গতকাল সারাদিন কোথাও যাওয়া হয়নি, মানে শহরের প্রোগ্রামে। রাতে গেলাম ভল্গার উপরে ফায়ার ওয়ার্ক বা সাল্যুত দেখতে। বরাবরের মতই তিনটে টিমের প্রতিযোগিতা। ভল্গার তীরে তিল ফেলানোর জায়গা নেই। লোকে লোকারণ্য। আলোর খেলা চারিদিকে। বাচ্চাদের হাতে রং বেরঙের বাতিওয়ালা বেলুন। মনে হল বাচ্চারা ছোট থাকলে ওদের কিনে দেওয়া যেত। আসলে ওরা যখন ছোট ছিল অনেক কিছুই করার সামর্থ্য ছিল না। এখন এসব পারলেও ওরা বড় হয়ে গেছে আর বয়সের সাথে সাথে বেড়েছে ওদের চাহিদা। তাই সময় পেরুলেও ওদের চাওয়া আর আমার পারার মধ্যে সব সময়ই একটা ফারাক থেকে গেছে। বড়দের দিকে তাকিয়ে এক সময় মনে হত এইতো আর কয়েক বছর, এরপর ঠিক ওঁদের ধরে ফেলব। কিন্তু আমার সাথে সাথে বড়রাও বড় হয়েছে, কাউকে আর ধরা হয়নি কোন দিন। আমাদের মধ্যবিত্তের সংসারে আয় ব্যায়ও তাই। আয় কখনও ব্যায়কে ধরতেই পারে না। চারিদিকে প্রচুর লোক, অথচ পরিচিত কোন মুখ চোখে পড়ল না রাতের আঁধারে। রাত সাড়ে এগারোটার দিকে যখন শেষ বাজি ফুটল, জনস্রোতের সাথে ভাসতে ভাসতে চললাম বাড়ির দিকে। বাড়ির সামনে রাস্তায় এসেই হঠাৎ হাতের মধ্যে কার একটা ছোট্ট হাতের স্পর্শ পেলাম। সেই ছোট হাত, শক্ত করে আমার হাত ধরে হাঁটছে পাশে পাশে। হ্যাঁ, কিছুক্ষনের জন্য আমি ২০০৬ - ২০০৭ এ ফিরে গেছিলাম। ছোট্ট সেভা হাঁটছিল আমার পাশে পাশে, আর পিছু টেনে ধরছিল যদি আরও কিছু বাজি ফোটানো এখনও বাকি থাকে সেটা দেখার জন্য। আসলে সময় কোথাও যায় না, সময় আমাদের সাথে সাথেই চলে, আর অনুকূল পরিবেশে মনের জানালা খুলে উঁকি দিয়ে যায়।
No comments:
Post a Comment