Sunday, May 31, 2020

Ghulam Ali

বাড়িতে মার উদ্যোগে গান শেখা হত। আকালী মাষ্টারমশাই, অবিনাশ চক্রবর্তী, কালিপদ ভৌমিক বিভিন্ন সময়ে আমাদের গান বাজনা শেখাতেন। কখনও কখনও এরা একসাথেও আসতেন। শুরু হত গানের ম্যারাথন। কীর্তন, ভজন, কাওয়ালী, লোকগীতি, খেয়াল - কত রং বেরঙের গান। আমাদের গান বাজনা মূলত রবীন্দ্র সঙ্গীত আর নজরুল গীতির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও সেই ছোটবেলা থেকেই বিভিন্ন গান শোনার অভ্যেস গড়ে ওঠে। পরে কিরণ রায়, পূর্ণদাস বাউল, অনুপ জালোটা, মেহেদী হাসান, জগজিৎ ও চিত্রা সিং, পঙ্কজ উধাস, গুলাম আলী - অনেকের গানই প্রিয় হয়। সবাই গাইতেন বিভিন্ন ধরণের গান, বিভিন্ন সময়ে, বিভিন্ন রকম ছিল এসব গানের আবেদন। তবে গভীর রাতে গুলাম আলীর কণ্ঠে "চুপকে চুপকে রাত ... " এর আবেদন ছিল একেবারেই অন্যরকম। এখনও শুনি মন চাইলে। আপনারাও শুনে দেখতে পারেন

দুবনা, ৩১ মে ২০২০


দূরত্ব

শরীরের ওজন কমিয়ে মানে স্লীম হয়ে সামাজিক দূরত্ব বজায়ের পথে কয়েক সেন্টিমিটার এগিয়ে যেতে পারেন। স্লীম হন, দূরত্ব বাড়ান।

দুবনা, ৩১ মে ২০২০

Saturday, May 30, 2020

ঘটনা

এ এক অভূতপূর্ব ঘটনা। করোনার জন্য সরকার, জনগণ, মোল্লা, পুরুত - সবাই দায়ী, শুধু নাটের গুরু করোনা ভাই বেকসুর খালাস!

দুবনা, ৩০ মে ২০২০

ফেবুবিয়ে

অপরিচিত মানুষের সাথে ফেসবুকে বন্ধুত্বের সাথে প্রেম আর বিয়ের গভীর মিল আছে। রিকোয়েস্ট পাঠানোর আগে পরে খুব ঘন ঘন আপনার পোস্টে লাইক দেবে, কমেন্ট করবে। কিন্তু যেই আপনি তাকে একসেপ্ট করলেন, লাইক আর কমেন্টগুলো অমাবস্যার চাঁদের মত অন্ধকারে মিলিয়ে যায়। অনেকটা সেই ইলেকশন যখন হয়ে গেছে এখন আর ভোট চাওয়ার কী দরকার! না না, এটা লাইক পাওয়া না পাওয়ায় আমার বিষাদ সিন্ধু উপন্যাস নয়, একটা পর্যবেক্ষণ মাত্র। তবে একটা পর্যবেক্ষণ দিয়ে তো আর স্ট্যাটিস্টিক্স হয় না!

দুবনা, ৩০ মে ২০২০

Let it be - The Beatles

Beatles ের নাম শুনেছি দেশে থাকতেই, তবে গান শুনেছি বলে মনে হয় না। তখন তো একমাত্র সম্বল ছিল রেডিও। সেটাও খবর আর গান, নাটকের জন্য। টেপ রেকর্ডার ছিল যেখানে শুধুই বাংলা গানের ক্যাসেট বাজত। বিচিত্রা, সন্ধানী বা অন্য পত্রিকায় কখনও সখনও বীটলদের মিলনের কথা শোনা যেত, কিন্তু ১৯৮০ সালে জন লেনন নিহত হলে সে আশা দুরাশায় পরিণত হয়। সেদিন শুধু নয় পরবর্তী অনেক দিন পর্যন্ত এ নিয়ে অনেক লেখালেখি হয়েছিল। মস্কো এসে পশ্চিমা বিভিন্ন গ্রুপের সাথে সাথে বীটলসের সাথেও ঘনিষ্ঠভাবে পরিচয়ের সুযোগ ঘটে। আমার রুমমেট ঝেনিয়া ছিল বীটলসের ফ্যান। ওর কাছ থেকে বিভিন্ন গল্প শুনতাম। সব এ্যালবাম কেনা হয়েছিল, সেই সাথে ওদের গানের বই। আসলে বীটলসের মাধ্যমে এদেশের তরুণদের মধ্যে অনেক আগেই পরিবর্তন শুরু হয়েছিল। মাশিনা ভ্রেমেনি, আকভারিউমসহ বিভিন্ন রক গ্রুপ বীটলসকেই তাদের পথ প্রদর্শক বলে মনে করে। আসলে গানের বাইরেও দেশে দেশে, বিশেষ করে সোভিয়েত ইউনিয়নে বীটলসের ব্যাপক প্রভাব ছিল যুব সমাজে। পিঙ্ক ফ্লয়েড, রোলিং স্টোনস, জেনেসিস, ডীপ পার্পল, ডোরস - এদের ফ্যানের সংখ্যাও কমছিল না। তবে সেটা কখনোই বীটলমানিয়ার পর্যায়ে যায়নি। মনে আছে একদিন সন্ধ্যায় ভার্সিটি থেকে বাসায় ফিরছি। বিলায়েভা মেট্রোর ওখানে বাসের জন্য দাঁড়িয়ে আছি আর গুণ গুণ করে "লেট ইট বি" গাইছি। আমার চেয়ে বয়েসে কিছুটা বড় (দেখে তাই মনে হল) একজন এসে হ্যান্ডসেক করে বলল "বীটলস ভালবাস? আমিও।" তারপর একটা বোতল থেকে দুটো গ্লাসে ভদকা ঢেলে বীটলসের জন্য পান করতে বলল। ভারি তো বিপদ। কিন্তু উপায় ছিল না।
দুবনা, ৩০ মে ২০২০



ধনীর ধন

দেশে আগেও ধনীরা গরীবদের সাথে সামাজিক দূরত্ব রেখে চলত। করোনাকালে সামাজিক দূরত্বটা অসামাজিক রকম বেড়ে গেছে। তবে ভাবার কোন কারণ নেই ইংল্যান্ড আমেরিকায় চলে গেলেই আপনাদের গলায় তাদের শোষণের কালো থাবার চাপটা একটু কমবে। উন্নত দেশের উন্নত জীবনের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে তাদের ধনের খায়েশ মেটানোর প্রয়োজন যতই বাড়বে সাধারণ মানুষের শ্বাসনালীতে অক্সিজেনের পরিমান ততই কমবে।
দুবনা, ৩০ মে ২০২০

কামাই

আগে হপ্তায় সাড়ে তিন বার দাড়ি কামাইতাম, এখন দুইবার। করোনা সব রকমের কামাই কমিয়ে দিয়েছে।

দুবনা, ৩০ মে ২০২০

Friday, May 29, 2020

পলায়ন!?

