Thursday, February 28, 2019
ঘোড়া
আজ যখন অফিসের পথে হাঁটছি, রেল লাইনের ওখানে হঠাৎ শুনি হ্রেষা রব, মানে ঘোড়ার ডাক।আমি
তো অবাক! ঘোড়া এলো কোত্থেকে? না, ঘোড়া যে আসে না তা নয়, তবে সময়টা এখন ঘোড়াদের নয়।
চোখ তুলে তাকিয়ে ঘোড়ার টিকিটার পর্যন্ত দেখা পেলাম না। মুস্কিল! তবে মগজটাকে একটু
চাপ দিতেই ও গড়গড় করে সব গুমোর ফাঁস করে দিল। কোন এক ত্যাঁদড় গাড়ির হর্নে ঘোড়ার ডাক
লাগিয়েছে। আধুনিক ঘোড়ার গাড়ি বলে কথা!
দুবনা, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ আকাশ ভরা সূর্য তারা কসমোলজির সেকাল একাল
বইটি সম্পর্কে অনেকেই জানতে চেয়েছিলেন, বলেছিলেন সুচীপত্র দিতে আর সারসংক্ষেপ দু’
কলম লিখতে। এখানে আগ্রহী পাঠকদের জন্য তার এক ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা। বইটিতে একদিকে
আছে প্রাচীন কাল থেকে বর্তমান পর্যন্ত কসমোলজির ইতিহাস হোক সেটা ব্যবিলন বা
প্রাচীন মিশর, ধর্মীয় মাইথোলজি বা আমরা যাকে বলি ফিজিক্যাল কসমোলজি। সেই সাথে আছে
সৌরজগতের বাসিন্দাদের সংক্ষিপ্ত পরিচয়, আছে তারাদের কথা, গ্যালাক্সি, নীহারিকা আর
ব্ল্যাক হোলের বর্ণনা। সেই সাথে ছোট্ট পরিসরে আছে বিজ্ঞানের আর বিজ্ঞানীদের গল্প।
আছে কিভাবে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বিজ্ঞানীকে বিভিন্ন রকমের বাধা পেরিয়ে নিজের
জায়গা করে নিতে হয়েছে নক্ষত্রমণ্ডলে। আছে তেলিস্কপের কথা। আর আছে আমার নিজের
কসমোলজিতে আসার কথা। অর্থাৎ বিজ্ঞানের গল্প। উদ্দেশ্য একটাই – বিজ্ঞানের পথে চলতে
মানুষকে অনুপ্রাণিত করা। সেটা করতে পারলেই কাজটা সার্থক বলে মনে হবে।
দুবনা, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯
দুবনা, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯
Wednesday, February 27, 2019
বসন্ত
সকালটা বৃষ্টিতে কাকভেজা হয়ে আছে। রোদ না উঠলে সর্দিতে বারোটা যে বাজবে তাতে কোন সন্দেহ নেই। বেচারা বসন্ত!
