Wednesday, December 26, 2018

ডগমা

কয়েকদিন আগে এক দেশীর সাথে দেখা। এক সময় এখানেই পড়াশুনা করতেন। স্বাভাবিক ভাবেই যেটা হয়, পুরনো দিনের গল্প, পরিচিতদের পিন্ডি চটকানো মানে তাদের খবরাখবর নেওয়া, রাজনীতি, সামাজিক সমস্যা নিয়ে কথাবার্তা এসব আর কি।

“ওকে মনে আছে? আমার বিশ্বাস ওর সব কাজ ছিল রাজনৈতিক উদ্দেশ্যমূলক।“
   
“বাম রাজনীতির কথা আর বলো না। ওরা যা বলে তা নিজেরা কি মানে? ধার্মিকরা যেমন ধর্মের দোহাই দেয়, এরাও তেমনি কথায় কথায় মার্ক্স এঙ্গেলসের দোহাই দেয়। এটাও এক ধরণের মৌলবাদ।“
মানুষ আসলে বদলায় না। আমরা অন্যদের ডগম্যাটিক বলি, কিন্তু নিজেরা প্রায় সেই কাজটাই করি। ও যে পয়েন্টগুলো নিয়ে কথা বলেছে সেটা শুধুই ভার্সন, হতে পারে সঠিক ভার্সন, তারপরেও ভার্সনই। কিন্তু ওর বলার ভঙ্গি, দৃঢ়তা দেখে মনে হল, এটা ওর বিশ্বাস।

আমাকে প্রায়ই জিজ্ঞেস করে আমি এ দেশে রয়ে গেলাম কেন? বলি
“ইচ্ছে ছিল দেশে ফিরে কাজ করার। কিন্তু শেষ মুহূর্তে প্রেম, বিয়ে, সংসার। তাই থেকে যাওয়া।“
এটাও একটা ভার্সন। যে কেউই বলতে বা বিশ্বাস করতেই পারে আসলে ওটা বাজে কথা। থেকে যাওয়ার জন্যই প্রেম, বিয়ে, সংসার। আমরা যারা রিসার্চ করি তাঁরা সবাই মনে হয় এ রকম, একটা ভার্সন নিয়ে এগোলেও অন্য ভার্সনগুলো যে সঠিক হতে পারে সেই পথ খোলা রাখি। আমার সেই দেশী বাম রাজনীতি, মার্ক্সবাদ – এসব হয়তো ত্যাগ করেছে, কিন্তু নিজের অজান্তেই আগের মতই সেই ডগম্যাটিকই রয়ে গেছে। ডগমা শুধু প্রতিষ্ঠিত কোন মতবাদকেই অন্ধভাবে বিশ্বাস করা নয়, কোন বিষয়ে নিজের ভার্সনকে একমাত্র সত্য বলে মনে করাও ডগমা। কয়লা ধুলে ময়লা যায় না।          
দুবনা, ২৬ ডিসেম্বর ২০১৮    


No comments:

Post a Comment