নাদির শাহ যখন সোমনাথ মন্দির লুট করে ধনসম্পদ নিয়ে ভারত ত্যাগ করে, সেটা পলায়ন ছিল না। ব্রিটিশরা যখন প্রায় দু শ বছর উপমহাদেশ লুট করে ঘরে ফিরে যায় সেটাও পলায়ন ছিল না। আজ যখন নব্য লুটেরারা দেশের টাকা নিয়ে বিদেশের মাটিতে তাদের প্রাসাদে চলে যাচ্ছে সেটা তাহলে পলায়ন হবে কেন? ডাকাতরা পালায় না, ডাকাতি করে সদর্পে নিজেদের ডেরায় ফিরে যায়। এরাও তাই করছে। আর দেশের মানুষ, প্রশাসন অসহায়ের মত সেটা দেখছে আর হাত কামড়াচ্ছে। যারা বলছেন লুটেরারা পালাচ্ছে, তারা আসলে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে।

দুবনা, ২৯ মে ২০২০

প্যারাডক্স

যারা যত জোর গলায় বলে দু মিনিট পরে কি ঘটবে তা কেউ জানে না তারাই তাদের পরকাল সম্পর্কে দেখি বেশি নিশ্চিত। প্যারাডক্স

দুবনা, ২৯ মে ২০২০

ধৈর্য ধরা

আমরা সবাই দু হাতে বেশি বেশি করে ধরতে চাই  অথচ আমাদের ধৈর্য নাই

দুবনা, ২৯ মে ২০২০

Времена года - Петр Ильич Чайковский

পশ্চিমা ক্ল্যাসিকাল মিউজিকের সাথে পরিচয় মস্কো এসে। দেশ থাকতে মোজার্ট, বেঠোভেনের নাম শুনেছি খুব সম্ভব সাধারণ জ্ঞানের বইতে। মস্কো এসে বিভিন্ন ভাবে তাঁদের মিউজিকের সাথে পরিচিত হই। সাধারণত রুশ ভাষার ক্লাস থেকে বিভিন্ন থিয়েটারে বা ক্ল্যাসিকাল মিউজিকের কনসার্টে নিয়ে হাওয়া হত। এছাড়া ছিল বলশয় থিয়েটার বা ক্রেমলিনের কনসার্ট হলে ব্যালে। অনেক সময় বিশেষ করে নববর্ষের আগে ও পরে উইন্টার কুইন (Снежная Королева), নাটক্রাকার (Щелкунчик), সোয়ান লেক (Лебединое Озеро) সহ বিভিন্ন পারফর্মেন্স দেখতে যেতাম বন্ধুরা মিলে। এসবের আয়োজন করত তপু। পরে অনেকবার ছেলেমেয়েদের নিয়ে গেছি। নববর্ষের ছুটিতে এসব অনুষ্ঠানে যাওয়া এখানে একরকম রিচুয়াল। কখনও গভীর রাতে শুনেছি মোজার্টের ৪০ নম্বর সিম্ফনি বা বেঠোভেনের মুনলিট সোনাটা (Лунная соната), ভিভালদির সিজন্স, পাগানিনি, শ্নিতকে, সচতাকোভিচ, বাখ, ব্রামস, সেদ্রিন, গেরস্বিন (Гершвин), চাইকোভস্কিসহ বিভিন্ন কম্পোসারদের অমর রচনা। দেখেছি এদের উপর সিনেমা, থিয়েটার। পরে ছেলেমেয়েরা যখন মিউজিক্যাল স্কুলে যেতে শুরু করে ওদের বাজনায় আবার শুনেছি প্রিয় সঙ্গীত। জানি না, হয়ত প্রকৃতির প্রতি ভালবাসা আমাকে বার বার নিয়ে গেছে ভিভালদি বা চাইকোভস্কির ঋতুদের কাছে।

দুবনা, ২৯ মে ২০২০




Thursday, May 28, 2020

জীবনের পথে

দু মাসের বেশি পরে আজ ক্লাবে গেলাম। বন্ধুরা রেগুলার যেত, আমি যাইনি। কালো মাস্ক, কালো জ্যাকেট। ওরা কিছু বলার আগেই বললাম,
- দ্যাখো তো আমার সানবাথটা কেমন হল? (Как я загорал?)
- ঠাট্টার কি ধরণ! (Ну и шутка твоя!)
- করোনা নেই তো? (Коронавирусом не болеешь?)
- জানি না। ময়নাতদন্তে জানা যাবে। (Не знаю. Вскрытие покажет)

অনেক দিন পরে সবার সাথে দেখা। এর মধ্যে তোলা ছবি দেখা। টা নিয়ে আলোচনা। জীবন একটু একটু করে মৃত্যুর দিকে এগোচ্ছে। মানে জীবন চলছে তার নিজস্ব গতিতে।

দুবনা, ২৮ মে ২০২০

Essence of Rhythm Ustad Zakir Hossain

মস্কোয় ছাত্র জীবনে কী শুধু না শুনতাম! বিসমিল্লাহ খানের সানাই, হরিপ্রসাদ চৌরাসিয়ার বাঁশি, শিবকুমার শর্মার সান্তুর, রবি শঙ্কর, লিখল ব্যানার্জি, বুদ্ধাদিত্যের সেতার, আলী আকবর খান বা আমজাদ আলী খানের সারোদ বা সুব্রামনিয়ামের বেহালা। সব কিছুর প্রতি ছিল গভীর আগ্রহ, তীব্র আকর্ষণ। শুনতাম শুভলক্ষ্মী বা ভীমসেন যোশীর উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত। একটা সময় এসব গীতবাদ্যের ঝঙ্কারে বাজত জীবনের তার। এখন এসব খুব একটা শোনা হয়না। সময়ের অভাব একটা কারণ। তবে সময় পেলে শুনি। বিশেষ করে রাশীদ খান বা কৌশিকী চক্রবর্তীর ভোকাল। শুনি হরিহরন আর শঙ্কর মহাদেভান। মস্কোয় এদের অনেকের পারফর্মেন্স সামনে থেকে দেখার সুযোগ হয়েছে। শেষ দেখি ওস্তাদ আমজাদ আলী খানের অনুষ্ঠান। অনেক ছবি তুলেছিলাম সেদিন। দেবস্মিতার মাধ্যমে পৌঁছে দিয়েছিলাম। উনি নিজের ফেসবুক পেজে সেগুলো পোস্টও করেছিলেন। একসময় তবলা শিখতাম, তবে বিভিন্ন কারণে সেটা হয়ে ওঠেনি, যদিও সুযোগ ছিল প্রচুর। সে কারণে সব সময় তবলা আমাকে বিশেষ ভাবে নাড়া দেয়। রবি শঙ্করের সাথে আল্লা রাহার তবলা শুনে কোনটা বেশি উপভোগ করতাম কে জানে? তবে আশির দশকে "শক্তি" দিয়ে পরিচয় হল যাকির হোসেনের সাথে। প্রথম থেকেই মন জয় করে নিলেন। ইদানীং কালে ইউ টিউবে প্রায়ই শুনি তাঁর মনোমুগ্ধকর তবলা ধ্বনি। আর সেই সাথে শুনি যাকির হোসেনের বিভিন্ন ইন্টারভিউ। সে এক অপূর্ব অভিজ্ঞতা। উপমহাদেশ যখন ধর্ম যুদ্ধে দ্বিধাবিভক্ত তখন ওনার সাক্ষাতকারে শুনি, সঙ্গীতে, বিশেষ করে ভারতীয় ক্ল্যাসিক্যাল সঙ্গীতে, সব ধর্ম কিভাবে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। পরম ধার্মিক বিসমিল্লাহ খান কীভাবে সরস্বতীর গুনগান করে বেনারসের মন্দিরের দেবতাদের উদ্দেশ্যে স্বর্গীয় সুর সৃষ্টি করছেন। যাকির হোসেনের A life in music দেশের বিশেষ করে ভারতের সঙ্গীত শিল্পীদের এক অসাধারণ অসাম্প্রদায়িক চরিত্রের যে বর্ণনা দেয়, তাতে মনে হয় একমাত্র সঙ্গীতের হাত ধরেই উপমহাদেশ সাম্প্রদায়িকতার ব্যাধি থেকে মুক্ত হতে পারে। ইদানীং অনেক শিল্পীই সাক্ষাৎকার দেন। কবীর সুমন বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন। বলেন বিপ্লবের কথা, সমাজ বদলের কথা, বলেন সমাজের বিভিন্ন অন্যায়ের বিরুদ্ধে নিজের লড়াইয়ের কথা। যাকির হসেন এসব কিছুই বলেন না। বলেন ভারতীয় সঙ্গীতের কথা, কীভাবে তা বিভিন্ন দেশের সঙ্গীত দ্বারা প্রভাবিত ও সমৃদ্ধ হয়েছে সে কথা, কিভাবে ভারতীয় সঙ্গীত বিভিন্ন দেশের সঙ্গীতকে প্রভাবিত করেছে সেকথা। বিরোধ নেই, রাজনৈতিক শ্লোগান নেই, শুধুই ঐক্যের কথা। কিন্তু এর মধ্যেই পাই ধর্মের গোঁড়ামি থেকে মানুষের মুক্তির এক অসাধারণ বার্তা!

