মস্কো, ৩০ নভেম্বর ২০২৪
Friday, November 29, 2024
ন্যায্যতা
বিপ্লব বা আন্দোলন এসবও বাজার অর্থনীতির নিয়ম মেনে চলে মানে ডিম্যান্ড ও সাপ্লাই-এর নিয়মে চলে। সমাজে ন্যায়বিচারের বা ন্যায্যতার ডিম্যান্ড সবসময়ই ছিল ও থাকবে। খুব কম ব্যবস্থা বা সরকার সেটা সাপ্লাই দেয়। আর তাই এই দাবিকে আন্দোলন বা বিপ্লবে পরিণত করার সম্ভাবনা সবসময়ই থাকে। বিগত ৫৩ বছর ধরেই দেশে ন্যায়বিচারের দাবি ছিল। কিন্তু সেই দাবি সবসময়ই সফল আন্দোলনে পরিণত হয় নি। আর এই দাবি শুধু আমাদের দেশেই নয় বিশ্বের সব দেশেই ছিল, আছে, থাকবে।
মঙ্গল
গণিতে আমরা যে সমস্ত ফাংশন ব্যবহার করি তাদের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল ধারাবাহিকতা। সাধারণ ভাষায় এর অর্থ হল প্রতিটি প্রতিবশী বিন্দুর পরস্পরের সাথে সদ্ভাব। আমরা যখন ঢাকায় বসে প্যালেস্টাইনের মুসলমান, দিল্লিতে বসে বাংলাদেশের হিন্দুদের জন্য সমবেদনা জ্ঞাপন করি ঠিক তখনই পাশের বাড়ির ভিন্নধর্মী মানুষের উপর অত্যাচার করি। এরফলে আমাদের সেই ধারাবাহিকতা নষ্ট হয়ে যায়। যে ফাংশন লোকালি ধারাবাহিক নয় তা গ্লোবালি ধারাবাহিক হতে পারে না। আমরা যদি সত্যিকার অর্থেই দূরদেশে আমাদের স্বধর্মীদের মঙ্গল চাই তাহলে সবার আগে আমাদের নিজ নিজ প্রতিবেশীর প্রতি যত্নবান হতে হবে, তাদের মঙ্গল করতে হবে। আর একমাত্র তখনই আমরা মানুষ হিসেবে নিজেদের পরিচয় দিতে পারব। ঘৃণা আর প্রতিহিংসা কখনও মঙ্গল বয়ে আনে না, তারা শুধু ঘৃণার, প্রতিহিংসার জন্ম দেয়। ঘৃণা আর প্রতিহিংসার ফসল ভালোবাসা হয় না। ভালোবাসা পেতে চাইলে ভালোবাসা দিতে হয়।
মস্কোর পথে, ২৯ নভেম্বর ২০২৪
Thursday, November 28, 2024
ইতিহাস
ইতিহাস হল তা যা ইতিমধ্যেই ঘটে গেছে। একে বিকৃত করার চেষ্টা করা যায়, কিন্তু মুছে ফেলা যায় না। এমনকি রিসেট বাটন চেপেও না। কারণ ইতিহাস শুধু বইয়ের পাতায় থাকে না, থাকে মানুষের মনে, থাকে লোককথায়। উপযুক্ত পরিবেশে একদিন সে বেরিয়ে আসে, সবাইকে জানায় সত্য ইতিহাস, সত্য ঘটনা।
ইতিহাস যারা বদলে দিতে চায় তাদের সম্পর্কে ইতিহাসের এক অমোঘ শিক্ষা হল
তারা অত্যাচারের অবসান ঘটায় না, শুধু অত্যাচারী বদলায়। পুরানো মদ আসে নতুন বোতলে শুধু আরোও একটু বেশি কড়া হয়ে।
কাজান, ২৯ নভেম্বর ২০২৪
বশ্যতার পরিণাম
সাংবাদিকরা আজ কাজাখস্তানের রাজধানী আস্তানায় ভ্লাদিমির পুতিনের কাছে ইউরোপের রাজনীতিবিদদের সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন
- ইউরোপ এখন রাজনৈতিক কেন্দ্র হিসেবে গুরুত্ব হারিয়েছে। এখন তার একটাই কাজ - আমেরিকার স্বার্থ রক্ষা করা এমনকি সেটা যদি নিজ দেশের জনগণের বিপক্ষেও যায়। আমার মনে হয় আমেরিকা যদি ইউরোপের নেতাদের ফাঁসি দিতে চায় তাহলে তারা একটি প্রশ্নই করবে - ফাঁসির রজ্জু কি আমাদের নিয়ে আসতে হবে নাকি আপনারা দেবেন?
