গরবাচেভের সোভিয়েত ইউনিয়নে পেরেস্ত্রইকা (পুনর্বিন্যাস) ও গ্লাসনস্ত (প্রচার) এর সাথে আরও যে কথাটি বেশ চালু ছিল, সেটা হল প্লুরালিজম (বহুত্ববাদ)। সমাজতন্ত্রের মূল মন্ত্র ছিল গণতান্ত্রিক কেন্দ্রিকতা - সবার অংশগ্রহণে একবার কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলে সেটা প্রায় ডগমায় পরিণত করা হত। সেদিক থেকে গনতন্ত্রে প্লুরালিজমের চর্চার সুযোগ বেশি। সেখানে থিওরেটিক্যালি সব সময়ই ভিন্ন মত প্রকাশের সুযোগ থাকে আর সিদ্ধান্ত গ্রহনের পরেও যুক্তি তর্কের মাধ্যমে সেটাকে পুনর্বিবেচনা করা যায়। এখানেই আমার প্রশ্ন? কেন পশ্চিমা বিশ্বে যেখানে কয়েক শতাব্দী ধরে মানুষ খৃষ্টান ধর্মের প্রভাবে লালিত পালিত, গণতন্ত্র এতটা বিকশিত? শুধু খৃষ্টান ধর্ম নয়, একেশ্বরবাদে বিশ্বাসী যেকোনো মানুষের জন্যই প্লুরালিজম এক ধরনের এলিয়েন ধারনা। অর্থাৎ একেশ্বরবাদ ও প্লুরালিজমে একই সাথে বিশ্বাস সেই মানুষের সততাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। এ যেন নারী নির্যাতন বিরোধী আন্দোলন করে এসে ঘরে বৌ পেটানো বা দুর্নীতি দমন ব্যুরোর লোকদের ঘুস খাওয়া। সেক্ষেত্রে ভারতে ধর্মীয় ভাবে বহুত্ববাদের জয়জয়কার, একই পরিবারে অনেক ভগবান গলাগলি করে বাস করতে পারে। কিন্তু একই সাথে ভারতীয় সমাজে সেই বহুত্ববাদের প্রকাশ অর্থাৎ গণতন্ত্রের চর্চা খুব একটা দেখা যায় না। এখানে গণতন্ত্র বলতে আমি যতটা না মিটিং, মিছিলের অধিকারের কথা বলছি, তার চেয়ে বেশি বলছি পরমত সহিশ্নুতার কথা। ব্যাপারটা অবাক নয় কি?
No comments:
Post a Comment