দুবনা, ২৮ মে ২০২০



Wednesday, May 27, 2020

চাওয়া পাওয়ার পথের ধারে

পাওয়াটা সব সময় নিজের হাতে থাকে না, তবে চাইলে চাওয়াটার লাগাম নিশ্চয়ই টেনে ধরা যায়। সমস্যা হল আমাদের চাওয়াটা প্রায়ই হাত ফস্কে বেরিয়ে যায়। আমরা শুধু নিজের কাছেই চাই না, চাই সবার কাছ থেকে। কারও কাছ থেকে ভাল ব্যবহার, কারও কাছ থেকে সহমর্মিতা, আবার কারও কাছ থেকে শ্রমের ন্যায্য মূল্য। ফলে দিনের শেষ প্রায়ই দেখা যায় না পাওয়ার একটা ভারী বোঝা মাথায় নিয়ে হাঁটছি আর হাঁটতে হাঁটতে চলে গেছি অনেক দূরে যেখান থেকে হ্যারিকেনের মৃদু আলোর দিনগুলো অনেক অনেক আলোক বর্ষ দূরে, ধরা ছোঁয়ার নাগালের বাইরে। তবুও আমরা আশা করি, আশা নিয়েই একদিন আলতো করে ভেজানো দরজা খুলে চলে যাই অন্য লোকে।

দুবনা, ২৭ মে ২০২০


আমরা দুজন

আমরা দুজন ভল্গা তীরে বেড়াই
লোকজনকে যথা সম্ভব এড়াই
সঙ্গে থাকে ক্যামেরা আর কুকুর
সকাল-বিকাল কিংবা দিন দুপুর
কুকুর দুটো বসে মায়ের কোলে
সুখ দুঃখের কত কথা যে বলে
এসব শুনে আমরা শুধুই হাসি
ওদের আমরা বড্ড ভালবাসি
আমরা দুজন বনবাদাড়ে ঘুরি
বয়েস কমে হয় যে তখন কুড়ি
চারণ করি অতীত দিনের স্মৃতি
স্মৃতি তো নয় যেন কাব্য গীতি
সাথে নিয়ে ছেলেমেয়ে দলবল
কোথায় আমরা তুলতাম বন ফল
বনে গিয়ে হৈচৈ করে করতাম মোরা ঠিক
কোন খানেতে জমবে ভালো এবারের পিকনিক
আমরা দুজন এদিক সেদিক হাঁটি
সঙ্গে হাঁটে অভিজ্ঞতার ছায়া
স্মৃতি ভ্রমে হয় কথা কাটাকাটি
এভাবেই মায়া ফিরে পায় তার কায়া
আমরা দুজন দুবনার পথে পথে
ভালবাসার ফসল অনেক দূরে
ওরাও হাঁটে মোদের সাথে সাথে
সারা দিয়ে মোদের গানের সুরে।

দুবনা, ২৭ মে ২০২০














ফেসবুক আইডির বাম্পার ফলন

আজ আমার টাইম লাইনে দুজন লোকের পাঁচটা জন্মদিন ছিল। বন্ধুর সংখ্যা সীমিত। কেউ যদি একাধিক আইডি থেকে বন্ধু হন সেটা কিন্তু অন্যদের প্রতি অবিচার করা হয়। নিজেদের অকেজো আইডিগুলো ডিয়াক্টিভ করতে না পারলে অন্তত বন্ধুদের বলুন ঐ আইডিগুলো তাদের ফ্রেন্ড লিস্ট থেকে কেটে দিতে।

এখনও প্রায়ই ফ্রেন্ড লিস্টে আছেন এমন লোকের কাছ থেকে রিকোয়েস্ট পাই। না ভাই, আমার বন্ধুত্ব ভোটের মত - এক লোক এক ভোট। আশির দশকে সিপিবির শ্লোগান। নিজের অধিকারের সাথে সাথে অন্যের অধিকারকে শ্রদ্ধা করুন। ফেসবুক আইডির বাম্পার ফলন বন্ধ করুন।

দুবনা, ২৭ মে ২০২০

Oxegene - Jean-Michel Jarre

ইন্সট্রুমেন্টাল মিউজিকের প্রতি আমার আগ্রহ বরাবরের। ইন্সট্রুমেন্টাল মিউজিক বলতে অপেরা বাদে ওয়েস্টার্ন ক্যাসিক্যাল বা ভোকাল বাদে ইন্ডিয়ান ক্যাসিকাল মিউজিকও বোঝায়। এছাড়া জেমস লাস্ট, রিচার্ড ক্লাইডারম্যান, গেওরগি জাম্ফির সহ অনেকেই, যারা শুধু মিউজিক্যাল ইন্সট্রুমেন্ট ব্যবহার করে ক্ল্যাসিক্যাল থেকে শুরু করে আধুনিক গানের সুর পরিবেশন করেন তাঁদের কাজও এ ক্যাটাগরির। তবে আজ আমি বলতে চাইছি ইলেকট্রন মিউজিকের কথা, অন্তত সোভিয়েত ইউনিয়নে এভাবেই বলা হত। ক্ল্যাসিক্যাল ইন্সট্রুমেন্ট নয়, আধুনিক কীবোর্ড, ইলেক্ট্রিক গীটার এসব ব্যবহার করে যে মিউজিকের জন্ম দেওয়া হয় সেসব বোঝাতে এই টেরমিনলজি। এ ধরণের মিউজিকের সাথে আমার প্রথম পরিচয় রুশ বা সোভিয়েত বন্ধুদের হাত ধরে। বেশ কিছু গ্রুপ ছিল, তবে যোদিয়াক (Zodiac) এদের অন্যতম। তখনও "জার"মানিয়া এদেশে আসেনি। তারপর একসময় পরিচিত হলাম Jean-Michel Jarre এর কাজের সাথে। Oxygene, Equinoxe, Electronica, Revolutions আরও কত কি! এক সময় দিন শুরু হত এই মিউজিক শুনতে শুনতে, দিনের শেষও হত এভাবেই। ক্যাসেট, লংপ্লে, কম্প্যাক্ট ডিস্ক - কত রকমের যে কালেকশন ছিল। ১৯৯৭ সালে মস্কোর ৮৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে এক ওপেন কনসার্টের আয়োজন করে মস্কোর মেয়র। মস্কো স্টেট ইউনিভার্সিটির ওখানে লাখ লাখ মানুষের সমাগম। আমিও আমাদের ছোট পরিবার (তখন আন্তন আর মনিকা ছোট ছিল, ক্রিস্টিনা আর সেভা পেন্ডিং) নিয়ে সেখানে গিয়ে মানুষের ভিড়ে প্রায় পদদলিত হবার অবস্থা। কোন রকমে সেখান থেকে বেরিয়ে আসি ওর অপূর্ব মিউজিকের সাথে আরও অপূর্ব ফায়ার ওয়ার্ক দেখতে দেখতে। এখন সেভা প্রায়ই আমাকে ওর প্রিয় শিল্পীদের নাম করে বলে চিনি কিনা? প্রায়ই চিনি না। যেমন ও জানেনা আমাদের সময়ের অনেক বিশ্বখ্যাত শিল্পীদের নাম । এটাই হয়তো হয়। জীবন কি? এটা সময়, অভিজ্ঞতা - ভালো, মন্দ - সব রকমের। এই যে আজ আমরা এখানে - সেটাও সেই ভালো, মন্দ সব ধরণের অভিজ্ঞতা থেকে শিখে শিখে, যুদ্ধ করে। যারা সময় মত জীবনের চ্যালেঞ্জগুলো সাহসের সাথে মোকাবিলা করতে পারে দিনের শেষে তারাই শেষ হাসি হাসতে পারে।

