বিভিন্ন কারণে ইদানীং আমি স্বাধীনতার প্রতি বীতশ্রদ্ধ। না, পরাধীনতা চাইনা, তবে মনে হয় আমরা দেশ হিসেবে যে স্বাধীনতা চাই সেটা প্রায়ই পাই না। কারণ? ক্ষমতায় গেলে সবাই রাবণ।
অনেক আগে স্বাধীনতা বলে তেমন কিছু ছিল না বা সবাই স্বাধীন ছিল। মানে জোর যার মুল্লুক তার। রাজায় রাজায় যুদ্ধ হত, দেশ দখল হত। জন জীবনে এর প্রভাব পড়ত হয় ধর্মীয় ভাবে নয়তো আর্থিক ভাবে। অনেক সময় ভিন দেশী রাজা আক্রমণ করত স্রেফ লুটপাট করার জন্য। রাজ্য জয় নয়, সেটা ছিল মোটাদাগের ডাকাতি। যুদ্ধ করল, জয়ী হলে মানুষজন মেরে, ধন সম্পদ লুটপাট করে চলে যেত। তারা জনগণের দায়দায়িত্ব নিতে চাইত না। এর পরে রাজ্য জয় করে অনেকেই নতুন দেশেই স্থায়ী ভাবে বসবাস করতে শুরু করল। নতুন আইন করল। তবে এরা কেউ প্রজাদের তেমন ঘাঁটাত না, সময় মত খাজনা পেলে সব ঠিক। এভাবেই মুগল সম্রাটরা বাংলা বা অন্যান্য প্রদেশ শাসন করতেন। আবার ছিল ব্রিটিশ টাইপের শাসন। এরা কলোনির সম্পদ সব নিয়ে যেত নিজেদের দেশে। শোষণের মাত্রা ছিল তাই বেশি। দরকারে কি চাষ হবে না হবে সেটাও তারাই ঠিক করত। যতক্ষণ না সেটা জনগণকে পথে বসাত ততক্ষণ তারা সহ্য করত, না পারলে নীল বিদ্রোহ, সিপাহী বিদ্রোহ এসব দেখা দিত। এক কথায় মানুষ নয়, দেশের সম্পদ ছিল ওদের একমাত্র লক্ষ্য। আর সেভাবেই ওরা কলোনির আইন কানুন তৈরি করত। সব যে খারাপ তা নয়। অধিকাংশ আইন হত রাজ্য সুষ্ঠু ভাবে চালানোর জন্য। সেসব আইনের প্রয়জনীয়তা আজও শেষ হয়নি। তবে অনেক আইন হয়েছিল সে সময় ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম ব্যহত করার জন্য। তাই স্বাধীন দেশে এসব আইন অপ্রয়োজনীয় ঠিক যেমন অপ্রয়োজনীয় পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠীর তৈরি শত্রু সম্পত্তি আইন। কিন্তু দেশে দেশে সরকার ক্ষমতা হাতে পেলেই এসব পীড়ন মূলক আইন তুলে নিতে অনীহা প্রকাশ করে। এভাবে তারা স্বাধীন দেশের মানুষকে আইনের দ্বারা পরাধীন করে রাখে। পর মানে সব সময় ভিনদেশী নয়, পর মানে যে নিজ দেশের জনগণের পক্ষে দাঁড়ায় না, তাদের কথা ভেবে আইন তৈরি করে না। কী হবে এমন বৈমাত্রেয় সরকার গদিতে বসিয়ে নিজেদের স্বাধীন ভেবে?
No comments:
Post a Comment