অনেকেই আজকাল বিভিন্ন মুসলিম দেশে কবি, সাহিত্যিক, রাজনীতিবিদদের ভাস্কর্যের ছবি দিয়ে প্রমাণ করতে চাইছেন যে এটা মোটেই আনৈসলামিক নয়। ভাবখানা এই এসব ধর্ম ব্যবসায়ীরা বিশ্বভ্রমণ করেনি, তারা এসব দেখেনি। আমার বিশ্বাস তারা এসব আমাদের চেয়ে ভাল জানে, বিশেষ করে ইকবাল বা জিন্নাহর ভাস্কর্য সম্পর্কে। তাদের নিয়ে কথা নেই কারণ এরা সবাই ইসলামের পক্ষে ছিলেন। কামাল পাশা তুরস্ককে ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রে পরিণত করলেও তিনি ইউরোপের কবল থেকে তুরস্ককে রক্ষা করেছিলেন। তিনি এদের চোখে ছিলেন ওসমান সাম্রাজ্যের প্রতিনিধি, মুসলিম বিশ্বের প্রতীক। কাজী নজরুলের "ঐ ক্ষেপেছে পাগলী মায়ের দামাল ছেলে কামাল ভাই" পড়েই এরা কামাল পাশা সম্পর্কে জেনেছে। সেখানে শেখ মুজিব শুধু জিন্নাহর দ্বিজাতি তত্ত্বই পরিত্যাগ করেননি, শত্রু ভারতের সাহায্য নিয়ে সাধের পাকিস্তান বিভক্ত করেছেন, হিন্দুদের সাথে হাত মিলিয়ে দেশে ধর্মনিরপেক্ষতার বাণী প্রচার করেছেন। তাই এদের চোখে শেখ মুজিব ইসলামের বন্ধু নন, আর যিনি ইসলামের বন্ধু নন তাঁর ভাস্কর্য এদেশে শোভা পাবে সেটা তারা মানবে কিভাবে? কই, জিয়ার ভাস্কর্য নিয়ে তো কোন প্রশ্ন নেই। তাই মূর্তি না ভাস্কর্য এসব ধানাই পানাই বাদ দিয়ে দেশের প্রতিটি নাগরিকের নিজ নিজ ধর্ম পালনের অধিকারের কথা বুলন, সেজন্যে মুখ খুলুন। নইলে আজ না হলেও কাল তারা শুধুই মূর্তিই নয় এমনকি বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য পর্যন্ত সরাবে। ভুলে যাবেন না, পঁচাত্তর পরবর্তী একটা দীর্ঘ সময় ধরে এদেশে এমনকি শেখ মুজিবের নাম নেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ ছিল না।
দুবনা, ০২ ডিসেম্বর ২০২০
No comments:
Post a Comment