Monday, August 1, 2016

নিঃসঙ্গের সঙ্গী

আলোময়দা প্রশ্ন করলো: ফেস-বুক যুগের আগে পৃথিবীর মানুষ কি নিঃসঙ্গ ছিল?




১৯৮৩ তে যখন মস্কো আসি, প্রায় প্রতি মঙ্গল বার বিমান আসার পর অপেক্ষায়  থাকতাম বাড়ির চিঠির জন্য, কেউ দেশে গেলে তার হাতে চিঠি পাঠাতাম। তাছাড়া আমি বিভিন্ন শহরে থাকা অনেককেই অনেক চিঠি লিখতাম, পাঠাতাম চিরকুট, মস্কো বন্ধুদের দরোজায় আমার রাখা চিরকুটগুলো জড়ো  করলে তো একটা মোটা বই হয়ে যেত।  নিঃসঙ্গতা ব্যক্তিগত, কেউ হাজারো লোকের মাঝেও নিঃসঙ্গ, কেউ একা একাও হাজারো সাথীর মাঝে। অনেক মানুষ যেমন সুখী হতে পারে না, সব থাকার পরও চুলকিয়ে চুলকিয়ে অসুখী হয়, ঠিক তেমনি অনেকেই অনেকের মাঝে থেকেও একা হয়ে পরে।  মনে আছে যখন খুব একা থাকতে ইচ্ছে করতো, যদিও মাঝে মধ্যেই হোস্টেলের পেছনে বনে যেতাম ক্যামেরা হাতে, তার চেয়েও বেশি যেতাম আরবাট  স্ট্রিটে - হাজারো লোকের জনারণ্যে হারিয়ে যেতে।  তাই যারা সঙ্গীহীন তারা ফেসবুক যুগের আগেও ছিল, এখনো আছে। তবে আজকাল যোগাযোগ রাখাটা টেকনিক্যালি সোজা হয়ে গেছে।  আমিতো অনেক সময় কাউকে অন লাইনে  দেখলেই তার সঙ্গে পেয়ে যাই, সে যে ভালো আছে এটা জেনে।  অনেক সময় প্রশ্ন করে বিরক্ত করি না।  তবে এটা ঠিক আগে ওই চিঠি, চিরকুট লেখার মধ্যে যত রোমাঞ্চ ছিল, এখন সেটা নেই।  বিশেষ  করে আমি চিরকুটে ছবি একে দিতাম - কখনো কখনো - কাউকে কাউকে - এখন আর সেটা হয় না, শুধু ক্যামেরায় তোলা ছবি।  

মস্কো, ০১ আগস্ট ২০১৬

No comments:

Post a Comment