Monday, July 29, 2024

কষ্ট

রাশিয়ায় পান করার অজুহাত নিয়ে বিভিন্ন ধরণের চুটকি প্রচলিত আছে। এক লোকের খুব পান করতে ইচ্ছে করছে কিন্তু কোন কারণ খুঁজে পাচ্ছে না। কি করা? একটা টেবিলের মাঝখানে চক দিয়ে দাগ কেটে টেবিলের উপর একটি তেলেপোকা ছেড়ে দিল। যতবার তেলেপোকা লাইন বা সীমানা অতিক্রম করে ততবার সে ওর বিদেশ গমন বা স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষ্যে পান করে। আমাদের তেমন পানের সংস্কৃতি নেই। তবে দুঃখ কষ্ট পেতে আপত্তি নেই।

দুবনা, ৩০ জুলাই ২০২৪

আবেগ

আবেগ দিয়ে প্রেম হয় সংসার নয়। আবেগ দিয়ে মিছিল করা যায় কিন্তু সফল রণনীতি রণকৌশল তৈরি করা যায় না। স্বাধীনতা অর্জনের লড়াইয়ে আবেগের স্থান উপরে কিন্তু স্বাধীনতা রক্ষার জন্য দরকার ঠান্ডা মাথায় হিসাব নিকাষ। দক্ষিণপন্থীরা হিসাব করে মাঠে নেমেছে বামেরা এখনও আবেগে ভাসছে।

দুবনা, ২৯ জুলাই ২০২৪

Friday, July 26, 2024

লাভ ও লোভ

আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষ কোন কাজ করার আগে যে প্রশ্ন নিজেকে করে তা হল এতে আমার কী লাভ? এমনকি যে কাজ করা তার দায়িত্বের মধ্যে পড়ে সেখানেও সে অতিরিক্ত আয়ের উৎস বা লাভ খোঁজে। এই মানসিকতা থেকেই ঘুষ, দুর্নীতি এসব। কোটা সমস্যার সমাধানে প্রথম দিকে সরকারের গাছাড়া ভাব দেখে মনে হয় ওদের সমস্যার দ্রুত সমাধান করে আমার কী লাভ এই মনোভাব থেকেই হয়েছিল। সব কিছুতে শুধু লাভ খুঁজলে চলে না, মাঝেমধ্যে সময় মত সমস্যার সমাধান করতে হয় বেতনের টাকায়। লোভে পাপ, পাপে মৃত্যু। 

দুবনা, ২৬ জুলাই ২০২৪

Saturday, July 20, 2024

স্থান-কাল

সাগরের অসীম জলরাশির মাঝেই হোক আর মরুভূমির অন্তহীন বালুরাশির মাঝেই হোক - পানীয় জল দু জায়গায়ই বাড়ন্ত। 

মস্কোর পথে, ২০ জুলাই ২০২৪

Friday, July 19, 2024

আয়না

মানুষ যখন অন্যের কাছে হেরে যায় তখন ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ থাকে, অন্ততঃ শত্রুর মুখ চেনা থাকে। কিন্তু সে যখন নিজের কাছে হেরে যায় তখন সেই সম্ভাবনা খুবই কম। কারণ সে শত্রু খুঁজে বাইরে, নিজের ভেতরে নয়। 

আমরা আয়নার সামনে দাঁড়াই অন্যের চোখে কেমন দেখাবো সেটা দেখতে, নিজের দুর্বলতা খুঁজতে নয়।

বর্তমান যুদ্ধ বিজয়ী বিজিত সবাই আমরা নিজেদের কাছে হেরে যাচ্ছি। তবে যখন বুঝব তখন খুব বেশি দেরি হয়ে যাবে।

দুবনা, ২০ জুলাই ২০২৪

দেশে শুনলাম মৃত্যু বিক্রি হচ্ছে

দেশে শুনলাম মৃত্যু বিক্রি হচ্ছে
বিক্রি হচ্ছে মুড়ি মুড়কির মত
কবে বন্ধ হবে এ মৃত্যু মেলা?
দিতে হবে মূল্য আর কত?

কি দোষ করেছিল ওরা?
করেছিল জীবনের দাবি।
বলেছিল স্বজনপ্রীতি ঘুষ আর দুর্নীতি
দেশ ছেড়ে কবে তোরা যাবি?

