কিছু কিছু মানুষকে আমরা কোনদিন না দেখলেও গল্পে গল্পে তারা
আমাদের একজন হয়ে ওঠে। রাজশাহীর হাতে গনা কয়েকজনকে আমি চিনতাম মস্কোয় পড়ার
সুযোগে আর তার চেয়েও অনেক বেশি মানুষকে চিনতাম ওদের মুখে গল্প শুনে। আমরা
যারা গ্রাম বা মফঃস্বল শহর থেকে এসেছিলাম তাদের কমন পরিচিত লোক তেমন ছিল
না, তাই গল্পও হত না। আবার আমাদের ঢাকার বন্ধুদের অনেক কমন পরিচিত থাকলেও
আর তারা নিজেদের মধ্যে এ নিয়ে গল্পও করলেও কেন যেন সে গল্পও আমার মনে দাগ
কাটেনি, যতটা রাজশাহী। কেন, সেটা বলতে পারব বা। হয়তো গল্পও করার ধরণ,
রাজশাহীর পরিবেশ এর কারণ। সবচেয়ে বড় কথা আমাদের রাজশাহীর বন্ধুরা ওদের
দেশের বন্ধুদের গল্পের মাধ্যমে আমাদেরও বন্ধু করতে পেরেছে। যার ফলে যখনই
এদের কেউ কষ্টে থাকে, নিজেরও বুকের ভেতরটা কেমন করে ওঠে।
অবিনের
অসুখের খবর পেয়েছি অনেকদিন আগে। ওর কত গল্প যে শুনেছি সুস্মির মুখে! না
জেনেও ওকে নিয়ে নিজেরা কত গল্প করেছি নিজেদের আড্ডায়। অবন ঠাকুর ছিল আমাদের
আড্ডায় ওর ডাকনাম। একবারই দেখা হয়েছে ওর সাথে, তপুদের তোপখানার বাসায়।
১৯৯৭ সালে। সবাই মিলে খেতে গিয়েছিলাম সেদিন। সুস্মি বাদে সবাই ছিল - সমী,
কুসুম, অবিন আরও অনেকে।
আজ ফেসবুকে রমার লেখায় অবিনের মৃত্যু সংবাদ
শুনলাম। শেষ কয়েক মাস খুবই শারীরিক কষ্টে গেছে ওর সময়। সেদিক থেকে ওর
জন্যে এটা শান্তি। কিন্তু যারা রয়ে গেল, তাদের জন্য এই যাওয়াটা অনেক
কষ্টের। সবার ছোট। মেধাবী। অনেক সম্ভাবনার মৃত্যু। এখন অবিন শুধুই স্মৃতি।
সুখ স্মৃতি।
দুবনা, ২৩ জুলাই ২০২০
No comments:
Post a Comment