Saturday, October 31, 2020

চিন্তার সীমাবদ্ধতা

একদল অন্যদলের হাত থেকে মুক্তি দিতে চায় বটে, কিন্তু কখনই বলে না যে তাদের উদ্দেশ্য চরম মুক্তি নয়, নিজের দলের দাস করা। আর সেটা ঘটে সব ক্ষেত্রেই। ধর্ম বলি, ইজম বলি। অন্যের দাসত্ব থেকে মুক্তি পাওয়া প্রতিটি মানুষ নতুন আইডিয়ার দাস। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধর্ম চেয়েছিল প্রচলিত রীতিনীতি থেকে স্থানীয় জনগণকে মুক্তি দিতে, দিয়েছিলও - কিন্তু দিনের শেষে তাদের নিজের ধারণার দাস করেছে। গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র - এরাও চলমান অর্থনৈতিক শোষণ থেকে মানুষের মুক্তির কথা বলে তাদের নিজের আদর্শের দাস করে। মুক্তি মেলে না। মুখে মুখে ডাইভারসিটির কথা বললেও সবাই নিজের বিশ্বাসটাকেই মুক্তির একমাত্র উপায় বলে মনে করে। যে ভাষা, যে চেতনা মানুষকে অন্যান্য জীবের চেয়ে আলাদা করেছিল, জীব জগতে শ্রেষ্ঠ করছিল সেই চিন্তার, সেই ভাবনার অন্ধত্বই তাকে নিকৃষ্ট সৃষ্টিতে পরিণত করছে দিনকে দিন। শিক্ষার আলো নিয়ে মানুষ অজানাকে জানতে পথে নামছে না, সে আজ অন্যের দেখানো সরু গলিতে হেঁটে সেটাকেই একমাত্র পথ হিসেবে মেনে নিচ্ছে। এতে তার অন্ধত্ব দূর হচ্ছে না, চেতনা হচ্ছে একমুখী, একরোখা। যাদের কথা ছিল পথ দেখানো তারাও রিস্ক নিয়ে নতুন পথের সন্ধান না করে পুরনো পথেই চলছেন। এভাবেই আমরা অর্থনৈতিক সামন্তবাদ থেকে বেরিয়ে এলেও দিন দিন বুদ্ধিবৃত্তিক সামন্তবাদের অটল গহ্বরে তলিয়ে যাচ্ছি। আমরা চিন্তার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলছি। বিবেককে বন্ধক রাখছি ইজমের কাছে। সমষ্টিগত অন্ধত্ব আমাদের ভবিষ্যৎ করে তুলছে আরও আরও অনিশ্চিত।

দুবনা, ৩১ অক্টোবর ২০২০ 




No comments:

Post a Comment