Sunday, June 23, 2024

প্রার্থী

সিঁড়ির প্রতিটি ধাপ যেমন পরবর্তী ধাপে ওঠার সুযোগ করে দেয় তেমনি আরও একটু উপর থেকে গড়িয়ে পড়ার পথও খুলে দেয়। কোন প্রার্থীকে ভোট দিয়ে উপরে ওঠার সুযোগ করে দেয়ার দায়িত্ব যেমন ভোটারের, তিনি পড়ে গেলে সেটার দায়ও ভোটারের। নির্বাচনে ব্যর্থতার ফল প্রার্থী একা ভোগ করে কিন্তু নির্বাচিত প্রার্থীর ব্যর্থতার ফল ভোগ করে সবাই। আপনি প্রস্তুত সেই ব্যর্থতা স্বীকার করতে? তাহলে সেই প্রার্থীকে ভোট দিন যিনি আপনাকে ব্যর্থ হতে দেবেন না। 

দুবনা, ২৩ জুন ২০২৪

Saturday, June 22, 2024

নির্বাচন

সাবে স্বনামধন্য ও যোগ্য লোকের অভাব নেই। এখানে বেশিরভাগ মানুষ জীবনে প্রতিষ্ঠিত। তাই যদি মনে করি নিজের সুনাম দিয়ে কেউ সাবের সমস্যা সমাধান করবে সেটা হবে আমাদের ভ্রান্ত ধারণা। এতে সমস্যার সমাধান হবে না বরং একজন লোকের সিভি নষ্ট হবে। তাই সেই লোককে নির্বাচিত করুন যিনি শুধু নামে নয় আমাদের সাথে নিয়ে সমস্যার সমাধানে পথ চলবেন ভবিষ্যতের পানে। আপনি জানেন সেই প্রার্থীর নাম। আবেগ থাকুক সাবের জন্য আর ভোট হোক সুচিন্তিত। পেছনে নয় পাশে হাঁটা যায় এমন লোক হোক আপনার আমার পছন্দের।

দুবনা, ২২ জুন ২০২৪

নির্বাচন

সমর্থকদের আবেগের জোয়ারে নির্বাচনের বৈতরণী পার হওয়া যায় তবে নির্বাচন পরবর্তী কাজ কিন্তু নিজেকেই করতে হবে। সেই সময়ের সাফল্য আর ব্যর্থতার দায় একান্তই বিজয়ীর। আজকের সুনাম দিয়ে সেদিনের ব্যর্থতা ঢাকা যাবে না তবে নিজের স্বচ্ছ সিভিতে একটি কালো দাগ পড়বেই পড়বে। আপনি মানসিক ভাবে প্রস্তুত না হলে জনতার কথায় কান দিয়ে নির্বাচনের কাঁদা জলে নামবেন না। জনতা আপনার রেপুটেশনকে শিখন্ডী করে ক্ষমতার হালুয়া রুটি খেতে চায়। ব্যর্থতার কালিমা কিন্তু আপনার মুখেই লেগে থাকবে আজীবন। সাধু সাবধান!

দুবনা, ২২ জুন ২০২৪

Thursday, June 20, 2024

মূর্খ

আমি প্রায়ই নিজেকে আকাট মূর্খের দলে আবিস্কার করি যারা ইতিহাস থেকে কোন শিক্ষা নেয় না। হাতে সময় থাকতেও প্রায়ই শেষ মুহূর্তে কোথাও গিয়ে হাজির হই এবং নিজেকে দীর্ঘ লাইনের শেষ প্রান্তে আবিস্কার করি। ভুলে যাই আমার আগে বা পেছনে দাঁড়ানো মানুষের মুখ। আর ভাবি পরের বার অনেক আগে এসে লাইনে দাঁড়াব আর সামনে পেছনের দুই জনের দুটি ছবি তুলে রাখব। কিন্তু এই সামান্য পরিকল্পনাটুকু বাস্তবায়ন করা কখনো হবে কি না সেটাই ভাবনার বিষয়।

