Friday, May 30, 2025

গোলক ধাঁধা

বিবিসি জানাচ্ছে রাশিয়া বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের তেল গ্যাস ইউরোপে বিক্রি করে যুদ্ধের খরচ চালাচ্ছে। কথাটি মিথ্যা নয় যদিও এটা না করলেও রাশিয়া যুদ্ধ চালিয়ে যাবার টাকা যোগার করতে পারত। হয়তো একটু কষ্ট হত। যাহোক, বিবিসি জানাচ্ছে এভাবে ইউরোপ রাশিয়াকে যুদ্ধে সাহায্য করছে। এখন ইউরোপ যদি রাশিয়ার কাছ থেকে এসব না কেনে সেই অভাব পূরণ করতে হবে আরব বিশ্ব বা আমেরিকা থেকে কিনে যার পেছনে খরচ হবে অনেক বেশি আর তাতে করে ইউরোপ ইউক্রেনকে আরও কম সাহায্য করতে পারবে। তাই রাশিয়ার কাছ থেকে এসব আমদানি করে বা না করে ইউরোপ রাশিয়ার খুব একটা লাভ বা ক্ষতি করতে পারবে না, না কিনলে একটু আগে ইউক্রেনের পতন হবে। কিন্তু যুদ্ধ থামলে তো ইউক্রেনের মানুষ বাঁচবে, ইউরোপের এলিট তো বাঁচবে না। ইউক্রেনের বর্তমান শসকদের সাথে সাথে ইউরোপের এলিটদের পতন হবে। তাই তো তারা যুদ্ধ চালিয়ে যেতে মরিয়া, এমনকি এতে করে যদি রাশিয়ার কাছ থেকে তেল গ্যাস কিনতেও হয়। এ এক গোলক ধাঁধা। পারবে কি ইউরোপ মিনটাউরের ল্যাবিরিন্ট থেকে বেরিয়ে আসতে নাকি তার আগেই শিকার হবে পারমাণবিক মৃত্যুর?

দুবনা, ৩০ মে ২০২৫

https://bijansaha.ru/albshow.html?tag=320

Thursday, May 29, 2025

রাজা

১৯৪৭ সালে ভারত ভেঙে পাকিস্তান করা হয়েছিল উত্তর প্রদেশের মুসলিম এলিটদের ক্ষমতার স্বাদ গ্রহণের পথ সুগম করার জন্য। এরপর থেকে চলছে রাজা বদলের পালা। জনগণের ভাগ্য বদলের স্লোগান দিয়ে ক্ষমতায় এলেও মূলত রাজাই বদল হয়, নতুন এলিট তৈরি হয়, কিন্তু মানুষের ভাগ্য বদলায় না। সব বিপ্লবই ঝুটা হয়ে যায়।

দুবনা, ২৯ মে ২০২৫

Wednesday, May 28, 2025

মেরুদন্ড

শিশু যার কোন লাভ লোকসানের হিসাব নেই, স্বৈরাচারের দোসর ট্যাগ পাওয়ার ভয় নেই, একমাত্র সেই জনসম্মুখে উচ্চ কন্ঠে বলতে পারে যে "রাজা তুমি ন্যাংটা"। আচ্ছা একাত্তরের আর কত স্মৃতি ধ্বংস করলে, আর কত একাত্তরের ঘাতকদের বেকসুর খালাস দিলে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের রাজনীতিবিদ বলে পরিচিত নেতারা বলতে পারবে যে বর্তমান সরকার রাজাকারের দোসর, বর্তমান সরকার একাত্তরের ঘাতক দালালদের সরকার? এখনও যারা এর পেছনে আওয়ামী স্বৈরাচারের দোষ খুঁজে তাদের বলব - অন্যের দোষ নয়, নিজেদের মেরুদন্ড খুঁজতে। চব্বিশ শুধু একাত্তরকে হত্যা করেনি, চব্বিশ বাংলাদেশের রাজনীতিবিদ ও বুদ্ধিজীবীদের মেরুদন্ড ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিয়েছে।

