Tuesday, January 28, 2025

সংবিধান

সংবিধানের প্রস্তাবিত সংস্কারের উপর শাহদীন মালিকের ইন্টার্ভিউ কাম আলোচনা শুনলাম। বাহাত্তরের সংবিধান নিয়ে তাঁর আলোচনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেছেন সেই সংবিধান খুবই সময়োপযোগী ছিল যা দেশের সমস্ত মানুষকে ভোটের অধিকার দেয়। প্রসঙ্গত উনি জানান খোদ আমেরিকায় কৃষ্ণাঙ্গ জনগণ প্রথম ভোট দেয় ১৯৭৬ সালে। তিনি আরও জানান ১৭৮৭ সালে গৃহীত হবার পরে আমেরিকার সংবিধান মাত্র কয়েকবার সংশোধিত হয়েছে আর এর মধ্য দিয়ে সব সময় সংবিধানকে উৎকৃষ্ট করা হয়েছে। কিন্তু বাহাত্তরের সংবিধানের বিভিন্ন সংশোধনী প্রায় কখনোই একে উৎকৃষ্ট করার জন্য করা হয়নি, করা হয়েছে ব্যাক্তি বা গোষ্ঠী স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য। সংবিধান দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য হলেও সেটা কাটা ছেঁড়া করা হয়েছে দলীয় স্বার্থে। যেখানে রাজনৈতিক দলের মধ্যেও আভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র অনুপস্থিত সেখানে তারা দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবে কীভাবে? যেহেতু দিনের শেষে রাজনৈতিক দলের হাতেই জনগণ ভোটের মাধ্যমে দেশের দায়িত্ব অর্পণ করে তাই দলের ভেতরে গণতন্ত্রের চর্চার বিকল্প নেই। সেই কথা সংবিধানে থাকতেই পারে। অর্থাৎ মানুষের পাশাপাশি রাজনৈতিক দলের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে নীতি নির্দেশ থাকতেই পারে। সেটা যেমন দরকার তেমনি দরকার রাজনৈতিক দলগুলোর হিসাব নিকাশের স্বচ্ছতা। বিশেষ করে বিদেশ থেকে (বিদেশী সংস্থা বা বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের অনুদান) প্রাপ্ত অর্থের সঠিক ও সময় মত ডিক্লেয়ারেশন। বিগত দিনে সংসদ পরিণত হয়েছে ব্যবসায়ীদের ক্লাবে। তাই প্রয়োজন ব্যবসা ও রাজনীতির চিরস্থায়ী বিবাহ বিচ্ছেদ। রাজনীতি যদি ব্যবসায়ের চেয়ে লাভজনক হয় তাহলে ব্যবসায়ীরা আসবেই রাজনীতি করতে। তাই রাজনীতিকে ও রাজনৈতিক দলকে অলাভজনক সংগঠনে পরিণত করার ব্যাপারেও সাংবিধানিক পদক্ষেপ নেয়া উচিৎ বলেই মনে করি।

দুবনা, ২৮ জানুয়ারি ২০২৫

No comments:

Post a Comment