Saturday, August 31, 2019

অবিশ্বাসী বিশ্বাস

ট্রাজেডীটা হোল অবিশ্বাস আর প্রচলিত বিশ্বাসকে প্রমাণ বা খন্ডন করার অস্ত্র থাকছে না, অবিশ্বাসটাই বিশ্বাসে পরিনত হচ্ছে

কাজান, ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৯

অনুভূতি

আজকাল আমাদের অনুভূতি এত তীব্র যে প্রচন্ড মসৃণ গোলাকার মার্বেলও যদি গায়ের উপর দিয়ে গড়িয়ে যায় মনে হবে কাঁটা ফুটেছে।

কাজান, ৩১ আগস্ট ২০১৯

শাড়ি

সারি সারি বন্ধুরা আজ হাসছে শাড়ি পরে
চোখ ধাঁধানো রূপ দেখে আজ যাবই বুঝি মরে

কাজান, ৩১ আগস্ট ২০১৯

জাল ভেজাল

মনে হয় আজকাল ভেজালেও ভেজাল আছে। সুযোগ পেয়ে অনেকেই ভেজালও জাল করতে শুরু করেছে।

কাজান, ৩১ আগস্ট ২০১৯

গনতন্ত্র

বর্তমান গনতন্ত্র - জনগণের নামে, গণবিচ্ছিন্ন, জনতার স্বার্থ ও দাবি দাওয়ার প্রতি প্রচ্ছন্ন।

কাজান, ৩১ আগস্ট ২০১৯

Left-right

Left way seems to be the right way. But going left one should not abandon the right way of thinking as unnecessary.

Kazan, 31 August 2019

Friday, August 30, 2019

নেতা

ছিলেন এক জননেতা
হলেন শুধুই একজন নেতা
জনবিচ্ছিন্ন দল নেতা
দল আছে নেই জনতা

কাজান, ৩১ আগস্ট ২০১৯

চাওয়া পাওয়া

মানুষের চাওয় আস্ট্রোনোমিক্যাল। অধিকাংশের ক্ষেত্রে পাওয়া আস্ট্রোলজিক্যাল

কাজান, ৩০ আগস্ট ২০১৯

বিশ্বাস

ঈশ্বরে বিশ্বাস কর না কর তাতে কিছু এসে যায় না। তবে তাঁর অসীম শক্তিতে আর তিনি তোমার সব অন্যায়, সব অপরাধ ক্ষমা করে দেবেন সেটা বিশ্বাস না করলেই হল।

কাজান, ৩০ আগস্ট ২০১৯

কথা

কথা কি ঊট না কচ্ছপ যে তার পিঠে কথা বলতে হবে

কাজান, ৩০ আগস্ট ২০১৯

Thursday, August 29, 2019

পাগলামি

গতকাল হলুদ মাখানো তরমুজের গল্প বলার একটু পরেই এক বন্ধু ফোন করল। সিরিয়াসলি জিজ্ঞেস করল
দোস্ত হলুদ দিয়ে তরমুজ সত্যিই টেস্টি?
হ্যাঁ। বেশ মিষ্টি। তবে রংটা ওরা কারখানায়ই করেছিল।
তাই বল। আমি তো ভাবলাম তুই নিজেই করলি। তুই যেমন পাগলাটে তাতে অবিশ্বাস করার কিছু নেই।
ভাগ্যিস পাগল বলেনি।

কাজান, ২৯ আগস্ট ২০১৯

প্লট

দেশে এখন গল্প, উপন্যাস, নাটক থেকে শুরু করে বিপ্লব করার প্লট পর্যন্ত বিদ্যমান। তারপরও কেন যে কিছু লোক প্লট চাই প্লট চাই করে প্রধানমন্ত্রীর কান ঝালাপালা করছে সেটা কিছুতেই বোধগম্য হচ্ছে না

কাজানের পথে, ২৯ আগস্ট ২০১৯

স্যাক্রিফাইস

এক লোক জোড়া পাঁঠার পরিবর্তে জোড়া কুমড়ো বলি দিয়েছিল মা কালীর উদ্দেশ্যে। মা কালী খুশী হয়েছিল কি না জানা যায় নি তবে পরিবেশবাদীরা বিক্ষোভ মিছিল করেছিল তার বিরুদ্ধে