দুবনা, ২৮ মে ২০২৫

Monday, May 26, 2025

গাধা

অনেক মানুষের অন্যতম প্রধান সমস্যা হল তারা নির্দ্বিধায় কোদালকে কোদাল বলতে পারলেও গাধাকে গাধা বলতে সঙ্কোচে বোধ করে পাছে গাধা মাইন্ড করে। দুঃখজনক হলেও সত্য যে এই গাধারাই সমাজের সবচেয়ে প্রভাবশালী অংশ। গাধা মানে তারা বোকা নয়, তারা একরোখা, নিজেদের দৃষ্টিভঙ্গী ও জ্ঞানের উপর যারা অন্ধবিশ্বাসী। ভদ্রতা বা চক্ষুলজ্জার খাতিরে তাদের ভুল কেউ ধরিয়ে দেয় না বলেই বার বার সমাজ অধঃপতনের দিকে যায়।

দুবনা, ২৭ মে ২০২৫

ধূর্ততা

সবাই তাকে বুদ্ধিমান বলে। বলে জ্ঞানে তার সমকক্ষ ভূ-বাংলায় নেই। তবে তার ধূর্ততা যে জ্ঞান আর বুদ্ধিকে শত যোজন পিছে ফেলে দিয়েছে ইতিমধ্যেই সে ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই।

মস্কোর পথে, ২৬ মে ২০২৫

Sunday, May 25, 2025

গ্যাঞ্জাম

গ্যাঞ্জাম কি?
মানুষের জ্ঞান যখন জ্যামে আটকে যায় সেখান থেকে বেরুবার জন্য সে যে সব পদক্ষেপ গ্রহণ করে তাকে গ্যাঞ্জাম বলা হয়। গ্যাঞ্জাম একটি প্রক্রিয়া যার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে ঘোলা জলে মাছ ধরা বিশেষ করে সেখানে যদি কোন মাছ না থাকে।

মস্কো, ২৫ মে ২০২৫

Saturday, May 24, 2025

সুযোগ

শুনলাম অনেক দেশ নাকি বাংলাদেশের নাগরিকদের ভিসা দিচ্ছে না। আমরা তো কথায় কথায় বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন পণ্য বয়কট করি।‌ এই সুযোগে আমরা বিশ্বের সব দেশকে বয়কট করে দেখিয়ে দিতে পারি কত ধানে কত চাল। জাপান একবার শত বছরের জন্য নিজেদের আইসোলেট করে রেখেছিল। এটাই সেই সুবর্ণ সুযোগ। এই সুযোগে যদি জাপান হওয়া যায়!

দুবনা, ২৪ মে ২০২৫

Friday, May 23, 2025

উল্টো রাজার দেশে

মানুষের আশা ও সরকারের প্রতিশ্রুতির সাথে বাস্তবের এতটাই ফারাক যে সেটা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অন্তরহীন রূপটাই খুব স্পষ্ট করে তুলে ধরেছে। অগত্যা সরকারের অগস্ত্য যাত্রা। এখন শুধুই অপেক্ষার পালা। তবে এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ আবার দেখাল এখানে কোন কিছুই ব্যাকরণ মেনে ঘটে না। এখানে বেসামরিক সরকার নির্বাচন নিয়ে টালবাহানা করে আর সামরিক বাহিনী নির্বাচন চায়।

দুবনা, ২৩ মে ২০২৫

জুজু

মানসিক ভাবে যে দাস সে শুধু মালিক বদলাতে পারে, শৃঙ্খল মুক্ত হতে পারে না। ডিলেমা যখন আমেরিকার গোলাম হব না ভারতের, পাকিস্তানের না চীনের - তখন স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব এসব ফাঁকা বুলি। স্বাধীন দেশ কখনো কারো সাথে গাঁটছড়া বাঁধে না আবার কারো মুখ দেখাও বন্ধ করে না। দেশের স্বার্থে যার সাথে যেখানে বন্ধুত্ব করা দরকার বন্ধুত্ব করে আর পারতপক্ষে শত্রুতা এড়িয়ে চলে। তৃতীয় পক্ষের স্বার্থে কারো সাথে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে না। এজন্য দরকার স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি। কিন্তু জনগণকে যদি সব সময়ই জুজুর ভয় দেখিয়ে ভীত করে রাখা হয় তখন স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি পালন করা কষ্ট।

দুবনা, ২৩ মে ২০২৫

Wednesday, May 21, 2025

সমঝোতা

চোর আর গৃহস্থের মধ্যে কখনো স্থায়ী সমঝোতা হয় না কারণ তাদের স্বার্থ ও অস্তিত্বের লড়াই পরস্পরবিরোধী। ধরা পড়লে চোর আর কোনদিন চুরি করবে না বলে নাকে খৎ দেয় কিন্তু ছাড়া পেলে প্রথম সুযোগেই সে চুরি করে। এটা তার পেশা। ঠিক এই কথাই বলা যায় সেই দুই পক্ষ সম্পর্কে যুদ্ধ ও শান্তি যাদের অস্তিত্বের সমার্থক। 

