Monday, February 15, 2021

পদার্থবিদ ও সেলিব্রিটি


প্রায়ই ফেসবুকে দেখি প্রফেসর জামাল নজরুল ইসলামকে নিয়ে লেখা, বিশেষ করে দেশে তিনি ততটা আদৃত হননি সে নিয়ে অনেকেই লেখেন। কিন্তু অম্নে রাখতে হবে বিজ্ঞানীরা সেলেব্রিটি নন। আজকাল কাকে সবাই চেনে? যার সম্পর্কে মিডিয়ায় প্রচুর বলা হয়। প্রফেসর হকিংএর স্বীকারোক্তি "সে সেরা। আমি তাঁর কাছে কিছুই না।" এটা শুধু হকিংএর বিনয়ের কথাই প্রমাণ করে। পদার্থবিদ্যা দর বা ফুটবল নয় যে এখানে কেউ প্রথম, কেউ দ্বিতীয় হবে। প্রতিটি গবেষকই নিজ নিজ ক্ষেত্রে অবদান রাখেন। এই সম্মিলিত প্রচেষ্টাই বিজ্ঞানকে সামনে নিয়ে যায়। নিউটন বা আইনস্টাইনের মত বিজ্ঞানীরা দৈত্যদের কাঁধে দাঁড়িয়ে থাকেন বলেই অনেক দূর দেখতে পান। প্রফেসর হকিং নিঃসন্দেহে একজন জিনিয়াস, তবে এই সময়ে এরকম প্রচুর বিজ্ঞানীর নাম করা যায় যারা নিজ নিজ ক্ষেত্রে মহীরুহ। তবে এরা মূলত বিজ্ঞানী মহলেই পরিচিত, সমাদৃত। প্রফেসর ইসলাম বিশেষজ্ঞ মহলে পরিচিত ছিলেন, আছেন। সাধারণ মানুষ হকিংএর পপুলার লেখাই জানে, কিন্তু উনি বিজ্ঞানী, বিশেষ করে সিঙ্গুলারিটির উপর ওনার কালজয়ী কাজ আছে পেনরোজের সাথে। সেই কাজগুলো ক জন জানে? এজন্যে আমাদের সাধারণ মানুষ প্রফেসর ইসলাম সম্পর্কে জানেন না এ নিয়ে আক্ষেপ করার কারণ নেই, যারা জানার তারা তাঁকে ঠিকই জানেন। তবে এটাও ঠিক দেশ তার কৃতি সন্তানদের সম্মান করবে, পাঠ্য বইয়ে এদের সম্পর্কে রচনা থাকবে সেটা কাম্য। আমাদের বইয়ে হাজী মুহাম্মদ মহসীন সম্পর্কে রচনা আছে, একই ভাবে যদি সত্যেন সেন, জামাল নজরুল ইসলাম, মেঘনাদ সাহা, জগদীশ বসু এদের সম্পর্কে রচনা থাকত হয়তো আমাদের দেশেও বিজ্ঞানের প্রতি ছাত্রদের আগ্রহ বাড়ত। তবে এসব করার জন্য যে ধরণের শিক্ষানীতি দরকার সেটা আমাদের দেশে নেই। তারচেয়ে বড় কথা সেই রাজনীতিও নেই।

দুবনা, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১

No comments:

Post a Comment