কাজানের পথে, ২৯ আগস্ট ২০১৯

Wednesday, August 28, 2019

রং রং

কাজানের পথে। ট্রেনে উঠে দেখি আমার ঐ কম্পার্টমেন্টে আরও তিনজন - বাবা, মা ও মেয়ে। বারো ঘন্টার জার্নি। একটু আলাপ না করলে হয়? এখন সবাই সাগরে রৌদ্র স্নান করে ফিরছে। তাই হাতটা বাড়িয়ে দিয়ে বললাম - কেমন হোল আমার রৌদ্র স্নান? ভদ্রলোক আমার চালাকি ধরতে পেরে হো হো করে হেসে উঠলেন। মেয়েরা অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলেন কোথায় পেলাম এমন রং। বাংলাদেশে।

ট্রেন, ২৯ আগস্ট ২০১৯

ঘুস

ঘুস যদি সমাজের অপরিহার্য অংশ হয় তবে তাকে আইন সম্মত করলেই তো হয়। প্রতিটি অফিসের সামনে ঘুসবক্স রাখা যেতে পারে।

মস্কো, ২৮ আগস্ট ২০১৯

কল্পনা

আমার সব পরিকল্পনা মাঠে মারা গেলো।
এজন্যই তো তোমাকে বলেছিলাম সমুদ্রে বা পাহাড়ে বেড়াতে যেতে। ওদের মরণ তাহলে একটু বৈচিত্র্যময় হত।

মস্কো, ২৮ আগস্ট ২০১৯

কথা

কেউ কথার মুখে কথা বলে না। সবাই কথার পিঠে কথা বলে। বেচারা কথা।

দুবনা, ২৮ আগস্ট ২০১৯

Tuesday, August 27, 2019

বাজার দর

মাছ-মাংস, শাক-সব্জীসহ পৃথিবীর সব জীবের দাম বাড়ছে। এখানে শুধু মানুষের বাজারই মন্দা। বাজার অর্থনীতিতে মানুষ অচল মাল। 

দুবনা, ২৮ আগস্ট ২০১৯ 

অন্ধত্ব

এমনকি সত্যকেও যদি কেউ অন্ধভাবে প্রতিষ্ঠা করতে চায় সেটা অনেক মিথ্যার জন্ম দেয়। অরুন্ধুতী রায় সেটাই প্রমাণ করলেন।

দুবনা, ২৮ আগস্ট ২০১৯ 

মানবতা

মানুষ যখন বিপদে পড়ে আপনার কাছে আসে সে তার বিপদ-আপদ, দুঃখ-কষ্ট, হতাশা-ক্রোধ সব সাথে নিয়েই আসে। আর তাদের সংখ্যা যদি হয় হাজার হাজার সে হয়ে ওঠে হিংস্র, অদম্য এমন কি অপরাজেয়। সে আপনার শান্তিকে, আপনার অপেক্ষাকৃত গোছালো জীবনকে ঘৃণা করে। যুদ্ধের আগুনে জ্বলন্ত মধ্যপ্রাচ্য থেকে আসা মানুষেরা ইউরোপে এটা দেখিয়েছে। বাংলাদেশে অন্য রকম ঘটবে তার কোন কারণ নেই। আমরা প্রায় ৫০ বছরে আটকে পড়া কয়েক লাখ বিহারীর সমস্যার সমাধান আদৌ করতে পারিনি, তাহলে কেন মনে হয় রোহিঙ্গাদের সমস্যার দ্রুত সমাধান করতে পারব? সমস্যাটা আন্তর্জাতিক, তাই বার্মার উপরে আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টি করতে হবে আর বার্মাতেই তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। নইলে একদিন বার্মার মতই আমাদেরও রোহিঙ্গা বিরোধী অভিযানে নামতে হবে যেটা কোন মতেই কারোই কাম্য নয়। অন্যদের প্রতি মানবিক হতে গিয়ে যদি দেশের লোককে অনির্দিষ্ট কালের জন্য অমানবিক চাপে রাখতে হয় সেই মানবতা নিয়ে প্রশ্ন করার দাবী দেশবাসী রাখে।