দুবনা, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯
দুবনা, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯
জোক
কিছু কিছু জোক জোঁকের মত - শরীর থেকে রক্ত শুষে নেয়। আবার কিছু কিছু জোক লবনের মত - জোঁক ছাড়ায়, তবে জ্বালা দিয়ে।
দুবনা, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯
দুবনা, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯
বই
আমার
ছোটবেলা কেটেছে মায়ের মুখে রামায়ণ, মহাভারতের গল্প আর পাঁচালী শুনে। সাথে ছিল
ঠাকুরমার ঝুলি। আমার জন্মের সময় বাবার বয়স ৫৬, মার বয়স জানি না, তবে খুব কম ছিল
না। ফলে ঠাকুরদা, ঠাকুরমা, দাদু বা দিদিমা – এদের কারোই সৌভাগ্য হয়নি আমাকে দেখে
যাওয়ার। জানি না, রুশ দেশের বিভিন্ন গল্প মা’র পড়া ছিল কি না, তবে পরে তাঁর অনেক
গল্পের মাঝেই এদেশের গল্প খুঁজে পেয়েছি। সন্ধ্যে হলেই সবাই মিলে বসতাম বড়দার
বারান্দায়। সারাদিনের রোদ গরম করে রাখত দখিনমুখি সেই বারান্দাটা। শুরু হত “ভব সাগর
তারণ কারণ হে” সহ বিভিন্ন ভক্তিমূলক গান দিয়ে, তারপর আমাদের শাস্তর (শাস্ত্র)।
অনেক সময় ছোট কাকাও যোগ দিতেন এই গল্প আর গানের আসরে। স্বাধীনতার পরে বাড়িতে আসতে
শুরু করে রুশ দেশের বিভিন্ন পত্র পত্রিকা। এক সময় রুশ দেশের উপকথা বইটাও হাতে আসে।
এরপর পাই মালাকাইটের ঝাঁপি, উভচর মানুষ ইত্যাদি ইত্যাদি। সে অর্থে অন্যান্য অনেকের
মতই আমার কৈশোরের একটা বিরাট অংশ কেটেছে রুশ দেশের বিভিন্ন বই পড়ে। দেশীয় যে ছিল
না, সেটাও নয়। এছাড়া ছিল বাচ্চাদের জন্য বিশেষভাবে তৈরি দেশ বিদেশের রচনা সমগ্র।
তবে আমি ছোটদের বইয়ের আসল স্বাদ পাই বাবা হয়ে। বাচ্চারা ছিল আমার ন্যাওটা, তাই আমি
বই না পড়লে বা গল্প না বললে ঘুমুতে চাইত না। আমিও প্রথম প্রথম রামায়ণ মহাভারতের
গল্প দিয়েই চালিয়ে দিতাম, তারপর এলো ভ্লাদিমির সুতেয়েভ, আগ্নেয়া বারতো, ইয়েভগেনি সভারস,
মিখাইল জশেঙ্কো, করনেই চুকভস্কি, এদুয়ারদ উসপেনস্কি, নিকোলাই নোসভ, আলেক্সান্দার ভোলকভ,
সামুয়েল মারশাক আরও কত নাম। এক সময় দেখা গেল যতটা না বাচ্চাদের জন্য তার চেয়ে বেশি
নিজের তাগিদেই পড়ছি বইগুলো। মনে হত বাড়ির ভাস্তে ভাইজিদের কথা যারা বিশ্ব শিশু
সাহিত্যের এক বিশাল ভাণ্ডার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। কত রকমের আজগুবি গল্প অথচ মনে হত
এসব আমাদের সাথেই ঘটে যাওয়া। বিশেষ করে ভালো লাগত নিকলাই নোসভের গল্পগুলো - কী ফান্তাজিওরী (স্বপ্নদর্শীরা), নিজনাইকা (যে কিছু জানে না) কে নিয়ে বিভিন্ন গল্প। অনেক
সময় মনে হয়েছে কিছু কিছু অনুবাদ করার, কিন্তু কাজটি কখনই শুরু করা হয়নি। একটা কারণ
ছিল এমন যে আমাদের দেশে ভালো অনুবাদ বলতে যা বোঝায় সেই সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রগতি বা
রাদুগা প্রকাশনের বাইরে তেমন আছে বলে জানা নেই, অন্তত আমার কৈশোরে সেটা তেমন ছিল
না। সে থেকে অনুবাদ করার ইচ্ছে। অন্য দিকে সোভিয়েত ইউনিয়ন বা রাশিয়ায় যারা এ কাজটি
