আজ ক্লিনিকে ঢুকতে গিয়ে ঝামেলা। বিগত কয়েকদিন
শুধুমাত্র যাদের ইমারজেন্সি কেস বা যাদের ইঞ্জেকশন, থেরাপি এসব করার কথা
ছিল তাদের ঢুকিয়েছে। আজ নাকি ডাক্তারদের এক জনকে সন্দেহ করছে, তাই বিশেষ
ব্যবস্থা। টেমপারেচার মেপে তবেই ঢুকতে দিচ্ছে।
এখানে তাপমাত্রা এখন
৩ থেকে ৫ এর মধ্যে। গত রাতে কম্পিউটারে বসে যখন কাজ করছিলাম, বরাবরের মতই
জানালা খোলা ছিল আর শীতের ডিমরা হুহু করে ঘরে ঢুকছিল। আলসেমিতে জানালা
বন্ধ করা হয়নি। মনে হচ্ছিল টেম্পারেচার। থার্মোমিটার বের করলাম মাপব বলে। আবার
আলসেমি। বউকে বললাম। প্রথমে কপালে হাত দিয়ে পরে চুমু খেয়ে দেখল। বলল, না,
টেম্পারেচার নেই। বাড়িতেও মা বা দিদি ওভাবেই দেখত। ভালো মন্দ জানি না, তবে
ওটা তাপমাত্রা মাপার বেশ কার্যকরী পদ্ধতি।
পলিক্লিনিকের গেটে আটকাল। কপালে তাপমাত্রা মাপার চেষ্টা করল। যন্ত্রের
চিৎকারে নিজেরই কেঁদে ফেলার অবস্থা। কপালে কি আছে কে জানে? বলল গলা থেকে
মাফলার সরাতে। আবার চিৎকার। সিস্টার বলল কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে। দু' মিনিট
পরে আবার চেক। শেষ পর্যন্ত থার্মোমিটারের ঘুম ভাংল। কিন্তু সিস্টারের চোখ
ছানাবড়া। ৩৩ ডিগ্রী। কি আর করা।
নিজের গোপন কথা বলতে হল। ২০১২ সালে
আলুশ্তা গেলাম রেস্টে। সেখানে কোত্থেকে ক্লেশ (এক ধরনের পোকা) কামড় দিল।
ছোট হলে কি হবে, ওর কামড়ের পরিণাম খারাপ যদি সেটা ইনফেক্টেড হয়। সাথে সাথে
ক্লিনিকে গেলাম। ক্লেশ বের করল (ক্লেশের মাথা)। আর প্রতি দিন টেম্পারেচার
মাপতে বলল। যদি জ্বর আসে, তবে হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে। আমি আর ক্রিস্টিনা
দু'জনেই ক্লাশের কামড় খেয়েছিলাম। প্রতিদিন যাই হোটেলের মেডিক্যাল সার্ভিসে
তাপমাত্রা মাপতে। ক্রিস্টিনার সব ঠিকঠাক, মানুষের যেমন হওয়া উচিৎ। আর আমার
টেম্পারেচার ৩৩, ৩৪, ৩৫ - এর উপরে কখনোই উঠে না। ওদের তো চিন্তার শেষ নেই।
আমার গল্প শুনে ওরা আর কথা বাড়াল না। ক্লিনিকে ঢুঁকে ইঞ্জেকশন আর থেরাপি নিয়ে গেলাম ভল্গার তীরে, ছবি তুলতে তুলতে বাসায় ফিরব বলে।
দুবনা, ০৯ এপ্রিল ২০২০
No comments:
Post a Comment