গতরাত থেকে টাইম লাইন ভরে আছে তানিয়া মোর্শেদের চলে যাওয়ার খবরে। তানিয়া মোর্শেদকে ব্যক্তিগত ভাবে চিনতাম না, ও আমার এফ বি ফ্রেন্ড লিস্টেও ছিল না, তবুও ওকে জানতাম ওর লেখায়। সেটাও এই ফেসবুকেই। কখনো কোন বন্ধুদের স্ট্যাটাসে কমেন্ট পড়ে, কখনো উইমেন চ্যাপ্টারে কোনো লেখা থেকে। খুব সুন্দর লিখতো। পরিচয় বা বন্ধুত্ব না থাকলেও এক ধরণের বন্ধুত্ব, একাত্মতা অনুভব করতাম, কারণ ওর অনেক কথা, অনেক দেখাই আমার কথা, আমার ভাবনার সাথে মিলে যেত। কোন কোন ঘটনা মনে হত আমরা পাশাপাশি বসেই দেখেছি, দেখছি। ওর এফ বি বন্ধু লিস্টে আমার অনেক সোভিয়েত ফেরত বন্ধুদের দেখে ও আমাদেরই কেউ, মানে এ দেশে পড়াশুনা করা কেউ বলে মনে করতাম। সে ভুল ভাঙলো অবশ্য বেশিদিন আগে নয়, কার এক লেখায় যখন ওকে লোপা নাম দেখলাম। মনে হল ১৯৮৬ সালের কথা। আমি তখন থার্ড ইয়ারের ছাত্র। শাওন আর রুমা এসেছে মস্কোয় পড়তে, থাকে মস্কো স্টেট্ ইউনিভার্সিটির হোস্টেলে। আমি প্রায়ই যেতাম ওদের ওখানে, প্রায় বিকালেই শাওনের সাথে ঘুরতাম আশেপাশের রাস্তায়, শুনতাম ওর রাজশাহীতে ফেলে আসা দিনগুলোর, বন্ধুবান্ধবীদের কথা। সুস্মি, রমা, লিসা, লোপা আরও কত নাম। তখনই অনেকের মতোই লোপাও আমার জগতে ঢুকে পরে। পরে অনেকের সাথে দেখা হয়েছে, অনেকের সাথে বন্ধুত্ব হয়েছে ফেসবুকে। তবে লোপার সাথে সেটা হয়নি, মনে হয় ওকে চিনতে চিনতে অনেকটা সময় পেরিয়ে গেছে বলে, আর যখন চিনলাম, তখন ও এফ বি থেকে বলতে গেলে অদৃশ্য গেছে। তাই গতকাল যখন দেখলাম "লোপা চলে গেছে" কী যেন একটা নাই হয়ে গেল জীবন থেকে। এভাবেই হয়তো কাছের মানুষরা আজীবন অচেনা, অদেখা থেকে যায়, তারপর একদিন যখন সত্যি সত্যি ধরা ছোঁয়ার আড়ালে চলে যায় - মনটা কেঁদে ওঠে কেন দেখা হলো না, কেন কথা হলো না - অন্তত এখানে, এই ফেসবুক প্রান্তরে।
মস্কো, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯
No comments:
Post a Comment