Thursday, August 1, 2019

নয়া দা

অফিস থেকে বাসায় ফিরছি সাইকেলে। ইলশে গুড়ি বৃষ্টি। রাস্তায় এক বাচ্চা ছেলে সাইকেল চালিয়ে যাচ্ছে বাবার পেছন পেছন। ওর বাবা এগিয়ে গেছে, ছেলেটা সাইকেল নিয়ে দাঁড়িয়েই আছে। আমি ওকে ক্রস করে যেতে যেতে সেভার কথা মনে হল। ছোট বেলায় ও এমনটাই করত। এখন এরকম বাচ্চাদের সাথে সাইকেল চালাতে হলে নাতি নাত্নিদের অপেক্ষা করতে হবে। এখানে আমার বন্ধুদের অনেকেরই নাতি নাত্নি হয়ে গেছে। তখন আমার মনে হল বাবার কথা। আমার যখন জন্ম বাবার তখন ৫৬। তার মানে আমার আরও বছর খানেক অপেক্ষা করতে হবে জন্মের সময় বাবার বয়সী হতে। যদিও আমার জন্মের বছর পাঁচেক পরে সুবোধ দার ছেলে বাপির জন্ম, ওরা ইন্ডিয়া থাকায় বাবা মা সে অর্থে নাতিকে পায়নি। সেদিক থেকে বাড়িতে প্রথম নাত্নি আসে ভ্রমরের জন্মের মধ্য দিয়ে ১৯৭৫ সালে, আমার যখন ১১ বছর বয়স। অর্থাৎ বাবার ৬৭। এসব ভাবতে ভাবতেই হঠাৎ মনে হল বাবাকে সবাই নয়া দা, নয়া কাকা এভাবে ডাকতো। বাবাদের চার ভাইয়ের মধ্যে বাবা তৃতীয়। অন্যদের বড় দা, মেজদা, ছোটদা বা ছোড়দা বলে ডাকাতে বাবাকে সেজ দা বলে ডাকাই স্বাভাবিক। মনে তাই প্রশ্ন এলো হঠাৎ নয়া দা কেন? শুনেছি বাবা নীল রতন সরকার মেডিক্যাল কলেজে পড়ার সময় কোলকাতা থেকে উধাও হয়ে যান। পরে কীভাবে কীভাবে যেন আসামে তাঁর খোঁজ পাওয়া যায়। এ গল্প বাড়িতে সবাই জানতো, বলত, কিন্তু এ নিয়ে বাবাকে কেউ কোন দিন প্রশ্ন করেনি। অন্তত আমি শুনিনি। আমি যখন এসব জানতে আগ্রহী হই বাবা তখন আরও দূর দেশের বাসিন্দা। কাকা বা মামাদের কাছে জিজ্ঞেস করেও সঠিক উত্তর পাইনি। আজই প্রথম নয়া দা প্রসঙ্গ মনে হল। মনে হল নয়া দা নাম কী বাবার অনেক দিন নিখোঁজ থাকার পর বাড়ি ফেরার সাথে কোন ভাবে জড়িত?
দুবনা, ০১ আগস্ট ২০১৯


No comments:

Post a Comment