অজানা একটা নম্বর থেকে ফোন এলো। ধরবে কি ধরবে না এই দ্বিধায় সেই পর্যন্ত ফোনটা ধরেই ফেলল হাসু।
কে বলছেন ভাই?
আমার একটা প্রস্তাব ছিল।
কিন্তু আপনি কে বলছেন আগে তাই বলুন।
প্রস্তাবটা আগে শুনুন, তারপর না হয় অন্য প্রশ্ন করবেন।
বলুন।
আমরা আজ ব্যঙ্ক ডাকাতি করতে যাচ্ছি। আপনাকে সাথে থাকতে হবে।
দেখুন, আমি এসবের মধ্যে নেই। আপনাকে চিনিনা, জানিনা, চিনতে বা জানতেও চাইনা। প্লীজ আমাকে আর এ ব্যাপারে ফোন টোন করবেন না।
হাসু এর মধ্যেই এই কথোপকথন ভুলে গেছিল। কিন্তু একদিন পুলিশ এলো বাসায়।
এই মিয়া, আপনাকে ডাকাতির প্রস্তাব দিয়েছিল, আপনি আমাদের জানান নাই কেন?
বারে, কে ফোন করল সেটা না জানলে আপনাদের কি জানাব। আপনারা তখন তো হাজারটা প্রশ্ন করতেন, যার উত্তর আমার তখনও জানা ছিল না, এখনও জানা নেই। কি জানাব তাহলে?
ফোন করেছিল, সেটা তো জানাতে পারতেন।
ভুল হয়ে গেছে। কিন্তু আমি তো চুরি ডাকাতি কিছু করিনি।
এটা ভুল নয়, অন্যায়। আপনাকে দু বছর হাজতে থাকতে হবে।
কেন? আমি তো ডাকাতি করিনি।
সেটা বড় কথা নয়। আপনি আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে ডাকাত ধরতে সাহায্য করেননি। এটা অপরাধ।
ডাকাতি হয়েছে? ডাকাত ধরা পড়েছে?
সেটা কোন প্রশ্ন নয়। ডাকাতের কাজ আইন অমান্য করা, সে তা করবে, ধরা পড়বে, আদালত তার বিচার করবে। কিন্তু একজন সুনাগরিক হিসেবে আপনার দায়িত্ব ছিল আমাদের সেই ফোন কল সম্পর্কে জানানো। আপনি জানাননি। এটা গুরুতর অপরাধ। আপনি আপীল করতে পারেন, তাতে আরও বড় শাস্তি হবার সম্ভাবনা আছে। তাই নিজের ভুল স্বীকার করে দু বছরের সাজা মেনে নিন। জীবন অনেক বড়।
কিন্তু আপনারা অপরাধীদের না ধরে আমাকে ধরছেন কেন? আমাকে শাস্তি দিচ্ছেন কেন?
আরে মিয়া চারিদিকে সবাই তো অপরাধী। আমরা গনতন্ত্রে বিশ্বাসী। জনগণকে তো আর জেল হাজতে ভরা যায় না, তাই যারা ভালো লোক, সংখ্যায় কম, তাদের ধরি। এতে আমাদের কাজ কমে, জনগণের খেদমত করা হয়। যারা এখনও অপরাধ করেনি তাদের ধরলে নতুন নতুন অপরাধী তৈরি হবে না। তাদের চোর ডাকাতদের প্রতিদ্বন্দ্বী তৈরি হবে না। ফলে ওদের মধ্যে যেমন অপরাধ প্রবণতা যেমন কমবে, ভালো মানুষদের মধ্যেও অপরাধ করার ইচ্ছে লোপ পাবে। এটাকে বলে প্রিভেন্টিভ মেজার।
দুবনা, ৩০ অক্টোবর ২০১৯
No comments:
Post a Comment