দুবনা, ২১ জুন ২০২৪

ঈশ্বর

ঈশ্বর যখন পাপীদের শাস্তি দিয়ে নরকে চালান করেন তিনি ভাবেন না যে নরকবাসীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে তাঁর বিরুদ্ধে লড়তে পারে। পশ্চিমা বিশ্ব বিশেষ করে আমেরিকা যখন বিভিন্ন দেশকে নরকে অবরোধ করে রাখে বলে মনে করে, তারাও ভাবে এরা শান্ত ছেলের মত ওখানে বসে দিন কাটাবে, নিজেরা মিলে মিশে এই অন্যায়ের প্রতিবাদ করবে না। কিন্তু যখন রাশিয়া, উত্তর কোরিয়া, ইরান এসব দেশ পরস্পরের প্রতি বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দেয় তখন পশ্চিমারা অখুশি হয়। কেন? কারণ ওদের ঈশ্বরের রাজ্যে তখন বিদ্রোহের আগুন জ্বলে ওঠে।

দুবনা, ২০ জুন ২০২৪

Wednesday, June 19, 2024

মালগাড়ি

ফুলের তোড়ার সৌন্দর্য শুধু ফুলের পরিমাণ বা বৈচিত্র্যের উপরেই নির্ভর করে না, নির্ভর করে পরিমিতিবোধ ও সাজানোর কৌশলের উপর। কোন চিত্রকলার সৌন্দর্য একই ভাবে কত রং ব্যবহার করা হয়েছে তার উপর নির্ভর করে না, যেমন খাবারের স্বাদ নির্ভর করে না মশলার প্রকারভেদ বা রান্নার উপাদানের উপর। ফটোগ্রাফিতে একটা কথা আছে - অপ্রয়োজনীয় সব কিছু ছেটে ফেলা। একই কথা লেখার ক্ষেত্রেও সত্য। আজকাল অনেককেই দেখি একের পর এক ভালো ভালো শব্দ, যার সিংহভাগ বিশেষণ, লিখেই যাচ্ছেন। সুন্দর সব শব্দমালা একের পর এক পাথরের নুড়ির মত ছুটে চলেছে অজানার উদ্দেশ্যে। সেসব দেখে অনেক সময় মনে পড়ে যায় মালগাড়ির কথা যেখানে পেট্রল, তেল, সিমেন্ট, খাবার ইত্যাদি হাজারো রকমের সামগ্রী বিভিন্ন বগিতে ভরে একই ইঞ্জিনের সাথে যোগ করা হয়। এতে সব মালামাল শেষ পর্যন্ত গন্তব্যে পৌঁছায় বটে, কিন্তু গাড়িটা দেখতে কখনোই মনোরম হয় না।

দুবনা, ১৯ জুন ২০২৪

Tuesday, June 18, 2024

অসীম কাকু

কিছুক্ষণ আগে আলোময় দা (Alomoy Biswas) ফোন করে বললেন - কবি অসীম সাহা মারা গেছেন। অসীম সাহা - সম্পর্কে আমার ভাইপো, তবে ডাকতাম কাকু বলে। রাশিয়ায় আসার আগে নাম শুনেছি, দেখিনি। পারিবারিক কারণে তাঁর সাথে আমাদের তেমন যোগাযোগ ছিল না। তবে তাঁর ছোট দুই ভাই আলোক কাকু আর বাব্লু (ভালো নামটা ভুলে গেছি) আমাদের বাড়িতে আসতেন। আমিও এসএসসি পরীক্ষা শেষে কয়েক দিন জগন্নাথ হলে তাদের রুমে ছিলাম। দিপ্তী পিসির সাথেও যোগাযোগ ছিল তখন থেকেই। পরে অসীম কাকুর দুই ছেলে বড় হলে আবার যোগাযোগ স্থাপিত হয়, বিশেষ করে অভ্রর সাথে। ও এখন কানাডায়। ১৯৮৭ সালে দেশে বেড়াতে গেলে ওদের ঢাকার বাসায় যাই - কাকু বাসায় ছিল না। আমাদের দেখা হয় ২০১২ সালে তাঁর ছাপাখানায়। তখন একটা ছবি তুলেছিলাম। এরপর আর দেখা হয়নি সময়াভাবে। তবে প্রায়ই লিখতেন আমাকে রাশিয়ার অবস্থা জানতে। আনি মৃত্যুটাকে আলাদা করে দেখি না, এটা জীবনেরই অংশ। মানুষ আর তার মৃত্যু একই দিন জন্ম নেয়, সারা জীবন এক সাথে চলে, তারপর একদিন মৃত্যু দখল করে জীবনের স্থান। মানুষ বেঁচে থাকে যারা রয়ে গেল তাদের স্মৃতিতে। আপনিও আমাদের মাঝে থাকবেন আপনার কবিতায়।

