Friday, May 3, 2019

আত্মসমালোচণা

আমার মাঝে মধ্যেই ইচ্ছে করে বাঘ বা হরিণ বা অন্য কারো জুতোটা পড়তে আর দেখতে হরিণটার ঘাড় মটকিয়ে বাঘের হৃদয় অনুশোচণায় দাউ দাউ করে জ্বলছে কি না অথবা হরিণ বাঘের থাবায় পড়ার জন্য নিজেকে দোষছে, না কি বাঘকে। কিন্তু আমি এখনো পর্যন্ত কোনো জুতাওয়ালা বাঘ বা হরিণের সন্ধান পাইনি, সন্ধান পাইনি অন্য কোনো প্রাণীরও। তাই হাজারো ইচ্ছে সত্ত্বেও সেটা করা হয়নি।

আমরা মানুষেরা সেদিক থেকে খুবই আত্মগ্লানিতে ভোগা এক জাতি। আত্মসমালোচণায় আমাদের জুড়ি নেই। অবশ্য সেটা যতটা না নিজের সমালোচণা তার চেয়ে বেশি বিমূৰ্ত মানুষের সমালোচণা। এই তো ফণী নিয়ে কত কথা এখন বাজারে। কেউ কেউ লিখছে এটা মঙ্গল যাত্রায় বৈশাখকে আহ্বান করার কারণে  হচ্ছে। সাথে সাথে প্রশ্ন জাগে প্রকৃতি যদি মানুষের ডাকে সাড়া দিয়ে আসে, ঈশ্বর কেন তাঁর ভক্তদের ডাকে সাড়া দেন না?   

কেউ আবার লিখছে সানি লিওন বা কোনো নায়িকার কথা। সেখানেও প্রশ্ন। ঈশ্বর যদি মানুষের এই অপরাধে রুষ্ট হয়ে ফণীকে পাঠান তিনি কেন চারিদিকে এই যে খুন, ধর্ষণ, ক্রস ফায়ার, অন্যায় ভাবে দুর্বলের ঘরবাড়ি দখল এতে রুষ্ট হন না? নাকি উনি এসব কাজকে আর অন্যায় বলে মনে করেন না? তাছাড়া উনি কেনই বা ভালোমন্দ নির্বিচারে সবার উপর নিজের রোষ চাপিয়ে দেন? ফণী নিশ্চয়ই ভালোমন্দ বিচার করে কাউকে শাস্তি দেবে না, তার পথে যে পড়বে সবাইকে সে ছোবল মারবে। 

ওনারা কি বলতে পারেন যেখানে মানুষ নেই, পাপ পুণ্য নেই সেই উত্তর বা দক্ষিণ মেরুতে অথবা মঙ্গল বা সূর্যে কেন ঝড়  হয়?

কে জানে এটাও হয়তো মানুষের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য। আমরা অন্যের শ্রমে নিজেরা যেমন  ধনী হতে ভালোবাসি একই ভাবে মনে হয় অন্যের পাপে নিজেরা পূণ্যবান হতে চাই! 

মস্কো, ০৩ মে ২০১৯


No comments:

Post a Comment