দুবনা, ২৭ আগস্ট ২০১৯

গপ্পো

কী করলেন সারাদিন?
কী আর করব? একটা গল্প লিখে ফেললাম।
তা দিন না পড়তে।
সে তো পারব না।
কেন?
বললাম না, গল্প লিখে ফেললাম। ডাস্টবিনে।

দুবনা, ২৭ আগস্ট ২০১৯

যাচ্ছেতাই

সে একেবারে যাচ্ছেতাই ...
আপনি তাকে এভাবে বলছেন কেন?
কীভাবে বললাম। আমি বললাম সে যাচ্ছে তাই আর পিছু ডাকলাম না 
 
দুবনা, ২৭ আগস্ট ২০১৯ 

দায়িত্ব

মানুষ অন্যদের দায়িত্ব দেয় কর্তব্য হিসাবে আর নিজে দায়িত্ব নেয় ক্ষমতা হিসেবে। কর্তব্য আর ক্ষমতার চুলোচুলিতে দায়িত্বটা দায় হয়ে পড়ে। 

দুবনা, ২৭ আগস্ট ২০১৯ 

বাঙ্গালি

বড় হওয়ার সাধ আছে মোর
ছোট হওয়ার সাহস নাই
পরনিন্দায় মুখর আমি
ভয় শুধু আত্মসমালোচনায়
 
দুবনা, ২৭ আগস্ট ২০১৯ 

Monday, August 26, 2019

নাই আছে

বর্তমানে আইন মন্ত্রী হল অন্তঃসলীলা নদীর মত। জল নাই নদী আছে, আইন নাই মন্ত্রী আছে।

দুবনা, ২৬ আগস্ট ২০১৯

দর্শন

আজকাল আর দর্শন
দেয় না আমায় দর্শন
যা দেয় তা অন্ধ বিশ্বাস
অথবা ঘৃণা বর্ষণ 
 
দুবনা, ২৬ আগস্ট ২০১৯ 

আধুনিক দর্শন

টিকির সাথে টিকি মিললে
দাড়ির সাথে দাড়ি
তবেই মোরা বন্ধু হব
নইলে মারামারি 
 
দুবনা, ২৬ আগস্ট ২০১৯ 

Sunday, August 25, 2019

শব্দ

কিছু শব্দ শব্দ করে
বললে হবে জব্দ
রাত দুপুরে চৌরাস্তায়
শুনবে গুলির শব্দ 
 
দুবনা, ২৬ আগস্ট ২০১৯ 

অদ্ভুত ভূত

অদ্ভুত কেমন করে কখন যে ভূত হয়ে গেল যে টেরই পেলাম না। অদ্ভুত ভূত সব! 

দুবনা, ২৫ আগস্ট ২০১৯ 

সমস্যা

আমাদের সমস্যা হল বুদ্ধিজীবীরা দলের কাছে বিক্রিত বিধায় বিকৃত 

দুবন, ২৫ আগস্ট ২০১৯ 

ধার

যদি না চাও ধারতে ধারের ধার
ওগো কর্ণধার তোমার বুদ্ধিতে দাও ধার

দুবনা, ২৫ আগস্ট ২০১৯

Saturday, August 24, 2019

নক্ষত্রের বিদায়

অধ্যাপক মোজাফফর আহমদকে কাছ থেকে প্রথম দেখি ১৯৮১ সালে। যদিও এর আগে তাঁর নাম শুনেছি, বিভিন্ন নির্বাচনের পোস্টারে তাঁকে দেখেছি। ১৯৮১ সালে উনি ছিলেন বাম ঘরানার রাজনৈতিক দলগুলোর সম্মিলিত প্রেসিডেন্ট প্রার্থী। আমি তখন ছাত্র ইউনিইয়ন করি, তাই তাঁর পক্ষে গ্রামে প্রচার চালাই। উনি এসেছিলেন মানিকগঞ্জ এক জনসভায়। কলেজের মাঠে। লোকজন যে খুব বেশি হয়েছিল তা নয়,তবুও আমরা এর মধ্যেও আশার আলো দেখেছিলাম। খুব কাছ থেকে কথা বলার সুযোগও হয়েছিল।