দুবনা, ১৮ জুন ২০২৪

Saturday, June 15, 2024

সততার নিত্যতার সূত্র

সেদিন এক বন্ধু কথাচ্ছলে বলল দেশে নাকি সৎ পথে বাঁচার কোন উপায় নেই। নিজে সৎ থাকলেও, সৎ পথে উপার্জন করলেও প্রতিনিয়ত অন্যদের অন্যায় মুখ বুজে সহ্য করতে হয়। তাই প্রত্যক্ষ ভাবে হোক আর পরোক্ষভাবে হোক সবাইকে অসৎ হতে হয়। আমি বললাম আসলে এসবই নিত্যতার সূত্রের সাথে জড়িত। নির্বাচনের আগে সবাই নিজেকে এত বেশি সৎ, ন্যায় প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে একজন নির্ভীক সৈনিক ইত্যাদি ভূষণে ভূষিত করে যে নির্বাচন পরবর্তী সময়ে তাদের ভীষণ রকম অসৎ হয়ে, সারা দেশের মানুষকে অসৎ করে ভারসাম্য ফিরিয়ে আনতে হয়। তাই বর্তমান পরিস্থিতি এটা সামাজিক সমস্যা নয়, প্রাকৃতিক নিয়ম। বলতে পারেন এটা সততার নিত্যতার সূত্র।

দুবনা, ১৫ জুন ২০২৪

Thursday, June 13, 2024

প্রশ্ন

এই মাত্র খবরে শুনলাম ভ্লাদিমির পুতিন আজ দুবনায় আমাদের ইনস্টিটুটে এসেছিলেন নির্মাণাধীন কোলাইডার দেখতে। না শহরে, না ইনস্টিটিউটে এ ব্যাপারে কিছুই শুনিনি। অথচ আমাদের দেশে প্রেসিডেন্ট তো দূরের কথা মন্ত্রী এলেও হৈহৈ রৈরৈ রব পড়ে যায়। এটা কি ভয় নাকি নাকি বিনয় - কে জানে?

দুবনা, ১৩ জুন ২০২৪

সমস্যা

আমার নিজের কানা কড়ি দাম নাই অথচ সম্মানিত প্রার্থীরা আমার মূল্যবান ভোট দিয়ে তাদের জয়যুক্ত করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছেন। এ কোন সমস্যায় পড়লাম রে বাবা! 

দুবনা, ১৩ জুন ২০২৪

ভালোবাসা

ভালোবাসা প্রশ্নাতীত নয় তাই ভালোবাসা যাতে অন্ধভক্তিতে পর্যবসিত না হয় সেটাও সব সময় মনে রাখতে হবে। দুবনা, ১৩ জুন ২০২৪

Monday, June 10, 2024

সোনালী আঁশ

আমাদের ছোটবেলায় বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান রপ্তানি দ্রব্য ছিল পাট। এটা ছিল বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জনের অন্যতম প্রধান উপকরণ। বর্তমানে শ্রমিক আর তৈরি পোশাকের পাশাপাশি টাকা হচ্ছে দেশের অন্যতম প্রধান রপ্তানি দ্রব্য। প্রশ্ন হল অর্থ রপ্তানি দেশের অর্থনীতিতে একটি লাভজনক খাতে পরিণত করা যায় কিনা। যতদূর জানি তাতে মনে হয় এখন বাংলাদেশ বিদেশে সবচেয়ে বেশি অর্থ রপ্তানি করে। এখন সরকারের প্রধান কাজ হওয়া উচিত কিভাবে অর্থ রপ্তানি একটি লাভজনক খাতে পরিণত করা যায় তার প্রশিক্ষণ লাভের জন্য কয়েক হাজার আমলাকে বিদেশে পাঠানো। আমরা অনেক কিছুই চেষ্টা করে দেখি। এটাও হয়ে যাক।

