মাঝে মধ্যে ভাবি আমাদের মানবিক হওয়া এতো কঠিন কেন? মানুষ চাইলেই তো মানবিক হতে পারে, তার আশেপাশের মানুষকে ভালোবাসতে পারে। এতে নিজেও যেমন শান্তিতে থাকা যায়, অন্যদেরকেও শান্তিতে থাকতে দেওয়া যায়। তাহলে সমস্যা কোথায়?
সমস্যা হলো, মানবিক হওয়া মানে শুধু মানুষকে ভালোবাসা নয়, মানুষের শক্তিতে বিশ্বাস করা, মানুষই যে তার ভাগ্য বিধাতা এই বিশ্বাসে আস্থা রাখা। কিন্তু এটা কি এতই সোজা? যে মানুষ যুগ যুগ ধরে অতিপ্রাকৃতিক শক্তিতে বিশ্বাস করে আসছে, নিজের অক্ষমতা নির্দ্বিধায় তাঁর ঘাড়ে চাপিয়ে শান্তিতে ঘুমোচ্ছে সে কোন সাহসে সব দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেবে? নিজের সাফল্য, নিজের ব্যর্থতার দায়িত্ব নেবার জন্য যে মনোবল দরকার ক'জনের সেটা আছে?
বিজ্ঞানের দিশারীরা আমাদের সে পথেই চালিয়েছেন, সে পথই দেখিয়েছেন। কিন্তু বিজ্ঞানের সুফল ভোগ করা আর বিজ্ঞানমনস্ক হওয়া এক কথা নয়। বিজ্ঞানী না হয়েও বিজ্ঞানমনস্ক হওয়া যায়, কিন্তু বিজ্ঞানী হলেই যে বিজ্ঞানমনস্ক হতে হবে এমন কোনো কথা নেই। বিজ্ঞান যাদের জন্য শুধুই পেশা, অন্যান্য অনেক পেশার মত শুধুই জীবিকা নির্বাহের উপায় তাদের বিজ্ঞানমনস্ক হওয়া বলতে গেলে অসম্ভব। কিন্তু বিজ্ঞান যাদের জীবন দর্শণ, বিজ্ঞান যাদের জীবনের ডাক, বিজ্ঞান যাদের জীবন তাঁদের কথা ভিন্ন।
তাই মানবিক হতে হলে বিজ্ঞান শিক্ষা অপরিহার্য, সব কিছুতে বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি অপরিহার্য।
মস্কো, ০৩ মে ২০১৯
No comments:
Post a Comment