কাজান, ২৮ নভেম্বর ২০২৪
Tuesday, November 26, 2024
অথর্ব
ধারণা করা হচ্ছে বাইডেন ইউক্রেনকে পারমাণবিক অস্ত্র দিতে পারে। পশ্চিমা বিশ্বের কিছু সংবাদপত্রের বরাদ দিয়ে এখানকার টিভিতে বলল। এভাবে নাকি বাইডেন ট্রাম্পের শান্তি উদ্যোগ ব্যর্থ করতে চায়। এর পরিণাম কি হতে পারে তিনি কি সেটা বোঝেন? অথর্ব কাউকে ক্ষমতায় বসিয়ে অনেক কিছুই করিয়ে নেয়া যায়। কিন্তু একই ভাবে নিজেদের পায়েও কুড়ুল মারা যায়। বুদ্ধি লোপ পেলে মানুষ আপন পর বোঝে না, সবার জন্যই সমান ভাবে ক্ষতিকর হতে পারে।
কাজান, ২৬ নভেম্বর ২০২৪
জয় পরাজয়
পরাজয় যখন নিশ্চিত বুদ্ধিমান লোক তখন সন্ধির চেষ্টা করে। প্রথমত পরাজয়ের চেয়ে সন্ধি সম্মানজনক। দ্বিতীয়ত এতে অনেক প্রাণ ও সম্পদ বিনাশের হাত থেকে রক্ষা পায়। যারা পরাজয় বা সন্ধিকে অপমানজনক মনে করে তাদের যুদ্ধে নামা উচিত নয়। কেননা এই মানসিকতা নিয়ে ধ্বংস হওয়া ছাড়া তাদের সামনে আর কোন পথ খোলা থাকে না।
কাজান, ২৬ নভেম্বর ২০২৪
Saturday, November 23, 2024
চেয়ার খেলা
পরনিন্দা আর পরচর্চা করতে আমরা বরাবরই পারদর্শী। এর সাথে যোগ হয়েছে পরস্ত্রী ও পরশ্রীকাতরতা। পরশ্রীকাতরতা এখন গগনচুম্বী। ফলে অন্যায় আর অত্যাচারের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই আরও বড় অন্যায়, আরও বড় অত্যাচারীর জন্ম দেয়। আমরা যখন দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করি সেটা দুর্নীতি দমন করতে করি না, করি নিজে সেই দুর্নীতির ভাগ পেতে। অত্যাচারীকে তাড়িয়ে আমরা সেখানে ভালো কাউকে বসাতে চাই না, বরং নিজে আগের চেয়ে বেশি অত্যাচারী হয়ে যত দ্রুত সম্ভব আখের গোছানোর চেষ্টা করি। ফলে সরকার বা মালিক বদলের খেলা চেয়ার খেলার আকার ধারণ করে। জনগণ শুধু এক মালিকের হাত থেকে অন্য মালিকের হাতে পড়ে কিন্তু তার অবস্থার পরিবর্তন হয় না।
দুবনা, ২৩ নভেম্বর ২০২৪
Friday, November 22, 2024
ক্ষমতা
ক্ষমতার ক্ষমতা অসীম। যাদের ক্ষমতা আছে তারা প্রায়ই দায়িত্বহীন কিন্তু অধিকার সচেতন। অন্যদিকে যাদের ক্ষমতা নেই তারা অধিকার হারিয়ে শুধু দায়িত্ব পালনে বাধ্য হয়। অথচ সমীকরণটা ছিল অধিকার আর দায়িত্বের মধ্যে। ক্ষমতা অযাচিত ভাবে নাক গলিয়ে দিল তো সব পন্ড করে।
দুবনা, ২২ নভেম্বর ২০২৪
দুবনা, ২২ নভেম্বর ২০২৪
Thursday, November 21, 2024
অনিশ্চয়তা
গতকাল থেকে কয়েকটি ফোন কল পেলাম, জিজ্ঞাসা একটাই - তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ লাগবে কি না?
