গুলিয়া প্রায়ই বলে সব সমস্যা নাকি আমার মাথায়। কথাটা ঠিক। পদার্থবিদ মাত্রই বিভিন্ন সমস্যা মাথায় করে ঘুরে বেড়ায়, মাথায় বিভিন্ন সমস্যার জন্ম দেয় আবার মাথায়ই সেসবের সমাধান করে। আসলে এই যে আমরা মাথায় এত সমস্যা নিয়ে চলি সেটাও করি কিন্তু বউ, ছেলেমেয়ে আর নিজের পেটের আর বাসস্থানের সমস্যা সমাধানের জন্যই। তবে সেটা কি কেউ বোঝে?
গত ১৬ জুন থেকে ভোলগায় সাঁতার কাটতে শুরু করলাম। বাড়ির পাশেই নদী, এমনকি তরার কালীগঙ্গাও আমাদের বাড়ি থেকে বেশি দূরে। বলা চলে হাত বাড়ালেই ভোলগা। নদীতে যাই প্লাভকি মানে সুইমিং কাস্ট পরে। উপরে একটা হাফ প্যান্ট আর টিশার্ট। পায়ে চটি। তোয়ালে সাথে প্রতিদিনই নেই, তবে এখনও ব্যবহার করার সুযোগ পাইনি। রবি বাবুকে বেগার খাটাই। মিনিট দশেক সাঁতার তারপর মিনিট পনেরো রোদে গা শুকানো। অন্যেরা শুয়ে থাকে, আমি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে হাতপা নাড়ি, হাড্ডির জং সরাই। লোকে বলে ব্যায়াম। তারপর আবার সাঁতার, আবার গা শুকানো। সবই শুকায়, কিন্তু সুইমিং কাস্ট একটু ভেজা থাকে। হাফপ্যান্ট যাতে না ভিজে তাই প্রথম দিন শুধু টিশার্ট পরেই বাসায় ফিরলাম।
- তোমার কি মাথা খারাপ?
আমি অবাক হই। এটা জিজ্ঞেস করার কী হল। ১৯৯১ থেকে ২০২১ - এই তিরিশ বছরেও যদি বুঝতে না পারে, ধরে নিতে হবে গুলিয়ার নিজেরই মাথা খারাপ।
- কেন? কী হল আবার?
- এভাবে রাস্তায় কেউ হাঁটে না।
- আমি শুরু করলাম। এরপর অনেকেই হাঁটবে।
- এরপর থেকে হাফপ্যান্টটা উপরে পরে এসো।
- ভিজে যায় তো।
- তা যাক।
কী আর করা? এরপর থেকে সেটাই করি আর বাসায় ফিরতে ফিরতে হাফপ্যান্টটা কাক ভেজা হয়ে যায়।
আজ ঘাটে গিয়ে দেখি অনেক লোক। স্বভাব সুলভ ভাবেই বললাম
- আজ দেখছি হাউজ ফুল।
- আর বলো না।
স্নান দান শেষ। খেয়াল করলাম এক মহিলা ভেজা বিকিনির উপর প্লাতিয়া মানে কামিজ (তাই কি?) পরে দিব্যি বাসায় ফিরছে। পদার্থবিদরা পজিটিভিস্ট। এটা দেখেই একটা সমাধান মাথায় এলো। আচ্ছা আমার তো একটা পাঞ্জাবী ছিল। বেশ লম্বা। একেবারেই পরা হয় না। এখন তো টিশার্টের বদলে সুইমিং কাস্টের উপর পাঞ্জাবী পরতে পারি। তাহলে আর হাফপ্যান্ট ভেজানোর ঝক্কি পোহাতে হবে না। আপনারা যারা এরকম সমস্যায় আছেন আমার নো-হাউটা ট্রাই করতে পারেন।
No comments:
Post a Comment