        
“শরৎ পিসি, অযথা কেন তুমি বক?                                                                                                          
লেপমুড়ি দিয়ে না হয় ঘরে বসে থাক।                                                                                                         
এসেছি বেড়াতে আমরা থাকবো ছয়  মাস,                                                                                                                
নববর্ষে পরীক্ষা করতে হবে পাশ।                                                                                                         
তারপর বসন্তেরে করবো বরণ,                                                                                                                
তা না হলে সান্তা ক্লাউসের গলাবো কেমনে মন?”                                                                                      
এরপর সে যে কী শুরু হোল নাচ                                                                                                            
কেঁপে উঠে পৃথিবী, কেঁপে উঠে গাছ                                                                                               
হলুদ পাতারা সব ঝরে ঝরে পড়ে                                                                                                         
যেন আমি বসে আছি পীত সাগরে।

দুবনা, ২১ অক্টোবর ২০১৭




Thursday, October 19, 2017

আলোর উৎসব



সকাল থেকেই ফেসবুক ভরে গেছে দীপাবলীর শুভেচ্ছায়। কেউ আবার মেসেজ পাঠাচ্ছে। ইদানিং কালে অবশ্য এটা দিওয়ালী নামেই বেশী পরিচিত। হতে পারে ইংরেজিতে ওভাবে লেখা হয় বলে। এসব দেখে বারবার মনে পড়ছিল ছোটবেলার কথা। সাধারণত আগুন নিয়ে খেলতে না দিলেও এদিন বাড়িতে ছিল আগুনের ছড়াছড়ি। জ্যাঠামশাই, কাকা, বড়দা আর আমাদের ঘরের চারিদিকে আধা হাত দুরে দুরে একের পর এক মোমবাতি বসিয়ে দিতাম। গুদাম ঘর, বড় ঘর, কাচারী ঘর, রান্না ঘর কোন কিছুই বাদ যেতো না। এমন কি ঢেঁকির ঘর, গোয়াল ঘরেও জ্বালানো হতো মোমবাতি। এটা ছিল অমাবশ্যার রাত। সাঁঝের পরেই সারা পাড়ায় জ্বলে উঠত বাতি। হাতে আরও মোম বাতির প্যাকেট নিয়ে ঘুরে বেড়াতাম, কোথায় কোন মোমবাতি শেষ হলে নতুন আরেকটা লাগিয়ে দিতাম। এমন কি বাজিও ফুটানো হতো। আলোর উৎসব শেষ হলে শুরু হতো মোম সংগ্রহের পালা। পরের দিন ঐ মোম গলিয়ে পেঁপের ডগায় সুতা ভরে ঢেলে দিতাম ঐ মোম। এভাবেই তৈরি হতো নতুন বড় মোমবাতি। পাল্লা দিয়ে বানাতাম – কার মোমবাতি কত বড় আর মোটা হয় (স্লীমের যুগ তখনও শুরু হয়নি)। সব দেবদেবীর থেকে কালীকে বেশী ভয় পেলেও এ রাতটা ভয়ের ছিল না। আবার দুর্গা পূজার মত সার্বজনীনও ছিল না কালী পুজা। তবে ইদানীং আলোর উৎসব হিসেবে দীপাবলী আন্তর্জাতিক রূপ পেয়েছে। মনে পড়ে অনেক আগে কুরুসাবার একটা মুভির কথা, সেখানে জাপানের আলোর উৎসব দেখেছিলাম। ছোট ছোট নৌকায় (দেখতে মনে হয় কলার খোল দিয়ে তৈরি, অনেকটা যেমন আমাদের দেশেও করা হয় অন্য কিছু পুজায়) মেয়েরা প্রদীপ ভাসিয়ে দিচ্ছিল নদী বা সাগরে। তখন মনে পড়েছিল দীপাবলীর কথা। আজ এ সম্পর্কে নতুন এক তথ্য জানলাম, তাও ব্রিটেনের প্রাইম মিনিস্টার তেরেজা মে’র দীপাবলী উপলক্ষ্যে শুভেচ্ছা বক্তব্য থেকে। এটা নাকি ছিল রামের বনবাস থেকে অয্যোধ্যায় ফিরে আসার ৫ দিন ব্যাপী উৎসব! একেই বলে শত বৎসর বাঁচ, শত বৎসর শেখো (ভেক ঝিভি, ভেক উচিস – Век живи век учись).
সবাইকে আলোর উৎসবে অনেক অনেক শুভেচ্ছা!         