দুবনা, ২২ মে ২০২৫

প্রশ্ন

শেখ মুজিবের উপর নির্মিত সিনেমাটি  দেখা হয়নি। যখন মুভিটা মুক্তি পায় তখন ফেসবুকে তার যে সমালোচনা শুনি তাতে দেখার আগ্রহ খুব একটা জাগেনি। তবে ইদানিং তার অভিনেতা অভিনেত্রীদের নিয়ে যা হচ্ছে তাতে নতুন করে মুভির কথা মনে হল। আসলে এতগুলো কথা বলা এ নিয়ে ছোট্ট একটা প্রশ্ন করার জন্য। ধরে নিতে পারি সেই মুভিতে মুজিব পরিবারের পাশাপাশি আরো অনেক চরিত্র ছিল। আচ্ছা মুশতাকের চরিত্র কি মুভিতে ছিল? থাকলে কে সেই চরিত্রে অভিনয় করেছিল? সেও কি খুনের মামলার আসামী? নাকি আসল খুনীর চরিত্রে অভিনয় করলে সেটা শুধুই অভিনয়?

দুবনা, ২১ মে ২০২৫

Tuesday, May 20, 2025

কতই রঙ্গ দেখি দুনিয়ায়

ইউরোপের অবস্থা এখন অনেকটা ক্ষয়িষ্ণু জমিদারের বখাটে ছেলেদের মত। কী নৈতিক, কী অর্থনৈতিক, কী রাজনৈতিক - সব দিক থেকেই তারা এখন প্রায় দেউলিয়া। পূর্বপুরুষের রেখে যাওয়া সম্পদ ভাঙ্গিয়ে মোটামুটি ভদ্র ভাবেই খেয়েপরে বাঁচা যায়, তাদের রেখে যাওয়া অট্টালিকা, জাদুঘর এসব দেখিয়ে সমীহ অর্জন করা যায় - কিন্তু নৈতিকতা এখন যেকোনো সময়ের চেয়ে আরও নীচে। আগে সবাই ভাবত প্রতিপক্ষকে যেকোনো ভাবে দমন করা - এটা তৃতীয় বিশ্বের আবিষ্কার। বিভিন্ন উপনিবেশে ইউরোপিয়রা যে অমানুষ তার প্রমাণ জালিওয়ানাবাগ, দক্ষিণ আফ্রিকা, ইদানিং কালে ইরাক, আফগানিস্তান, সিরিয়া, লিবিয়া, আরও একটু আগে ভিয়েতনাম। তবে ধারণা ছিল নিজেদের দেশে তারা অন্তত গণতান্ত্রিক। কিন্তু ফ্রান্স, রুমেনিয়া এমনকি বাইডেনের আমেরিকা প্রমাণ করেছে যে ক্ষমতার প্রশ্নে এরা এমনকি তৃতীয় বিশ্বের যেকোনো ডিক্টেটরের চেয়েও অনেক বেশি হিংস্র, অনেক বেশি স্বৈরাচারী।

দুবনা, ২০ মে ২০২৫

Monday, May 19, 2025

প্রেম

কথা ছিল ইউক্রেন ফ্রান্স তথা ইউরোপের মত উন্নত ও সম্পদশালী দেশ হবে। এমানুয়েল সহ ইউরোপের কোন নেতাই সেই কথা রাখতে পারেনি তাই নিজেই ভলদেমিরের পর্যায়ে নেমে এসেছে ইউরোপকে অর্থনৈতিক মন্দা তথা দারিদ্র্যের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়েছে। অনেকটা সেই গল্পের মত। সুন্দরী কিন্তু দরিদ্র মহিলাকে কোটিপতি করতে গিয়ে কোটিপতি আজ নিজেই পথের ভিখারি। এরই নাম প্রেম।

