Wednesday, July 27, 2016

দুই অক্ষর আর তিন শব্দ



মাসুদা ভাট্টির "যে প্রশ্নের উত্তর জানা জরুরী  এখন" পড়ে কমেন্ট করতে চাইছিলাম, পরে দেখি বেশ বড়োই হয়ে গেলো। তাই আলাদা করেই লিখতে হলো।

হলি  আর্টিজানে আক্রমণের পর থেকে এক ধরণের অস্বস্তিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে সামাজিক মাধ্যমে - একদল চাইছে যে করেই হোক সন্ত্রাসীদের আই  এস এর সাথে
যুক্ত করতে, আরেক দল  সর্বশক্তি দিয়ে প্রমান করতে চাইছে ওরা দেশীয় প্রোডাক্ট। আর দড়ি টানাটানির এই খেলার সুযোগ নিচ্ছে সন্ত্রাসীরা। মনে পরে গেলো ইউক্রেনে মালয়েশিয়ার বিমান পতনের ঘটনা  - কোনো প্রমান ছাড়াই দোষ পড়লো রাশিয়ার কাঁধে, আর রাশিয়া যখন প্রমান চাইলো, আর নিজে উল্টো প্রমান দিতে লাগলো সব কেমন যেন ঝিমিয়ে পড়লো। যে কোনো কাজে রাশিয়াকে দোষ দেয়া এখন ফ্যাশন, তা সে ডোপিং ই হোক, তার হিলারীর ই-মেইল হাইক ই হোক। অবস্থা দেখে মনে হয়, যদি ওবামা আর মিশেল এর বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে, এ জন্যেও পুতিনকে দায়ী করা হবে। আগে  থেকে দোষী সাব্যস্ত করা - এটাতো নতুন  কিছু নয়। ইরাকেও এভাবেই ধংসাত্বক অস্ত্র আবিষ্কৃত হয়েছিল, আর ঘোলা জলে মাছ ধরা পড়লে অস্ত্রের কথা বেমালুল ভুলে যাওয়া হয়েছিল। তার মানে এই নয়, আই এস এর সাথে যোগাযোগের ব্যাপারটা একেবারেই বাদ দিতে হবে। এইতো কিছু দিন আগে  যখন রাশিয়ান যাত্রীবাহী বিমান ফেলে দেয়া হলো, রাশিয়া প্রথমে স্বীকার না করলেও সন্ত্রাসবাদকে একটা ভার্সন হিসেবে রেখেছিলো, আর কিছু দিন পরে যখন প্রমান পেলো, শুধু স্বীকারই করলো না, যারা এই কাজ করেছে তাদের শাস্তি দেবার ক্ষেত্রে কোনো সময় সীমা থাকবে না বলে ঘোষণা করলো। আমার মনে হয় দেশেও তড়িঘড়ি করে কোনো সিদ্ধান্তে আসার দরকার নেই।  প্রথমতঃ  সরাসরি যোগাযোগ না থাকলেও এই সন্ত্রাসীরা আই  এস দ্বারা প্রভাবিত হতে পারে।  মনে আছে কত তরুণ সোভিয়েত বিপ্লব দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিল? কতজন নিজেকে চে গুয়েভারার শিষ্য বলে মনে করেছে, আজও  করে।  তাই দুটো ফ্রন্টই দেখতে হবে।  তাছাড়া এটাও তো ঠিক আজকের আই  এস আমেরিকার তৈরী, সৌদির রিয়ালে পুষ্ট।  এটাতো বলার অপেক্ষা রাখে না  যে আমেরিকা আমাদের দেশে ঘাঁটি গড়তে চায়, কিছু হলেও নিজেদের সৈন্য রাখতে চায়। জাপান, জার্মানের মতো দেশ গুলোই আমেরিকান সৈন্যের উপস্থিতির ফলে স্বাধীন স্বরাষ্ট্র আর পররাষ্ট্র  নীতি পালন করতে পারে না, বাংলাদেশ তো কোন ছার। তাই সমস্ত ভার্সন গুলোই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে, আর যে সমস্ত তরুণরা  আই  এস এর কাছে শপথ নিয়ে জিহাদে নেমেছে, কোনো সময় সীমা ধার্য্য  না করে তাদের বিচার করতে হবে।  যদি বাংলাদেশ সফল রাষ্ট্র হিসেবে টিকে থাকতে চায় এর কোনো বিকল্প নেই।  যাকগে অনেকগুলো অক্ষর লেখা হয়ে গেলো, এবার ক্ষান্ত দিতে হয়।       


দুবনা, ২৭ জুলাই ২০১৬



No comments:

Post a Comment