ভারতে যখন প্রথম মুসলিম আক্রমণ শুরু হয় তখন এসব আক্রমণ ছিল মূলত লুটপাটের জন্য। পারস্য ও আফগানিস্তানের মুসলিম শাসকগণ ভারত আক্রমণ করে এখানকার সম্পদ লুট করে নিজের দেশে ফিরে যেতেন। পরে অবশ্য প্রায় সবাই ভারতেই স্থায়ী নিবাস গেড়ে ভারতীয় হয়ে যান এবং মুঘলদের আগে থেকেই এই সমস্ত শাসকগন তাঁদের ধনসম্পদের জমাখরচ ভারতেই করেন। এরপরে আসে ব্রিটিশেরা যাদের কাছে এদেশ ছিল সোনার খনি। তারা এদেশের সম্পদ ব্রিটেনে নিয়ে যায়। পাকিস্তান আমলে ২২ পরিবার বাংলার সম্পদ পাচার করে নিজ ভূমি পশ্চিম পাকিস্তানে। তখন একদেশ বিধায় ধরা যেতে পারে দেশের সম্পদ ফর্মালি দেশেই থাকত, ঠিক যেমন মুঘল আমলে বাংলার সম্পদ দিল্লি সফরে যেত। মুস্কিল হল স্বাধীন দেশে। ২২ পরিবার বেড়ে ২২ শ হয়েছে আর ধন সম্পদ সব ক্যানাডা, ইউরোপ, অ্যামেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়া এসব দেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে। প্রশ্ন জাগে, যে দেশের সম্পদ দেশে রাখার জন্য এত রক্তক্ষয়, এত ত্যাগ - সেই দেশের মানুষ কেন তাহলে সবচেয়ে নির্মমভাবে দেশের সম্পদ বিদেশে নিয়ে যাচ্ছে? যে জাতি একের পর এক গণ অভ্যুত্থান করে, ভাষার জন্য রক্ত দেয়, এক নদী রক্ত দিয়ে দেশ স্বাধীন করে সে জাতি কেন দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক নেতাকর্মী, ব্যবসায়ীশ্রেণী কিছুই গড়ে তুলতে পারে না। এমন কি এদেশের ধর্মীয় নেতারা পর্যন্ত যত না দেশের তার চেয়ে বেশি বিদেশের স্বার্থে ধর্মের বয়ান প্রচার করে?
দুবনা, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০
No comments:
Post a Comment