মস্কো, ১৯ মে ২০২৫

Friday, May 16, 2025

প্রশ্ন

ফেসবুকে একটা ভিডিওতে দেখলাম বক্তা গোবিন্দভোগ, গোপালভোগ, রাধাভোগ এসব নামের নাম বদলানোর দাবি জানাচ্ছে এসব হিন্দু দেবদেবীদের নামে বিধায়। কিন্তু এর একবারও মনে হল না কেন আরব দেশে আম জন্মায় না এ নিয়ে সৃষ্টিকর্তার কাছে নালিশ করার। অথবা ইসলাম ধর্মের অনেক নাম ও রীতিনীতি প্রাকইসলামিক এসব নিয়ে ভাবার। মানুষের ও মানব সভ্যতার জন্ম যেকোনো ধর্মের চেয়েও অনেক অনেক আগে। ভাষার জন্মও ধর্মের আগে। আমরা যদি তাই ধর্মের কারণে সব কিছুর নাম বদলাতে যাই এক সময় শব্দ খুঁজে পাওয়া যাবে না। আর সবচেয়ে বড় কথা নাম বদলালেই আমের স্বাদ বাড়বে না, দাম কমবে না যেমন বদলাবে না মানুষের চরিত্র। এসব ফালতু আলাপ না করে মানুষ যদি প্রকৃত সমস্যা ও তার সমাধান নিয়ে ভাবত তাহলে বারবার দেশ বিপর্যয়ের মুখে পড়ত না। ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া থেকে শুরু করে পৃথিবীর কোন মুসলিম দেশে নিজ নিজ অতীত, নিজ নিজ সংস্কৃতি নিয়ে কোন হীনমন্যতা নেই বলেই জানি। যত হীনমন্যতা এক ভারতীয় উপমহাদেশে। আরবের এক প্রিন্স মনে হয় একবার বলেছিলেন যে উপমহাদেশের এরা খাঁটি মুসলমান না। তাহলে কী সব কিছুর সাথে আমাদের ধর্ম বিশ্বাসেও ভেজাল ঢুকে যাচ্ছে?

দুবনা, ১৬ মে ২০২৫

Thursday, May 15, 2025

শিক্ষা

ট্রাম্পকে হারানোর জন্য ডেমোক্র্যাটরা এক সময় বিএলএম আন্দোলন উস্কে দেয়। বাইডেনের শাসনের প্রথম দিকেও তারা সরকারের নাভিশ্বাস ওঠাতে সমর্থ হয়।

২০২৪ এর জুলাই আগস্টে স্কুল কলেজের ছাত্রদের ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হয় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে। সব দেখে মনে হয় তারা এখনও সেই বিজয়ের উন্মাদনায় ভাসছে। স্কুল কলেজের পড়ার টেবিলে ফিরে যাবার চেয়ে রাজপথে আন্দোলন করে শুধু ন্যায্য দাবি দাওয়া নয় এমনকি অটো সার্টিফিকেট বাগিয়ে নিতেও তারা পিছপা হচ্ছে না। ভাবখানা এই শেখ হাসিনার স্বৈরাচার হঠালাম সার্টিফিকেট কোন ছার! সমস্যা হল রাজপথে আন্দোলন করে সার্টিফিকেট পাওয়া যায় কিন্তু শিক্ষা ও জ্ঞান অর্জন করা যায় না। 

মার্কিন সরকার ও সমাজ যেভাবে বিএলএমের সামনে নতজানু হয়েছিল দেশেও মবের সামনে সবাই হাঁটু গেড়ে বসে আছে। সময় এসেছে মার্কিন অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে এদের লাগাম টেনে ধরার।

দুবনা, ১৫ মে ২০২৫

Monday, May 12, 2025

গল্প নয়

ছোটবেলায় মায়ের মুখে এক গল্প শুনেছি, পরে সেটা রুশ ভাষায় কবিতার আকারে পড়েছি সামিউল মারশাকের কলমে। গল্পের মূল কথা দুই বুড়ো ও বুড়ি বাজী ধরেছেন। যে আগে কথা বলবে সেই হেরে যাবে। এদিকে ঘরে চোর ঢুকে এক এক করে সব নিয়ে যাচ্ছে। পাছে বাজিতে হেরে যায় তাই দু'জনেই মুখে কুলুপ এঁটে বসে আছেন। 

বাংলাদেশের চার মূলনীতিতে বিশ্বাসী অনেকেই পাছে লাল বদর বা স্বৈরাচারের দোসর ট্যাগ পেয়ে বন্ধুত্ব নষ্ট হয় এই ভয়ে পরস্পরের সাথে কথা বন্ধ করে বসে আছে। এই সুযোগে চোর এসে বায়ান্ন, একাত্তর, বাহাত্তরের সংবিধান, জাতীয় সঙ্গীত একে একে সব চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে। এরা হয়তো একদিন কথা বলা শুরু করবে। কিন্তু ততদিনে দেশটাই হাতছাড়া হয়ে যাবে।

