Beatles ের নাম শুনেছি দেশে থাকতেই, তবে গান শুনেছি বলে মনে হয় না। তখন তো একমাত্র সম্বল ছিল রেডিও। সেটাও খবর আর গান, নাটকের জন্য। টেপ রেকর্ডার ছিল যেখানে শুধুই বাংলা গানের ক্যাসেট বাজত। বিচিত্রা, সন্ধানী বা অন্য পত্রিকায় কখনও সখনও বীটলদের মিলনের কথা শোনা যেত, কিন্তু ১৯৮০ সালে জন লেনন নিহত হলে সে আশা দুরাশায় পরিণত হয়। সেদিন শুধু নয় পরবর্তী অনেক দিন পর্যন্ত এ নিয়ে অনেক লেখালেখি হয়েছিল। মস্কো এসে পশ্চিমা বিভিন্ন গ্রুপের সাথে সাথে বীটলসের সাথেও ঘনিষ্ঠভাবে পরিচয়ের সুযোগ ঘটে। আমার রুমমেট ঝেনিয়া ছিল বীটলসের ফ্যান। ওর কাছ থেকে বিভিন্ন গল্প শুনতাম। সব এ্যালবাম কেনা হয়েছিল, সেই সাথে ওদের গানের বই। আসলে বীটলসের মাধ্যমে এদেশের তরুণদের মধ্যে অনেক আগেই পরিবর্তন শুরু হয়েছিল। মাশিনা ভ্রেমেনি, আকভারিউমসহ বিভিন্ন রক গ্রুপ বীটলসকেই তাদের পথ প্রদর্শক বলে মনে করে। আসলে গানের বাইরেও দেশে দেশে, বিশেষ করে সোভিয়েত ইউনিয়নে বীটলসের ব্যাপক প্রভাব ছিল যুব সমাজে। পিঙ্ক ফ্লয়েড, রোলিং স্টোনস, জেনেসিস, ডীপ পার্পল, ডোরস - এদের ফ্যানের সংখ্যাও কমছিল না। তবে সেটা কখনোই বীটলমানিয়ার পর্যায়ে যায়নি। মনে আছে একদিন সন্ধ্যায় ভার্সিটি থেকে বাসায় ফিরছি। বিলায়েভা মেট্রোর ওখানে বাসের জন্য দাঁড়িয়ে আছি আর গুণ গুণ করে "লেট ইট বি" গাইছি। আমার চেয়ে বয়েসে কিছুটা বড় (দেখে তাই মনে হল) একজন এসে হ্যান্ডসেক করে বলল "বীটলস ভালবাস? আমিও।" তারপর একটা বোতল থেকে দুটো গ্লাসে ভদকা ঢেলে বীটলসের জন্য পান করতে বলল। ভারি তো বিপদ। কিন্তু উপায় ছিল না।
No comments:
Post a Comment