১৯৮৩ সালে আমি মস্কো আসি। অনেক বার তিনি এদেশে এসেছেন, বিভিন্ন সময় দেখা হয়েছে, কিন্তু সিপিবির নেতা কর্মীদের সাথে যতটা মিশেছি, তাঁর সাথে সেভাবে হয়নি। দোষটা আমাদেরই। তখন বিভিন্ন ভাবে সোভিয়েত ইউনিয়নে ছাত্ররা পড়তে আসত। সরকারী বৃত্তিতে খুব বেশি আসত না, বেশির ভাগ আসত ন্যাপ, সিপিবি, বাংলাদেশ-সোভিয়েত মৈত্রী সমিতি, ছাত্র ইউনিয়ন, বাকশাল - এ সব মস্কো ঘেঁষা রাজনৈতিক এবং গণ সংগঠনের মাধ্যমে। দেশে সিপিবি ও ন্যাপ হাতে হাত রেখে লড়াইয়ের মাঠে থাকত। কথা ছিল এদের মাধ্যমে আসা ছাত্ররা এ দেশ থেকে পড়াশুনা শেষ করে ফিরে দেশ গড়বে। কিন্তু কী এক অদ্ভুত কারণে এ দেশে পা দেওয়ার সাথে সাথেই একে অন্যের আদর্শিক শত্রুতে পরিণত হত, আর এ কারণেই ওনার সাথে আমাদের যতটুকু যোগাযোগ হওয়ার কথা ছিল, ওনার রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা থেকে আমাদের যতটুকু জানা বা শেখার কথা ছিল সেটা হয়নি। তবে এটা ঠিক যে পঙ্কজ ভট্টাচার্য বা পীর হাবিবুর রহমান যখন এসেছেন তখন এ সমস্যা হয়নি। আসলে এ ছিল যতটা না ন্যাপ -সিপিবির দ্বন্দ্ব, তার চেয়ে বেশি এখানে যারা ন্যাপ ও সিপিবির মুখপাত্র ছিলেন তাদের ক্ষমতার লড়াই।

আসলে আমার মনে হয় এটা আমাদের দেশের উচ্চ মধ্যবিত্ত রাজনীতির সমস্যা। উচ্চ মধ্যবিত্ত বলতে আমি বোঝাচ্ছি বাম ঘরানার রাজনীতিবিদদের সেই অংশকে যারা শুধু এ ঘরানায় আছেন বলেই নিজেদের মহাজ্ঞানী মনে করেন, ফলে সাধারণ মানুষের কথা বলে রাজনীতি করলেও তাদের পালস ঠিক বুঝতে পারেন না। এখানে ত্যাগী নেতা কর্মীর অভাব ছিল না, কিন্তু শেরে বাংলা ফজলুল হক, শেখ মুজিবুর রহমান বা মৌলানা ভাশানীর মত ক্যারিস্ম্যাটিক নেতা ছিলেন না যাদের ডাকে লাখ লাখ মানুষ জড়ো হবে। তবে এই না থাকার মধ্যেও অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ ছিলেন বিশেষ ভাবে দৃশ্যমান। তাঁর ধর্ম কর্ম সমাজতন্ত্র কমিউনিস্টদের তাত্ত্বিক সমাজতন্ত্রের ডাকের চেয়ে সাধারণ মানুষের কাছে বেশি প্রণিধান যোগ্য ছিল। ধর্ম যেখানে ডগমা আর পরকালের সুখের উপর ভিত্তি করে দাঁড়িয়ে আছে, কী গণতন্ত্র কী সমাজতন্ত্র সেখানে ইহকালে সুখের সন্ধান করে - সেদিক থেকে ধর্ম আর সমাজতন্ত্র দুটো আন্টাগনেস্টিক ধারণা। তাই হয়তো তাঁর ধর্ম কর্ম সমাজতন্ত্রের শ্লোগান কমিউনিস্টদের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়ে ওঠেনি। তবে আমাদের দেশের সার্বিক বাস্তবতায় তাঁর রণকৌশল নিঃসন্দেহে বিশেষ মনোযোগের দাবী রাখে।

বাংলাদেশ আজ রাজনীতির বন্ধ্যা ভূমি, বধ্য ভূমি। বয়সের ভারে নুয়ে পড়ার পরেও দেশের এই অবস্থায় তাঁর উপস্থিতি আশা ব্যঞ্জক ছিল। মনি সিংহ, কমরেড ফরহাদের পর উনি ছিলেন এই ঘরানার রাজনীতির লাল ঝাণ্ডা। আজ দেশের গৌরবময় রাজনীতির আকাশ থেকে আরও একটি নক্ষত্রের পতন ঘটল।