দুবনা, ২৭ মে ২০২০



Tuesday, May 26, 2020

বৃষ্টি শেষের হাওয়া - সুবিনয় রায়

ছোটবেলায় আমাদের মধ্যে একটা কথা প্রচলিত ছিল - "ছোটবেলার আগের বছর থেকে"। এটা অনেক দিনের পুরনো কিছু বোঝাতে ব্যবহার করতাম। রবি বাবুর সাথে আমার সম্পর্কও ও রকম, মানে ছোটবেলার আগের বছর থেকে। না না, আমি রবীন্দ্র বিশেষজ্ঞ নই, রাবীন্দ্রিক নই, শুধুই তাঁকে ভালবাসি, তাঁর লেখায়, তাঁর গানে, তাঁর কথায় মুগ্ধ হই। আর সেটা সেই ছোটবেলা থেকেই। একসময় গান শিখতাম। শুরুটা "ওগো নদী আপন বেগে ..." দিয়ে। পরে অবশ্য নদী আপন বেগে চলতে চলতে সাগরে মিশে গেছে, কিন্তু আমার আর গান শেখা হয়নি। দেশে থাকতে অনেক প্রিয় শিল্পী ছিল, অথবা বলা যায় কারও কারও কণ্ঠে কিছু কিছু গান ভালো লাগত। পঙ্কজ মল্লিকের গলায় "দিনগুলো মোর সোনার খাঁচায়" এখনও কানে বাজে। তেমনি ছিল কে এল সায়গল, অশোকতরু বন্দ্যপধ্যায়। প্রিয় শিল্পীদের মধ্যে ছিলেন হেমন্ত, চিন্ময়, সাগর, দ্বিজেন, সুচিত্রা, কনিকা। তবে দেবব্রত বিশ্বাসের একটা বিশেষ জায়গা ছিল মনের কোনায়। বিশেষ করে "আছে জন্ম আছে মৃত্যু", "মেঘের পরে মেঘ জমেছে", "জীবন মরণের সীমানা ছাড়ায়ে" ইত্যাদি গানগুলো তাঁর কণ্ঠে এক ভিন্ন শিহরণ জাগাত। তবে এটা একান্তই ব্যক্তিগত। আমার কেন যেন মনে হয় অনেক কিছুর মতই স্বাদ, সুর, গন্ধ - এসব কিছুরই কোয়ান্টাম নম্বর আছে। অনেক সময় আপ্রিকট খেতে গিয়ে বেলের স্বাদ পাই বা আপেলে বাড়ির কোন আমের গন্ধ। আসলে সবই তো মিথস্ক্রিয়া। রেকর্ড তো একই ভাবে বাজে সবার জন্য, তবে কোন একটা সুর, একটা গান একজনের মনে যতটা দাগ কাটে অন্যজনের মনে ততটা নয়। ছবির ক্ষেত্রেও তাই। কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধানে একই জায়গায় কয়েকটা ছবি তুলে বাছতে গিয়ে দেখা যায় একটা অন্যটার চেয়ে বেশি ভালো লাগছে। অর্থাৎ টেকনিক্যালি একরকম হলেও একটা ছবি মনে অনুনাদ সৃষ্টি করছে এক অজানা কারণে। গান, গানের কথা, সুর - এসবও তাই। এখন সময়ের সাথে সাথে প্রিয় শিল্পীরা বদলে গেছেন। ইদানীং শ্রীকান্ত আচার্য আর জয়ীতা চক্রবর্তীর কণ্ঠে রবীন্দ্র সঙ্গীত তুলনামুলকভাবে বেশি শোনা হয়, যদিও এর বাইরেও অনেক পছন্দের শিল্পী আছে, শুনি। তবে আজ বলছি আশির দশকের কথা। "ঠাকুরবাড়ী" চণ্ডালের প্রবেশাধিকার না থাকলেও ও বাড়ির রাজপুত্রের আমার ঘরে ছিল অবাধ যাতায়াত। দিনের পর দিন ও থাকত আমার ঘরে। গান শুনে, গল্প করে আর ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখে (অবশ্য ভবিষ্যৎ নিয়ে আমরা দুজনেই ছিলাম উদাসীন, তাই স্বপ্ন দেখা হত বা ভাবা হত ভাবতে হয় বলে। আমাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে আমরা না যত তার চেয়ে বেশি চিন্তিত ছিল আমাদের বন্ধুরা)। ওর ঠাকুরমার ঝুলিতে থাকত অনেক অনেক গান। আমার দেবব্রতের পর ওর সুবিনয়ের সুরেলা বিনয়ী কণ্ঠে ভরে উঠত রাতের বাতাস। সে এক অন্য রকম অনুভূতি, অন্য ভাবে রবি ঠাকুরকে পাওয়া।

দুবনা, ২৬ মে ২০২০



Monday, May 25, 2020

বন্দী বাতাস

অনেকেই লিখছেন অনেক দিন পরে মুক্ত বাতাসে। জানতাম না "বাতাস বন্দী ছিল।"

দুবনা, ২৫ মে ২০২০

Sunday, May 24, 2020

Аквариум

আশির দশকে সোভিয়েত দেশে সত্তর দশকের মত কড়াকড়ি না থাকলেও পেরেস্ত্রইকার আগে পর্যন্ত খুব একটা খোলামেলাও ছিল না। আল্লা পুগাচেভা, সোফিয়া রতারু, ভ্যালেরি লিওন্তিয়েভ, ইওসেফ কাবজন, লেভ লেশেনকো সহ অনেক পপ শিল্পীরা সরকারি আনুকুল্য পেতেন। তেমনি আদর পেতেন রাইমন্দ পাউলস, আলেক্সান্দ্রা পাখমুতভা সহ অনেকেই। তবে রক তখনও বুর্জোয়া শিল্প। অবাক লাগত ভেবে যেখানে পিঙ্ক ফ্লয়েড, বীটলসসহ অনেক রক গ্রুপ যখন সামাজিক বৈষম্যের বিরুদ্ধে বলত এদেশে তাঁদের অনুসারীরা কেজিবির কুনজরে থাকত বলে। অনেক শিল্পী তখন আরবাতে গান করত রাতের বেলায়। সেখানে অনেকবার গিয়ে দেখছি কিভাবে সাদা পোশাকের লোকেরা ওদের ধরে নিয়ে যেত আর আমাদের মত উৎসাহী দর্শকদের তাড়িয়ে দিত। ভিসতস্কি সহ অনেক গায়কই তখন করা নজরে থাকতেন। এসময় রক গ্রুপের গান ছিল সামইজদাত মানে নিজেরা ঘরে রেকর্ড করে ছড়াতেন। তবে আশির দশকের মধ্যভাবে অবস্থার পরিবর্তন হয়। আন্দ্রে মাকারেভিচের "মাশিনা ভ্রেমেনি", বরিস গ্রেবেনশিকভের "আকভারিউম", ভিক্তর তসই-এর "কিনো" তরুণদের মন জয় করে। ছিল পিওতর মামন্তভের "মু"। এ গ্রুপটা ছিল অনেকটা বর্তমানের আমির কুস্তুরিতসার মত। মামন্তভ ছিলেন একাই একশ, অর্কেস্ট্রা। আমার রুশ বন্ধুরা নিয়ে আসত এসব গান। আমি অনেক রাতে ঘরে ফিরতাম, এরপর আমার ওখানে আড্ডা হত রুশ বন্ধুদের। আমার ঘরে সব সময় ইন্ডিয়া থেকে আনা চা আর কফি থাকত। সেটাই আড্ডাকে সচল রাখত। শনিবার ডিস্কোটেকায় যেতাম। বাজত "সুব্যত্নি ভেচের ই ভোত আপিয়াত ..." মাশিনা ভ্রেমেনির গান। তবে আকভারিউমের গানের অন্য রকম আমেজ ছিল। বরিস অলেগোভিচ গ্রেবেনশিকভ Борис Олегович Гребенщиков তাঁর ফ্যানদের কাছে БОГ মানে ঈশ্বর নামে পরিচিত। ওনাকে আমার অনেকটা কবীর সুমনের মত মনে হয়। সে রকম করেই দেশ বিদেশে সঙ্গীত খুঁজে বেড়ান, এক্সপেরিমেন্ট করেন। অনেক দিন ইন্ডিয়া ছিলেন এ জন্যে। Черная роза эмблема печали, Красная роза эмблема любви (Аквариум) এটা প্রথম নিয়ে আসে বন্ধু আন্দ্রে বিচিক। অনেক দিন পর্যন্ত এ রেকর্ডটাই বাজত আমাদের ঘরে ঘরে।

দুবনা, ২৫ মে ২০২০



চাঁদ

বন্ধুদের ছাদ বাগানের ছবি দেখে উপলব্ধিঃ কৃষি জমি থেকে ছাদ বেয়ে চাঁদে উঠবে। সেটা হবে কৃষির চাঁদিকরন।

দুবনা, ২৪ মে ২০২০

শিক্ষা

এই যে দেশে দশ জন মিলে দুঃস্থকে এক সের চাল দিচ্ছে এ ব্যাপারে আপনি কি মনে করেন?
এটা আমার মনে আশা জাগায়!
কিসের আশা?
আমরা তো আসলে মুখস্থ বিদ্যায় পারদর্শী। ডিগ্রী সর্বস্ব আমাদের লেখাপড়া। ওরা অন্তত সেটা বাস্তবে রূপ দিতে চেষ্টা করছে। পুঁথিগত বিদ্যাকে জীবনে ধারণ করার চেষ্টা করছে।
মানে?
পড়েননি, "দশে মিলে করি কাজ, হারি জিতি নাহি লাজ"? এ কাজটা এই শিক্ষার একটা বাস্তব প্রদর্শনী নয় কি?

