Tuesday, September 19, 2017

বোকার গল্প


উইক-এন্ডে আমি যখন মস্কো যাই, সবসময় বাসায় একগাদা কাজ জড় হয়ে থাকে। তা বাল্ব অন্ধ হোক, টিভি বা কম্পিউটারের সর্দি কাশি হোক অথবা জলের ট্যাপের কষা হোক। এমন কি যদি ঝাড়ু বা মপের ছোটখাটো ব্যাধি হয়, ওরাও আমার কবিরাজি ওষুধের অপেক্ষায় থাকে। বউ ছেলেমেয়েদের কথা নাই বা বললাম!
রোববার রাতে বাসায় ঢুকতেই বউ বললো
-    মপগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। ও গুলো ঠিক করে দিও তো।
সোমবার সকালে ক্লাস। তাই বললাম
-    কাল ক্লাস থেকে এসে দেখবো।
সোমবার তিনটে মপ আমার হাতে ধরিয়ে দিয়ে বউ বললো ওগুলো ঠিক করতে। দুটোয় শুধুই প্যাড বদলানোর দরকার ছিল, তাও আবার একটা থেকে খুলে অন্যটায় লাগানো। আর তৃতীয়টা কিছু পার্টস খুলে ফেলে দেয়া। প্রথম দুটো ঠিক করার পর যখন তৃতীয়টার স্ক্রু খুলতে বসেছি, বউ বললো
-    ওতে জং ধরে গেছে। এতো ঝামেলা করার কি দরকার। শিকগুলো বাঁকা করে খুলে ফেল। আমি তো অসব ফেলেই দেব।
-    ওটা যেকোনো বোকাই করতে পারে (Любой дурак так может)। তুমি প্লায়ারস দিয়ে ওদিকটা ধর, আমি স্ক্রু খুলছি।
কপাল খারাপ। স্ক্রু ড্রাইভার ফস্কে ঢুকে গেল বা হাঁতে। বউ তো মহা ব্যস্ত। ডেটল দিয়ে ধুয়ে প্লাস্টার দিয়ে ব্যান্ডেজ করে দিল আঙ্গুলটা। ব্যথা যে পাইনি তা নয়, তবে এর ফলে এর পরে আরও এক গাদা কাজের থেকে ছুটি মিলে গেল আর আমি মনে মনে ভাবলাম বোকাটা কে? আর মনে পড়লো ছোট বেলার সেই গল্প – “বোকার গু তিন জায়গায় লাগে”। যারা জানেন না তাদের জন্য।

এক বোকা বসেছে প্রস্রাব করতে। আর বসেই দিয়েছে বিশাল এক পাদ। আর ভাবছে  “হেগে দিলাম না তো? দেখতে হয়তো ব্যাপারটা।” যে কথা সেই কাজ। পেছনে হাত দিয়ে দেখে কি যেন একটু তরল জিনিষ আঙ্গুলে লাগলো। তারপরও কূলকিনারা না করতে পেরে হাত নিল নাকের কাছে আর যথারীতি নাকেও লাগালো সেই অজানা বস্তুটা। গন্ধ শুকেও যখন কোন সিদ্ধান্তে আসতে পারল না, বোকা তখন শেষ চেষ্টা হিসেবে আঙ্গুল চুষতে লাগলো।

এতো কিছুর পর বোকা ঐ তরল পদার্থ সম্পর্কে কোন সিদ্ধান্তে আসতে পেরেছিল কিনা, সে ব্যাপারে ইতিহাস একেবারেই নীরব। অপ্রয়োজনীয় জিনিষ এর পর থেকে আমি এমনিতেই ফেলে দেব, নাকি অর উপর পরীক্ষা নিরীক্ষা চালাবো, এটাও শুধু ভবিষ্যৎই জানে।    

দুবনা, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭ 



No comments:

Post a Comment