দুবনা, ১৯ অক্টোবর ২০১৭ 



Monday, October 16, 2017

চক্রবৃদ্ধির সমস্যা




মস্কো থেকে দুবনা ফিরছি। বাইরে ঘন অন্ধকার। আসছি ব্লা ব্লা কারে। সাথে আরও দু’জন যাত্রী। বাসে বা ট্রেনে গেলে সহযাত্রীদের সম্পর্কে ততটা আগ্রহ বোধ করি না যতটা করি ট্যাক্সিতে। এটা মনে হয় ছোট আর আবদ্ধ পরিসরের জন্য।
অন্ধকারের বুক চিড়ে এগিয়ে চলছি, ফোন এলো সচি থেকে, উদীচীর সাধারণ সম্পাদকের ফোন। কিছুক্ষণ কথা হোল। হঠাৎ আমি যেন দেশে চলে গেলাম। দিদির কথা মনে হল। বেল্লালের আর কুদ্দুস ভাইয়ের ছেলে রাশেদের। ইচ্ছে হোল কই মাছের ঝোল দিয়ে মুড়ি খেতে।
ফ্রাই প্যানে ত্রেস্কা দেখতে পেলাম। সন্ধ্যে বেলায় রান্না করেছিলাম। কিন্তু আমি তো মাছের ঝোল রাঁধতে পারি না! বারে, মাছের ঝোল রাঁধতে পারলেই বা কী? কই মাছ কোথায় পাবো? কই মাছের ভাবনা শেষ হতে না হতেই মনে হোল ঝোল না হয় রাধলাম, কিন্তু মুড়ি পাবো কই। এ যে দেখছি চক্রবৃদ্ধির সমস্যা!     
দুবনা, ১৭ অক্টোবর ২০১৭       


 

Sunday, October 8, 2017

পিভা



গতকাল রাত ১০ টার পর গুলিয়ার ফোন এলো। সেভা এখনও বাসায় ফেরেনি, টেলিফোন ধরছে না। গতকাল ক্লাস শেষে সেভা মস্কো গেছে বন্ধু মাক্সের সাথে ফুটবল খেলবে বলে। এখানে ও কারো সাথে মেশে না, স্কুলের পরে বাসায় বসে থাকে। আইকার সাথে বা কম্পিউটার গেম খেলে সময় কাটায়। তাই একরাতের জন্য মস্কো যেতে চাইলে মানা করি না।
-    ঠিক আছে, দেখি পাই কি না!
সেভা কল রিসিভ করলো না, মানে খেলায় ব্যস্ত। কন্টাক্টে (লোকাল সামাজিক মাধ্যম) মেসেজ রাখলাম। প্রায় ১১ টার দিকে সেভা ফোন করে জানালো বাসায় ফিরছে। আমি বলায় বাসায় পৌঁছে আবার ফোন করলো।
আজ সকাল ১১ টায় গুলিয়ার ফোন।
-    কোথায় ছিলে?
-    মানে?
-    এতবার ফোন করছি, ধরছো না।   
-    আমি কাজ করছিলাম। সেট পাশেই ছিল। ফোন এলে তো দেখার কথা। যাকগে কি হোল আবার?
-    সেভার ব্যাগে পিভার ক্যান দেখলাম।
-    মানে?
-    না, আমি আলমারি গোছাতে গেছি, ওর ব্যাগটা খোলাই ছিল।
গুলিয়া জানে আমি অন্যদের ব্যাগ চেক করা পছন্দ করি না, তাই অজুহাত।
-    ওটা অন্য কিছুও হতে পারে। তুমি সিওর?
-    হ্যাঁ। তাই তো বলছি। এখন কি করা?
-    কি আর করা। জিজ্ঞেস কর এগুলো কোত্থেকে?
-    ভালো হয় তুমি কথা বললে।
-    কিন্তু আমি কি বলবো? ও যদি তখন বলে কিছু ছিল না। তাই এখনই ওকে জিজ্ঞেস কর। পরে আমি কথা বলবো।
-    কিন্তু বলবো কি?
-    শুধু জিজ্ঞেস কর এসব কোত্থেকে ওর ব্যাগে এলো।
-    তারপর কি?
-    দেখ কি বলে?
-    তারপর?
-    তারপর মানে?
-    মানে, শাস্তি দিতে হবে না?
-    তোমার দরকার ওকে শাস্তি দেয়া, নাকি ওকে বুঝিয়ে বলা কাজটা ভালো হয়নি।
-    ঠিক আছে।
সেভা দুবনা ফিরবে সন্ধ্যা ৮ টায়, আমি মস্কো যাবো ৭ টায়। গুলিয়ার কাছ থেকে সব জেনে সময় করে সেভার সাথে কথা বলতে হবে। ছেলেটা খুব তাড়াতাড়ি বড় হয়ে যাচ্ছে।
দুবনা, ০৯ অক্টোবর ২০১৭