দুবনা, ২৪ মে ২০২০

রবি শঙ্কর

আমার দেশের দিনগুলো কেটেছে গ্রামে। বুয়েটে ক্লাস করেছি মাত্র দু-তিন সপ্তাহ। তখনও হোস্টেলে না থেকে প্রায়ই বাড়ি থেকে যেতাম। ফলে মস্কো আসার পর হোস্টেল জীবন ছিল অপরিচিত। আমাদের ফ্যাকাল্টিতে বাংলাদেশি তেমন কেউ ছিল না। তাই ক্লাস আর হোম টাস্ক শেষ যেতাম আড্ডা দিতে ১০ বা ৭ নম্বরে। তখন সপ্তাহে একদিন একতা আসত। মাঝে মধ্যে কিছু বাংলা বই। গোগ্রাসে শেষ হয়ে যেত। কালেভদ্রে দেশের অবস্থা বা অন্য বিষয়ে হত সেমিনার। তবে বেশির ভাগ সময় কাটত ছাত্র সংগঠনের রাজনীতি নিয়ে যা পরনিন্দা পরচর্চা মুক্ত ছিল না। তবে এর মধ্যে ছিল সীমিত পরিবেশে দেশের সংস্কৃতি নিয়ে বলার, ভাবার চেষ্টা। কোরাস বাংলাদেশের মাধ্যমে আমরা অনেকেই এর সাথে জড়িত ছিলাম। আর এটাকে ঘিরেই পার্থদা সহ অনেকের উদ্যোগে অলিখিত ভাবে গড়ে ওঠে ভারতীয় ক্ল্যাসিকাল মিউজিক শোনার এক চক্র। দেশে মাঝেমধ্যে কলকাতা থেকে উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের আসর শুনতাম। রবি শঙ্কর, আলী আকবর, কিষান মহারাজ, আল্লা রাহা, ভীমসেন যোশী সহ অনেক নামই পরিচিত ছিল। তবে মস্কোয় এসে সেটা নতুন রূপ পেল। শুরু হল ক্যাসেট আদান প্রদান, রেকর্ড কেনা। বাংলা আধুনিক, রুশ, পশ্চিমা পপ, রকের সাথে পাল্লা দিয়ে চলল ক্ল্যাসিকাল মিউজিক (ভারতীয় ও পশ্চিমা) শোনা। অনেককে সামনা সামনি দেখার সুযোগ এলো। আজ তাঁদের একজনের কথাই বলব। উনি রবি শঙ্কর। দম দ্রুঝবি আর বলশয় থিয়েটারে দেখলাম তাঁর পারফর্মেন্স। সাথে আল্লা রাহা। কে জানে, দেশে থাকলে এদের দেখা কখনও পেতাম কি না! এখনও সময় পেলেই শুনি এদের অমর সৃষ্টি। মন নিজ থেকেই নেচে ওঠে। শরীরে জাগে স্পন্দন।

দুবনা, ২৪ মে ২০২০



Saturday, May 23, 2020

নাবলাবানী

এক সময় আমি আমার কোন লেখায় হ্যাস ট্যাগ করতাম না। কিন্তু অনেক স্ট্যাটাসই লিখি রাস্তাঘাটে, স্মার্টফোন থেকে। অনেক ছবিও স্মার্টফোনেই তুলি। এসব আসলে নোট রাখার মত। অনেক সময় পরে ক্যামেরা কাঁধে নিয়ে সেখানে যাই ছবি তুলতে। লেখাও তাই। পরে বড় কোন লেখায় হঠাৎ মাথায় আসা কোন শব্দ না বাক্য ব্যবহার করি। সমস্যা হয় ওদের সময় মত খুঁজে পেতে। তাই এক সময় ভাবলাম হ্যস ট্যাগ করার কথা। কিন্তু সেটা এমন হতে হবে যা অন্যেরা ব্যবহার করবে না, কম বেশি আইডিয়া প্রকাশ করবে ইত্যাদি। ওসব করতে গিয়েই নাবলাবানী আমদানি। "আমার না বলা বাণী" গানটা মাথায় রেখে। কিন্তু ঠিকঠাক লিখতে গিয়ে দেখি এটা অনেকের ভিড়ে হারিয়ে যাচ্ছে। ভিড় এড়ানোর জন্য বাণী কে বানী করা। অনেকেই এ নিয়ে ভ্রুক্ষেপ করে। কয়েকদিন আগে বারেক কায়সার লিখল। আজ ববি। কিন্তু কীভাবে বোঝাই এটা অনেকটা গোপন সঙ্কেতের মত। আমি প্রথমে ভেবেছিলাম "হজচকদসচজকাব" কিছু একটা দেব, পরে দেখলাম আমার চৌদ্দ পুরুষেও সেটা রিপিট করতে পারবে না। নাবলাবানী কে তাই কোন শব্দ হিসেবে না নিয়ে একটা টেকনিক্যাল সঙ্কেত হিসেবে নেবেন, তাহলে চোখের ডাক্তারদের পেছনে কম ঘুরতে হবে। আমি কিছু বলিনি।
দুবনা, ২৩ মে ২০২০


Pink Floyd - Wish you were here

মনে হয়না দেশে থাকতে এই গ্রুপের নাম শুনেছি। বীটলস, ABBA এসবের বাইরে তেমন কোন নাম জানা ছিল না। প্রস্তুতি পর্ব শেষ করে শুরু হল সোভিয়েত ছেলেমেয়েদের সাথে একসাথে ক্লাস করা। এমনিতে আমাদের ভার্সিটিতে ছিল এক শ'র বেশি দেশের ছেলেমেয়ে, কিন্তু এই প্রথম এত সোভিয়েত ছেলেমেয়ে বন্ধু সার্কেলে চলে এলো। কারণ আমাদের ফিজিক্স-ম্যাথেম্যাটিক্স ফ্যাকাল্টিতে বিদেশি কম, বাংলাদেশি বলতে তখন আমি একা। বন্ধুদের প্রায় সবাই হয় Beatles অথবা Pink Floyd এর ফ্যান, অনেকটা দেশে হেমন্ত আর মান্নাকে নিয়ে দলাদলির মত। যদিও অন্যান্য অনেক গ্রুপই ছিল, সবাই তাদের গানও শুনত। রবিবার ইউরি নিকলায়েভের (Юрий Николаев) পরিচালনায় ভোরের চিঠি (Утренная почта) দেখার জন্য সে কী অপেক্ষা! তবে আমার কেন যেন Pink Floyd কেই মনে ধরল। শুরু হল অ্যালবাম সংগ্রহ। সোভিয়েত ইউনিয়নে এসব ছিল কষ্টসাধ্য। তখন ক্লাসের আর বন্ধুদের সাথে আড্ডার বাইরে তিনটে জায়গা প্রিয় ছিল - বইয়ের দোকান (নতুন ও পুরনো), মিউজিকের দোকান (মেলদিয়া), ক্যামেরার দোকান (কিনো লুবিতেল)। সে সময় এদেশে ক্যাসেটের তেমন চল ছিল না (যা ছিল, বড়, মোটা রীল)। তাই অনেকেই (ইভান, তপু...) কিনলাম গ্রামোফোন রেকর্ড প্লেয়ার। একের পর এক বাড়তে থাকল রেকর্ডের সংখ্যা। এখন প্রায় ৫০০ লং প্লে রেকর্ড ছেলেমেয়েদের ক্রুদ্ধ দৃষ্টি অগ্রাহ্য করে ঘরের কোণে পড়ে আছে। সংগ্রহ হল Pink Floyd, Beatles এর প্রায় সব অ্যালবাম। তবে কেন যেন Wish you were here এখনও আমাকে পাগল করে। এটাই আমার Western music এর প্রতি এক বিশেষ ভালবাসা, বিশেষ taste গড়ে তুলেছে। মনে পড়ছে ঝেনিয়া রাজভোদভ, আলেগ বালাবান, আন্দ্রে বিচিক, ইউরো, ডিজেরে, ফস্টিন, আলবার্তো, রানা, পার্থ ভাদুরীসহ কত বন্ধুদের মুখ। সাইবেরিয়াতে কাজের পর রাতে আগুনের পাশে বসে প্রায়ই বিভিন্ন গান ভাঁজত সবাই। ইউরো আর ডিজেরে গীটার বাজাত। একদিন ওদের মুখে "মালাইকা, নকুপেন্দে মালাইকা" শুনে মনে পড়ল বাপ্পী লাহিরীর "জীবনটা কিছু নয় শুধু একমুঠো ধূলা।" নকল করার জন্য একটু মন খারাপ হল। পরে কবীর সুমন, জাকির হোসেন - এদের ইন্টার্ভিউ শুনে বুঝেছি এতে ক্ষতি কিছু নেই। বিভিন্ন ভাষার সচেতন প্রবেশ যেমন কোন ভাষাকে সমৃদ্ধ করে, মিউজিকও তাই।