দুবনা, ২৪ আগস্ট ২০১৯


Friday, August 23, 2019

মগ

রোহিঙ্গারা মগ দেশ থেকে এসে মগ ডালে বসে তাদের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে আমাদের আলোচনা শুনছে আর চায়ের মগে চুমুক দিচ্ছে। 

দুবনা, ২৩ আগস্ট ২০১৯ 

পার্থক্য

রাজনীতিবিদ আর সাধারণ মানুষের মধ্যে পার্থক্য কি?
সাধারণ মানুষের ভার বহন করে সর্বংসহা ধরিত্রী আর রাজনীতিবিদদের ভার - সাধারণ মানুষ
 
দুবনা, ২৩ আগস্ট ২০১৯ 

উচ্ছাস

শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমীতে এত এত শুভেচ্ছা বাণী পাচ্ছি যে মনে হচ্ছে দিন শেষে ধর্মোচ্ছাসে ডুবেই যাব! নৌকা নৌকা! 

দুবনা, ২৩ আগস্ট ২০১৯

পথ


রাজনীতিবিদরা কী খারাপ মানুষ?
না, তারা ভালও নয় বা মন্দও নয়,  তারা আমাদের মতই মানুষ। আমাদের মতই তারাও ভাল থাকে চায়। গাড়ি-বাড়ি, ধন-দৌলতের মালিক  হতে চায়। তারাও চায় তাদের ছেলেমেয়েরা ভাল স্কুলে পড়ুক, সুখে শান্তিতে থাকুক।
তাহলে...
দেখ, আমরা এসব করি কোন রাখ ঢাক না করে। জনগণের দোহাই না দিয়ে। কিন্তু রাজনীতিবিদরা জনগণের দোহাই দিয়ে এসব করে। অর্থাৎ আমাদের মত রক্ত-মাংসের মানুষ হলেও, তাদের চাওয়া পাওয়া আমাদের মত হলেও তারা এসব করে মহৎ সব শ্লোগানের মোড়কে। এখন যদি কেউ তোমাকে খুব সুন্দর একটা মোড়কে বাজে জিনিস বিক্রি করে তুমি তো তাকে অসৎ বলবেই। আমার মনে হয় বর্তমানে রাজনীতিবিদ নয় রাজনীতি নিজেই পথভ্রুষ্ট।      
দুবনা, ২৩ আগস্ট ২০১৯ 

Thursday, August 22, 2019

রোগা রুগী

অনেকেই চায় রোগা হতে
রুগী হতে কেউ চায় না
এতে অনেকেই রুগী হয়
অনেকেই রোগা হয় না 
 
দুবনা, ২৩ আগস্ট ২০১৯ 

ভালবাসা


সেদিন ছিল পূর্ণিমা রাত, নীলাকাশে চাঁদের গোলগাল মুখখানি দেখা গেলেও এখনও কেউ তার ঘরে আলো জ্বালেনি। দুষ্ট সূর্য্যিটা চাঁদকে দেখবে বলে ঠায় দাঁড়িয়ে আছে পশ্চিমের আকাশে। যাই যাই করেও যেতে চাইছে না। রাত আর দিনের এই মিলন লগ্নে তাদের দেখা। ঘাটে জল নিতে এসেছে এই চপল নয়না, আর দূরে জঙ্গলের ভেতর থেকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ওর সৌন্দর্য উপভোগ করছে ছেলেটি। দু’ জনের দেখা হল চাঁদ আর সূর্য্যির লুকোচুরি খেলার মাঝে। ভয়ে একজনের গলা শুকিয়ে এল, মনে পড়ল একলা ঘাটে না আসতে মায়ের বারণ। আরেকজন আশায় বুক বেধে ঠায় দাঁড়িয়ে রইলো অপেক্ষায়। আবার নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখল সে। এরই মধ্যে টুপ করে সূর্য ডুব দিল পশ্চিম সাগরে, হেসে উঠলো চাঁদ। মেয়েটি আধো আলো আধো অন্ধকারে খুঁজল পথ, ভাবলো নিঃশব্দে সে পেরিয়ে যাবে এই বুনো পথটুকু। না, ক্ষিপ্র গতিতে ছেলেটা ছুটল তার পেছনে। এই তো সে ঘাড়ের উপর তার গরম নিঃশ্বাস টের পাচ্ছে। মা বলে চিৎকার করার আগেই দুটি জীবন এক হয়ে গেল। ডেকে উঠলো পেঁচা। এদিক সেদিক কিছু জ্বলন্ত চোখ। উৎসুক দৃষ্টি সেসব চোখে। ভোরের আলোয় সবাই দেখতে পেল ঘুমন্ত এক সিংহ শাবক আর তার পাশে একটা বাচ্চা হরিণীর ডাগর দুটো চোখ।  
দুবনা, ২২ আগস্ট ২০১৯    