দুবনার পথে, ১২ মে ২০২৫

Thursday, May 8, 2025

রবির কিরণ

বাবা মা যখন তাদের সন্তানের নাম রবি রেখেছিলেন তখন তাঁরা কি ভেবেছিলেন এই সন্তান বাংলা সাহিত্যের আকাশ রবির মতই আলোকিত করবেন? আজ জন্মের ১৬৪ বছর আর মৃত্যুর ৮৪ বছর পরেও তিনি আগের মতই উজ্জ্বল, আগের চেয়েও অনেক বেশি প্রাসঙ্গিক। তাঁর কথা, তাঁর সুর সাহিত্য আর সঙ্গীতের সীমানা পেরিয়ে আমাদের জীবনের সর্বস্তরে প্রবেশ করেছে আর তাইতো স্বার্থান্বেষী আর ক্ষমতালোভী গোষ্ঠী তাঁকে এত ভয় পায়। রবীন্দ্রনাথ শুধু সাহিত্য সংস্কৃতি সঙ্গীতে নয় সমাজ সংস্কারেও সময়ের চেয়ে এগিয়ে ছিলেন যার প্রমাণ গ্রামের কৃষকদের ঋণের ব্যবস্থা, কৃষি ব্যবস্থার আধুনিকীকরণের প্রচেষ্টা। আমরা মনে হয় কবি সাহিত্যিক সুরকার রবীন্দ্রনাথের আড়ালে সমাজ সংস্কারক রবীন্দ্রনাথের ছবিটি প্রায়ই দেখতে পাই না। অথচ এই সমাজ সংস্কারক রবীন্দ্রনাথের উপস্থিতিই আমাদের সমাজে এখন সবচেয়ে বেশি জরুরী, বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এখনই সময় তাঁকে নতুন করে চেনার, নতুন করে জানার, নতুন রূপে দেখার। শুভ জন্মদিন রবি। তোমার কিরণ আমাদের অন্ধকার থেকে আলোতে নিয়ে যাক যুগ যুগ ধরে।

দুবনা, ০৮ মে ২০২৫

Wednesday, May 7, 2025

প্রশ্ন

ফেসবুকে ভিডিও ভাইরাল - শিরক অপবাদ দিয়ে শতবর্ষী এক বটগাছকে কুপিয়ে হত্যা করা হচ্ছে। ওর অপরাধ, মানুষ ওকে বিশ্বাস করে মানত করে। আচ্ছা বাংলাদেশ তথা ভারতবর্ষের শত সহস্র নদ নদী, খাল বিল, পাহাড় সাগর এমনকি সূর্য চন্দ্র গ্রহ নক্ষত্র মানুষ পূজা করে। হাজার হাজার গাছে মানুষ মানত করে। তাহলে কি তারা এসব বয়কট করবে? হত্যা করবে? মানুষ তো পৃথিবীর পূজাও করে। তাহলে পৃথিবীও ত্যাগ করবে? আমার তো মনে হয় যারা পূজা করে তারা যতটা না বিশ্বাস করে এসব গাছপালার শক্তিতে তারচেয়ে বেশি বিশ্বাস করে যারা গাছ কাটে তারা। তারা এসব গাছ পালার শক্তিকে ভয় পায়। আচ্ছা সরকার আর কতকাল জাতিকে এভাবে বোকামির সাগরে ডুবতে দেখেও হাত পা গুটিয়ে বসে থাকবে?