করেন তারা নিজেরাই সাহিত্যের দিকপাল। যেমন শেক্সপীয়ারের অনুবাদ করেছেন বরিস
পাস্তেরনাক নিজে, করেছেন মারশাক এবং আরও অনেকে। অর্থাৎ অনুবাদ যারা করেছেন তারা
অনেকেই প্রতিষ্ঠিত সাহিত্যিক, কবি। তাই
ইচ্ছে থাকলেও সাহস হয়নি সেটা করার। তবে এর মধ্যেই কাজটি শুরু করেছে প্রিয় জাহীদ
রেজা নুর, মশিউল আলম ববি – দুজনেই অনুজ ও বন্ধু। জাহীদের অনুবাদে শিশু কিশোরদের সাহিত্য
ভাণ্ডার যেমন পরিপূর্ণ হয়েছে, ববির করা দস্তয়েভস্কীর সাদা রাত তেমনই আমাদের অনুবাদ
সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করবে। বইমেলা শেষের পথে, তবে বই আর পাঠক মেলার সাথে সাথেই হারিয়ে
যাবেন না বলেই আমার বিশ্বাস। আপনারা এই বইগুলো কিনবেন, পড়বেন – রাশিয়ার সাহিত্যের
সাথে নতুন করে পরিচিত হবেন সেটাই আশা করি।
দুবনা, ২৭
ফেব্রুয়ারি ২০১৯ সড়ক সমাচার
আবার সড়কে মৃত্যু, আবার নিরাপদ সড়কের দাবী। কিন্তু সড়ক নিরাপদ নয় কেন? অন্যতম কারণ ড্রাইভাররা বেপারোয়াভাবে গাড়ি চালায়। রাস্তা ভালো সেটা বলছি না, তবে গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখলে অনেক দুর্ঘটনা এড়ানো যেত বলেই আমার বিশ্বাস। দু'জন ড্রাইভারকে জেল বা ফাঁসি দিয়ে এ সমস্যার সমাধান হবে না, হলে খুনখারাবি দেশ থেকে অনেক আগেই পালাত। দরকার এদের সামাজিকভাবে বয়কট করা। হতে পারে, ডাক্তাররা বলবেন আমরা ড্রাইভারদের বা অন্তত যারা বেপারোয়া গাড়ি চালায় তাদের বা তাদের পরিবার পরিজনের কারো চিকিৎসা করব না, দোকানের মালিকরা বলতে পারেন তাদের কাছে কিছু বিক্রি করব না ইত্যাদি ইত্যাদি। থানা পুলিশ থেকে এসব অনেক বেশি কার্যকরী। এটা করতে অন্তত সরকার বা কারো দ্বারস্থ হতে হবে না, নিজেরাই করতে পারবেন। দেখতে পারেন চেষ্টা করে।
দুবনা, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯
দুবনা, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯
Tuesday, February 26, 2019
ছেলেমেয়েমেয়েছেলে
ছেলেমেয়ে বললে ছেলে ও মেয়ে দু' জনকেই বোঝায় কিন্তু মেয়েছেলে শুধুই মেয়ে। যেন ছেলেছেলে বলে কোনও একটা কিছু আছে।
মস্কো, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯
মস্কো, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯
মুক্তচিন্তা
এই দিনটিতে করেছিল ওরা
মুক্তচিন্তা খুন
চিন্তা মরে না চিন্তা অমর
চিন্তার বড় গুণ
মস্কো, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯
মুক্তচিন্তা খুন
চিন্তা মরে না চিন্তা অমর
চিন্তার বড় গুণ
মস্কো, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯
শব
সব আজ শব
চারিদিক নিস্তব্ধ নীরব
নীরবতা ভাংগে অভিযোগ
অন্যকে দোষ দেওয়া
আমাদের রোগ
মস্কো, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯
চারিদিক নিস্তব্ধ নীরব
নীরবতা ভাংগে অভিযোগ
অন্যকে দোষ দেওয়া
আমাদের রোগ
মস্কো, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯
Monday, February 25, 2019
ভাসা ভাষা
নেতারা আজকাল এমন ভাসা ভাসা ভাষায় কথা বলেন যে তাদের সাথে গিয়ে জনগণ ভাসবে না ডুববে সেটাই বুঝতে পারে না।
