আজ ঘুম ভাঙতেই স্কুলের কথা মনে পড়ল, ঠিক স্কুল নয় রাজ্জাক ভাইয়ের কথা। আমাদের স্কুলের শরীর চর্চার শিক্ষক। প্রথম দিকে, স্কুলে জয়েন করার আগে বেশ কিছুদিন আমাদের বাড়িতে থাকতেন তেরশ্রীর এই ভদ্রলোক। যাহোক, এর আগে হক স্যার শরীর চর্চার ব্যাপারে নজর দিলেও রাজ্জাক স্যার ছিলেন ট্রেনিং প্রাপ্ত। যার ফলে দৌড়-ঝাপও নিয়ম মেনে করতে হত। আগে আমরা অনায়াসে নুর দিতাম। নুর, এটা আঞ্চলিক ভাষায় দৌড়ের ডাকনাম। উনি আসার পরে সেটা আর হত না। সবাইকে দাড় করিয়ে হুইসেল বাজাতেন। একমাত্র হুইসেলের পরেই দৌড় শুরু করতে হত। এর আগে শুরু করলে যাকে বলে ফলস স্টার্ট।
সেই জানুয়ারি থেকে পৃথিবী বার বার স্টার্ট নিচ্ছে। জানুয়ারির ১ তারিখে গ্রিগোরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুযায়ী। দু সপ্তাহ পরেই আবার তাকে ধরে দাড় করানো হয়েছে জুলিয়ান ক্যালেন্ডারের সাথে নতুন করে শুরু করতে। এরপর ফেব্রুয়ারিতে চীনা ক্যলেন্ডার, মার্চে ইরানসহ মধ্য এশিয়ার বিভিন্ন দেশে নওরোজ। শেষ পর্যন্ত ঘুরতে ঘুরতে এসেছে আমাদের উপমহাদেশে। দু চার দিনের হের ফেরে পৃথিবী কতবার যে ফলস স্টার্ট নেবে কে জানে। আজ শুরু হল বাংলাদেশে, আগামীকাল বাঙালিদের আরেক অংশ শক্য পঞ্জিকা অনুযায়ী শুরু করবে নতুন বছরের হিসাব। শুধু সূর্য নয় দূরের নক্ষত্ররাও আকাশের এক নির্দিষ্ট অবস্থানে দাঁড়িয়ে সাক্ষ্য থাকবে পৃথিবীর নতুন করে চলতে শুরু করার ঘটনার। দেশ বিদেশের মানুষ লালা পতাকা হাতে দাঁড়িয়ে থাকবে আর হঠাৎ করেই তার এই চলায় বাধা দেবে। আবার নতুন করে শুরু করার আয়োজন করবে তারা। আসলে পৃথিবী তার চলা কখনই বন্ধ করবে না, শুধু বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন জাতির মানুষ নিজের নিজের মত করে গুনবে এই শুরু দিন, একে অন্যকে অভিনন্দন জানাবে। পৃথিবীর কোন এক কোণে জন্ম নেবে আরেকটি নতুন বছর।
No comments:
Post a Comment