দুবনা, ০৮ মে ২০২৫

সমস্যা

সমস্যা বলা হয়ে থাকে যে সার্জারি বা শল্য চিকিৎসা খুব বেশি বয়সে করলে রুগীর অন্যান্য সমস্যা দেখা দেবার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। যুদ্ধ মানেই শল্য চিকিৎসা। ডিপ্লোম্যাসির দীর্ঘ ও ব্যয়বহুল কিন্তু শান্তিপূর্ণ ওষুধ কাজ না করলে যুদ্ধ অবধারিত হয়ে ওঠে। কিন্তু সমস্যা যদি দীর্ঘ দিনের পুরানো হয় তবে যুদ্ধও স্থায়ী সমাধান আনে না শুধু দুই পক্ষকে নতুন যুদ্ধের দিকে ঠেলে দেয়। আসলে যুদ্ধ সমাধান নয়, যুদ্ধ সমস্যা - বলা চলে এটা নেশা করে কষ্ট ভোলা - যার ইফেক্ট সীমিত।
ভারত পাকিস্তান আবার খেলতে নামল যা ২২ গজে সীমাবদ্ধ থাকল না আর এই খেলার নাম ক্রিকেট নয় - এর নাম যুদ্ধ।‌ এই সমস্যা চিরস্থায়ী । ব্রিটিশরা ভারত পাকিস্তান যুদ্ধকে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত হিসেবে উপহার দিয়ে গেছে। এটা অনেকটা লাভার মত - বেশির ভাগ সময় ভেতরে ভেতরে ফুঁসতে থাকে, কিন্তু ন্যুনতম সুযোগ পেলেই ডানা মেলে আকাশে উড়াল দেয় পথে সব কিছু পুড়িয়ে ছারখার করে দিয়ে। এই দুই দেশ পারস্পরিক ঘৃণায় এতটাই অন্ধ যে অনেক সময় এদের নেতৃত্ব স্বাভাবিক বিচারবুদ্ধি মেনে চলতে পারে না। এমতাবস্থায় দুই দেশের নেতৃত্ব কি যথেষ্ট সংযমী হতে পারবে পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যাপারে?

দুবনা, ০৭ মে ২০২৫


Tuesday, May 6, 2025

টোপ

আগে জমিদাররা যখন শিকারে যেতেন সাথে থাকত এক পাল কুকুর। এদের কাজ ছিল আহত পাখিদের ধরে আনা, আর ভালুক, নেকড়ে এসব শিকারে গেলে দল বেঁধে এদের তাড়িয়ে খোলা মাঠে আনা যেখানে শিকারী অনায়াসে গুলী করতে পারে। এসব শিকারে দু একটা কুকুর যে মারা যেত না তা নয়। জমিদাররা এসব কুকুরের জন্য খুব একটা শোক করতেন না, নতুন কুকুর কিনতেন। মাছের অবস্থা আরও খারাপ। প্রায়ই একটু বড়সড় মাছ ব্যবহার করা হয় টোপ হিসেবে আরও বড় মাছ ধরার জন্য। অনেক সময় মাছ ধরা পড়ে, অনেক সময় টোপ মাঠে মারা যায়। তবে টোপ সব সময়ই লুজার। বড় মাছ ধরা পড়ুক আর নাই পড়ুক সে সব সময়ই ওর পেটে যায়। বর্তমানে ইউরোপ আমেরিকা বিভিন্ন প্রক্সি যুদ্ধে ইউক্রেন, বাংলাদেশ এসব দেশকে টপের মত ব্যবহার করছে বা করার পাঁয়তারা করছে। আগে থেকে সাবধান না হলে এমনকি ছাগলের তিন নম্বর বাঁচার মতও আনন্দে লাফানোর আগেই যুদ্ধ দেবতার যজ্ঞের আহুতি হতে হবে।

দুবনা, ০৬ মে ২০২৫

Monday, May 5, 2025

ভাবনা

দুর্বৃত্ত যখন বন কাটে, তখন প্রথমে কাটে ছোট ছোট দুর্বল গাছপালা যাতে বড় গাছ নিয়ে নিরাপদে বেরিয়ে যেতে পারে। বড় গাছও কাটা পড়ে, একটু পরে। দেশে যারা সংখ্যালঘু সহ বিভিন্ন দুর্বল জনগোষ্ঠীর উপর অন্যায় অবিচার দেখে চুপ করে বসে আছে তাদের কিছু হবে না বলে তারা আসলে দুর্বৃত্তদের হাত পাকাতে দিচ্ছে। কে না জানে শাহরিয়ার কবির, সুমী কায়সার, সুবর্ণা মুস্তাফা, চিন্ময় দাস, সাকিব আল হাসান সহ শত শত মানুষের বিরুদ্ধে খুনের মামলা মিথ্যা? সাজানো মিথ্যার বিরুদ্ধে আজ না দাঁড়ালে একদিন আপনি আমি আমরা সবাই মিথ্যা অভিযোগে অভিযুক্ত হব। তখন আর পাশে দাঁড়ানোর, হাত বাড়ানোর কেউ থাকবে না। আজ অন্যের বিপদে পাশে না দাঁড়ালে আপনিও একদিন বিপদ এড়াতে পারবেন না।‌ এখনই ভাবুন আপনি কার পক্ষে - নিজের পক্ষে নাকি সেই সব মানুষের পক্ষে যারা আপনার জীবনের খোলনলচে পাল্টে দিতে চায়, দিতে চায় খারাপের দিকে?