দেশে শুনলাম মৃত্যু বিক্রি হচ্ছে
খুচরো আর পাইকারি দরে
মিছিল করে সন্তানেরা যায় চলে
মায়েদের বুক খালি করে

ক্ষমতার কাছে অক্ষম রাজনীতি
নেতা কর্মীরা সব ক্ষমতার দাস
একাত্তরের ত্রিশ লক্ষ শহীদ
যোগ হচ্ছে নতুন নতুন লাশ

দেশে শুনলাম মৃত্যু বিক্রি হচ্ছে ............

দুবনা, ১৯ জুলাই ২০২৪

Thursday, July 18, 2024

রাজনীতি

ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে কোরবানির আগে গরুর দাম কোটি টাকা। ক্রেতা কোটি টাকার মালিক। বিক্রেতাও কোটিপতি। কিন্তু যার এত দাম সেই গরুই সব অর্থেই নেংটিবিহীন, সর্বহারা, মৃত্যুপথযাত্রী। রাজনীতিতেও ক্ষমতা ঈশ্বর, রাজনৈতিক দলগুলো ক্রেতা বিক্রেতা আর জনগণ কোটি টাকার গরু যার কাজ এই দুইয়ের লোভের বলির পাঁঠা হওয়া।

দুবনা, ১৮ জুলাই ২০২৪

Wednesday, July 17, 2024

কোটা

চাকরি থেকে শুরু করে প্রায় সমস্ত ক্ষেত্রে যদি সব ধরনের অলিখিত রাজনৈতিক বিশেষ করে সরকারি দলের রাজনৈতিক কোটা বাতিল করা হয় তাহলে বর্তমান কোটা সমস্যার সমাধান অনেকটাই হয়ে যায়।

দুবনা, ১৭ জুলাই ২০২৪

Thursday, July 11, 2024

সম্ভব

আমার পরিচিত জনরা যারা আমেরিকায় থাকে তাদের প্রায়ই বলতে শুনি আমেরিকা সব সম্ভবের দেশ। আমেরিকাবাসী প্রায় প্রতিটি বাংলাদেশী চায় আমাদের দেশ যেন আমেরিকার মত হয়। আমেরিকার প্রতিটি মানুষের মত বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষেরও যেন স্বপ্ন বাস্তবায়নের সুযোগ থাকে তা সে যত বড় ও অসম্ভব বলে মনে হোক না কেন? বাংলাদেশের সব মানুষের লক্ষ্য আজ সেই আকাশচুম্বী সাফল্য অর্জন করা। আজ যখন বাংলাদেশের অফিস ড্রাইভাররা কোটি কোটি টাকার মালিক হয়ে সবাইকে চমকে দিচ্ছে তখন এই জনতাই আবার এদের পেছনে লেগেছে চোর চোর বলে। আমেরিকা সম্পর্কে বলা হয় কেউ দশ টাকা চুরি করলে চোর আর দশ মিলিয়ন চুরি করলে শিল্পপতি। আমাদের জনগণ এখনও হয়তো এতটা মহান হয়ে উঠতে পারেনি। অথবা তারা ঈর্ষা করে এসব স্বপ্নবাজদের। সব সম্ভবের দেশ হতে হলে জনগণের মানসিকতায় পরিবর্তন আনা ছাড়া উপায় নেই। তবে যেদিন শুধু বড় অফিসের নয় সাধারণ ড্রাইভারও চুরি না করেই কোটি কোটি টাকার মালিক হতে পারবে সেদিন জনগণ তাদের মতামত পরিবর্তন করবে বলেই আমার বিশ্বাস।

দুবনা, ১১ জুলাই ২০২৪

Tuesday, July 9, 2024

পুরস্কার

আজকাল ফেসবুকে অনেকেই বিভিন্ন জনের ছবি দিয়ে চোর বলে তাদের পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে। এরা ঘুষ, দুর্নীতি, প্রশ্নপত্র ফাঁস ইত্যাদি ঘটনার সাথে জড়িত। অনেকেই গ্রেফতার হয়েছে। এদের নিশ্চয়ই বিচার হবে এবং এদের অপরাধের গুরুত্ব ও গভীরতা বিবেচনায় নিয়ে আইন তাদের শাস্তি দেবে বা পুরস্কৃত করবে। পুরস্কারের ক্ষেত্রে আমার ছোট্ট একটি প্রস্তাব। যেহেতু চোর হিসেবে এরা গণ রায় পেয়ে গেছে তাই সরকারিভাবে এদের চোর উপাধিতে ভূষিত করা হোক। এরা বংশ পরম্পরায় এই উপাধি ব্যবহার করতে ও লিখতে বাধ্য থাকবে। এটা তাদের হয়তো নতুন করে ভাবতে বাধ্য করবে এই খেলায় তেল পোড়ানোর আদৌ প্রয়োজন আছে কি না।