Wednesday, August 21, 2019

বিদ্রোহ

তোমার সালাম দেওয়ায় নেতার কিছুই এসে যায় না কারণ তাকে সালাম দেওয়ার হাজার লোক আছে। তবে তোমার সালাম না দেওয়ায় তার খুবই এসে যায়, কারণ তাকে সালাম না দিয়েও যে চলা যায় সেই মন্ত্রটা তুমি অন্যদের শেখাও। এটা তার একচ্ছত্র ক্ষমতার প্রতি বিদ্রোহ। ক্ষমতা বিদ্রোহ বরদাশত করে না।

দুবনা, ২২ আগস্ট ২০১৯

কথা

অনেক দিন পর এক বন্ধুর সাথে দেখা। দেখেই মনে হল ওর মন খারাপ, তাই জিজ্ঞেস করলাম

কিরে, মনের আবার ডেঙ্গু হল নাকি?
না রে দোস্ত, ডেঙ্গু না। এমনিতেই।
এমনি কিছু হয়না, কারণ লাগে। ফিজিক্সে তাই বলে।
ওই ছেলেটার কথা মনে আছে তোর?
থাকবে না কেন? কি হয়েছে?
না, তেমন কিছু না। এক সময় খুব বিপদে ছিল। প্রায়ই আসত, ফোন করত। সে সময় টাকাপয়সা দিয়ে আর বিভিন্ন ভাবে প্রচুর হেল্প করেছি। ওর যে বর্তমান ব্যবসা, সেটাও তো আমিই দাঁড় করিয়ে দিই ক্যাপিটাল দিয়ে, খদ্দের যোগাড় করে দিয়ে।
সে তো খুব ভাল করেছিস। ও শুনলাম এখন খুব ভাল করছে। ব্যবসা নাকি রমরমা।
সেটাই তো কথা। অনেক দিন পরে সেদিন দেখা হল, চিনতেই পারলো না। নিজেই আগ বাড়িয়ে জিজ্ঞেস করলাম
কি হে, কী খবর? কেমন আছ?
ঈশ্বরের কৃপায় ভালই আছি। আপনি ভাল?
তা তোমার ঈশ্বর বছর দু তিন আগে কৃপা করলে আমিও তো একটু ভাল থাকতে পারতাম। তোমারও এত খড়কুটো পুড়াতে হত না।
সেটা তুই ভাল বলেছিস। কিন্তু তোর মন খারাপের কারণ কিন্তু বুঝলাম না।
বা রে, আমি নিজের কাজ বাদ দিয়ে ওকে দাঁড় করিয়ে দিলাম, এখন কিনা সব প্রশংসা ইশ্বরের?
দেখ, আমি অনেককে জানি, যারা সারা জীবন মাথার ঘাম পায়ে ফেলে নিজের পায়ে দাঁড়িয়েছে, কিন্তু জিজ্ঞেস করলেই বলে ইশ্বরের কৃপায় ভাল আছি। আসলে মানুষ জাতটাই স্তাবক। কারণে অকারণে বসের গুনগান করা তার স্বভাব। ভাল কাজ তো আমরা খুব একটা করি না, আবার মৃত্যুও এড়াতে পারি না। তাই ইশ্বরের কানে একটু মধুর বার্তা ঢুকিয়ে দিই। কে জানে এতে স্বর্গের ভিসাটা পেলে পেয়েও যেতে পারি।

দুবনা, ২২ আগস্ট ২০১৯