দুবনার পথে, ০৫ মে ২০২৫

Saturday, May 3, 2025

উপলব্ধি

পৃথিবীর অধিকাংশ মানুষ ধর্মে বিশ্বাস করে আর সীমিত সংখ্যক মানুষ ধর্মের নামে সন্ত্রাস সৃষ্টি করে। কিন্তু যারা ধার্মিক তাদের বেশিরভাগই এসব সন্ত্রাসের প্রতিবাদ করে না প্রতিরোধ তো বহু দূরের কথা। 

বিশ্বের প্রচুর মানুষ সাম্যবাদ ও সমাজতান্ত্রিক আদর্শে বিশ্বাস করে। তবে খুব কম মানুষই কমিউনিস্ট পার্টি করে। এসব পার্টি যখন রাজনৈতিক লাভ লোকসানের হিসাব মেলাতে গিয়ে আদর্শ বিকৃত করে তখন সাম্যবাদে বিশ্বাসী কিন্তু পার্টি মেম্বার নয় এমন লোকেরা সাধারণত নিজেদের দূরে সরিয়ে নেয়। সেদিক থেকে এরা সাধারণ ধার্মিকদের মত আচরণ করে। 

সমাজ ও রাজনীতি সচেতন মানুষ হিসেবে এদের উচিত যারা কমিউনিস্ট পার্টির সাইনবোর্ড ব্যবহার করে কমিউনিস্ট আদর্শ বিরোধী কাজ করে এদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া।

দুবনা, ০৪ মে ২০২৫

Thursday, May 1, 2025

আধুনিক ঈশ্বর

প্রাচীনকালে দেবতারা তাপসদের বর দান করতেন তাদের কঠোর তপস্যায় খুশি হয়ে।‌ তবে কেউ তপস্যার পুরস্কার হিসেবে মারণাস্ত্র চাইলে এসব অস্ত্র ব্যবহারের ক্ষেত্রে কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করতেন। ফলে কর্ণ সহ অনেক বীরেরা বিপদের সময় এসব অস্ত্রের সেবা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। 

বর্তমানে আমেরিকা সহ বিভিন্ন অস্ত্র রপ্তানিকারী দেশ যুদ্ধের দেবতা। অনেক দেন দরবার (তপস্যা) ও উপঢৌকন (প্রচুর অর্থ) দিয়ে এসব দেবতাদের মন জয় করে এফ-১৬ ইত্যাদি অস্ত্র পাওয়া যায়। তবে সেসব অস্ত্র কার বিরুদ্ধে ব্যবহার করা যাবে আর কার বিরুদ্ধে করা যাবে না সে ব্যাপারেও দেবতাদের মত অস্ত্র উৎপাদনকারী দেশগুলোর বিভিন্ন শর্ত থাকে।

দুবনা, ০১ মে ২০২৫

শান্তি মে শ্রম

এঙ্গেলস বলেছিলেন শ্রম বানরকে মানুষ বানিয়েছে। একদল লোক সব সময়ই অন্যের শ্রমে বেঁচে থাকে বা বাঁচার চেষ্টা করে পরগাছা হয়ে। না এরা কোম্পানির মালিক নয় যারা কায়িক পরিশ্রম না করলেও মানসিক শ্রমের মধ্য দিয়ে শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলে। তবে একদল লোক আছে যারা কোন কিছু উৎপাদন করে না। তাদের আয়ের একমাত্র উৎস অন্যদের ঠকানো। এরা ধর্ম ব্যবসায়ী, রাজনৈতিক পাতি নেতা আর এক শ্রেণীর বুদ্ধিজীবী। এদের দেখলেই বোঝা যায় এরা বিবর্তনের বানর থেকে মানুষ হবার ধাপ অতিক্রম করেনি। এরা পরগাছা, সমাজের জন্য সবচেয়ে ক্ষতিকর গোষ্ঠী। এদের বাদ দিয়ে সবাইকে জানাই মহান মে দিবসের শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা। সবাইকে বসন্ত ও শ্রম উৎসবের অভিনন্দন।

দুবনা, ০১ মে ২০২৫