ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে সমস্যা শুধু রাজনৈতিক নয়, মানবিকও। ইউরোপ তথা পশ্চিমা বিশ্বের জন্য রাজনৈতিক সমাধান মানবিক সমাধানের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ইউরোপ চাইছে বর্তমান লাইন অফ কন্ট্রোলকে ঘিরে চুক্তি হোক। রাশিয়া চাইছে দানিয়েৎস্ক, লুগানস্ক, জাপারোঝিয়া আর হেরসনের উপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ যদিও এদের কিছু কিছু অংশ এখনও ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণে। এটা শুধু টেরিটোরির বিষয় নয়, এটা দনবাসে জল সমস্যার সাথে জড়িত। দানিয়েৎস্কের উত্তরাঞ্চলে, যা এখনও ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণে, রয়েছে জলের উৎস। ইউক্রেন সেটা বন্ধ করায় দনবাস জলের সংকটে ভুগছে দীর্ঘদিন। তাছাড়া কাশ্মীরের উদাহরণ বলে লাইন অফ কন্ট্রোল আন্তর্জাতিক সীমানা হয় না, বরং বিভিন্ন সময় নতুন যুদ্ধের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ১৯৯১ থেকে শুরু করে এমনকি ইউক্রেনের অধীনে বিভিন্ন নির্বাচনের ফলাফল দ্ব্যর্থহীন ভাষায় ঘোষণা করে যে এই অঞ্চলের মানুষ নিজেদের যতটা না ইউরোপ তার চেয়ে বেশি রাশিয়ার সাথে দেখতে চায়। ইউক্রেনের সংবিধানে নিরপেক্ষতা শুধুমাত্র রাশিয়া ও আমেরিকা তথা পশ্চিমা বিশ্বের রাজনৈতিক খায়েশ নয়, এটা ছিল ইউক্রেনের পরস্পরবিরোধী দুই বিশাল জনগোষ্ঠীকে একটি পতাকার নীচে ধরে রাখার একমাত্র উপায়। যখনই ভিকি ন্যুল্যান্ড এই ব্যালান্স নষ্ট করেছেন দেশ গৃহযুদ্ধের দিকে ধাবিত হয়েছে। খারকভ ও ওদেসায় সেটা শক্ত হাতে দমন করা গেলেও দনবাসে সেটা সম্ভব হয়নি। এই সমস্যার চিরস্থায়ী সমাধানের জন্য তাই রাজনৈতিক ও মানবিক দুটো দিককেই অগ্রাধিকার দেয়া প্রয়োজন। রাজনীতিবিদরা আসে আর যায়। জনতা থেকে যায়।
দুবনা, ১২ আগস্ট ২০২৫