দুবনা, ১০ জুন ২০২৪

Sunday, June 9, 2024

ন্যায় ও সাম্য

ন্যায়ের সাথে সাম্যের সম্পর্ক যমজ ভাইয়ের মত। অন্তত সাম্য ছাড়া ন্যায় প্রতিষ্ঠা করা অসম্ভব। বিশেষ করে বিচারের ক্ষেত্রে। আর এ জন্যেই দুটি শব্দ প্রায়ই একই সাথে উচ্চারিত হয়। শুধু বিচারের ক্ষেত্রে নয়, সমাজ থেকে অন্যায় দূর করার জন্যেও সাম্য অপরিহার্য।

দুবনা, ০৯ জুন ২০২৪

Friday, June 7, 2024

বাজেট

মাইকেল জ্যাকসন বাজেট। পরিণাম কী হয় কে জানে? সাদা কালো বলে কথা।

মস্কো, ০৭ জুন ২০২৪

ইতিহাস

ইতিহাস পড়ে জানতে পারি বিপ্লবের পর পর সোভিয়েত ইউনিয়নে অভূতপূর্ব শিল্পায়নের কথা। সারা বিশ্ব যখন চারিদিক থেকে ঝাঁপিয়ে পড়েছে তখন সে ব্যস্ত ভারী শিল্পকারখানা গড়ে তুলতে। বিভিন্ন বড় বড় প্রজেক্ট হাতে নিয়ে একের পর এক সাফল্য অর্জন করছে। প্রায় একশ বছর পরে আবারো পশ্চিমা বিশ্ব নিষেধাজ্ঞা ও যুদ্ধের দামামা বাজিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছে রাশিয়ার উপর। এবারও সে একই ভাবে নতুন নতুন কল কারখানা তৈরি করছে, আবারও নতুন করে স্বাবলম্বী হচ্ছে। দেখা যাক এর শেষ কোথায়?

মস্কো, ০৭ জুন ২০২৪

Monday, June 3, 2024

বিচার

বিচার ন্যায় না অন্যায় সেটা যতটা না আইন ভালো না মন্দ তার উপর নির্ভর করে, তারচেয়ে বেশি নির্ভর করে আইনের সিলেক্টিভ প্রয়োগের উপরে। একই অপরাধে অভিযুক্ত দুই ব্যক্তি যদি ভিন্ন ধরনের ট্রিটমেন্ট পায় তাহলে বুঝতে হবে আইন নয় বিচার ব্যবস্থা পক্ষপাতদুষ্ট। আর যে দেশের বিচার ব্যবস্থা পক্ষপাতদুষ্ট সে দেশ আর যাই হোক নিজেকে গণতান্ত্রিক, অনুসরণীয় এসব বলার অধিকার হারিয়ে ফেলে। আইনের সিলেক্টিভ প্রয়োগের উদাহরণ আগে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলো তৈরি করত, এখন প্রথম বিশ্বের দেশগুলো তাদের অনুসরণ করছে। উত্তর ও দক্ষিণ মেরু স্থান পরিবর্তন করছে বলে মনে হচ্ছে।

দুবনার পথে, ০৩ জুন ২০২৪

Sunday, June 2, 2024

সংগঠন

মানুষ নিজের সুখ অন্যের সাথে ভাগ করে নিতে চায় না যদিও অন্যকে নিজের সুখ দেখিয়ে সমাজে ও অন্যদের চোখে নিজের অবস্থান শক্ত করতে চায়। সে নিজের দুঃখ অন্যের সাথে ভাগ করে নিতে চায়, না পারলে অন্তত অন্যদের সহযোগিতায় সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করে। সমস্যাই মানুষকে সংগঠিত হতে উদ্বুদ্ধ করে।

মস্কো, ০৩ জুন ২০২৪

শান্তি

আমাকে লোকজন প্রায়ই জিজ্ঞেস করে 
শরীর কেমন আছে?
আগে বলতাম শরীরের মত শরীর আছে আমার মত আমি। বলতে পারেন আমরা সেপারেশনে আছি। এখন বলি শরীরের সাথে শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর করেছি।
সেটা আবার কি রকম?
কেমন আছে প্রশ্ন করে শরীরকে অযথা লজ্জায় ফেলব না। আর শরীরও অযথা অনুযোগ করে আমার কাজকর্ম ও চলাফেরার পথে বাধা হয়ে দাঁড়াবে না।

মস্কোর পথে, ০২ জুন ২০২৪