Saturday, April 18, 2020

অধিকারের সীমারেখা

দ্বাদশ বা ত্রয়োদশ শতাব্দীতে এক সাংসদ হাত নাড়িয়ে কথা বলতে গিয়ে পাশে দাঁড়ানো আরেকজনের নাকে অনিচ্ছাকৃত ভাবে আঘাত করেন। এ নিয়ে আদালতে শুনানী হয়। সাংসদ যখন তাঁর হাত নাড়ানোর অধিকার আছে বলে দাবী করেন, তার উত্তরে বিচারক বলেন "আপনার হাত নাড়ার স্বাধীনতা সেখানেই শেষ হয়ে যায় যেখানে শুরু হয় অন্যের নাকের স্বাধীনতা।" কথাটা পরবর্তীতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয় মানুষের অধিকারের সীমানা নিয়ে প্রশ্ন উঠলে।

করোনা আক্রান্ত বিশ্বে দেশে দেশে এখন লক ডাউন চলছে। বাইরে বেরুনো বলতে গেলে নিষিদ্ধ। এর মধ্যেই অনেকে বের হচ্ছে, বিশেষ করে জমায়েতের সৃষ্টি করছে যা কিনা করোনা বিস্তারের অন্যতম প্রধান হাতিয়ার। হাট বাজারে শুধু খাবার-দাবারই বিক্রি হয় না, সেখানে আজকাল পাইকারি ও খুচরো মূল্যে করোনাও বিক্রি হয়। এর বাইরেও আছে বিভিন্ন মিটিং, মিছিল, ধর্মীয় ও সামাজিক জমায়েত। যে কেউ বলতেই পারে বাইরে যাওয়া তার ব্যক্তিগত ব্যাপার, সে করোনা বা মৃত্যুকে ভয় পায় না। সেটা হয়তো ঠিক। সেটা তার ব্যক্তিগত ব্যাপার, তার অধিকার। কিন্তু যে লোকটা করোনাকে ভয় পায়, যে লোক ঘরে থাকে বা সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলে তার জীবন সংকটাপন্ন করার অধিকার কিন্তু এই বীরদের নেই। আর এই আইন মেনে চলা মানুষের অধিকার রক্ষা করার জন্যই সরকার, প্রসাশন। আইন অমান্যকারী হাজার হাজার মানুষের জমায়েত যদি এক জন মানুষের যান মালের জন্যও হুমকি হয়ে দাঁড়ায় সরকার তখন আইন মেনে চলা এই একজনের পাশে দাঁড়াতে দায়বদ্ধ।    আর এজন্যেই যত অজনপ্রিয়ই  হোক, সরকার ও প্রশাসন বর্তমানে সব ধরণের জমায়েত বন্ধ করবে সাধারণ মানুষ সেটাই আশা করে।

দুবনা, ১৮ এপ্রিল ২০২০

No comments:

Post a Comment