দুবনা, ২৩ মে ২০২০


ভালোয় ভালোয়

ভালোয় ভালোয় ভালো হয়ে যাও করো না বন্ধু রোষ
নইলে কিন্তু ভালো হবেনা দিও না আমায় দোষ

দুবনা, ২৩ মে ২০২০

Юрий Антонов - Если любовь не сбудется

বাড়িতে গান বাজনার রেওয়াজ ছিল - তবে সেটা মূলত বাংলা গানেই সীমাবদ্ধ। এদেশে এসেই প্রথম সেভাবে বিদেশি গানের সাথে পরিচিত হই। প্রস্তুতি পর্বে আমাদের ক্লাস শুরু হওয়ার কিছুদিন পরে একটা অনুষ্ঠান হয় যেখানে কাম্পুচিয়ার বোনার আর আমি ইউরি আন্তনভের Если любовь не сбудется (যদি প্রেম সত্য না হয়) গানটি গাই। এখান থেকেই রুশ গানের প্রতি আমার ভালবাসা গড়ে ওঠে। সেই সাথে দেশ বিদেশের মিউজিকের প্রতিও। আজ রাজনের ডাকে সাড়া দিতে গিয়ে সেই পুরনো দিনের কথা মনে পড়ে গেল, মনে পড়ল বোনারকে। কে জানে ওর মানে আছে কিনা ১৯৮৩ র অক্টোবরের দিনগুলোর কথা!

দুবনা, ২২ মে ২০২০ 


Friday, May 22, 2020

ছোঁয়াছুঁয়ি

আম্বেদকার এখন বামুনদের দিকে তাকিয়ে হাসছেন আর মনে মনে বলছেন "দ্যাখ ব্যাটারা অস্পৃশ্যতার কী জ্বালা"। 
দুবনা, ২২ মে ২০২০ 

Thursday, May 21, 2020

বুদ্ধি

বিড়ালের গলায় ঘণ্টা বাঁধতে যদি কাউকে না ই পাওয়া যায়, তবে ঘণ্টার সাথে বিড়ালকে বেঁধে রাখাই বুদ্ধিমানের কাজ।

দুবনা, ২১ মে ২০২০

ঝড়

ঝড়ে ঝরে গেল লাখো লাখো প্রান। লাখো গাছপালা, কীট পতঙ্গ। তবে মানুষ শুধু মানুষের হিসেব রাখবে। আর যদি কেউকেটা কেউ না থাকে মৃত মানুষগুলোও হবে নামগোত্রহীন, শুধুই সংখ্যা।

দুবনা, ২১ মে ২০২০ 

Wednesday, May 20, 2020

প্রশ্ন

হঠাৎই মনে হল, বাউলের গান আর স্বরলিপি যদি আরবি হরফে লেখা হত, ওরা কি ধ্বংসের হাত থেকে রেহাই পেত?

দুবনা, ২০ মে ২০২০

Tuesday, May 19, 2020

চক্রান্ত

চক্রান্ত - শব্দটার সাথে চক্র জড়িত। চক্র মানে যা ফিরে ফিরে আসে। এটা অসীম না হলেও অশেষ। নামের কারণেই হয়তো বাংলা কখনও চক্রান্ত থেকে বেরিয়ে আসতে পারে না। চক্রের অন্ত - কিন্তু এ এক অন্তহীন চক্র।

দুবনা, ১৯ মে ২০২০



দূরদর্শিতা

সামাজিক দূরত্বকে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত হিসেবে চাপিয়ে দিয়ে মানব বন্ধনকে চিরতরে নির্বাসনে পাঠাতে পারে দূরদর্শি প্রশাসন।

দুবনা, ১৯ মে ২০২০ 

Monday, May 18, 2020

ঘুরাঘুরি


তুমি কোথায়?
ঘুরছি।
বল কি? লক ডাউন নেই?
আমি লক ডাউনকে লক আপ করে ঘুরছি ।
ভয় করে না?
কিসের ভয়?
যদি পুলিশ জরিমানা করে?
করবে না। করতে পারবে না।
কেন?
আরে আমি তো পৃথিবীর সাথে সাথে ঘুরছি।

দুবনা, ১৮ মে ২০২০

শংকা

আবার ১৮ মে, আবার শুরুর দিন। ২৬ বছর আগে এদিনেই দুবনায় কাজে জয়েন করি। এভাবে চলতে থাকলে আর কিছুদিন পর চাকরির বয়স আমাকে ছাড়িয়ে যাবে।

দুবনা, ১৮ মে ২০২০

আশার দুয়ারে বান্দা খাটি

এখানে করোনার উপর আমার লেখার দ্বিতীয় অংশ

https://www.thewall.in/special-column-by-bijan-saha-moscow-russia-covid19-situation/

Sunday, May 17, 2020

ডিজিটাল রোগ

করোনাভাইরাস আর যাই হোক না কেন এটা যে অত্যাধুনিক এক অসুখ তাতে কোন সন্দেহ নেই। যাকে বলে যুগোপযোগী। ঘুম ভাংলেই যেমন আই-ফোন, স্মার্ট-ফোনের নতুন মডেল বাজারে আসে, করোনাও তাই। আর একে নিয়ে চারিদিকে এত উৎসাহ উদ্দীপনা, এত মাতামাতি যেন আই-ফোনের লেটেস্ট মডেল মার্কেটে এসেছে। কে জানে করোনাই হয়তো ডিজিটাল বাস্তবতার প্রথম পদক্ষেপ।

দুবনা, ১৭ মে ২০২০

করোনা পরিস্থিতি

কলকাতার দি ওয়াল অনলাইন পোর্টালে করোনা নিয়ে আমার লেখার প্রথম পর্ব

https://www.thewall.in/special-column-bijan-saha-from-moscow-russia-covid19-situation/

বক্তৃতা

মাঝে মধ্য ফেসবুকে বন্ধুরা ওয়াজ, সদগুরু বা অন্যান্য ধর্ম প্রচারকদের ভিডিও শেয়ার করে। এগুলো তারা করে  অধিকাংশ সময়ই নেগেটিভ মনোভাব থেকে, অনেকে আবার তার সাথে সেরকম কমেন্টও করে। আসলে ভালো কিছু বলার স্কোপ সেখানে তেমন থাকে না, বিশেষ করে যেকোনো ধর্মগুরুদের ভিডিওতে।

মাঝে মধ্যে আবার কিছু কিছু বিজ্ঞান বিষয়ক ভিডিও দেখি টাইম লাইনে আসতে। সেগুলো দেখার চেষ্টা করি।  কিছু কিছু বেশ ভালো লাগে, তবে সব নয়।

আসলে জীবনে প্রচুর শিক্ষকের কথা শুনেছি, অনেক বিশ্বখ্যাত বিজ্ঞানীদের লেকচার শুনেছি। অধিকাংশ  কাঠখোট্টা বিজ্ঞান নিয়ে হলেও কিছু কিছু পপুলার স্পীচও ছিল। কিন্তু বক্তা হিসেবে শুধু হাতেগোনা দু চার জন মানুষ  মন কাড়তে পেরেছেন।  তাঁরা  যে তাঁদের সাবজেক্ট ঠিক বোঝাতে পারেননি সেটা কিন্তু নয়, তবে আকর্ষণ করা যাকে বলে সেটা ছিল না। অনেক বিজ্ঞানীর নাম শুনেই আকর্ষিত হয়েছি, হাঁ করে তাঁদের কথা গোগ্রাসে গিলেছি, তবে সেটা তাঁদের বলার ভঙ্গিতে নয়, তাঁদের ইতিমধ্যে অর্জিত নাম যশের কারণে। 