মস্কো, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯
মস্কো, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯
Sunday, February 24, 2019
এক গাছের কান্ড
অনেক দিন আগের কথা। চৈত্রের কাঠফাটা রৌদ্রে অতিষ্ঠ মানুষ ঠিক করলো গাঁয়ের পাশে তারা বন লাগাবে। বিভিন্ন গাছ লাগানো হলো। ধীরে ধীরে গ্রামের প্রান্তে দেখা দিলো বিশাল বন। শুধু যে ছায়া দিতে পারে এমন বট গাছই নয়, আম, জাম ইত্যাদি ফলের গাছও লাগানো হলো যাতে অবসর সময়টা ভালো কাটে। দেখতে দেখতে সময় কাটলো, কেটে গেলো যুগের পর যুগ। বিশাল বট গাছের নীচে বিশ্রাম নিতো এলাকার মানুষ, সেই সাথে এই আমটা, এই কাঁঠালটা পেড়ে খেত। কেউবা আমের প্রশংসা করতো, কেউ অন্য ফলের। বট গাছ ছিল অনেকটা বাতাসের মত। তার উপস্থিতি যেন টেরই পাওয়া যেত না সেসব গল্পে। এ নিয়ে বট গাছ যে লাগিয়েছিল তার দুঃখের কোনো সীমা নেই। তাই সে ধীরে ধীরে অন্য গাছগুলোকে কাটতে শুরু করলো এক এক করে। এক সময় দেখা গেলো সেখানে বট গাছ ছাড়া আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। হারিয়ে গেছে পাখিদের কলরব। শিশুরা আর এদিকে তেমন আসে না। শুধু কিছু বৃদ্ধ যাদের উপায় নেই তারাই বট গাছের ছায়ায় এসে বসে আর সেই হারিয়ে যাওয়া গাছগুলোর কথা মনে করে আফশোষ করে। একবার দেশে গিয়ে বট তলায় বসে এলাকার বৃদ্ধদের বয়ান শুনছিলো এক লোক আর ভাবছিলো "দ্বেষ দিয়ে আর যাই হোক, দেশ গড়া যায় না। দ্বেষের শিকার হয়ে কত যোদ্ধা যে আজ বিস্মৃতির অতল সাগরে হারিয়ে গেছে। এভাবে চলতে থাকলে একদিন এই বট গাছের মতো আমাদের মহান নেতারাও সেনাবিহীন সেনাপতি হয়ে একাই দাঁড়িয়ে থাকবেন লড়াইয়ের মাঠে।"
মস্কো, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯
মস্কো, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯
Saturday, February 23, 2019
একদিন
গ্যাস সিলিন্ডারই যদি এত মানুষের মৃত্যুর কারণ হয় তাহলে তো দেশটাই কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্প হয়ে যাবে একদিন।
মস্কো, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯
মস্কো, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯
Friday, February 22, 2019
মেলা
আজকাল হাটে বাজারে দোকানে হোটেলে রাস্তাঘাটে ঘরে বাইরে শহর বন্দরে যেভাবে মৃত্যু বিক্রী হচ্ছে তাতে মনে হয় দেশটাই এক বিশাল মরণ মেলা।
দুবনা, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯
দুবনা, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯
Thursday, February 21, 2019
একটি মৃত্যুর জন্ম
জন্ম নিল মৃত্যু, এলো সে চুপি চুপি
আগুনে ঘোড়ায় চেপে
আবার কত লোক খুঁজবে অজুহাত
বলবে কথা মেপে মেপে
বলবে জন্ম মৃত্যু - ভাগ্য সবই
মালিক তার ঈশ্বর
আমাদের কেন দোষ দাও
আমরা তো নশ্বর
হবে মিটিং হবে মিছিল
হবে কত গলাবাজি
যে যার মত খুঁজবে সবাই
শত্রুর কারসাজি
রাজনীতির এই গোল্লাছুট
খেলবে যে কত লোক
চক বাজারের মায়ের তাতে
কমবে কী আদৌ শোক
Subscribe to:
Posts (Atom)