ছোটবেলায় খুব জেদী আর প্রচন্ড দুষ্টু ছিলাম। সারাদিন চকোলেট, বিস্কুট, চানাচুর, আইস্ক্রীম ইত্যাদি হাবিজাবি খেতাম, তাই ভাত একেবারে খেতেই চাইতাম না। বাবা/মা তাই উৎকোচ দিতেন। দুধ ভাতের রেট ছিল এক টাকা। পাকিস্তান আমলে সেটা খুব অল্প ছিল না। আমিও এক সময় বাচ্চাদের ঠিক মত খাওয়ার জন্য টাকা দিতাম, বিশেষ করে সেভাকে। এখন যখন ওদের কোন কিছু দিই ওরা ধন্যবাদ জানায় যেটা আমার একেবারেই পছন্দ নয়। কেননা বাবা হিসেবে আমি আমার ডিউটি করি। এতে ধন্যবাদের কী আছে? মনে হয় দেরিতে হলেও ছোটবেলা থেকে একটু একটু করে বেরিয়ে আসছি।
সব দেখে মনে হয় আমাদের সরকার এখনও শিশুকাল থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি। দেশের জন্য কাজ করা, আইন প্রণয়ন ও তার বাস্তবায়ন করা, এসব তার কর্তব্য। কিন্তু এ জন্যে যেভাবে তাদের তোড়া তোড়া ধন্যাবাদ দেওয়া হয়, যেভাবে গ্রাম উজার করে কৃতজ্ঞতা জানানো হয় তাতে মনে হয় দেশের সেবা করা তাদের দায়িত্ব নয়, আমাদের কৃতার্থ করা। আমরা নিজেরা যতদিন এই মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে না পারব, নিজেরা যত দিন চাটুকারিতা পরিত্যাগ না করব, তত দিন পর্যন্ত সরকারের কাছ থেকে জবাবদিহিতা আশা করা বাতুলতা মাত্র।
দুবনা, ১৩ অক্টোবর ২০২০
No comments:
Post a Comment