সাধারণত বিজ্ঞানের উপর যারা লেকচার শুনতে আসে তারা কমবেশি পড়ুয়া মানুষ, যাকে বলে প্রিপিয়ারড। কিন্তু যারা ওয়াজ বা ধর্মের বানী শুনতে আসে, তারা  আসে একেবারেই কোন রকম প্রস্তুতি ছাড়া। কিন্তু রাজনৈতিক বা ধর্মীয় নেতা বা ব্যবসায়ীরা, এমন কি বিভিন্ন কোম্পানির চীফরা যেভাবে মানুষকে তাঁদের বক্তৃতা দিয়ে আকৃষ্ট করতে পারেন, খুব কম বিজ্ঞানীই সেটা পারেন। এটাও কি সমাজে বিজ্ঞানের পিছিয়ে পড়ার একটা কারণ নয়? ধর্ম ব্যবসায়ীদের ভিডিও দেখে শুধু সমালোচনা করলেই চলবে না, তাদের কাছ থেকে মানুষকে আকর্ষণ করার কায়দা জেনে বিজ্ঞানকে ছড়িয়ে দিতে হবে মানুষের মধ্যে।   

দুবনা, ১৭ মে ২০২০

Saturday, May 16, 2020

ছোট বড় হ্রস্য দীর্ঘ

সকালে ঘুম ভাংতেই অসীম কাকুর স্ট্যাটাস চোখে পড়ল "দৈনিক সংবাদপত্র ও মিডিয়াগুলোর বানান ভুল করার অধিকার জন্মগত! হায় ভাষা-শহিদেরা!!!!!!" আর এটা দেখেই লিখে ফেললাম "বাংলা লিখতে আমরা যে পরিমাণ ভুল করি তাতে প্রায়ই মনে হয় ভাষা শহিদদের পথ ধরে ভাষা নিজেই শহিদ হয়ে গেছে"। আমি সাধারনত শহিদ শব্দটা শহীদ লিখি, মানে দীর্ঘ ই-কার (ঈ) দিয়ে। তবে কাকু যেহেতু ভাষার ব্যাপারে যত্নবান, তাই ভাবলাম তাঁর ভার্সনই ঠিক। ওভাবেই লিখলাম। আসলে স্কুলে আমরা অনেক কিছুই অন্য ভাবে লিখতাম, যেমন বাড়ি না লিখে লিখতাম বাড়ী। এখন অনেক দীর্ঘ ই-কার (ঈ) রূপ বদলিয়েছে। তাই অনেক সময় বানান বিভ্রাটে পড়ে যাই, যদিও বলব না যে আমি বানান তত্ত্ব খুব ভালো জানি। যাহোক আমার শহীদকে শহিদ হতে দেখে সাহায্যের হাত বাড়াল সুমিত। অনেকটা ফিসফিস করে বলল শহীদ। সুমিত বানান সচেতন। তাই পড়লাম অতিবিপদে (মহামারীর অতিমারীতে বিবর্তনের মত)। তখন মনে এলো বিভিন্ন ইংরেজি শব্দ যা কিনা ইংল্যান্ড আর আমেরিকায় ভিন্ন ভিন্ন ভাবে লেখা হয়। যেমন colour (color), behaviour (behavior), centre (center) - সবাই খুশি। কিছুদিন আগে তপন রায়চৌধুরীর "বাঙ্গালনামা" শেষ করলাম। আমাদের ছোটবেলার গরু সেখানে দিব্যি গোরু হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। কিছুদিন আগে ঈদ রূপ বদলে ইদ হলেও অনেক কথা শুনেছিলাম। ভাষায় যদি পদার্থবিদ্যার মত সার্বজনীন সূত্র না চলে তাহলে ই আর ঈ একটা শান্তিপূর্ণ "সহবাসের" (অবস্থান শব্দটা খুব যুদ্ধংদেহী কিনা)  ব্যবস্থা করা যায় কিনা সেটা ভেবে দেখতে পারেন সংশ্লিষ্ট রাঘব বোয়ালবৃন্দ।

দুবনা, ১৬ মে ২০২০


ভাষা শহিদ

বাংলা লিখতে আমরা যে পরিমাণ ভুল করি তাতে প্রায়ই মনে হয় ভাষা শহিদদের পথ ধরে ভাষা নিজেই শহিদ হয়ে গেছে

দুবনা, ১৬ মে ২০২০ 

Friday, May 15, 2020

চিন্তা ভাবনা

চিন্তা করতে করতে বড় ভাবনায় পড়ে গেলাম
ভাবনা থেকে এলো ভাব আর ভাবের হাত ধরে অভাব 

দুবনা, ১৬ মে ২০২০ 

কথা

কথা ছিল ধর্ম মানুষের চোখ খুলাবে,
উল্টো তা মানুষের চোখে ঠুলি পড়াল।


দুবনা, ১৫ মে ২০২০

সাম্যের ভার

যেখানে সাম্যের নামগন্ধ নেই সেখানে ভারসাম্য থাকে কি করে - তা সে মানসিকই হোক আর সামাজিকই হোক!

দুবনা, ১৫ মে ২০২০

Thursday, May 14, 2020

উদয়াস্ত

সূর্যোদয় আর সূর্যাস্তের মধ্যে তবুও বেশ কয়েক ঘণ্টা সময় পাওয়া যায়, কিন্তু অনেক মানুষের বোধ অস্ত যায় উদয়ের আগেই, মানে বোধোদয় আলোর মুখই দেখতে পায় না।

দুবনা, ১৪ মে ২০২০


শান্তিতে থাকা

প্রিয়জন মারা গেলে অনেকেই বলেন ওপারে শান্তিতে থাকবেন। কিন্তু এপার ঠিক না করলে, এপারকে জ্বলন্ত নরক বানালে কোন সুস্থ্য মানুষ যে মরেও শান্তিতে থাকতে পারে সেটা কি আমরা ভাবি? মৃতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে হলেও এপারকে শান্তিপূর্ণ করুণ, তাঁদের শান্তিতে ঘুমানোর সুযোগ করে দিন!

দুবনা, ১৮ মে ২০২০



অসময়ী সময়

বছর চল্লিশ আগে করোনা হলে খুশিই হতাম।
কেন?
চুল কাটার জন্য কেউ তখন পীড়াপীড়ি করতে পারত না।
এখন?
আর কিছু দিন সেলুন বন্ধ থাকলে প্রবাদের সুন্দরীদের মত গোড়ালি
পর্যন্ত চুল হবে। আর যাদের মাথায় টাক তারাও ঝাঁকড়া চুলের বাবরি দুলিয়ে নাকের ডগায় এসে তান্ডব নৃত্য শুরু করবে।

দুবনা, ১৪ মে ২০২০

Wednesday, May 13, 2020

এক যে ছিল বুড়ো

অনেক দিন আগের কথা। ভল্গার তীরে ছোট্ট এক শহরে নিজ দেশে থেকে অনেক দূরে বাস করত এক ছেলে। ভল্গার তীরে ঘুরতে ঘুরতে দখিন হাওয়ায় উড়ে তার মন প্রায়ই চলে যেত আরেক নদীর পাড়ে, যেখানে কেটেছে তার শৈশব আর কৈশোরের দিনগুলো। নদীর বুকে বয়ে যাওয়া জলের দিকে তাকিয়ে সে ভাবত এই জল একদিন নিশ্চয়ই তার শৈশবের নদীতে গিয়ে পড়বে। গ্রীষ্ম কালে ভগ্লার তীর ছেয়ে যেতে হলুদ ফুলে ঠিক যেমনটি হলুদ শর্ষে ঢেকে রাখে তার গ্রামের মাঠ। তারপর একদিন যখন এই হলুদ ফুলগুলো বুড়ো হত, যখন তাদের মাথা ঢাকা পড়ত সাদা চুল আর শুভ্র শ্মশ্রুতে, সে তাদের তুলে নিত হাতে, আর অস্তগামী সূর্যের সামনে ফুঁ দিত তাদের মাথায়। ওদের চুলগুলো নড়ে উঠত, একসময় উড়ে চলে যেত দূর আকাশে, সেই ছেলের খবর পৌঁছে দিতে সাত সমুদ্র আর তের নদী পেরিয়ে তার সবুজ শ্যামল গাঁয়ে।

দুবনা, ১৩ মে ২০২০



Tuesday, May 12, 2020

কেনাকাটা

অনেকের কেনাকাটা করার ভাব দেখে মনে হচ্ছে যেন জীবনে শেষ বারের মত সওদা করছে। এত তাড়া কিসের, তাড়া কোথায়?

