ছোট বেলায় বাবা যখন হাট বা মোকাম থেকে ফিরতেন, প্রথম কাজ ছিল ব্যাগ খুঁজে দেখা আমাদের জন্য কি কি আনলেন। যদি জাবরা, ঘিওর বা ঝিটকা হাট থেকে ফিরতেন, তাহলে থাকত কলা বা অন্যান্য ফল। নারায়ণগঞ্জের মোকাম থেকে ফিরলে থাকতো আপেল, আঙ্গুর ইত্যাদি বিদেশি ফল আর কনফেকশনারী। এখন আমি যখন মস্কো যাই বচ্চাদের প্রথম প্রশ্ন কি আনলাম ওদের জন্য। তাই আমিও চেষ্টা করি সব সময়ই কিছু না কিছু নিয়ে যেতে। দুবনার জিনিসে ওরা মনে হয় ছোট বেলার স্বাদ পায়। ভাররে কিছু থাকলে সেভাকে বলি মেট্রোতে দেখা করতে। ওদের জন্য কিছু নিলে মনে এক রকম বাবা বাবা অনুভূতি জাগে।
গতকাল ছিল বিশ্ব নারী দিবস। আগামীকাল মস্কো যাব। ভল্গার তীরে হাঁটতে হাঁটতে মনিকাকে ফোন করলাম।
- প্রিভিয়েত মিউ। কাল মস্কো আসব। কেক আনব?
- ভ প্রিন্সিপে (ইন পিন্সিপল) আনতে পার।
আমার মনে পড়ল ছাত্রজীবনের কথা। তখন আমাকে কেউ কিছু করার কথা বললেই আমি বলতাম “ভ প্রিন্সিপে করা যায়।“ আর ওখানে যদি দীপু দা (আহসান হাবীব দীপু) উপস্থিত থাকতো, বলত “বিজন, প্রিন্সিপ ছাড়া করতে পারবেন না?” জীবনটাই এমন। হঠাৎ হঠাৎ কোন ঘটনা ঘটে আর তা মনে করিয়ে দেয় সুদূর অতীতে ঘটে যাওয়া কোন ঘটনা, মনে করিয়ে দেয় হারিয়ে যাওয়া কোন মুখ। এটাই জীবনের সৌন্দর্য।
দুবনা থেকে কেক কিনলে আমি সাধারণত স্টেশনে যাই। ওরা নিজেরা তৈরি করে। সাধারণত যে কেকটা ওদের পছন্দ সেটা পেলাম না, নতুন একটা কেকে পেলাম – নাম “দুবনা”। দেখা যাক পছন্দ হয় কিনা!
দুবনা, ০৯ মার্চ ২০১৯
No comments:
Post a Comment