কী উত্তর দেব? বললাম, সেটা নির্ভর করে আমেরিকার উপরে। বিদায়ী প্রশাসন কতদূর যাবে রাশিয়ার সাথে আমেরিকার সম্পর্ক তিক্ত করতে তার উপর। এখন তো সম্পর্ক শূন্য নয়, মাইনাসে নেমে গেছে। ইউরোপের মানুষ যদি শান্তি চাইত এতদিন যুদ্ধ বিরোধী আন্দোলন করত। করে না। কেন? কারণ যুদ্ধের ফলে যে ব্যবসা হচ্ছে তার ভাগ তারাও পায়। অথবা হতে পারে এই যুদ্ধ যে তাদের রক্ত, মাংস আর ঘামের বিনিময়ে হচ্ছে সেটা বুঝতে পারছে না। আর যুদ্ধ লাগবে কি লাগবে না সেটা জেনে কী লাভ? যদি আমরা নিজেদের মৃত্যুর সঠিক সময় জানতাম তাহলে কি বেশি সুখী বা খুশী হতাম? মনে হয় না। অনেকেই বলতে পারেন তাহলে আগে থেকে সব কাজ শেষ করতে পারতাম। আমার মনে হয় ওই দিন মৃত্যু এটা জেনে বরং আরও বেশি মনঃক্ষুণ্ণ হতাম, কাজের প্রতি অনীহা জাগত এই ভেবে যে কী হবে কাজ করে যদি এই দিন মরে যাই। মৃত্যু নিশ্চিত, তবে কবে সে আসবে সেটা আমাদের অজানা। তাই তো আমরা বাঁচার জন্য লড়াই করি, এই অনিশ্চয়তাই আমাদের সাহস যোগায়, শক্তি যোগায়, স্বপ্ন দেখায়। তাই তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ কবে লাগবে সেটা নিয়ে না ভেবে জীবনকে উপভোগ করুন। হতে পারে শেষ বারের মত।
দুবনা, ২১ নভেম্বর ২০২৪
কী উত্তর দেব? বললাম, সেটা নির্ভর করে আমেরিকার উপরে। বিদায়ী প্রশাসন কতদূর যাবে রাশিয়ার সাথে আমেরিকার সম্পর্ক তিক্ত করতে তার উপর। এখন তো সম্পর্ক শূন্য নয়, মাইনাসে নেমে গেছে। ইউরোপের মানুষ যদি শান্তি চাইত এতদিন যুদ্ধ বিরোধী আন্দোলন করত। করে না। কেন? কারণ যুদ্ধের ফলে যে ব্যবসা হচ্ছে তার ভাগ তারাও পায়। অথবা হতে পারে এই যুদ্ধ যে তাদের রক্ত, মাংস আর ঘামের বিনিময়ে হচ্ছে সেটা বুঝতে পারছে না। আর যুদ্ধ লাগবে কি লাগবে না সেটা জেনে কী লাভ? যদি আমরা নিজেদের মৃত্যুর সঠিক সময় জানতাম তাহলে কি বেশি সুখী বা খুশী হতাম? মনে হয় না। অনেকেই বলতে পারেন তাহলে আগে থেকে সব কাজ শেষ করতে পারতাম। আমার মনে হয় ওই দিন মৃত্যু এটা জেনে বরং আরও বেশি মনঃক্ষুণ্ণ হতাম, কাজের প্রতি অনীহা জাগত এই ভেবে যে কী হবে কাজ করে যদি এই দিন মরে যাই। মৃত্যু নিশ্চিত, তবে কবে সে আসবে সেটা আমাদের অজানা। তাই তো আমরা বাঁচার জন্য লড়াই করি, এই অনিশ্চয়তাই আমাদের সাহস যোগায়, শক্তি যোগায়, স্বপ্ন দেখায়। তাই তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ কবে লাগবে সেটা নিয়ে না ভেবে জীবনকে উপভোগ করুন। হতে পারে শেষ বারের মত।
দুবনা, ২১ নভেম্বর ২০২৪
Monday, November 18, 2024
পুনর্জন্ম
ছোটবেলায় পুনর্জন্মের কথা শুনেছি। এটা হিন্দু ধর্মের এক অনন্য বৈশিষ্ট্য। খৃষ্টান ধর্মে যীশুর পুনর্জন্মের কথা থাকলেও সাধারণ মানুষের জন্য সেটা নেই। যাহোক ছোটবেলায় পুনর্জন্ম বিশ্বাসও করতাম। পরে অবশ্য অবান্তর বলে এসব বিশ্বাস শিকেয় তুলে রাখি। কিন্তু বর্তমানে বাংলাদেশের যে হারে শহীদরা পুনর্জীবিত হচ্ছে তাতে মনে হয় বিষয়টি নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে।
মস্কো, ১৮ নভেম্বর ২০২৪
Subscribe to:
Posts (Atom)