দুবনা, ১২ মে ২০২০

শীত

শীত দুই প্রকার - হাড় কাঁপানো আর মেদ জমানো। প্রথমটা হাড্ডিসার মানুষের অনুভূতি, দ্বিতীয়টা মেদবহুল শরীরের উপলব্ধি।

দুবনা, ১২ মে ২০২০

Monday, May 11, 2020

আনুগত্য

যেকোনো কালেক্টিভে আনুগত্য অপরিহার্য, তবে আনুগত্যই যদি কারও একমাত্র যোগ্যতা হয় তবে তাকে পরিহার করা অপরিহার্য।

দুবনা, ১১ মে ২০২০

Sunday, May 10, 2020

আগেবানুভূতি

আবেগের চর্বি মোড়া
অনুভূতি আজ ভোতা
তাতে আঘাত?
এ কি অসম্ভব কথা।

দুবনা, ১০ মে ২০২০

Saturday, May 9, 2020

রসমালাই

ভাবছি আগামীকাল বন থেকে বার্চের রস সংগ্রহ করে তাতে আইসক্রীম (আমরা ওটাকে মালাই বলতাম) চুবিয়ে চুবিয়ে খাব।

দুবনা, ০৯ মে ২০২০

ফলাফল

সাত সকালে গুলিয়া জিজ্ঞেস করল
- রাতে একদম ঘুমুতে দিলে না। কি হয়েছিল?
- তুমি তো আমার রান্নাটা গতরাতে খেলে না। আমি ফেসবুকে ওটা পোস্ট করেছিলাম। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয় প্রচুর লোক ওতে চোখ লাগিয়েছিল।

দুবনা, ০৯ মে ২০২০

রান্নাতত্ত্ব


মৎস্য দিয়া মুরগী রান্না করিতেছি। সাথে বাঁধাকপি আর আপেল। এক্সপেরিমেন্টটা সফল হইবে বলিয়া আশা করিতেছি।

দুবনা, ০৮ মে ২০২০

প্রশ্নোত্তর

বলতো বাছা ঈশ্বর সাকার না নিরাকার?
ঈশ্বর নির্বিকার।

দুবনা, ০৯ মে ২০২০

Thursday, May 7, 2020

আইন

ডিজিটাল আইনে নাকি আবার কে কে গ্রেফতার। এসব শুনে আমার কে যেন মনে হায় আইন মানে I (am) IN (so you people go out)

দুবনা, ০৭ মে ২০২০ 

Tuesday, May 5, 2020

দাস

মানসিকভাবে যখন দাস হয় তখন দাস উপাধীর কেউ বিদ্যানন্দের কর্ণধার হলে সেটা মেনে নিতে জাতির কষ্ট হবে এতে আশ্চর্যের কি?

দুবনা, ০৫ মে ২০২০ 

Monday, May 4, 2020

করোনা সিম্পটম

অনেক আগে, আশির দশকে যখন সোভিয়েত ইউনিয়নে সবকিছুর ডেফিসিট ছিল, কেউ না কেউ কোন কিছু কিনতে বা বিক্রি করতে চাইত। কাছে এসে কানে কানে বলত "আছে কি?" "লাগবে কি?" সময়ের সাথে সাথে সেটা বলতে গেলে নাই হয়ে গেছে। এখন অধিকাংশ মানুষের একটাই অভাব। টাকার। তবে কেউ টাকা দিতে চায় না, দিলেও সেটা টিভি বা ইলেকট্রনিক মাধ্যমে ঘোষণা করে মানে ক্রেডিট দেয়।

আজ কয়েক দিন পরে দোকানে গেলাম। অনেক দিন পরে সেখানে মাস্ক দেখালাম। আমি কয়দিন আগেই মাস্ক কিনেছি মাল্টিপোল ইউজের জন্য ৪০০ রুবল দিয়ে। তবুও এমনিতেই জিজ্ঞেস করলাম ওয়ান টাইম মাস্ক কত করে। "৫ টা মাস্ক ১৫০ রুবল।" "আচ্ছা" বলে বেরিয়ে এলাম। আমার পেছনে যে ছেলে ছিল সে কাছে এসে বলল, "আপনার মাস্ক লাগবে?" "কেন? আছে নাকি?" "হ্যাঁ। ইউনিভার্সিটি থেকে দিয়েছে। ২০ রুবল করে বিক্রি করতে পারি।" আমি ওকে ধন্যবাদ দিয়ে চলে এলাম। করোনা কিছুক্ষণের জন্য আশির দশকে ফিরিয়ে নিয়ে গেল।

এখন যে কালোবাজারি নেই, সেটা বলব না। এখনও বলশয় থিয়েটার, বিভিন্ন একজিবিশন বা নামকরা কোন থিয়েটারে যেতে হলে কালবাজারীরা এগিয়ে আসে।

দুবনা, ০৪ মে ২০২০
 
 
 

গবেষক

গবেষকদের কাজ শান্ত সমুদ্রে ঝড় তুলে মানে শান্ত জীবনের গতিধারা নিয়ে নানা প্রশ্ন করে সমস্যা সৃষ্টি করা আর তারপর দিনের পর দিন না খেয়ে না দিয়ে সেই সমস্যা সমাধান করার চেষ্টা করা। দেখেশুনে মনে হয় সরকারে গবেষকরাই সংখ্যাগুরু।

দুবনা, ০৪ মে ২০২০

Sunday, May 3, 2020

ক্ষতি কি?

নতুন নামে জামাতের পুনর্জন্মে ক্ষতি কি? ওরা চলে গেলে নৌকাডুবির সম্ভাবনা কমবে, আওয়ামী লীগও আত্মশুদ্ধির সুযোগ পাবে।

দুবনা, ০৩ মে ২০২০ 

প্রশ্নোত্তর

ঘৃণা বিদ্বেষ আলোর গতিতে ছড়িয়ে পড়ে, প্রেম ভালবাসা কেন নয়?
কারণ প্রেম ভালবাসা কাঁঠালের আঠার তীব্র টানে গতি হারায়।

দুবনা, ০৩ মে ২০২০

Saturday, May 2, 2020

পাশে থাকা

চোর আপনার পাশে থেকেই চুরি করে, শোষক পাশে বসেই শোষণ করে, ধর্ষক পাশে থেকেই ধর্ষণ করে, সেবক পাশে থেকেই সেবা দেয়, ডাক্তার পাশে থেকেই চিকিৎসা করে। তাই কেউ পাশে থাকলেই আপনার আশ্বস্ত হওয়ার কারন নেই। পাশে থাকা লোকটি কি করছে তার উপরেই নির্ভর করে আপনার শান্তি বা অশান্তি

দুবনা, ০২ মে ২০২০

পুনরুজ্জীবন


পিছে গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেয় সেই ভয়ে স্বর্গ আর নরকের সব বাসিন্দারা আমরণ অনশন শুরু করলে নিরুপায় ঈশ্বর বিশ দিন পরে কিম চেন ইন কে পরলোক থেকে আউট করলেন।

দুবনা, ০২ মে ২০২০ 

বর্ণবাদ

সত্যজিৎ রায়ের জন্মদিনে একজন লিখেছেন "বেহেশত না হলেও উনার স্বর্গ প্রাপ্তি নিশ্চিত।" পরলোকেও আপারথাইড শাসনের সম্ভাবনা দেখে বিচলিত হলাম।

দুবনা, ০২ মে ২০২০

Friday, May 1, 2020

বিশ্ব বেহায়া

মীর জাফর আর মুস্তাকের পর এবার দেশ ভরে গেছ এরশাদের উত্তরসূরীতে। শিল্পী কামরুল আহাসানের ভাষায় বিশ্ব বেহায়ায়।

দুবনা, ০১ মে ২০২০