দুবনা, ০৯ জুলাই ২০২৪

Sunday, July 7, 2024

দ্বিমত

অনেকের ধারণা দ্বিমত মানেই ভাঙনের ডাক। আমার মনে হয় দ্বিমত মানে সবার জন্য গ্রহণযোগ্য তৃতীয় বা চতুর্থ মত খোঁজা। যারা দ্বিমত করাকে দোষারোপ করে একমতে আসতে চায় তারা আসলে সমস্যার সমাধান চায় না, চায় সমস্যা ধামাচাপা দিয়ে রাখতে। এধরণের মতৈক্য আসলে সমস্যার সমাধান নয় সেটাকে বাড়তে দেয়া। আচ্ছা ভাবুন তো যদি বঙ্গবন্ধু একাত্তরের মার্চে ইয়াহিয়ার প্রস্তাব মেনে ঐক্যমতে পৌঁছতেন। তাহলে সেই মূহূর্তে পাকিস্তান হয়তো ভাঙত না, তবে বাঙালির সমস্যার সমাধান হত না। তাই দ্বিমত যারা পোষণ করে তাদের দোষারোপ না করে সময় থাকতে নতুন পথ, নতুন সমাধান খুঁজুন।

দুবনার পথে, ০৭ জুলাই ২০২৪

Saturday, July 6, 2024

কঠিন

কী বলল বা কী করল সেটা মুখ্য নয়, আসল কথা হল কে বলল বা কে করল। এই কে প্রশ্নের উত্তরের উপর নির্ভর করে তার দিকে যে তীরটা ছোঁড়া হচ্ছে সেটা প্রশংসার হবে নাকি সমালোচনার। বেশিরভাগ মানুষ যেহেতু নিজেকে ভালবাসে তাই আত্মসমালোচনার মত কঠিন কাজটি সে প্রায়ই করে উঠতে পারে না, বিশেষ করে সে যদি বাংলার আলো বাতাসে বেড়ে ওঠে।

মস্কোর পথে, ০৬ জুলাই ২০২৪

Friday, July 5, 2024

নির্লিপ্ত নেতা

আর যা নিয়েই গালিগালাজ করুক না কেন ইদানিং কালের বৃটিশ প্রধানমন্ত্রীদের কেউ ক্ষমতালোভী বলে দোষারোপ করতে পারবে না। এক পা কবরে রেখেও অনেক দেশের নেতারা যখন ক্ষমতা আঁকড়ে থাকেন বৃটিশ প্রধানমন্ত্রীরা সময় শেষ হওয়ার আগেই ক্ষমতার হাতছানি এড়িয়ে সাধারণ মানুষের মাঝে চলে যান। এ যেন ফ্যাশন শোতে মডেলদের একের পর এক মঞ্চে আসা। একেই বলে ভদ্রলোক।

দুবনা, ০৫ জুন ২০২৪

Tuesday, July 2, 2024

মশা

আমাকে অনেকেই বলে যে আমার হাত পা নাকি কাঠির মত সরু। কথাটা সত্য। এ নিয়ে কখনও সখনও যে হাত পায়ের উপর ক্ষোভ বা অভিমান হয় না তা নয়। চারিদিকে লোকজন নাদুসনুদুস হাত পা নিয়ে ঘুরে বেড়ায় আর আমি কিনা কাক তাড়ুয়ার মত কাঠির উপর ভর করে চলি। তবে গতকাল এক মজার ব্যাপার খেয়াল করলাম। সন্ধ্যায় যখন ভোলগার তীরে হেঁটে বেড়াচ্ছিলাম, দেখি দুটো মশা আপ্রান চেষ্টা করছে আমার হাতে বসতে আর পা ফস্কে পড়ে যাচ্ছে। এটা অনেকটা ছোটবেলায় আমাদের এক বাঁশের পিচ্ছিল সাঁকো দিয়ে খাল পার হবার মত দৃশ্য। এটা আমাকে শুধু আনন্দই দেয়নি, মশার কামড় থেকে বাঁচিয়েছে আর অতি কষ্টে অর্জিত রক্তের অপচয় রোধ করেছে। সাধে কি বলে অপ্রয়োজনীয় বস্তু বলে কিছু নেই, শুধু সময় আর সুযোগের অপেক্ষায় বসে থাকতে পারলেই হল।

দুবনা, ০২ জুলাই ২০২৪