ফেসবুক ভরে গেছে পরীমনির পক্ষের আর বিপক্ষের মানুষের কথায়। পরীমনিকে চিনি না, তার নাম আগে কোন দিনই শুনি নি। তাই কোনটা সত্য আর কোনটা মিথ্যা - সেটা নির্ধারণ করা সত্যিই কঠিন। আর তার কারণ আজকে প্রায় সবাই সামান্য লাভের জন্য, লাইম লাইটে আসার জন্য সত্য মিথ্যা সব ধরণের কথা বলতে, মামলা করতে সদা প্রস্তুত।
সমস্যা কি পরীমনিনে নিয়ে? মানে এই সে সবাই পরীমনির পক্ষে বা বিপক্ষে ঝাঁপিয়ে পড়েছে - সেটা কী পরিমনির জন্য? তার আগে প্রশ্ন করুন কেন এরকম অবস্থার সৃষ্টি হয়। কেন গ্রাম থেকে উঠে আসা একজন সাধারণ মেয়ে পরীমনি হয় সে নিয়ে বাংলা সাহিত্যে হাজার হাজার গল্প উপন্যাস লেখা আছে। তাই এ নিয়ে বলা শুধু কাগজের অপচয়। এমন কি কেন এই অবস্থার তৈরি হয় সেটাও সবার জানা। হ্যাঁ, দেশে আইনের অপপ্রয়োগ। সেটা ঝুমন দাশের ক্ষেত্রেই হোক, পরীমনির ক্ষেত্রেই হোক আর অন্য কারও ক্ষেত্রেই হোক। আইনের দেবীর চোখ থেকে অনেক আগেই পর্দা সরিয়ে নেওয়া হয়েছে, তাই তিনি আজ সবাইকে সমান চোখে দেখেন না (আসলে সমান ভাবে সবার উপস্থিতি এড়িয়ে যান না) - কাউকে কাউকে বিশেষ ভাবে দেখেন। এই সিলেক্টিভ বিচার ব্যবস্থা পরীমনির জন্য নয়, দেশের জন্য ক্ষতিকর আর তার মানে আমার, আপনার, তার, তাদের সবার জন্য ক্ষতিকর। তবে আশার কথা একদিন আপন পর হবে আর তখন খুব কষে তাদের পেছনে বেত্রাঘাত করা যাবে। তবে সেটা কোন সমাধান নয়, দুর্বল মানুষের মানসিক হস্ত মৈথুন। তবে এই যে হাইপ, এই যে পক্ষে বিপক্ষে হাজার লেখালেখি সেটা কিন্তু পরীমনির জন্য নয়, তাকে নিয়ে প্রায় কেউ ভাবছে না, ভাব ধরছে আর তার ঘাড়ে ভর করে নিজেরা জনপ্রিয়তা লাভ করার চেষ্টা করছে। এখানে পক্ষে বিপক্ষে নেই, সবাই নিজের পক্ষে, এই সুযোগে হরিলুটের বাতাসা কতটা কুড়িয়ে নেওয়া যায় সেই চিন্তায় ব্যস্ত। সত্যের, আইনের শাসনের জন্য লড়াই হলে পরীমনির সাথে সাথে ঝুমন দাশ আর নিরীহ দেবতারাও স্পটে আসত। যদি বার বার পরীমনি নাটক দেখতে না চান আইনের শাসনের জন্য লড়াই করুন। কারণ এই নাটকে হারলে বা জিতলে হারবে বা জিতবে শুধুই পরীমনি আর ফলাফল যাই হোক ন কেন - দেশ হারবে সব অবস্থায়ই।
দুবনা, ১১ আগস্ট ২০২১
No comments:
Post a Comment