আমরা যখন মানবাধিকারের কথা বলি, তখন কি সমস্ত মানুষের অধিকারকেই বুঝাই নাকি যাদের সাথে আমার মতের মেলে তাদের? যদিও ফর্মালি অধিকার বলতে কোন আন্তর্জাতিক বা রাষ্ট্রীয় সংস্থার ঘোষণা বুঝতেই পারি, কিন্তু প্রতিটি মানুষের চাওয়া-পাওয়া ভিন্ন। গণতন্ত্র, বিশেষ করে পুঁজিবাদ এই ব্যক্তি মানুষের উপর ভিত্তি করেই দাঁড়িয়ে আছে। তবে এটাও ঠিক নিজের অধিকার যাতে অন্যের অধিকার খর্ব না করে সেটাও দেখতে হবে। কিন্তু আমরা যারা নিজেরা অধিকারের কথা বলি, বাক-স্বাধীনতার কথা বলি, প্রায়ই বিভিন্ন ভাবে অন্যের অধিকার, বাক-স্বাধীনতা এসব নিয়ে প্রশ্ন তুলি। প্রোপ্যাগান্ডা, ফলস নিউজ ইত্যাদি আখ্যা দিয়ে অপছন্দের মুখগুলো বন্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা করি। ওরাও করে। এভাবে আমরা নিজেরাই কি মানবাধিকার, বাক-স্বাধীনতা এসব আদর্শকে গালভরা বুলিতে পরিণত করছি না? যাদের পরমত সহ্য করার ক্ষমতা নেই তাদের কি এসব আদর্শের বুলি কপচানো আদৌ শোভা পায়? কোন মতের সাথে যদি আমার মত না মেলে, আমি তার বিরোধিতা করব সেটা স্বাভাবিক, যুক্তি দেখাব, আমার মতের উৎকর্ষতা প্রমাণের চেষ্টা করব, কিন্তু সেই মতের বেঁচে থাকার অধিকার নেই তা তো নয়, অন্তত যতক্ষণ না সেই মত দ্বারা উদ্বুদ্ধ হয়ে কেউ সমাজবিরোধী কাজে লিপ্ত হচ্ছে, সমাজের অন্য সদস্যদের প্রতি হুমকি হয়ে না দাঁড়াচ্ছে। দিনের শেষে সেটাই থেকে যায়, যেটা জনগণ গ্রহণ করে। বাজার অর্থনীতির যুগে অন্তত তাই। মানুষ যেটা কেনে সেটাই চলে। যদি আপনার ভালো পণ্য লোকে না কেনে মার্কেটিং পলিসি নিয়ে ভাবুন। অযথা ফসবুকে গ্রামের কলতলার ঝগড়া লাগানো ডিভিডেন্ট আনবে বলে তো মনে হয় না। যুগোপযোগী মার্কেটিং পলিসির অভাবেই মনে হয় আজ আদর্শবাদীরা মার খাচ্ছে বা পরাজিত হচ্ছে। কে জানে?
No comments:
Post a Comment